'প্রযুক্তির ব্যবহার ছাড়া আধুনিক সাংবাদিকতা সম্ভব নয়'
প্রযুক্তির ব্যবহার ছাড়া আধুনিক সাংবাদিকতা সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণমাধ্যম ও সাংবাদিকতা বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ও জাতীয় তথ্য কমিশনের সাবেক প্রধান তথ্য কমিশনার ড. মো. গোলাম রহমান।
তিনি বলেন, 'সাংবাদিকতা প্রশিক্ষণের একটি নির্দিষ্ট লক্ষ্য থাকা বাঞ্ছনীয়। আজ নৈতিকভাবে সাংবাদিকতার চর্চা অনেক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। শিক্ষার্থীরা গণমাধ্যমের কন্টেন্ট তৈরি করতে পারে। এদিকে নারী সাংবাদিকদের প্রতি প্রাতিষ্ঠানিক দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে হবে। আমরা লক্ষ্য করি যে সাম্প্রতিক গণমাধ্যম অধ্যয়নে সাংবাদিকদের নৈতিকতার শিক্ষার ওপর ততটা গুরুত্ব দেওয়া হয় না।'
রোববার (২ জানুয়ারি) সকাল ৯টায় বাংলাদেশ একাডেমি ফর রুরাল ডেভেলপমেন্টের (বার্ড) ময়নামতি মিলনায়তনে আয়োজিত 'নেটওয়ার্কিং কনফারেন্স অন জার্নালিজম এডুকেশন কানেক্টিং টু দ্যা প্রফেশনালস' শীর্ষক কনফারেন্সে তিনি এসব কথা বলেন।
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ এবং জার্মানি ভিত্তিক ডয়েচে ভ্যালি একাডেমি যৌথভাবে এ কনফারেন্স আয়োজন করে।
কনফারেন্সে একটি প্ল্যানারি সেশন ও দু'টি টেকনিক্যাল সেশনে আলোচকরা বাংলাদেশের গণমাধ্যমের বর্তমান অবস্থা ও ভবিষ্যৎ করণীয় সম্পর্কে আলোচনা করেন।
ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টসের গণমাধ্যম অধ্যয়ন ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. আবদুল কাবিল খান মোবাইল জার্নালিজমের ব্যবহার, কৌশল ও প্রয়োগ নিয়ে কথা বলেন।
তিনি মোবাইল জার্নালিজমের কন্টেন্ট তৈরি, শট নেওয়া ও সম্পাদনার বিভিন্ন দিকের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। তিনি বলেন, 'সম্পাদনার ক্ষেত্রে যেকোনো ভিডিও কন্টেন্টের প্রথম তিন সেকেন্ড বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়া কন্টেন্ট বা টেক্সটের সাইজের বিষয়টির দিকেও লক্ষ্য রাখতে হবে। একটি ভিডিও স্টোরি বোঝাতে অন্তত ছয়টি শট জরুরি। যথাযথভাবে ভিডিও আপলোড করতেও জানতে হবে সাংবাদিকদের।'
এতে সারাবাংলা ডটনেটের নির্বাহী সম্পাদক মাহমুদ মেনন খান ও অনলাইন মাল্টি মিডিয়া বার্তা২৪.কমের আউটপুট এডিটর শিমুল সুলতানাসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলো থেকে শিক্ষক ও বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় গণমাধ্যমগুলোর শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তিত্বরা অংশ নেন।
ডয়েচে ভ্যালি একাডেমির পলিসি অ্যান্ড কনসেপ্ট এক্সপার্ট উডো প্রেনজেলের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আলোচক হিসেবে ড. মো. গোলাম রহমান ও ড. আবদুল কাবিল খান ছাড়াও ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টসের গণমাধ্যম ও সাংবাদিকতা বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক জুড ডব্লিউ. আর. জেনিলো, দ্য নিউইয়র্ক টাইমসের বিশেষ প্রতিনিধি ও বৈশাখী টিভির কনসালট্যান্ড জুলফিকার আলি মানিক, প্রথম আলোর সাবেক নিউজ এডিটর শাহেদ মোহাম্মদ আলী, ডাটাফুলের প্রজেক্ট লিড পলাশ দত্ত, ডি ডব্লিউ একাডেমির কনসালট্যান্ট ওলগা কিসেলমান উপস্থিত ছিলেন।
পাশাপাশি 'মোবাইল জার্নালিজম' ও সাংবাদিকতায় প্রযুক্তির ব্যবহার নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। গণমাধ্যমের শিক্ষক ও পেশাদার ব্যক্তিদের মধ্যে সুন্দর সম্পর্ক গড়াই এ আয়োজনের মূল লক্ষ্য।
বিকেলে কনফারেন্সের শেষ অধিবেশনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত আসতে পারেননি কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. এমরান কবীর চৌধুরী । অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে ছিল মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক পরিবেশনা।