বিশ্বে ‘অভিবাসন’ খরচে শীর্ষে বাংলাদেশ

  • ঢাবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

আরসি মজুমদার মিলনায়তনে সেমিনার/ ছবি: বার্তা২৪.কম

আরসি মজুমদার মিলনায়তনে সেমিনার/ ছবি: বার্তা২৪.কম

বাংলাদেশি শ্রমিকদের বিদেশ যাওয়ার পুরো প্রক্রিয়াটা দালালদের হাতে নির্ভরশীল।  বিদেশ গমনেচ্ছু একজন ব্যক্তিকে পদে পদে দালালদের কাছে ধরনা দিতে হয়। আবেদন প্রক্রিয়া থেকে শুরু করে পাসপোর্ট, ভিসা খরচ, স্বাস্থ্য পরীক্ষা, পুলিশ ক্লিয়ারেন্সসহ গুনতে হয় অনেক ধরনের খরচ। যেটা বিশ্বের অন্যান্য দেশের ক্ষেত্রে কখনোই দেখা যায় না। তাই বিদেশ গমনেচ্ছু একজন বাংলাদেশিকে বিশ্বের সর্বোচ্চ মাইগ্রেশন খরচ দিতে হয়।

সোমবার (৪ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরসি মজুমদার মিলনায়তনে ইকোনমিকস স্টাডি সেন্টার কর্তৃক আয়োজিত ‘দ্য কস্ট অব মাইগ্রেশন: অভারসিস ইমপ্লয়মেন্ট সিনারিও ফর বাংলাদেশ’ শীর্ষক শিরোনামে আয়োজিত সেমিনারে এসব তথ্য দেন বক্তারা।

বিজ্ঞাপন

সেমিনারে অংশ নেন বাংলাদেশ পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের নির্বাহী প্রধান রাহনুমা সালাম খান, প্রোগ্রাম হেড ব্র্যাক মাইগ্রেশন শরিফুল হাসান, পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের পরিচালক ড এম এ রাজ্জাক প্রমুখ।

অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. সেলিম রায়হানের উপস্থাপনায় অনুষ্ঠানে মুল বক্তব্য দেন রাহনুমা সালাম খান। তিনি বলেন, গত বিশ বছর ধরে বাংলাদেশের প্রেক্ষিতে মাইগ্রেশন বিষয়টা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এটি আমাদের উন্নয়নকে সাহায্য করে।

বিজ্ঞাপন

বিশ্বব্যাংকের উদ্ধৃতি দিয়ে এই কর্মকর্তা বলেন, বাংলাদেশি শ্রমিকদের বিদেশ যাওয়ার জন্য সর্বোচ্চ খরচ দিতে হয়। বাংলাদেশি শ্রমিকদের গড়ে সাড়ে সাত লাখ টাকা খরচ দিতে হয়, যা সরকারের বেঁধে দেওয়া খরচের ৪৫০ ভাগ বেশি। সহযোগিতার নামে বিভিন্ন এজেন্সি লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়। ভিসা খরচ, মেডিকেল, পুলিশ ক্লিয়ারেন্স, ইন্স্যুরেন্স ক্লিয়ারেন্স, ল্যাংগুয়েজ ট্রেইনিং, ওয়েলফেয়ার ফিসের নামে লাখ লাখ টাকা যায় দালালদের কাছে।

শরিফুল হাসান বলেন, যেখানে অফিসিয়ালি ভারত, নেপালের শ্রমিকরা পারে ৭০ হাজার টাকায়, সেখানে আমাদের লাগে প্রায় ৪ লক্ষ টাকা। সবচেয়ে বেশি খরচ করে কম আয়ে বিদেশে যাচ্ছে একমাত্র বাংলাদেশি শ্রমিক।

তিনি বলেন, অনেক সময় সাত লাখ টাকার বিনিময়ে একজন বিদেশে দু’বছর থাকার অনুমতি পান। কিন্তু এ সময়ে তার মাইগ্রেশন খরচটাও ওঠে না। ফলে তিনি আরও বেশিদিন থাকতে পালিয়ে বেড়ান, জেলে যান।

তিনি বলেন, ১ কোটিরও বেশি মানুষ বিদেশে থাকেন। প্রতিবছর ৫০ হাজার মানুষকে এক কাপড়ে (শূন্য হাতে) দেশে ফিরতে হয়।

সমাধানে নানা ধরনের উদ্যোগ নেওয়ার আহবান জানিয়ে ড. এম এ রাজক বলেন, সমস্যা একার বাংলাদেশের নয়, এক্ষেত্রে মধ্যপ্রাচ্য তথা সৌদি আরব, কাতারকেও এগিয়ে আসতে হবে। বাংলাদেশকে শ্রমিকদের দক্ষতা বাড়াতে হবে, দালাল সিস্টেমের উৎখাত করতে হবে, এজেন্সিগুলোকে জবাবদিহিতার আওতায় আনতে হবে। একই সঙ্গে প্রবাসীদের সঠিক ডেটা সংরক্ষণ করতে হবে।

অনুষ্ঠান শেষের দিকে প্রশ্নোত্তর পর্ব অনুষ্ঠিত হয়। যাতে অংশ নেন সেমিনারে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা।