বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি’র শিক্ষার্থীরা পাবেন ১০০ ল্যাপটপ

  • নিউজ ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক/ ছবি: সংগৃহীত

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক/ ছবি: সংগৃহীত

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক বলেছেন, সরকার তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ক্ষেত্রে নীতিগত সহায়তা ও পরিবেশ তৈরির উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। প্রয়োজনে সার্বিক সহায়তা দান করবে।

এ সময় তিনি নতুন উদ্ভাবক উদ্যোক্তাদের জন্য সরকারের ১০০ কোটি টাকা ও গবেষণা কর্মের জন্য ৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ রয়েছে বলে জানান।

বিজ্ঞাপন

এ প্রসঙ্গে প্রতিমন্ত্রী আইসিটি বিভাগ কর্তৃক দুই হাজার ৪০০ জন প্রতিবন্ধী মেধাবীকে একটি করে ল্যাপটপ প্রদানের কথা উল্লেখ করেন। তিনি বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটির ১০০ জন দরিদ্র কিন্তু মেধাবী শিক্ষার্থীকেও একটি করে ল্যাপটপ প্রদানের ঘোষণা দেন বলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।

সম্প্রতি বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি (বিইউ) এর স্টার্টআপ অ্যাসিলারেটর কর্তৃক ‘মেকিং সেন্স অব বিগ ডাটা’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা জানান। বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান কাজী জামিল আজহারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের জনাব আ. বারি।

বিজ্ঞাপন

অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন লাইট ক্যাসেল পার্টনার্স এর প্রধান নির্বাহী বিজন ইসলাম। সেমিনারে আরও বক্তব্য রাখেন প্রকল্প পরিচালক ও অতিরিক্ত সচিব সৈয়দ মজিবুর হক এবং বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের পরিচালক (প্রশাসন) আনত সাইফুল ইসলাম। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন বিইউ’র স্টার্টআপ অ্যাসিলারেটর-এর নির্বাহী উপদেষ্টা টিনা এফ জাবিন।

অনুষ্ঠানে বিইউ’র ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষ কামরুল হাসান, রেজিস্ট্রার ব্রি. জে. মো. মাহবুবুল হক (অব.) ও পরিচালক ইঞ্জি. কাজী তাইফ সাদাত, বিভিন্ন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান, স্টার্ট আপসহ বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্ন ও সে স্বপ্ন বাস্তবায়নে তার আইসিটি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের পরিকল্পনা ও অক্লান্ত কর্মদ্যোগ এবং তা বাস্তবায়নে আইসিটি বিভাগের গৃহীত বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের কথা উল্লেখ করেন পলক। তিনি ২০২৩ সালের মধ্যে আইসিটি খাতে পাঁচ বিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় ও ১০ লক্ষ কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে সরকারের চলমান কর্মকাণ্ডের বিষয়টি সেমিনারে তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, রংপুরে আইসিটি পার্ক ছাড়াও দেশে আরও ২৮টি পার্ক নির্মিত হচ্ছে। প্রতিমন্ত্রী আইসিটি ক্ষেত্রে বর্তমান সরকারের বিগত ১২ বছরে গৃহীত বিভিন্ন মেগা প্রকল্পসহ সার্বিক উন্নয়নের সার্বিক চিত্র তুলে ধরেন ও আইসিটি ক্ষেত্রে অপার সম্ভাবনার যে সুযোগ সরকার সৃষ্টি করছে তা গ্রহণের জন্য সবার প্রতি আহবান জানান।

তিনি বলেন, স্টার্টআপ অ্যাসিলারেটর প্লাটফর্ম নতুন প্রজন্মের স্বপ্ন পূরণের প্লাটফর্ম। এ প্রসঙ্গে তিনি ছয় বছর পূর্বে বিইউতে দেশের প্রথম থ্রিডি প্রিন্টার ল্যাবের উদ্বোধনের কথা স্মরণ করে বলেন, স্টার্টআপ অ্যাসিলারেটর এর মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে আগ্রহী সকল শিক্ষার্থীকে উদ্ভাবক ও উদ্যোক্তা করার কার্যক্রম বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটিই প্রথম শুরু করেছে। এক্ষেত্রে তিনি বিইউ’র ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যানের অগ্রণী ভূমিকা গ্রহণের জন্য ধন্যবাদ জানান।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘বিইউ সময়ের আগে ভাবে, সময়ের আগে বলে’। বিইউ’র উদ্ভাবনী পণ্য বাংলাদেশকে পরিবর্তন করে দিতে পারবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

