সরকারের বড় সাফল্য বিদ্যুতেই গলার কাঁটা হতে পারে!



সেরাজুল ইসলাম সিরাজ, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ফাইল ছবি

ফাইল ছবি

  • Font increase
  • Font Decrease

গ্যাসের বর্তমান সংকট সামাল দিলে বিপদজনক পথে হাটছে পেট্রোবাংলা এবং জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ। অতিরিক্ত উৎপাদন গ্যাস ক্ষেত্র ফিল্ডগুলোর মারাত্বক বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে।

সাঙ্গু ও বাখরাবাদের মতো পরিণতি হলে, সামাল দেওয়ার মতো বিকল্প নেই সরকারের হাতে। সেই ধাক্কা ২০২৩ সাল নাগাদ আশঙ্কা করছেন জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা। যখন দেশ থাকবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনমূখী। আওয়ামী লীগ সরকারের সবচেয়ে বড় সাফল্য ঘরে ঘরে বিদ্যুতই এতে গলার কাঁটা হয়ে উঠতে পারে।

আন্তর্জাতিক জ্বালানি বিশেষজ্ঞ প্রকৌশলী খন্দকার সালেক সূফী বার্তা২৪.কমকে বলেছেন, গ্যাস কুপগুলোর সাধারণত একটি ক্যাপাসিটি নির্ধারণ করা থাকে। বাংলাদেশের কূপগুলোর গ্যাস উত্তোলনের ক্যাপাসিটি রয়েছে প্রায় ৩০ এমএমসিএফডির মতো। কিন্তু কিছু কূপ থেকে দ্বিগুণ পর্যন্ত উত্তোলন করা হচ্ছে। বিষয়টি গ্যাস ফিল্ডের জন্য ভয়ানক হতে পারে। এ্মনকি স্থায়ীভাবে বন্ধ হয়ে যাওয়ার অনেক নজির রয়েছে। আর এই নজির পেতে বিদেশ যেতে হবে না। বাংলাদেশের সাঙ্গু গ্যাস ফিল্ড এভাবে বন্ধ হয়ে গেছে। সাঙ্গুর উৎপাদন ক্ষমতা ছিল ১২০ এমএমসিএফডি, সেখানে ১৫০এমএমসিএফডি পর‌্যন্ত উত্তোলন করা হয়। অতিরিক্ত উত্তোলনের কারণে প্রথমে পানি পরে বালি আসতে থাকে। তারপরও বিষয়টিতে মনযোগ না দেওয়ায় ২০১৩ সালে বন্ধ হয়ে যায় সাঙ্গু। বাখরাবাদ গ্যাস ফিল্ডও এক সময় বসে যেতে ধরেছিল।

তিনি বলেন, নিকট অতিতে এতো কিছুর পরও কোনই শিক্ষা গ্রহণ করেনি পেট্রোবাংলা। বর্তমান সময়ে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় গ্যাস রিজার্ভ বিবিয়ানা। বর্তমানে দৈনিক উত্তোলিত গ্যাসের মধ্যে ৪৭.৫ শতাংশ (২৩ মে ২০২১) গ্যাস আসছে এই ফিল্ড থেকে। বহুজাতিক কোম্পানি শেভরন এই ফিল্ড থেকে অনেকদিন ধরে অতিরিক্ত গ্যাস উত্তোলন করছে। এতে গ্যাসের চাপ কমে এসেছে, সাঙ্গুর মতো বিবিয়ানাতেও পানি আসা শুরু করেছে। যে কোনো সময় ফিল্ডটির গ্যাস উৎপাদন ব্যাপক আকারে কমে যেতে পারে। কি হারে হ্রাস পাবে তা ধারনাতীত হতে পারে।

শেভরন অনেকদিন ধরেই বাংলাদেশ ছাড়তে চায়, বছর তিনেক আগে চীনা কোম্পানির কাছে বিক্রি করে চলে যেতে চেযেছিল। গ্যাস ফিল্ড বন্ধ হয়ে গেলে তাদের কিছু যায় আসে না। কিন্তু বাংলাদেশের বড় ধরণের ক্ষতি হয়ে যাবে বলে মন্তব্য করেন সালেক সূফী।

