আগরতলায় অনির্দিষ্টকালের জন্য পণ্য রফতানি বন্ধ
ব্রাহ্মণবাড়িয়া: ত্রিপুরার আগরতলা বন্দরের সিএন্ডএফ এর ব্যবসায়ীদের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে বাংলাদেশ থেকে নেয়া বিভিন্ন পণ্য বুধবার (৬ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে আটকে দিয়েছে সেদেশের ব্যবসায়ীরা। এ সময় আগরতলা স্থলবন্দরে আটকা পড়ে বাংলাদেশ থেকে রফতানি হওয়া মাছসহ বিভিন্ন পণ্য।
ইতোমধ্যে প্রায় ২২ লাখ টাকার মাছ পচে নষ্ট হয়ে গেছে। এরই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা বৃহস্পতিবার সকাল থেকে মাছ রফতানি বন্ধ রাখেন। অন্যান্য পণ্য সামগ্রী বন্দরে আগে থেকেই আটকে থাকায় সেগুলো আগরতলায় যায়। কিন্তু আগামী শনিবার সকাল থেকে মাছসহ সকল পণ্য রফতানি অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছে আখাউড়া আমদানি রফতানিকারক অ্যাসোসিয়েশনের নেতারা। তবে এ সময় পাসপোর্টধারী যাত্রী পারাপার স্বাভাবিক থাকবে।
আখাউড়া স্থলবন্দরের বিভিন্ন ব্যবসায়ীরা জানান, আগরতলায় বিজিবি ও কংগ্রেস পন্থী ব্যবসায়ীদের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলছিল আগে থেকেই। পাশাপাশি আগরতলা আমদানি-রফতানিকারক অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক খোকন ভৌমিকের সঙ্গেও তার পার্টনারদের আর্থিক লেনদেন নিয়ে ঝামেলা চলছে।
এরই মধ্যে খোকন ভৌমিক ব্যবসায়ীক কাজে বাংলাদেশে চলে আসেন। এতে করে পার্টনাররা ক্ষিপ্ত হয়ে বুধবার সকালে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে তালা লাগিয়ে দেন। পাশাপাশি বাংলাদেশ থেকে আমদানি করা মাছ, পাথর ও তুলাসহ বিভিন্ন পণ্য বন্দরের প্রধান ফটকে আটকে দেন।
এতে করে বুধবার সকাল সাড়ে ৭টায় প্রবেশ করা প্রায় ২২ লাখ ৫ হাজার ৯শ টাকার মাছ অনুরোধ করে সন্ধ্যা ৭টার দিকে ছাড়িয়ে নেন আগরতলার ব্যবসায়ীরা। তবে সবগুলো মাছ পচে নষ্ট হয়ে গেছে। পরে অন্যান্য পণ্যও ছাড়িয়ে নিয়ে যায় ব্যবসায়ীরা। এতে করে বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। বুধবার ও বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত বন্দরে আটকে থাকা সকল পণ্য পারাপার করা হয়েছে।
ব্যবসায়ীরা জানান, শনিবার সকাল থেকে আগরতলায় রাজনৈতিকসহ সকল ঝামেলা শেষ না হওয়া পর্যন্ত অনির্দিষ্টকালের জন্য মাছসহ সকল পণ্য রফতানি বন্ধ রাখবেন। এ বিষয়ে আগরতলার ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা চিঠি দিয়েছেন।
আখাউড়া স্থলবন্দরের সিএন্ডএফ ব্যবসায়ী মো. শাহনেওয়াজ মিয়া সানু বলেন, ‘বুধবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে ১০ হাজার ৪৯০ কেজি মাছ আখাউড়া বন্দর হয়ে আগরতলায় পৌঁছে। বিভিন্ন ঝামেলার পর অনুরোধের কারণে সন্ধ্যায় মাছগুলো ছাড়িয়ে নেয় সে দেশের ব্যবসায়ীরা। তবে সব মাছ পচে প্রায় ২২ লাখ ৫ হাজার ৯শ টাকার ক্ষতি হয়। এখন তারা আমাদের পেমেন্ট না দিলে অনেক লোকসান গুনতে হবে।’
আখাউড়া স্থলবন্দরের আমদানি-রফতানিকারক অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘তাদের ঝামেলার জন্য এখন আমাদের পণ্য আটকে দিয়েছে। এই অবস্থা চলতে থাকলে আমরা আর্থিকভাবে চরম ক্ষতিগ্রস্ত হব। তাই সে দেশের সকল ঝামেলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত শনিবার সকাল থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা মাছসহ সকল পণ্য রফতানি বন্ধ রাখবে। তবে এ সময় পাসপোর্টধারী যাত্রী পারাপার স্বাভাবিক থাকবে।’
আখাউড়া স্থলবন্দরের কাস্টমস সুপারিনটেনডেন্ট শান্তি বরণ চাকমা বলেন, ‘আগরতলার ব্যবসায়ীদের মধ্যে দ্বন্দ্বের কারণে এই সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। আমাদের দেশের কিংবা তাদের দেশের কাস্টমসে কোনো সমস্যা নাই। আগরতলার ব্যবসায়ীদের ঝামেলা শেষ হলেই আবারো হয়তো সব ধরনের আমদানি রফতানি স্বাভাবিক হবে।’