গুপ্তহত্যা ও পিলখানা হত্যাকাণ্ডে গড়িমসির প্রতিবাদে জাবিতে বিক্ষোভ
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন শিক্ষার্থীর ‘গুপ্তহত্যা’ ও পিলখানা হত্যাকাণ্ড নিয়ে সরকারের গড়িমসির প্রতিবাদে বিক্ষোভ-মিছিল ও সমাবেশ করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষার্থীরা।
বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা এলাকায় শিক্ষার্থীরা জমায়েত করে সেখান থেকে মিছিল শুরু হয়ে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে পুনরায় বটতলা এলাকায় এসে শেষ হয়।
এসময় শিক্ষার্থীদের- পিলখানা হত্যার বিচার চাই; সুজন হত্যার বিচার চাই; বিপ্লবীরা রাস্তায় মরে, সরকার কি করে; আমার ভাই কবরে, খুনি কেন বাহিরে; আমার ভাই মরলো কেন, প্রশাসন কি করে; বিচার নিয়ে গরিমসি,মানি না মানবো না; ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা, হুশিয়ার-সাবধান; ভারতের দালালেরা, হুশিয়ার-সাবধান প্রভৃতি স্লোগান দিতে দেখা যায়।
বিক্ষোভ শেষে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে শিক্ষার্থীরা পিলখানা হত্যাকান্ড থেকে শুরু করে বিগত সরকারের আমলের সকল হত্যাকান্ডের বিচার দাবি করেন। এছাড়াও সমাবেশ থেকে এসব হত্যাকাণ্ডে জড়িত ব্যক্তিদের অতিসত্ত্বর গ্রেফতারের দাবি জানানো হয়েছে।
সংক্ষিপ্ত সমাবেশে সরকার ও রাজনীতি বিভাগের ৪৯তম ব্যাচের শিক্ষার্থী নজরুল ইসলাম নাইমের সঞ্চালনায় 'আধিপত্যবাদ বিরোধী মঞ্চ' এর আহ্বায়ক আনজুম শাহারিয়ার বলেন, পিলখানা হত্যাকাণ্ডের মধ্য দিয়ে এদেশে আধিপত্যবাদ, ভারতীয় আগ্রাসন শুরু হয়েছিল৷ বিপ্লব পরবর্তী সরকার এসে এই সরকার আজ শহীদদের রক্তের সাথে বেইমানিমূলক আচরণ করছে৷ অথচ এই সরকার এসব বিচার নিশ্চিত করার নামে গড়িমসি করছে ৷
'জাহাঙ্গীরনগর সংস্কার আন্দোলন' এর আহ্বায়ক ইয়াহিয়া জিসান, বিপ্লবের সাড়ে ৪ মাস পেরিয়ে গেলেও জুলাই বিপ্লবে আন্দোলনকারীদের হত্যাকারীদের বিচারের দাবিতে রাজপথে নামতে হচ্ছে এটা বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের জন্য লজ্জাজনক৷ বিডিআর হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িতদের বিচারের মুখোমুখি করতে হবে৷ বিডিআর হত্যাকাণ্ডের জন্য গঠিত কমিশন বাতিল করা হয়েছে৷ আমাদের দাবি বাতিলকৃত সেই কমিশন পুনরায় গঠন করতে হবে৷ হত্যাকাণ্ডের সাথে যুক্তদের অতিসত্ত্বর বিচারের আওতায় আনতে হবে এবং সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিত করতে হবে৷ এ সরকার জুলাই বিপ্লবে হত্যাকারীদের বিচারে নিশ্চিতের কাজ করতে না পারলে তাদের সরকারের গুরুত্বপূর্ণ পদ থেকে সরে আসা দরকার৷
বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের শিক্ষার্থী সুয়াইব হাসান বলেন, কোনো যুদ্ধ না, কোনো সংবাদ না, নিজ দেশের নিরাপদ একটি স্থানে ৫৭ জন দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারকে হত্যা করা হয়েছে, যা আমাদের জন্য অত্যন্ত গ্লানিকর। এ অমীমাংসিত বিচারগুলো যদি বিপ্লবউত্তর সরকার দ্রুত নিশ্চিত করতে না পারি তাহলে আন্দোলন, সংগ্রাম, ত্যাগ-তিতিক্ষা সব ব্যার্থ হয়ে যাবে। এটা অত্যন্ত দুঃখের যারা আমাদের ভাইদের শহিদ করেছে সেই ফ্যাসিস্ট, পতিত শক্তির হাত থেকে নিরাপত্তার জন্য এখনো বিপ্লবীদের এখানে এসে দাড়াতে হচ্ছে। এটা স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর চরম ব্যর্থতা।