চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ডিবেটিং সোসাইটি (সিইউডিএস) এর উদ্যোগে আয়োজিত হয়েছে জাতীয় বিতর্ক উৎসব-২০২৪।
শনিবার (২৬ অক্টোবর) দুপুর ১২ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসা প্রশাসন অনুষদ মিলনায়তনে এই আয়োজন অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চবি উপ-উপাচার্য (অ্যাকাডেমিক) অধ্যাপক ড. মো. শামীম উদ্দিন খান, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দিন, প্রক্টর অধ্যাপক ড. তানভীর মোহাম্মদ হায়দার আরিফ, ক্লাবটির মোডারেটর অধ্যাপক এবিএম আবু নোমান, পৃষ্ঠপোষক প্রতিষ্ঠান প্রেসিডেন্সি ইউনিভার্সিটির রেজিস্ট্রার সাব্বির হোসেন, আবুল খায়ের গ্রুপের ম্যানেজার আ ন ম ওয়াজেদ আলী। এছাড়া ক্লাবের সভাপতি মারজুক ই ইলাহী, এবং সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান ইমন উপস্থিত ছিলেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে চবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতার বলেন, বিতর্ক একটি শিল্প। এই শিল্পের শিল্পী তথা বিতার্কিকরা দেশকে গণতান্ত্রিকভাবে গড়তে সাহায্য করে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে চবি উপ-উপাচার্য(প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দিন বলেন, বিতর্ক হচ্ছে সত্য অনুসন্ধানের প্রক্রিয়া। শহীদ মিনার থেকে জারুল তলা, এই ক্যাম্পাসের সর্বত্রই আমাদের শিক্ষার্থীরা বিতর্ক করবে।
উপ-উপাচার্য (অ্যাকাডেমিক) অধ্যাপক ড. মো. শামীম উদ্দিন খান বলেন, বিতর্ক করতে হলে আমাদের অধিক পড়তে হয়, জানতে হয়। বর্তমান সময়ে সৌহার্দ্য ও যৌক্তিকভাবেই আমাদের সমস্যাগুলো সমাধান করতে হবে। বিতর্ক এই ক্ষেত্রে সাহায্য করতে পারে।
আলোচনা সভা শেষে অতিথিরা বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন। উল্লেখ্য, প্রতিযোগিতায় আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় সেগমেন্টে চ্যাম্পিয়ন হয় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) এবং রানার-আপ হয় বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অফ প্রফেশনালস(বিইউপি)। আন্তঃকলেজ ও স্কুল সেগমেন্টে চ্যাম্পিয়ন হয় চট্টগ্রাম কলেজ এবং রানার-আপ পটিয়া সরকারি কলেজ। আন্তঃস্কুল সেগমেন্টে চ্যাম্পিয়ন গভর্নমেন্ট মুসলিম হাই স্কুল এবং রানার-আপ হয় বাংলাদেশ নৌবাহিনী স্কুল এন্ড কলেজ, চট্টগ্রাম।
বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (বিসিএস) পরীক্ষায় তিনবারের সুযোগ নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থীদের মধ্যে।
‘বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (বিসিএস) পরীক্ষায় একজন প্রার্থী তিনবারের বেশি আবেদন করতে পারবেন না’ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ এই সিদ্ধান্ত জানানোর পর থেকে এ নিয়ে দেশজুড়ে আলোচনা চলছে।
শিক্ষার্থীদের একটা অংশ বিসিএসে তিনবারের সুযোগকে সাধুবাদ জানাচ্ছে। অপর একটি অংশ এ সিদ্ধান্তকে কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছে না।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মাহিন আন নূর বলেন, এ সিদ্বান্ত আমাদের জন্য হতাশাজনক। অনেকেই তিন থেকে চারটা বিসিএস এক্সাম দিয়েছে তাদের জন্য আবার তিনবার সুযোগ। অর্থাৎ ঐ ব্যক্তি আরো তিনটি সহ মোট সাত থেকে আটবার বিসিএস দেওয়ার সুযোগ পাচ্ছে। এতে করে যারা নতুন শিক্ষার্থী তাদের সাথে অবশ্যই বৈষম্য করা হবে।
ইন্টারন্যাশনাল বিজনেজ বিভাগের শিক্ষার্থী ইলিয়াস তালুকদার বলেন, একজন প্রার্থী প্রিলি, রিটেন পাশ করে ভাইভায় গিয়ে আউট হতেও পারে। তখন আবার তাকে প্রিলি থেকে শুরু করতে হয়। দেখা যায় বিসিএস এর সিলেবাস বুঝতেই দুই একটা প্রিলি এক্সাম দিতে হয় তাহলে তিনবার সুযোগ এটা কীভাবে আমাদের জন্য যৌক্তিক হয়। এটা শিক্ষার্থীদের জন্য রিস্ক।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নৃবিজ্ঞান বিভাগের এক শিক্ষার্থী বলেন, বিসিএসে তিনবার সুযোগকে আমি পজিটিভভাবেই দেখছি। আমাদের আসলে বিসিএসের নেশায় ধরেছে। আমাদের সেন্ট্রাল লাইব্রেরিতে যারা পড়তে যায় তাদের ম্যাক্সিমাম ই বিসিএস প্রার্থী। দেখা যায় প্রথম বর্ষ থেকে বিভাগের পড়াশোনা বাদ দিয়ে বিসি এসের এক সেট বই কিনে নিয়ে সারাদিন লাইব্রেরিতে পরে থাকে। বিসিএসে তিনবার সুযোগ থাকলে শিক্ষার্থীরা নিজের বিভাগ ও গবেষণার দিকে মনযোগ দিতে পারবে।