তিনি বলেন, একই অবস্থা বাঙ্গুরা গ্যাস ফিল্ডেরও। এখানেও অতিরিক্ত গ্যাস উত্তোলন করা হচ্ছে। এতে করে গ্যাসের সঙ্গে পানি আসা শুরু হয়েছে। এই ফিল্ডটিও ঝূঁকির মধ্যে রয়েছে। সরকারের উচিত হবে ফিল্ডগুলোর উপর স্ট্যাডি করে পরিকল্পনা নেওয়া। কূপের চাপ, রিজার্ভ ও চাহিদা রিভিউ করে পরিকল্পনা করা। বহুজাতিক কোম্পানিগুলো অতিরিক্ত উৎপাদন করে তাদের মুনাফা দ্রুত তুলে নিতে চায়। কারণ যতো বেশি গ্যাস তুলবে ততো দ্রুত তাদের বিনিয়োগ উঠে আসবে।

তিনি বলেন, এখনই গ্যাসের উৎপাদন কমতে শুরু করেছে। এক সময় ২৭০০ এমএমসিএফডি পর‌্যন্ত উৎপাদন হয়েছে। এখন ২৫০০ এমএমসিএফডির নিচে নেমে এসেছে। ২০২৩ সাল নাগাদ গ্যাস উৎপাদন বড় ধরণের হ্রাস পেতে পারে। তেমন পরিস্থিতির জন্য পেট্রোবাংলার কোনো প্রস্তুতি ‍দৃশ্যমান নয়। তারা এখনই গ্যাসের যোগান দিতে পারছে না। এলএনজি আমদানি করেও ঘাটতি সামাল দিতে পারছে না। গ্যাসের চাহিদা বাড়ছে দ্রুত গতিতে, সেখানে যদি দেশীয় গ্যাস হ্রাস পায় তা সামাল দেওয়া কঠিন হবে। বর্তমানে এলএনজি আমদানি করে ঘাটতি মোকাবেলা করার চেষ্টা চলছে। এলএনজি আমদানির সক্ষমতা বাড়ানো বিষয়টিও সময় সাপেক্ষ এবং ব্যায় বহুল।

বর্তমানে ১০০০এমএমসিএফডি এলএনজি আমদানি করার সক্ষমতা অর্জণ করেছে। এই এলএনজি আমদানির পরিকল্পনা ছিল ২০১৪ সালে। বাস্তবায়ন হতে আর ৫ বছর বেশি সময় লেগে যায়, ২০১৮ সালের আগস্টে প্রথম ইউনিট ৫০০ এমএমসিএফডি আনতে সক্ষম হয়। দ্বিতীয় ইউনিট এসেছে ২০১৯ সালের এপ্রিলে। মাতারবাড়িতে ১০০০ এমএমসিএফডি ক্ষমতা সম্পন্ন ল্যান্ড বেজড এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ২০২৪ সালের মধ্যে কাজ শেষ হওয়ার কথা। মাত্র কনসালটেন্ট নিয়োগ দেওয়া হয়েছে নির্ধারিত সময়ে আসবে সে কথা বলা জটিল। পূর্বের অভিজ্ঞতা নেগেটিভ উত্তর দেয়। অর্থাৎ ঘাটতি বেড়ে গেলেও বাড়তি এলএনজি আমদানির ‍পথ প্রায় বন্ধ।

অতিরিক্ত উৎপাদনের কারণে ২০২৩ সালের দিকে গ্যাসের সম্ভাব্য উৎপাদন হ্রাস মোকাবেলায় কি পরিকল্পনা রয়েছে। এমন প্রশ্নের জবাবে পেট্রোবাংলার পরিচালক (পরিকল্পনা) আইয়ুব খান চৌধুরী বার্তা২৪.কমকে বলেন, এ বিষয়ে পরিচালক (অপরেশন এন্ড মাইনস) ভালো বলতে পারবেন। তার সঙ্গে কথা বলেন।

পরিচালক (অপরেশন এন্ড মাইনস) প্রকৌশলী আলী মোঃ আল মামুন  বার্তা২৪.কমকে বলেন, পিএসসির (উৎপাদন বন্টন চুক্তি) মতামত নিয়েই অতিরিক্ত গ্যাস উত্তোলন করা হচ্ছে। যে পরিমাণ বাড়তি উৎপাদনে টেকনিক্যালি সমস্যা হওয়ার কথা না সেই পরিমাণ তোলা হচ্ছে, এতে সমস্যা হওয়ার কথা না। ২০২৩ সাল নাগাদ উৎপাদন হ্রাস মোকাবেলায় কি উদ্যোগ রয়েছে, এমন প্রশ্নের জবাবে বলেন, আমি নতুন এসেছি, এ বিষয়ে ভালো করে না জেনে মন্তব্য করতে চাই না।

