ইবিতে ফুটবল খেলা নিয়ে সংঘর্ষ, তিন শিক্ষার্থী আহত

  • ইবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তঃবিভাগ ও আন্তঃহল ফুটবল প্রতিযোগিতা-২০২৪ এর প্রথম কোয়ার্টার ফাইনালে এপ্লাইড কেমেস্ট্রি ও ইইই বিভাগের ম্যাচের টাইব্রেকারের সময় ধস্তাধস্তি হলে এপ্লাইড কেমেস্ট্রি বিভাগের সভাপতির গায়ে আঘাতের অভিযোগ উঠে। পরে বিষয়টি মীমাংসা করতে গেলে বিভাগের সামনে গিয়ে মারধর করে ইইই বিভাগের শিক্ষার্থীরা। এসময় লাঠিপেটায় এপ্লাইড কেমেস্ট্রি বিভাগের তিন শিক্ষার্থী আহত হন।

রোববার (৮ ডিসেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টায় ম্যাচ শেষে ফলিত বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি অনুষদের সামনে এই মারামারির ঘটনা ঘটে।

বিজ্ঞাপন

জানা যায়, দুপুর সাড়ে ১২ টায় দুই বিভাগের ট্রাইবেকারের সময় ফলিত রসায়ন ও কেমিকৌশল বিভাগের এক জুনিয়র গায়ের জামা খুলে নাচানাচি করছিল তখন ইইই বিভাগের সিনিয়র শিক্ষার্থীরা বিষয়টা দৃষ্টিকটু মনে করে সামনে তেড়ে আসে। একপর্যায়ে তর্কাতর্কির রূপ নেয় এবং ফলিত রসায়ন ও কেমিকৌশল বিভাগের সভাপতির গায়ে হাত লাগে। সেই ইস্যুকে কেন্দ্র করে দ্বিতীয় পর্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের ঝাল চত্বরে ফলিত রসায়ন ও কেমিকৌশল বিভাগের শিক্ষার্থী ইমন (১৮-১৯) ইইই বিভাগের শিক্ষার্থী শাওন সরকার (২২-২৩) উভয়ের মধ্যে মীমাংসা ও ক্ষমা চাওয়ার বিষয়ে পুনরায় তর্কাতর্কি বাঁধে। পরে বিভাগের অন্যান্য শিক্ষার্থীরা লাঠিসোঁটা নিয়ে মারামারি করে। এসময় কয়েকজন আহত হন। পরে প্রক্টরিয়াল বডির উপস্থিতিতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।

আহতরা হলেন, এপ্লাইড কেমেস্ট্রি এন্ড কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের ইমন, ১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের আশিকুর এবং ২১-২২ শিক্ষাবর্ষের রাকিবুল।

বিজ্ঞাপন

এপ্লাইড কেমেস্ট্রি এন্ড কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, খেলার মাঠে ধাক্কাধাক্কির মতো ঘটনা ঘটলেও যার যার মতো করে চলে গেছে। কিন্তু স্যারের ধাক্কা দেয়ার বিষয়ে মীমাংসা করতে যখন গেছিলাম। আমরা তাদের বলছিলাম যে ক্ষমা চাইতে তখন তারা উদ্যত আচরণ করে। প্রক্টর স্যার তাদের ডিপার্টমেন্টের বলে ক্ষমতা দেখায়। আমাদের ডিপার্টমেন্টে এসে ল্যাবে পর্যন্ত ঢুকে হুমকি দিয়ে যায়। কয়েকজনকে লাঠিসোঁটা নিয়ে আঘাত করে জখম করে দেয়। একটা অনুষদ থেকে অন্য অন্য অনুষদে মারতে আসার মতো কারো ইন্ধন আছে কিনা খতিয়ে দেখতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টরিয়াল বডি দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না দিলে আমরা পরবর্তী পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হবো।

এদিকে ইইই বিভাগের শিক্ষার্থীরা জানান, টাইব্রেকারে তারা গোল দেয়ায় ফলিত রসায়ন ও কেমিকৌশল বিভাগের শিক্ষার্থী সাইমুন ইসলাম মুন (২৩-২৪) প্রথমে শরীরের জামা খুলে ওদের সাইড থেকে আমাদের গ্রুপে এসে অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি দেখালে আমরা যারা সিনিয়র ছিলাম তারা কিছুটা উদ্যত হই। কারণ সে একসময় আমাদের বিভাগের জুনিয়র ছিল তবে কিছুদিন আগে মাইগ্রেশন হয়ে কেমিক্যালে গেছে। তাই আমাদের সিনিয়রদের সামনে নাচা-নাচি করাটা কেউ মেনে নিতে পারেননি। এখান থেকে ধাক্কা-ধাক্কি শুরু। কেউ ইচ্ছে করে স্যারকে ধাক্কা দেয়নি। ‘প্রক্টর স্যার আমাদের কেউ কিছু করতে পারবে না’ বলে তারা যে অভিযোগ আনছে তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। আর ডিপার্টমেন্টে প্রবেশ করিনি। আমরা জয়ী হওয়ার পর তাদের অনুষদ দিয়ে স্লোগান দিতে দিতে আসছিলাম। সিসিটিভি ফুটেজ দেখলে বুঝা যাবে আমরা কেউ তাদের বিভাগে প্রবেশ করছি কিনা।

এ বিষয়ে এপ্লাইড কেমেস্ট্রি বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. শরিফ মোঃ আল-রেজা বলেন, আমাদের ছেলেপেলে হেরে যাওয়ায় ওদের মন খারাপ ছিলো। ওদের এখানে চা বিস্কিট খাইতে দিয়ে বিভাগে গেছি। এর মধ্যে ওরা এসে আক্রমণ করছে আমাদের ছেলেদের উপর। তাদের হাতে লাঠিসোঁটা ছিলো। আমাদের টিচারদের উপর আক্রমণ করছে। আমাদের ছেলেদের মারছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইইই বিভাগের সভাপতি এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মোঃ শাহীনুজ্জামান বলেন, দোষ যে করুক না কেন শাস্তি অবশ্যই পাবে। কাল প্রক্টরিয়াল বডি দুই পক্ষের সাথে বসে সিদ্ধান্ত নিবে। উভয় পক্ষের ডকুমেন্টস সাবমিট করবে। লিখিত অভিযোগ দিলে পরবর্তী পদক্ষেপে যাওয়া যাবে।