বিসিএসে তিনবার সুযোগ নিয়ে জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক ড. সাদিক হাসান বার্তা ২৪.কমকে বলেন, বিসিএসে সর্বোচ্চ তিনবার পরীক্ষা দেওয়া যাবে, এটা কোনো দিক থেকেই যৌক্তিক সিদ্ধান্ত নয়। একজন প্রার্থীর যদি বয়স ঠিক ঠাক থাকে তাহলে সে কয়েকবার বিসিএস দিক তাতে তো কোনো সমস্যা দেখছি না।
প্রসঙ্গত,বিসিএস পরীক্ষায় বয়সসীমা নির্ধারণ অধ্যাদেশ, ২০২৪'-এর খসড়ার নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদন করেছে সরকার। পরীক্ষায় তিন বারের বেশি কোনো প্রার্থী অংশ নিতে পারবেন না। গত বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এই অনুমোদন দেওয়া হয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষার সুযোগ চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে শিক্ষার্থীরা।
শনিবার (২৬ অক্টোবর ) দুপুর ১২টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এ বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন তারা।
এর আগে গত (৮ সেপ্টেম্বর ) বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি দিতে আসলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর অধ্যাপক মুহম্মদ মাহবুব কায়সারের নিকট স্মারকলিপিটি জমা দেন শিক্ষার্থীরা।
স্মারকলিপি গ্রহণকালে অধ্যাপক মাহবুব কায়সার শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, 'কোনো এক কারণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সেকেন্ড টাইম বন্ধ হয়ে যায়, সেটি ভিন্ন প্রসঙ্গ। তবে ব্যক্তিগতভাবে যদি বলতে হয় তাহলে বলব, আপনাদের দাবিটি যৌক্তিক। যদিও এই মুহূর্তে এটি আলোচনার মুখ্য কোনো বিষয় না। তা ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় যে প্রেক্ষাপটে এটি বাতিল করেছিল, সেটিও বিবেচনায় নিতে হবে এবং নতুন প্রশাসন এ নিয়ে আলোচনা করবে। পরবর্তী ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে ভাবার যথেষ্ট সময় আছে। আমার মনে হয় আপনাদের আর আন্দোলন করার প্রয়োজন নেই। যেহেতু আপনাদের যে দাবি আমরা জানতে পেরেছি, তাই পরবর্তীতে এ বিষয়ে উপর্যুক্ত জায়গাতে আলোচনা করা হবে।'
অবস্থান কর্মসূচিতে শিক্ষার্থীরা বলেন, আমরা দীর্ঘদিন থেকে সেকেন্ড টাইমের জন্য আন্দোলন করছি। সরকার পতনের পর অনেকের অযৌক্তিক দাবি মেনে নেওয়া হয়েছে। কিন্তু আমাদের যৌক্তিক দাবি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কেনো মেনে নিচ্ছে না আমরা জানিনা। অথচ কয়েকবছর আগেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সেকেন্ড টাইম ছিল। বিশ্বের শ্রেষ্ঠ বিশ্ববিদ্যালয় অক্সফোর্ডেও সেকেন্ড টাইম আছে। তাহলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কি এমন হয়েছে যে সেকেন্ড টাইম দেওয়া যাবে না। আমরা স্বাধীন দেশে কোনো বৈষম্য মানিনা। আমাদের দ্বিতীয় বার ভর্তি পরীক্ষার সুযোগ দিতেই হবে।
অবস্থান কর্মসূচিতে বরিশাল থেকে আসা মুইন নামের এক শিক্ষার্থী বার্তা ২৪. কমকে বলেন, আমরা (গত ৮) সেপ্টেম্বর উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি দিলেও এরপর তাদের পক্ষ থেকে কোনো সাড়া পাইনি। অথচ তারা পরবর্তী সেশনের ভর্তি পরীক্ষার সিডিউল দিয়ে দিছে। আমরা কোনো বৈষম্য চাইনা। আমরা দ্বিতীয় বার ভর্তি পরীক্ষার সুযোগ চাই।
প্রসঙ্গত, ২০১৪ সাল থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সেকেন্ড টাইম ভর্তি পরীক্ষা বন্ধ হয়ে যায়। তারপর থেকে বেশ কয়েকবার আন্দোলন হলেও কোনো সুরাহা মেলেনি।