অধরাই থেকে গেল আবু ভাইয়ের শেষ স্বপ্ন

  • হাসান আদিব, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, রাজশাহী
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

হাসপাতালের বেডে আবু আহমেদ। গত সপ্তাহে তোলা ছবি, ছবি: বার্তা২৪.কম

হাসপাতালের বেডে আবু আহমেদ। গত সপ্তাহে তোলা ছবি, ছবি: বার্তা২৪.কম

মৃত্যুর আগে আবু আহমেদের শেষ ইচ্ছা ছিলো রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) আবারো 'আবুর ক্যান্টিন' চালু করা। আবুর ক্যান্টিনের ইতিহাসটুকু ভবিষ্যতের জন্য রেখে যেতে চেয়েছিলেন। আশঙ্কা করেছিলেন, হয়তো তা আর সম্ভব হবে না।

আবু ভাইয়ের সেই আশঙ্কাই সত্যি হল। অধরাই থেকে গেল তার শেষ স্বপ্ন। না ফেরার দেশে চলে গেলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের প্রিয় মুখ 'আবু ভাই'।

বিজ্ঞাপন

শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) সকালে নগরীর মতিহার থানার হনুফার মোড় এলাকায় নিজ বাড়িতে তিনি মৃত্যুবরণ করেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। বাদ আছর তার নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। তার মৃত্যুতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মাঝে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

৭৬ বছর পেরোনো আবু আহমেদ দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন রোগে ভুগছিলেন। ডায়াবেটিস, এ্যাজমা, হাইপ্রেসার, কিডনি অসুখসহ নানা রোগে আক্রান্ত ছিলেন তিনি। অসুস্থতা বেড়ে যাওয়ায় সর্বশেষ ১১ দিন ধরে তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। সেখান থেকে বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) হাসপাতাল থেকে বাড়িতে নিয়ে আসা হয় তাকে।

বিজ্ঞাপন

কান্নাজড়িত কণ্ঠে আবু আহমেদের ছেলে সেলিম আহমেদ বলেন, শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) সকালে হঠাৎ করে বাবার শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। তখন তার পাশে গেলে আমাকে তার পা টিপে দিতে বলেন। এসময় তিনি জোরে জোরে নিশ্বাস নিচ্ছিলেন। আমি পা টিপে দিচ্ছিলাম। এর কিছুক্ষণ পরেই আমার চোখের সামনে বাবা মারা যান।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কাছে একটি পরিচিত নাম ছিলেন আবু আহমেদ। সবাই ভালোবেসে ডাকেন 'আবু ভাই'। বিশ্ববিদ্যালয়ের থাকাকালীন তিনি সত্তর, আশি, নব্বই দশকের আন্দোলনের সাক্ষী হয়ে আছেন। চোখের সামনে দেখেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের নানা আন্দোলনের উত্থান ও পতন। শুধু আড্ডাই নয়, শিক্ষার্থীদের রাজনৈতিক-সাংস্কৃতিক আলাপ-আলোচনা ও পরিকল্পনার অন্যতম কেন্দ্র ছিল তার পরিচালিত আবুর ক্যান্টিন। ২০১৫ সালে ক্যান্টিন বন্ধ হয়ে যায়।

তিনি শুধু ক্যান্টিন বা খাবারের জন্য পরিচিত ছিলেন না। একজন উদার মানুষও ছিলেন। শিক্ষার্থীদের সহায়তা করেছেন নানাভাবে। আর্থিক সংকট থাকলে শিক্ষার্থীদের বিনা পয়সায় খাইয়েছেন। ছাত্র রাজনীতিতে জড়িত শিক্ষার্থীদের প্রিয় পাত্র ছিলেন এ মানুষটি। তাদের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে সাহায্য করতেন নানাভাবে।