ঢাবির সিন্ডিকেট ভেঙে দেয়ার দাবিতে শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন

  • ঢাবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি- বার্তা২৪.কম

ছবি- বার্তা২৪.কম

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) বর্তমানে বহাল সিন্ডিকেট জুলাই বিপ্লবের সময় শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে এবং  এর সদস্যরা ‘ফ্যাদিবাদের দালাল’ অভিযোগ করে তাদের পদত্যাগ ও নতুন সিন্ডিকেট গঠনের দাবিতে মানববন্ধন করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল  শিক্ষার্থী।

বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ঢাবির সন্ত্রাস বিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীবৃন্দ’ ব্যানারে আন্দোলন করেন তারা। এরপর উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি জমা দেয় শিক্ষার্থীদের একটি প্রতিনিধি দল।

বিজ্ঞাপন

এসময় শিক্ষার্থীরা ‘ফ্যাসিবাদের /আওয়ামী লীগের সিন্ডিকেট, ভেঙে দাও- গুঁড়িয়ে দাও’ স্লোগান দেন।

আন্দোলনরত বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী তারেক মাসুদ ইরফান বলেন, ‘জুলাই বিপ্লবের মাধ্যমে অর্জিত স্বাধীনতাকে রক্ষা করতে হলে পুরো সিস্টেমের সংস্কার চাই। শ্রীলঙ্কায় শিক্ষার্থীরা যে বিপ্লব করেছিল সেটা স্থায়ী হয়নি কারণ তারা ব্যক্তিকে পরিবর্তন করতে পারলেও সিস্টেমের পরিবর্তন করতে পারেনি।’

বিজ্ঞাপন

‘জুলাই বিপ্লবের সময়  শিক্ষার্থীদের হল থেকে বের করে দিয়ে আন্দোলনকে বিচ্ছিন্ন করার চেষ্টা করেছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট।  যদি সে সময় আমাদের হলে অবস্থান করতে দেয়া হতো তাহলে আরও কম মানুষ শহীদ-আহত হতো। শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে গিয়ে যে সিন্ডিকেট ফ্যাসিবাদের পক্ষ নিয়েছে সেই সিন্ডিকেট আমরা মানি না। এই সিন্ডিকেট অনতিবিলম্বে ভেঙে দিয়ে নতুন সিন্ডিকেট ঘোষণা করতে হবে। অন্যথায় আমরা কঠোর কর্মসূচিতে যাব এবং আন্দোলনন চলমান থাকবে।’

আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম হচ্ছে সিন্ডিকেট। কিন্তু গত ১৫ বছরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটে ফ্যাসিবাদের দালালদের বসানো হয়েছে। ১৫ই জুলাই যখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের টোকাই দিয়ে হামলা করা হয়েছিল, আমাদের বোনদের রক্তাক্ত করা হয়েছিল তখন এই সিন্ডিকেট কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। এই সিন্ডিকেরটের কথা ছিল শিক্ষার্থীদের রক্ষা করা। যখন আন্দোলন বিস্তৃতি লাভ করছিল তখন এই সিন্ডিকেট শিক্ষার্থীদের হল থেকে বের করে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। সকল দিক থেকেই এই সিন্ডিকেট ব্যর্থ হয়েছে। ফলে এই সিন্ডিকেট এই স্বাধীন দেশে গ্রহণযোগ্যতা হারিয়েছে।’

রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী আবিদ বলেন, ‘আজকে আমরা এক স্বাধীন দেশে অবস্থান করছি। এই স্বাধীনতা অর্জনের জন্য যে রক্ত ঝরেছে তা লেগে আছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটের হাতে। অনতিবিলম্বে এই কলঙ্কিত সিন্ডিকেট ভেঙ্গে দিয়ে নতুন করে শিক্ষার্থী বান্ধব একটি সিন্ডিকেট  গঠন করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।’

বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী মোছাদ্দেক ইবনে আলী শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে বেশ কিছু দাবি তুলে ধরেন। দাবিগুলো হলো, অনতিবিলম্বে সিন্ডিকেট ভেঙে শিক্ষার্থীবান্ধব সিন্ডিকেট গঠন করতে হবে, সিন্ডিকেটের প্রথম বৈঠকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ৯ দফার আলোকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের প্রসঙ্গে যৌক্তিক সমাধান করতে হবে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে শতভাগ আবাসিক করা, আর্থিক অসচ্ছলতার কারণে যেসব শিক্ষার্থী বাহিরে অবস্থান করতে পারবে না তাদের হলে সিট দেওয়া অথবা বৃত্তির ব্যবস্থা করতে হবে।