রাবিতে শিক্ষক নিয়োগ: সিন্ডিকেটে পাসের পর হাইকোর্টে বাতিল
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ক্রপ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি বিভাগে তিন শিক্ষকের নিয়োগ সিন্ডিকেটে পাসের তিনদিন পর বাতিল ঘোষণা করে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট।
বুধবার ( ২৯ জানুয়ারি) শুনানি শেষে বিচারক মো. আশরাফুল কামাল ও রাজিক-আল-জলিলের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের দ্বৈত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
একই সঙ্গে ২০১৬ সালে দেওয়া বিভাগের শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী দরখাস্তকারীদের মধ্যে থেকে আগামী ৩০ দিনের মধ্যে শিক্ষক নিয়োগ দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
বাদীপক্ষের আইনজীবী ব্যারিস্টার জ্যোর্তিময় বড়ুয়া বলেন, ‘বিভাগটিতে শিক্ষক নিয়োগের জন্য ২০১৬ সালে একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছিল। সেখানে বিভাগের প্ল্যানিং কমিটি আবেদনের জন্য বিভিন্ন যোগ্যতা নির্ধারণ করেছিলেন। তবে তখন নিয়োগ হয়নি। পরবর্তীতে ২০১৯ সালে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নতুন করে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। বিভাগের প্ল্যানিং কমিটিকে না জানিয়েই প্রশাসন বিজ্ঞপ্তিতে কিছুটা পরিবর্তন করেছিল। তাই আদালত এই বিজ্ঞপ্তি ও নিয়োগ পাওয়া তিন শিক্ষকের নিয়োগ বাতিল ঘোষণা করেছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘২০১৬ সালে যেই বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছিল আদালত সেই বিজ্ঞপ্তিতে যারা দরখাস্ত করেছিলেন আগামী ৩০ দিনের মধ্যে তাদের নিয়োগ দেওয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন।’
এদিকে, শুনানি চলাকালীন আদালত বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষের আইনজীবীকে বলেছিলেন এ বিষয়ে রায় ঘোষণার পূর্বে প্রশাসন যেন কোনো কিছু প্রসিড না করে। তা সত্ত্বেও রোববার (২৬ জানুয়ারি) সকালে উপাচার্যের বাসভবনে শিক্ষক নিয়োগের ভাইভা বোর্ড শুরু হয়। ওইদিন সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৯৭তম সিন্ডিকেট সভায় তাদের নিয়োগের বিষয়টি চূড়ান্ত হয়। সভায় তিন সদস্য তাদের নিয়োগে বিরোধিতা করেন। এ ছাড়াও ভাইভা চলাকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কয়েকজন শিক্ষক এই নিয়োগকে ‘অবৈধ’ উল্লেখ করে তা বন্ধের দাবি জানান। নিয়োগপ্রাপ্ত ওই তিন শিক্ষকের নাম শামসুন্নাহার, মুখতার হোসেন ও রেজভী আহমেদ ভুঁইয়া।
জানতে চাইলে বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক সাইফুল ইসলাম এ বিষয়ে এখনও কিছু শোনেননি বলে প্রতিবেদককে জানান। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক এম এ বারীকে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি ধরেনি।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ৬ নভেম্বর তিনটি পদের বিপরীতে বিভিন্ন যোগ্যতা নির্ধারণ করে বিভাগের শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। ওই সময় ৩৮টি আবেদন জমা পড়ে। তবে ওই বিজ্ঞপ্তিতে নিয়োগ হয়নি। পরবর্তীতে গত বছরের ৩০ জুলাই নতুন করে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে উপাচার্য অধ্যাপক এম আব্দুস সোবহানের প্রশাসন। বিভাগের প্ল্যানিং কমিটিকে না জানিয়েই প্রভাষক পদে আবেদনের জন্য এগ্রিকালচারাল ক্যামেস্ট্রি নামে নতুন একটি বিষয় সেই বিজ্ঞপ্তিতে যুক্ত করা হয়। এর পরপরই হাইকোর্টে রিট করেন বিভাগের প্ল্যানিং কমিটির সদস্য অধ্যাপক আলী আসগর।
এরই প্রেক্ষিতে গত বছরের ২১ আগস্ট নতুন বিজ্ঞপ্তিতে শিক্ষক নিয়োগ কেন অবৈধ হবে না তা জানতে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। চলতি বছরের ১৫ জানুয়ারি শুনানি শেষ হয়।