হয়তো টেলিফোনের মতো বিদ্যুৎও হবে তার বিহীন
ভবিষ্যতে হয়তো বিদ্যুতের জন্য তারের দরকার হবে না। টেলিফোনের মতো বিদ্যুৎকেও তার বিহীন করার গবেষণা এগিয়ে চলছে বলে মন্তব্য করেছেন সাবেক মূখ্যসচিব আবুল কালাম আজাদ।
রোববার (২০ ডিসেম্বর) এনার্জি এন্ড পাওয়ার আয়োজিত “ এনার্জি সেক্টরের ৫০ বছরের অর্জন” শীর্ষক ভার্চুয়াল সেমিনারে তিনি এমন মন্তব্য করেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন এনার্জি এন্ড পাওয়ারের এডিটর মোল্লাহ আমজাদ হোসেন।
আবুল কালাম আজাদ বলেন, সঞ্চালন লাইন নিয়ে অনেক চিন্তিত। তবে ভবিষ্যতে হয়তো এই তারের আর প্রয়োজন নাও পড়তে পারে। সে জন্য উদ্ভাবনী ওয়েতে চিন্তা করতে হবে। আমাদের অনেক ঘাটতি আছে তারপরও সবচেয়ে কমদামে বিদ্যুৎ দিতে পারছি। তবে দক্ষতা বাড়ানো দরকার যাতে আরও সাশ্রয়ী মূল্যে বিদ্যুৎ দিতে পারি। ভুল হবে, ভুল সংশোধন হবে রিফর্ম ক্রমাগত চলছে, চলবে।
বিদ্যুতের ব্যবহার না বৃদ্ধি প্রসঙ্গে বলেন, প্রধান কারণ হচ্ছে এনার্জি এফিসিয়েন্সি। আগে যেখানে ১০০ ওয়াটের বাল্ব জ্বলতো এখন ৫ ওয়ার্ট হলেই যথেষ্ট হচ্ছে। ইউএন হিউম্যান ইনডেক্সে পাকিস্তানকে পেছনে ফেলে কয়েকধাপ উপরে উঠে এসেছে বাংলাদেশ। এতে বিদ্যুৎ ভালো ভূমিকা রেখেছে।
প্রাইভেট পাওয়ার জেনারেশন পলিসি। বিশেষ আইন ভালো ভূমিকা রেখেছে। অনেকে সমালোচনা করেন এখন আর এটির প্রয়োজন নেই। আমি বলি প্রয়োজন রয়েছে। সোলার হোমস সিস্টেম হতে পারে রেল স্টেশন, রেললাইনের ফাঁকা জায়গা, বাসটার্মিনাল ও রাস্তাগুলোর উপর।
তিনি বলেন, বাপেক্সের বেশি সক্ষম অর্জনের সুযোগ ছিল। বাপেক্স সরকারি স্কেলে বেতন নিতে আগ্রহী। ওনারা কেনো সরকারি স্কেলে থাকতে চান আমি জানি না।
সামিট গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আজিজ খান বলেন, যেখানে গণতন্ত্র ও মুক্তবাজার অর্থনীতি রয়েছে, সেখানে দ্রুত উন্নয়ন হয়। বাংলাদেশে দু’টি বিদ্যমান। যে কারণে দ্রুত উন্নয়ন হচ্ছে। গত ১২ বছরে ৮০ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে প্রাইভেট সেক্টর। এটি বিশাল অর্জণ। শিল্পায়নের অন্তরায় ছিল জমি। ইকোনমিক জোনগুলো হলে আরও অনেক বেশি বিদ্যুতের প্রয়োজন হবে। আমি গ্যাস টু পাওয়ারে থিউরিতে বিশ্বাসী। সব যানবাহন সিএনজিতে যেতে হবে। সেটি নিজেদের গ্যাস হোক আর আমদানি হোক। গভীর সমুদ্রে গ্যাস উত্তোলনে ৭ ডলার খরচ পড়ছে। অন্যদিকে আমদানি করলে যদি কম দামে পাই। গভীর সমুদ্রে থেকে গ্যাস উত্তোলন অর্থনৈতিকভাবে ফিজিবল কিনা, ভেবে দেখতে হবে।
ইপিসি ঠিকাদার প্রশ্নে বলেন, আমরা যদি নিজেরা করি তাহলে ৩০ শতাংশ ট্যাক্স দিতে হয়। বিদেশি কোম্পানি করলে তাকে দিতে হয় না। নিজেরা না করে দেশীয় ঠিকাদার নিয়োগ দিলে ৩৫ শতাংশ বেশি দিতে হয়। এখানে সমতা আনা দরকার।
বিপিসি ও পেট্রোবাংলার সাবেক চেয়ারম্যান মোক্তাদির আলী বলেন, বাপেক্সকে সক্ষম করার কথা বলা হচ্ছে। কিন্তু বাপেক্সকে সক্ষম হচ্ছে না। বাপেক্সের নিজের ফিল্ড শাহবাজপুর অন্যকে দিতে হচ্ছে। বাপেক্স সক্ষম হবে কিভাবে। মহেষখালী খুলনা গ্যাস পাইপ লাইন ৮ বছর হলো বসে আছে গ্যাস সরবরাহ হচ্ছে না। প্রকল্প বাস্তবায়নের দীর্ঘ সুত্রিতা কমাতে হবে। আমরা বিদেশিদের দ্বারা কাজ করতে বেশি আগ্রহী। দেশীয় কোম্পানিগুলো যথাযথ সুযোগ দিতে হবে। বিদেশি স্বার্থকে আগে চিন্তা করলে হবে না।
বাপেক্সের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মর্তুজা আহমেদ ফারুক বলেন, বাপেক্স ড্রিলিং ওয়ার্কওভারে অনেক সক্ষমতা অর্জণ করেছে। আগে উন্নয়ন কূপ খনন করতে ১ বছর সময় লেগে যেতো, এখন দুই থেকে তিন মাসের মধ্যে করতে পারছে। ওয়ার্কওভারের বিষয়ে অনেক সাফল্য রয়েছে। পার্বত্য চট্টগ্রামে এখন পর্যন্ত ১১টি ওয়েল করেছি। সেখানে অনেক সম্ভাবনা রয়েছে। পার্বত্য এলাকায় বাপেক্সের একার পক্ষে সম্ভব না। সেখানে পিএসসি হতে পারে।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন এনার্জি এন্ড পাওয়ার’র কনসালটেন্ট এডিটর জ্বালানি বিশেষজ্ঞ প্রকৌশলী খন্দকার সালেক সূফী। তিনি বলেন, বাংলাদেশের সংবিধান একটি ইউনিক সংবিধান। এখানে গ্রামে বিদ্যুতায়নের কথা বলা হয়েছে।
বিদ্যুতের মাস্টারপ্লানে ড্রামেটিক্যালি চেঞ্জ বিরূপ প্রতিক্রিয়া ফেলেছে। আমরা যদি আমদানি নির্ভরতা বাড়াই। সেখানে প্রাইস শক নিতে পারবো কিনা সেই প্রশ্ন থেকেই যায়। সাপ্লাই চেইন ব্যহত পারে। এ জন্য ফুয়েল মিক্স হওয়া উচিত। নতুন আবিস্কার না হলে ২০৩০ সালের মধ্যে দেশীয় গ্যাস শেষ হয়ে যাবে। ২০২৫ সালের মধ্যে বড় ধরনের কমতে থাকবে। কয়লা উত্তোলন করার সুযোগ রয়েছে। এ জন্য রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত প্রয়োজন।