বেরোবি ক্যাম্পাসে ফুলের মেলা
২০০৮ সালে উত্তরবঙ্গের একমাত্র পূর্ণাঙ্গ সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে যাত্রা শুরু করে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বেরোবি)। মায়াবী এই বিদ্যাপীঠকে সবুজ পত্রপল্লব দিয়ে সারা বছর সাজিয়ে রাখে ফুল-ফল, ঔষধিসহ বিভিন্ন জাতের বাহারি সব গাছপালা। ক্যাম্পাসের সবুজায়ন ও সৌন্দর্য বর্ধনে চলছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নানান উদ্যোগ। সম্প্রতি প্রশাসনিক ভবনের পূর্বাংশে করা হয়েছে নয়নাভিরাম ফুলের বাগান। যা উঁচু ভবন থেকে দেখলে মনে হবে যেন মাটিতে এক টুকরো ফুলের গালিচা বিছানো হয়েছে।
প্রশাসনিক ভবন ছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্ট্রাল লাইব্রেরী, একাডেমিক ভবনগুলোর আশে-পাশে, তিন আবাসিক হল, কেন্দ্রীয় জামে মসজিদসহ রাস্তার দু’ধারে বিভিন্ন প্রজাতির ফুলের সমারহ সত্যিই মনোমুগ্ধকর। চোখ রাখলেই মনে হবে এ যেন ফুলের এক স্বর্গরাজ্য। প্রহরীর মতো দাঁড়িয়ে থাকা গাছগুলোতে ঝাঁকে ঝাঁকে, স্তবকে-স্তবকে ফুল ফুটে আছে। কোনোটা গোলাপি, কোনোটা শ্বেত, কোনোটা যেন রক্তমাখা, আবার কোনোটা হলুদ। এ ফুলের মাঝেই কোথাও মৌমাছি, কোথাও ভ্রমর বাসা বেধেছে। বাতাসের সঙ্গে মন মাতানো ফুলের ঢেউ এবং সুরভীতে ছন্দময় হয়ে ওঠেছে বেরোবির পরিবেশ। তার মাঝে আবার বৃক্ষের সবুজ রঙের সমারহ।
ক্লাস-পরীক্ষার ব্যস্ততার মাঝে একটুখানি সময় পেলেই ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থীরা ছুটে আসেন প্রশাসনিক ভবনের সামনের ফুলের বাগানে। চলে গান-গল্প-আড্ডা-খুনসুটি আর ছবি তোলার হিড়িক। ছুটির দিন কিংবা একটু অবসর সময় পেলেই বেরোবির অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগ করতে কালক্ষেপণ করেন না ভার্সিটির আশেপাশের দর্শনার্থীরাও।
নগরীর মডার্ন মোড় থেকে ক্যাম্পাসে ঘুরতে আসা দর্শনার্থী আরিফুল ইসলাম বলেন, 'পড়াশুনা করেছি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে। তাই পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় খুব কাছে টানে। সরকারি চাকুরীর কারণে তেমন অবসর সময় পাইনা। একটুখানি সময় হলেই পরিবার-পরিজনকে নিয়ে ছুটে আসি বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সবুজ বৃক্ষ আর অপরূপ ফুলের দৃশ্য দেখে মন জুড়িয়ে যায়।'
বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী শফিউল ইসলাম বলেন, 'ক্যাম্পাসের সৌন্দর্য বর্ধনের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যে উদ্যোগ নিয়েছে তা সত্যিই প্রশংসার দাবিদার। তবে এসব সিজোনাল ফুলের পাশাপাশি কিছু পার্মানেন্ট ফুলের গাছ লাগানো হলে পুরো বছরজুড়ে তা ক্যাম্পাসের সৌন্দর্য বর্ধন করবে।'
সার্বিক বিষয়ে ক্যাম্পাস সৌন্দর্য্যকরণ কমিটির আহ্বায়ক ও বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. নাজমুল হক বলেন, উপাচার্য স্যারের পরামর্শক্রমে ক্যাম্পাসের সৌন্দর্য বর্ধনের জন্য বিভিন্ন প্রজাতির শীতকালীন ফুল লাগানো হয়েছে। এর পাশাপাশি কিছু স্থায়ী ফুলের গাছও লাগানো হবে যাতে করে পরবর্তীতে সেই জায়গাগুলো সহজেই চিহ্নিত করা যায়। ক্যাম্পাস পরিচ্ছন্নতাসহ ফুলের গাছ রোপণ করতে এখন পর্যন্ত সোয়া ২ লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে বলেও জানান তিনি।