প্রকৌশলীদের মিলনমেলায় রুয়েট ক্যাম্পাসে প্রাণের উচ্ছ্বাস

  • স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, রাজশাহী
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

পুনর্মিলনী উপলক্ষে বের করা হয় বর্ণাঢ্য র‌্যালি, ছবি: বার্তা২৪.কম

পুনর্মিলনী উপলক্ষে বের করা হয় বর্ণাঢ্য র‌্যালি, ছবি: বার্তা২৪.কম

গত বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) মধ্যরাত থেকে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি। শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) ভোরেও থেমে থেমে তা চলছিল। বেলা গড়াতেই হঠাৎ মেঘের ফাঁকে উঁকি দেয় সূর্য। পৌষের এমন বৃষ্টিস্নাত আলো ঝলমলে রোদ্দুর সকালে শত শত প্রকৌশলীর পদচারণায় মুখরিত হয়ে ওঠে রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (রুয়েট) ক্যাম্পাস। হাড় কাঁপানো শীতে শুনশান ক্যাম্পাসে ছড়িয়ে পড়ে প্রাণের উচ্ছ্বাস।

রুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের সাবেক-বর্তমান শিক্ষার্থীদের পুনর্মিলনে উৎসবের দ্বিতীয় দিন শুক্রবারও ক্যাম্পাসজুড়ে আড্ডা-গল্প আর স্মৃতিচারণায় হয়ে ওঠে মুখরিত। ১৯৬৫ সালে যাত্রা শুরু করা পুরকৌশল বিভাগের দু’দিনব্যাপী প্রথম পুনর্মিলনী শুরু হয় বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি)। প্রথম দিন উদ্বোধনী পর্ব, র‌্যালি আর আলোচনা সভায় কেটে গেছে। দ্বিতীয় দিনে মূলত স্মৃতি রোমন্থনে আবেগাপ্লুত হয়েছে সাবেক শিক্ষার্থীরা। সফল এসব প্রকৌশলীরা দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছেন নিজ নিজ কর্মক্ষেত্রে।

বিজ্ঞাপন

রুয়েট ক্যাম্পাস ঘুরে দেখা যায়, দীর্ঘদিন পর পুরোনো বন্ধুদের পেয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়ছেন তারা। গল্প শুরু করেছেন ক্যাম্পাস মাতিয়ে তোলার সেই সোনালি দিনগুলোর স্মৃতি নিয়ে। কেউ কেউ সঙ্গে নিয়ে আসা পরিবারকে নিজের বিদ্যাপীঠটি ঘুরিয়ে দেখাতে ব্যস্ত। স্মরণীয় মুহূর্ত ফ্রেমবন্দি করতেও ভুলছেন না তারা। চলছে ছবি তোলা আর সেলফিবাজি।

পুনর্মিলনীতে অংশ নিয়েছেন পুরকৌশল বিভাগের ৮০ সিরিজের (১৯৮০-৮১ সেশন) শিক্ষার্থী প্রকৌশলী রঞ্জন চক্রবর্তী। বর্তমানে তিনি রাজশাহী ইঞ্জিনিয়ারিং ওল্ড স্টুডেন্টস এ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক। তিনি বলেন, ‘রুয়েটে এ ধরনের প্রোগ্রাম আগে কখনো হয়নি। নতুন-পুরাতনদের মেলবন্ধন ঘটানোর এই পুনর্মিলনী ও অ্যালামনাইতে অংশ নিতে পেরে আনন্দবোধ করছি।’

বিজ্ঞাপন

পুনর্মিলনীতে অতিথি হিসেবে অংশ নিয়েছেন সাবেক শিক্ষার্থী ও বর্তমান ইঞ্জিনিয়ারিং স্টাফ কলেজের অধ্যাপক ড. আব্দুল হান্নান। তিনি বলেন, ‘আমরা যখন ছাত্র ছিলাম, তখন প্রতিবছরই এ ধরনের আয়োজন হতো। কিন্তু নানা কারণে এখন প্রতিবছর পুনর্মিলনী করা সম্ভব হয় না। এমন পুনর্মিলনী সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অব্যাহত রাখা দরকার।’

পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন রাসিক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন

রুয়েট উপাচার্য অধ্যাপক ড. রফিকুল ইসলাম সেখ বলেন, ‘অ্যালামনাইতে যারা অংশগ্রহণ করেছেন তারা দেশের বিভিন্ন দপ্তরে ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কর্মরত। তাদের বাস্তব অভিজ্ঞতা রয়েছে। যা এই পুনর্মিলনীর মাধ্যমে দুই প্রজন্মের মাঝে বিনিময় হচ্ছে। এই অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে আমরা বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার ক্ষেত্রে গুণগতমান আরও বৃদ্ধি করতে পারব। ইঞ্জিনিয়ারও স্ব স্ব কর্মক্ষেত্রে আপন মহিমায় উজ্জ্বল ভূমিকা রাখতে পারবে। আমি আশা করব- ভবিষ্যতে অন্য পুরোনো বিভাগগুলোও এ ধরনের অ্যালামনাই পুনর্মিলনীর মাধ্যমে রুয়েটকে আরও সমৃদ্ধির পথে নিয়ে যাবে।’

বৃস্পতিবার (২ জানুয়ারি) সকালে বেলুন, ফেস্টুন ও জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানরে উদ্বোধন করেন রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। পরে ক্যাম্পাসে নতুন-পুরাতনদের অংশগ্রহণে বর্ণাঢ্য র‌্যালি বের করা হয়। পরে রুয়েট মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় পুরকৌশল বিভাগের অ্যালামনাই গঠন করা হয়।

দ্বিতীয় দিনে দুপুর থেকে কেন্দ্রীয় মিলনায়তনে শুরু হয় স্মৃতিচারণ অনুষ্ঠান। যেখানে সাবকে ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা নিজেদের মধ্যে মেলবন্ধন ঘটান। এছাড়া দুই দিনব্যাপী আয়োজনে ছিল টেকনিক্যাল সেমিনার, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, আতশবাজি প্রজ্জ্বলনসহ নানা কর্মসূচি।