এলপিজির সমন্বিত মূল্য কাঠামো জরুরি

  • স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

এলপিজি গ্যাসের মূল্য নির্ধারণে একটি সমন্বিত ফরমুলা তৈরি করা জরুরি। ক্রয়মূল্য, প্রিমিয়াম কস্ট ও ডলার রেটকে বিবেচনায় নিতে হবে। ঘন ঘন যাতে উঠানামা না করে সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে, ঘন ঘন কমাবাড়া হলে গ্রাহকের মধ্যে নেতিবাচক প্রভাব দেখা দিতে পারে।

শনিবার (২৬ ডিসেম্বর) এনার্জি অ্যান্ড পাওয়ার আয়োজিত “এলপিজি প্রাইসিং জটিলতা” শীর্ষক ভার্চুয়াল সেমিনারে এমন মতামত উঠে এসেছে।

বিজ্ঞাপন

বক্তারা বলেন, এমন রেকর্ড রয়েছে এক মাসে একটনে ২’শ ডলার পর‌্যন্ত উঠানামা করেছে দর। এমন পরিস্থিতিতে এলপিজির মূল্য নির্ধারণ করা জটিল কাজ। তাই একটি নির্দিষ্ট ফরমূলা থাকতে। সেটি আন্তর্জাতিক বাজারদরের ওঠা-নামার সঙ্গে সমন্বয় হবে।

প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক ই ইলাহী চৌধুরী বীরবিক্রম বলেন, সাপ্লাই চেইনে যদি যাই। প্রথম দামটাকে কমাতে হবে। কিভাবে কমানো যায় প্রশ্ন এসেছে গভীর সমুদ্রবন্দর থাকা দরকার। আমরা অবশ্যই মাতাবাড়িতে গভীর সমুদ্রবন্দর হবে। ব্যবসায়ীরা সেভাবে পরিকল্পনা নিতে পারে। বাংলাদেশের রেলওয়ে নেটওয়ার্ক বৃদ্ধি পাবে। নদী পথকে আরও কিভাবে ব্যবহার করা যায় ভেবে দেখতে হবে।

বিজ্ঞাপন

সরকার চায় এক সময় সব মানুষ বায়োমাস থেকে সরে আসবে। সেখানে ফুয়েল মিক্স থাকতে পারে। সোলার থাকবে। সাধারণভাবে যেটি মনে হয় সম্ভবনা। সেটি সম্ভব করতে। গ্রামের সব মায়েরা কমার্শিয়াল ফুয়েল ব্যবহার করবে। প্রাইস সমন্বয় করতে হবে। খুব বেশি ওঠানামা করতে পারবে না। বেশি হলে শকড হতে পারে। বার্ক হয়তো ক্রস সাবসিডির বিষয় ভাবতে পারেন। বিদ্যুতে আগে ক্রস সা্‌বসিডি ছিল। লাইফলাইনের মতো কোনো সজ্ঞা করা যায় কিনা।

এলপিজি অপরেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ’র প্রেসিডেন্ট আজম জে চৌধুরী বলেন নদীপথে এলপিজি বার্জ দিয়ে বিভিন্ন স্যাটেলাইট স্টেশনে নেওয়া হচ্ছে। এলপিজির মার্কেট ২০১৬ সালে শুরু হয়েছে। এটি স্থিতিবস্থা আসতে সময় লাগবে। সরকারের কোনো একটি জায়গায় বলতে হবে ক্যাপাসিটি কতো হতে হবে। ক্রস ফিলিং হচ্ছে, এটি বিরাট ঝুঁকি। আমরা যারা বিনিয়োগকারি বাংলাদেশের স্কেলটা বুঝতে পারিনি। মিনি গ্রিড সিস্টেম হবে এক সময়। নিরাপত্তার তদারকি বৃদ্ধি করা উচিত।

অনেকে বাৎসরিক কিনি, অনেকে ফ্লোটিং মার্কেট থেকে কিনি। বর্তমান প্রাইসে ব্যবসায় সবাই লোকসান দিচ্ছে। প্রাইস ফ্যাক্টরগুলো বিবেচনায় নিয়ে মূল্য নির্ধারণ করতে। অটোমেটিক প্রাইসিং ফরমুলায় যেতে হবে। বর্ষা মৌসুমে আমদানি করা যায় না। একটি গভীর সমুদ্রবন্দর খুবই জরুরি। এটি করার জন্য পাওয়ার সেলকে দেওয়া হয়েছে দায়িত্ব। দেওয়া উচিত পেট্রোবাংলাকে। গভীর সমুদ্রবন্দর হলে পণ্য আমদানি নিশ্চিত হবে। দরও কমে আসবে।

কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ’র (ক্যাব) প্রেসিডেন্ট গোলাম রহমান, এলপিজির ব্যবহার বাড়ানো বিকল্প নেই। ভোক্তা যাতে সব ধরণের পণ্য ন্যায্য মূলে কিনতে পারে। সরবরাহকারিও যাতে যৌক্তিক মুনাফা পায়। অস্বাভাবিক মুনাফা করতে না পারে। স্বচ্ছতা না থাকলে নানা ম্যানুপুলেশন হতে পারে।

জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ড. ইজাজ হোসেন বলেন, গলদ হচ্ছে গোড়ায়। ভবিষ্যত চাহিদা অনেক বাড়িয়ে বলা হচ্ছে। সমীক্ষা জাপানিরা করেছে, ওরা এমনিভাবে বিদ্যুতেও করেছে। ২০২৫ সালে চাহিদা ৩ মিলয়ন টন হবে বলা হচ্ছে। আমি মনে করি এটি পুরোপুরি সঠিক নয়। এটি হতেই পারে না। ২০৩০ সালেও গ্রামে আবাসিকে ম্যাক্সিমাম ৩ মিলিয়ন টনের বেশি হবে না। প্রতিযোগিতার কারণে দাম কমে গেছে। যখন এসেছিল তখন মনোপলি ব্যবসা করতো। দর বেশি ছিল। মাসে মাসে সমন্বয় করে দিতে হবে। সর্বোচ্চ ৩ মাস হতে পারে। ফরমুলা জটিল নয়, অ্যাপ্লাই করাটা জটিল।

মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বসুন্ধরা এলপি গ্যাসের হেড অব ডিভিশন (সেলস) প্রকৌশলী জাকারিয়া জালাল বলেন, ২০১৫ থেকে এলপিজির চাহিদা ব্যাপক হারে বেড়েছে। বর্তমানে বার্ষিক চাহিদা ১.২ মিলিয়ন টন। সরকারি কোম্পানি মার্কেট নিয়ন্ত্রণ করছে মাত্র ১ দশমিক ৫ শতাংশ। সরকার ৫৬ কোম্পানিকে লাইসেন্স দিয়েছে, এরমধ্যে ২৮ কোম্পানি ব্যবসা করছে, ২০ কোম্পানি আমদানি পর‌্যায়ে। মোট বিনিয়োগ ৩ বিলিয়ন ডলার, অনেক বেশি বিনিয়োগ হয়ে গেছে। জাইকার সমীক্ষায় দেখা গেছে ২০২৫ সালে ৩ মিলিয়ন টন ও ২০৪১ সালে হবে ৬ মিলিয়ন টন হবে চাহিদা।