জাবি ক্যাম্পাস সংস্কারে শাখা ছাত্রশিবিরের ৪১ দফার সংস্কার প্রস্তাবনা
নারী শিক্ষার্থীদের জন্য নিরাপদ ক্যাম্পাস নিশ্চিতকরণ, অ্যাকাডেমিক মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়ন, মাদকমুক্ত ক্যাম্পাস, মননশীল সাংস্কৃতিক পরিবেশ বিনির্মাণ, সকল ধর্মাবলম্বী শিক্ষার্থীদের জন্য উপাসনালয় ব্যবস্থা, খুন ও হত্যার বিচারের নিশ্চয়তাসহ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়কে (জাবি) উদ্দীপ্ত, শক্তিশালী এবং প্রাণবন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে রুপান্তরিত করার লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয় সংস্কারে ৪১ দফা প্রস্তাবনা দিয়েছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের জাবি শাখা।
রবিবার (০৩ অক্টোবর) বেলা সাড়ে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের কনফারেন্স কক্ষে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলন শাখা ছাত্রশিবিরের প্রচার সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন সাকির সঞ্চালনায় সভাপতি হারুনুর রশিদ রাফি ও সেক্রেটারি মুহিবুর রহমান মুহিব বিশ্ববিদ্যালয় সংস্কারে এসব প্রস্তাবনা পেশ করেন৷
শাখা ছাত্রশিবিরের অন্যান্য প্রস্তাবনাগুলো হলো- জুলাইয়ে আহত বিপ্লবীদের স্বাস্থ্যসেবা ও পুনর্বাসন, স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে নির্যাতন ও আক্রমণের তদন্ত এবং বিচারের ব্যবস্থা, ১৬ জুলাইকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘সন্ত্রাস প্রতিরোধ দিবস’ হিসেবে ঘোষণা, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্থাপনার নাম পরিবর্তন ও জুলাই বিপ্লবের স্মৃতি সংরক্ষণ, প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্য প্রবেশগম্য ক্যাম্পাস নিশ্চিতকরণ, উচ্চগতি সম্পন্ন ইন্টারনেট সুবিধা, প্রতিটি বিভাগের জন্য পর্যাপ্ত অবকাঠামো বরাদ্দ, জাকসু চালু, হল সংসদ ও বিভাগওয়ারী শিক্ষার্থী সংসদ নির্বাচন, ভিসি ফারজানা ইসলামের আমলে সংগঠিত উন্নয়ন প্রকল্পে দুর্নীতিসহ স্বৈরাচার আমলের সকল ভিসির দুর্নীতির শ্বেতপত্র প্রকাশ, আবাসিক হলের নিয়মতান্ত্রিক আসন বণ্টন, আবাসিক হলসমূহে সেবা বৃদ্ধি ও উন্নত ডাইনিং ব্যবস্থা, ক্যাফেটেরিয়া, ক্যান্টিন ও বটতলার খাদ্যমান উন্নয়ন।
এছাড়া শিক্ষা বৃত্তি, আর্থিক সহায়তা এবং শিক্ষা ঋণ প্রদান, পরীক্ষার সময়সূচি সংস্কার, শিক্ষার্থীদের গবেষণা সহকারী (RA) ও পাঠদান সহকারী (TA) হিসেবে বৈতনিকভাবে কাজ করার সুযোগ তৈরি করা, গবেষণার জন্য বাজেট বরাদ্দ, পূর্ণাঙ্গ মেডিকেল সুবিধা, অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও পরিবেশ সংরক্ষণ, অযাচিত ফি বাতিল ও ফি কমানো, উচ্চমানের শিক্ষক বেতন কাঠামো, বাণিজ্যিক শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ, নিয়োগ পদ্ধতি সংস্কার, প্রশাসনিক আধুনিকীকরণ, বিদেশি শিক্ষার্থীদের ভর্তির সুযোগ, ভর্তি পরীক্ষা পদ্ধতির সংস্কার, লাইব্রেরি সেবার মান আধুনিকায়ন, বিশ্ববিদ্যালয়ের খেলার মাঠসমূহ এবং জিমনেশিয়ামের প্রয়োজনীয় সংস্কার, ক্যাম্পাস নিরাপত্তা জোরদার, বিশ্ববিদ্যালয় প্রেস স্থাপন, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, র্যাগিং, বুলিং ও রেসিজম প্রতিরোধ, আদিবাসী সাংস্কৃতিক কেন্দ্র স্থাপন এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য শৃঙ্খলা সংক্রান্ত অধ্যাদেশ ২০১৮-এর নিবর্তনমূলক ধারাসমূহ বাতিল করে নতুন আঙ্গিকে এই অধ্যাদেশ সংস্কার করতে হবে।
জাবি শাখা ছাত্রশিবিরের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের এক প্রশ্নের জবাবে সংবাদ সম্মেলনে সাধারণ সম্পাদক মুহিবুর রহমান মুহিব বলেন, দীর্ঘ সময় ধরে আমাদের কার্যক্রম পরিচালনা করতে দেয়া হয়নি। ইতোমধ্যে আমরা প্রকাশ্যে কাজের ঘোষণা দেয়ায় বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে থাকা আমাদের মন মানসিকতা সম্পন্ন শিক্ষার্থীরা সাড়া দিতে শুরু করেছেন। আমরা খুব দ্রুতই তাদের একটি প্রক্রিয়ার মধ্যে এনে উপর্যুক্ত সময়ে পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করবো৷
উল্লেখ্য, এর আগে গত ২৯ অক্টোবর রাতে দীর্ঘ ৩৫ বছর পর প্রকাশ্যে রাজনীতির ঘোষণা দেন শাখা ছাত্রশিবিরের নেতারা। এসময় এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে শাখা ছাত্রশিবিরের শীর্ষ ৩ নেতা প্রকাশ্যে আসেন৷