হলে প্রবেশের সময়সীমা বৃদ্ধির দাবিতে বাকৃবিতে বিক্ষোভ
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) মেয়েদের হলে প্রবেশের ওপর আরোপিত সান্ধ্যকালীন আইন বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের নারী শিক্ষার্থীরা। এসময় তারা দাবি আদায়ে উপাচার্যের বাসভবনের সামনেও অবস্থান নেন।
মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল থেকে নারী শিক্ষার্থীরা মিছিল বের করে। মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে এসে শেষ হয়।
এসময় তারা উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে এবং দাবি আদায়ে বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দিতে থাকেন।
জানা যায়, গত রোববার বাকৃবির ৫টি মেয়েদের হলের প্রভোস্ট স্বাক্ষরিত এক সান্ধ্যকালীন নীতিমালা প্রকাশ করা হয়। ওই নীতিমালায় গ্রীষ্মকালীন সময়ে রাত ৮টার মধ্যে এবং শীতকালীন সময়ে সন্ধ্যা ৭টার মধ্যে হলে প্রবেশের সময়সীমা বেধে দেয়া হয়। ফলশ্রুতিতে নারী শিক্ষার্থীরা আজ ওই নীতিমালার প্রতিবাদস্বরূপ বিক্ষোভ মিছিল ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করে।
বাকৃবির শিক্ষার্থী জান্নাতুল ফিজা বলেন, সান্ধ্যকালীন নীতিমালায় বলা হয়েছে সন্ধ্যা ৭টার মধ্যে মেয়েদের হলে ঢুকতে হবে কিন্তু বাকৃবির কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি যেখানে রাত ৮টা পর্যন্ত খোলা থাকে সেখানে কিভাবে নারী শিক্ষার্থীরা ওই নীতিমালা পালন করবে। প্রতিনিয়ত ক্যাম্পাসে মেয়েরা হয়রানির শিকার হচ্ছে, সমস্যায় পড়ছে, প্রক্টরিয়াল বডি সেগুলো বন্ধ না করে মেয়েদের নিরাপত্তার অজুহাত দেখিয়ে সন্ধ্যা ৭টার মধ্যে তাদের হলে প্রবেশ করতে বাধ্য করছে। নীতিমালায় আরেকটি বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে, কোনো শিক্ষার্থী তিনবারের বেশি দেরিতে হলে প্রবেশ করলে তার হলের সিট বাতিল করা হবে, যা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক। আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ে মেধার মাধ্যমে ভর্তি হয়েছি এবং হলে সিট পেয়েছি, প্রশাসন কিভাবে এমন নীতিমালা জারি করে আমাদের মেধাকে অবমূল্যায়ন করে তা আমার বোধগম্য নয়।
বাকৃবির আরেক শিক্ষার্থী আদিয়া সুলতানা বলেন, ক্যাম্পাসের নারী শিক্ষার্থীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। এমনকি হলে প্রবেশের ক্ষেত্রেও মেয়েরা বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন। সান্ধ্যকালীন সময়সীমা বৃদ্ধিকরণ, শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ এবং বৈষম্যহীন বাকৃবি নিশ্চিতের দাবিতে আমাদের এ অবস্থান কর্মসূচি।
এ বিষয়ে বাকৃবির প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল আলীম বলেন, বাকৃবির প্রক্টরিয়াল বডি সার্বক্ষণিক শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে কাজ করে যাচ্ছে। নীতিমালাটি নারী শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখেই করা হয়েছে, কারও অধিকার বা স্বাধীনতা খর্ব করার জন্য এটি করা হয়নি। লাইব্রেরির সময়ের বিষয়টি প্রশাসন বিবেচনা করে দেখবে। আগামী সপ্তাহের প্রথম দিকে উপাচার্য এ বিষয়ে বৈঠকে বসবেন বলে আমাদের জানিয়েছেন। ওই বৈঠকে প্রতি হল থেকে প্রতিনিধি দল উপস্থিত হয়ে তাদের সমস্যাগুলো জানাতে পারবে। তবে বলা যেতে পারে, সান্ধ্যকালীন নীতিমালাটি মূলত নারী শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার জন্যই করা হয়েছে এবং তা নিশ্চিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডিকে সাহায্য করতে হবে।