জাবি উপাচার্যকে অপসারণের দাবিতে ফের বিক্ষোভ
উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলামকে অপসারণের দাবিতে আবারো বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগরের আন্দোলনকারী শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুর দেড়টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞান অনুষদ থেকে মিছিলটি শুরু হয়ে ক্যাম্পাসের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক সমূহ প্রদক্ষিণ করে নতুন রেজিস্ট্রারে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মধ্যে দিয়ে শেষ হয়।
সমাবেশে বক্তারা দুর্নীতির দায়ে অধ্যাপক ফারজানা ইসলামকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অপসারণের দাবি জানান। এছাড়া শীঘ্রই তদন্তের মাধ্যমে দুর্নীতির সঙ্গে জড়িতদেরকে শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানান তারা।
সমাবেশে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার পরিষদের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি আরমানুল ইসলাম খান বলেন, ‘আন্দোলনের একটা সময় যখন আমরা উপাচার্যের বাসভবন ঘেরাও করি তখন সেখানে আমাদের ওপর ন্যাক্কারজনকভাবে হামলা করা হয়েছিল। এখনও সেটার কোনও বিচার হয়নি। রাষ্ট্র যখন দেখেছে জাহাঙ্গীরনগরে দুর্নীতি হয়েছে তখন বলেছে আমাদের কাছে এ বিষয়ে খবর এসেছে, আমরা দুর্নীতির তদন্ত করব, কিন্তু রাষ্ট্র এখনও চুপ আছে। সরকার দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেছে। আমরা চাই সরকারের জিরো টলারেন্স যেন জাহাঙ্গীরনগরে এসে থমকে না দাঁড়ায়।’
বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল রনি বলেন,‘ জাহাঙ্গীরনগরের মেগাপ্রজেক্টে দুর্নীতির ঘটনায় সরকার মুখে যে নির্লিপ্ততার কুলুপ এটেছে তার ধারা অব্যাহত থাকলে এই প্রশ্ন অবধারিতভাবেই সামনে আসে যে, ফারজানা ইসলাম যা করেছেন তা করবার জন্যেই তাকে এই পদে বসানো হয়েছে কিনা।’
জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক সোহানুর রশীদ মুন গাজী বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা করতে আসে, তাদের একমাত্র কাজ আন্দোলন করা নয়। সেখানে আমাদেরকে দিনের পর দিন অন্যায়ের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে যেতে হচ্ছে। এটা খুবই দুঃখজনক যে সরকারের কাছে আমরা তদন্তের সকল প্রমাণ দেয়ার পরও সেটার কোনো অগ্রগতি হচ্ছে না। আমরা আশা করব সরকার বিষয়টি আমলে নিয়ে এর দ্রুত সুরাহা করবে।’
সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক শোভন রহমান বলেন, ‘জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে যে দুর্নীতি হয়েছে সেটা সবাই জানে। তাছাড়া দুর্নীতির তদন্তের জন্য আমরা যথেষ্ট প্রমাণ উপস্থাপন করেছি কিন্তু সরকার সেখানে তদন্ত না করে নিশ্চুপ হয়ে আছে। যদি তদন্ত না করা হয় তাহলে আমরা কঠোর আন্দোলনের দিকে ধাবিত হব।’
প্রসঙ্গত, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতর উন্নয়নের লক্ষ্যে ১৪৪৫ কোটি টাকার অনুমোদন দেয় একনেক। এরপর থেকে মাস্টারপ্ল্যানের পুনর্বিন্যাস, টেন্ডারে আহ্বানে অস্বচ্ছতাসহ নানা অভিযোগ তুলে আন্দোলন শুরু করেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের একটি অংশ। পরবর্তীতে নানা কর্মসূচির মধ্যে দিয়ে উপাচার্য অপসারণের এক দাবিতে আসেন তারা।