অনুষ্ঠানে আইসিটি প্রতিমন্ত্রী বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটিতে ডাটা অ্যানালাইসিস ল্যাব প্রতিষ্ঠা করার ঘোষণা দেন ও এখানে শুধু বিইউ’র ছাত্র-শিক্ষক নয়, অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষকও এটি গবেষণার কাজে ব্যবহার করতে পারবে বলে উল্লেখ করেন। এছাড়া এ ল্যাবে উদ্ভাবিত গবেষণালব্ধ পণ্য বাজারজাতকরণেও আইসিটি বিভাগ ব্যবস্থা নেবে মর্মে ঘোষণা দেন।

অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপক জনাব আ. বারি ডাটা, এর ধরণ, ডাটা বিজ্ঞান, প্রক্রিয়াকরণ, সমস্যা সমাধানে এর ব্যবহার, বৃহৎ ডাটা’র, পরিমাণ, গতি, বৈচিত্র্য, নির্ভুলতা ও এর মূল্য এর উপর বিষদ আলোচনা করেন। সর্বক্ষেত্রে ডাটা’র ব্যবহার ও ভবিষ্যৎ ঘটনা প্রবাহ ও পরিবর্তন অনুধাবনে গুরুত্বের কথা উল্লেখ করেন। ডাটা সংগ্রহ, বিশ্লেষণ, ক্ষমতা উদ্যোক্তাদের কীভাবে সহায়তা করবে এবং দেশ ও পৃথিবীর পরিবর্তনে কী ভূমিকা রাখবে তা তিনি স্পষ্ট করেন।

অতিথি বক্তা জনাব বিজন ইসলাম সহজ, পাঠাও, বিকাশ এর সূচনা ও উত্থানে ডেটার ব্যবহারের উপর দৃষ্টিপাত করে ডেটার সঠিক ব্যবহার বা প্রয়োগ বাংলাদেশকে কোথায় নিয়ে যেতে পারে তার ধারনা দেন। উদ্যোক্তাদের বিশ্লেষণ ও ব্যবহারের পরামর্শ দেন, প্রকল্প পরিচালক।

সৈয়দ মজিবর হক তার বক্তব্যে উদ্যোক্তা তৈরি করতে হলে বৃহৎ ডেটা বিশ্লেষণের কৌশল জানা প্রয়োজন উল্লেখ করেন। তিনি ১২০ জন উদ্যোক্তাদেরকে ইতোমধ্যে আর্থিক সুবিধা প্রদান করা হয়েছে ও সব মিলিয়ে ১০০০ জন উদ্যোক্তাকে আর্থিক অনুদান প্রদান করা হবে উল্লেখ করেন। তিনি ৫০ কোটি টাকা উদ্যোক্তাদের গবেষণার ক্ষেত্রে বিশ^বিদ্যালয় পর্যায়ে কীভাবে ব্যয় করা হবে সে বিষয়ে সহায়তা দেয়ার জন্য বিশ^বিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনকেও এগিয়ে আসার আহবান জানান।

হাইটেক পার্কের পরিচালক (প্রশাসন) জনাব শফিকুর রহমান বলেন, হাইটেক কর্তৃপক্ষ ভৌত অবকাঠামো নির্মাণের মাধ্যমে শুধু হাইটেক, সফটওয়্যার ও টেকনোলজি পার্কের মত সুবিধা সৃষ্টি করছে তা নয়। ছাত্রছাত্রী ও শিক্ষক গবেষণা করার জন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ল্যাব করে দিচ্ছে। বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটিতেও ইনোভেশন ল্যাব করা হবে এবং উদ্যোক্তারা তা ব্যবহারের সুযোগ পাবে।

সেমিনারের শেষ পর্যায়ে আকর্ষণীয় প্রশ্নোত্তর পর্বে উদ্যোক্তা ও শিক্ষার্থীদের প্রশ্নের জবাব দেন সেমিনারের মূল প্রবন্ধ উপস্থাপক জনাব আ. বারি ও অতিথি বক্তা জনাব বিজন ইসলাম।