বিগত তিনটি নির্বাচন বিশ্ব দরবারে নেতিবাচক পরিচয় দিয়েছে: চবি উপাচার্য
৫ম, ৭ম ও ৮ম ছাড়া আর কোনো নির্বাচনে নির্বাচন কমিশন স্বাধীনভাবে কাজ করেনি। সর্বশেষ অনুষ্ঠিত তিনটি নির্বাচন তো আমাদেরকে বিশ্ব দরবারে বেশ নেতিবাচক পরিচিতি দিয়েছে বলে জানান চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতার।
রোববার (২৭ অক্টোবর) দুপুর তিনটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান অনুষদ মিলনায়তনে নির্বাচন ও সংবিধান সংস্কার শীর্ষক আলোচনা সভায় এমন মন্তব্য করেছেন তিনি।
আলোচনা সভায় প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, চবি উপাচার্য ও নির্বাচন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতার। আরও আলোচক ছিলেন, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দিন, সংবিধান বিশেষজ্ঞ ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী হাসনাত কাইয়ূম, রাষ্ট্রচিন্তক মুহাম্মদ মুনির উদ্দীন, এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক সহকারী অধ্যাপক খ আলী আর রাজী, সহযোগী অধ্যাপক সায়মা আলম প্রমুখ।
উপাচার্য আরও বলেন, ছাত্র রাজনীতি হলো ছাত্র ব্যবসা । আমার ছাত্ররা এখানে আছে, তারা রাজনীতি নিয়ে সজাগ থাকবে। তারা সজাগ আছে বলেই আমরা এখানে দাঁড়িয়ে আছি। কিন্ত দলীয় লেজুড়ভিত্তিক রাজনীতি নিয়ে পড়ে থাকবো না। যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে যদি লেজুড়ভিত্তিক রাজনীতি ছাড়া যোগ্য নেতা বানাতে পারলে আমরা কেন আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়কে নেতা তৈরির কারখানা বানাবো?'
চবি উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) রাষ্ট্রচিন্তক অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দিন বলেন, গত ১৬ বছরে আমি রাষ্ট্র নিয়ে চিন্তা করার সুযোগ পাইনি। আমরা গত এতদিন ধরে আমাদের মস্তিষ্ক কিনে নেওয়া প্রক্রিয়া চালু হছিল। আমি যা বলতে চেয়েছিলাম তা লুকিয়ে রাখার একটি প্রবণতা শুরু হয়েছিল। সংবিধানে আমরা এমন ব্যক্তিকে সবচেয়ে ক্ষমতা দিয়ে তাকে নির্বাচন কমিশন ভয় পায়, জনগন ভয় পায়। এসব পরিবর্তনের সুযোগ তৈরি করার সময় এসেছে।
সুপ্রীম কোর্টের আইনজীবী হাসনাত কাইয়ুম বলেন, আমরা যে নির্বাচন ও সংবিধান তা ব্রিটিশদের হাতে গড়া। তারা উপমহাদেশে এসেছিল ব্যবসা করার জন্য। সেই স্বার্থে এসময় তারা খাজনা আদায় বেশি লাভজনক মনে করে এসব অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ নেয় এবং বিভিন্ন ধরনের আইন প্রণয়ন করে। এগুলো ছিল দমন পীড়নের। ব্রিটিশরা গভর্নরকে সবচেয়ে বেশি ক্ষমতা দিয়েছিল, তাদের অনুসরণে পাকিস্তানের সংবিধানে প্রেসিডেন্টকে ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে সবচেয়ে ক্ষমতাধর করা হয়েছে। তাদের সরাতে হলে তাই বার বার অভ্যুত্থান করতে হয়। সংবিধানে এই ক্ষমতানর ব্যক্তিদের নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত করার নিয়ম থাকতে হবে।
সভায় দারুল উলুম আলিয়া মাদরাসা চন্দনপুরার শিক্ষক ও চিন্তক মুহাম্মদ মুনির উদ্দিন বলেন, 'মর্ডান স্টেটে সবাই দেশের নাগরিক। হিন্দু, বৌদ্ধ, মুসলমান, নাস্তিক সহ সকল মতাদর্শের সবার অধিকার থাকবে। সবার মত প্রকাশের চাপ প্রয়োগ করা যাবে না। ইসলাম ধর্মেও আল্লাহ ও নবী সকলের মত প্রকাশ করার সুযোগ করে দিয়েছেন।
সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক ও প্রায় পাঁচ শতাধিক শিক্ষার্থী।