বাংলাদেশে এখন পর্য‌ন্ত ২৭টি গ্যাস ফিল্ড আবিষ্কৃত হয়েছে। এসব ফিল্ডে প্রমাণিত মজুদের পরিমাণ ২১ দশমিক ৪ টিসিএফ, আরও ৬ টিসিএফ রয়েছে সম্ভাব্য মজুদ। এরমধ্যে প্রায় সাড়ে ১৮ টিসিএফ উত্তোলন করা হয়েছে। সে হিসেবে প্রমাণিত মজুদ অবশিষ্ট রয়েছে মাত্র ৩ টিসিএফ, আর সম্ভাব্য মজুদ রয়েছে আরও ৭ টিএসএফ’র মতো। আর প্রতি বছরে উত্তোলিত হচ্ছে প্রায় ১ টিসিএফ’র মতো।

গ্যাসের ঘাটতি কারণে এখনই হিমশিম খেতে হয়েছে বিদ্যুৎ বিভাগকে। গ্যাসের সরবরাহ কমে গেলে, বিদ্যুতের উৎপাদন কমে গিয়ে বেড়ে যেতে পারে লোডশেডিং। জ্বালানি বিশেষজ্ঞদের এমন শঙ্কা সঠিক হলে সরকারের সবচেয়ে বড় সফলতা ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ গলার কাঁটায় পরিণত হতে পারে। বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী বেলায়েত হোসেন এক সেমিনারে বলেছেন, আমাদের গ্যাস ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র রয়েছে ১১ হাজার মেগাওয়ার্ট। এসব কেন্দ্রে ১৫শ এমএমসিএফডি চাহিদার বিপরীতে গ্যাস সরবরাহ পাচ্ছি ১২শ এমএমসিএফডি (আগস্ট ২০২০)। যা দিয়ে ৬ হাজার মেগাওয়াট উৎপাদন করতে পারি। প্রায় ২৫ শতাংশ গ্যাস ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র বসে থাকছে। গ্যাস থেকে পাওয়া যাচ্ছে সর্বোচ্চ ৮২৫০ মেগাওয়াটের মতো।

গ্যাসের ঘাটতি মোকাবিলায় সবচেয়ে ভালো উপায় হতে পারতো কয়লা উত্তোলন ও বেশি বেশি কূপ খনন করা। কিন্তু সেই ট্রেন মিস করেছে বলে মনে করে জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা। কয়লা এখনই না তোলার বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত রয়েছে। আর বেশি কূপ খনন থেকেও রয়েছে অনেকটা পিছিয়ে। সাগরে তেল-গ্যাস অনুসন্ধ্যানও হতাশাজনক। জ্বালানি বিভাগের যখন বেহাল অবস্থা, তখন বিদ্যুৎ বিভাগ নতুন নতুন গ্যাস ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র বাস্তবায়ন করে চলেছে। ২০১৬ সালের রিভাইস মাস্টারপ্লান অনুযায়ী ২০২১ সালে ২৬৬১ মেগাওয়াট ও ২০২২ সালে ১১৮৮ মেগাওয়াট নতুন বিদ্যুৎ কেন্দ্র যুক্ত হওয়ার কথা।

মতামত নেওয়ার জন্য অনেক চেষ্টা করেও বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদের সাক্ষাৎ পাওয়া যায় নি। ফোন করলেও রিভিস করেন নি। অন্যদিকে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের সচিব আনিসুর রহমানকে প্রথমে ফোন করে পরে এসএমএস দিলেও সাড়া দেন নি।

   

রিজার্ভের পরিমাণ জানাল কেন্দ্রীয় ব্যাংক



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
রিজার্ভের পরিমাণ জানাল কেন্দ্রীয় ব্যাংক

রিজার্ভের পরিমাণ জানাল কেন্দ্রীয় ব্যাংক

  • Font increase
  • Font Decrease

দীর্ঘদিন ধরে দেশে ডলার সংকটের প্রভাবে বৈদেশিক মুদ্রার সঞ্চয় বা রিজার্ভ ধারাবাহিকভাবে কমছে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সর্বেশষ গণনায় দেশের রিজার্ভ ১৯ দশমিক ৪৫ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে। অন্যদিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসেবে তা ২৪ দশমিক ৮১ বিলিয়ন ডলার।

বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) সাপ্তাহিক হালনাগাদ প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। 

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত এক সপ্তাহে গ্রস রিজার্ভ কমেছে ৫৩ কোটি ডলার। বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবে গত ২১ মার্চ সঞ্চিত বিদেশি অর্থের পরিমাণ ছিল ২৫ দশমিক ২৪ বিলিয়ন ডলার। আর আইএমএফের গণনা পদ্ধতি বিপিএম-৬ অনুযায়ী তা ছিল ১৯ দশমিক ৯৮ বিলিয়ন ডলার।

এ ছাড়া কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিট রিজার্ভের আরেকটি হিসাব রয়েছে। যা শুধু প্রকাশ করা হয় না, শুধুমাত্র আইএমএফকে দেওয়া হয়। জানা গেছে, ওই হিসাবে বর্তমানে দেশের প্রকৃত রিজার্ভ এখন প্রায় সাড়ে ১৭ বিলিয়ন ডলার। যা দিয়ে ৩ মাসের আমদানি ব্যয় মিটবে।

অর্থাৎ, পণ্য কেনা বাবদ মাসিক প্রায় ৬ বিলিয়ন ডলার করে দায় পরিশোধ করা হয়। নিয়ম অনুযায়ী যেকোনো দেশের ন্যূনতম ৩ মাসের আমদানি খরচের সমান রিজার্ভ থাকতে হয়। বাংলাদেশেরও সেই পরিমাণ রিজার্ভ রয়েছে।

;

ইসলামী ব্যাংকে বঙ্গবন্ধুর জীবনাদর্শের উপর আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির উদ্যোগে এবং বঙ্গবন্ধু পরিষদ ইসলামী ব্যাংক ইউনিটের সহযোগিতায় “বঙ্গবন্ধুর জীবনাদর্শ ও বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবন” শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মবার্ষিকী এবং স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষ্যে ইসলামী ব্যাংক টাওয়ারে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন। ব্যাংকের ম্যানেজিং ডাইরেক্টর ও সিইও মুহাম্মদ মুনিরুল মওলার সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধু পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আ.ব.ম ফারুক, ইসলামী ব্যাংকের পরিচালক, মুক্তিযোদ্ধা মো. জয়নাল আবেদীন, বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষক কর্মচারী কল্যাণ ট্রাস্টের সচিব অধ্যক্ষ মো. শাহজাহান আলম সাজু, বাংলাদেশ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক একেএম আফজালুর রহমান বাবু, বঙ্গবন্ধু পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডাঃ শেখ আব্দুল্লাহ আল মামুন। স্বাগত বক্তব্য দেন বঙ্গবন্ধু পরিষদ ইসলামী ব্যাংক ইউনিটের সভাপতি মো. মোজাহারুল ইসলাম মেহেদী। অনুষ্ঠানে প্রধান কার্যালয়ের নির্বাহী ও কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।

;

চীনের সঙ্গে এফটিএ করতে সম্ভাব্যতা সমীক্ষা প্রতিবেদন বিনিময়



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
চীনের সঙ্গে এফটিএ করতে সম্ভাব্যতা সমীক্ষা প্রতিবেদন বিনিময়

চীনের সঙ্গে এফটিএ করতে সম্ভাব্যতা সমীক্ষা প্রতিবেদন বিনিময়

  • Font increase
  • Font Decrease

বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে বাণিজ্য এবং বিনিয়োগ বাড়ানোর লক্ষ্যে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) সই করার বিষয়ে যৌথভাবে খসড়া সম্ভাব্যতা সমীক্ষা প্রতিবেদন বিনিময় করেছে দুই দেশ।

বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে এ সমীক্ষা প্রতিবেদন বিনিময় করে বাংলাদেশ ও চীন।

এসময় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ, বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

তপন কান্তি ঘোষ বলেন, বাংলাদেশের স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণ বর্তমান সরকারের অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রার উল্লেখযোগ্য অর্জন। এ অর্জন বিশ্বে বাংলাদেশের ইতিবাচক ভাবমূর্তি সৃষ্টি এবং বিনিয়োগ ও বাণিজ্যে নতুন সম্ভাবনা তৈরির পাশাপাশি বেশ কিছু চ্যালেঞ্জও তৈরি করবে।

তিনি আরও বলেন, যার মধ্যে স্বল্পোন্নত দেশ হিসাবে উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশে পণ্য রপ্তানির সময় শুল্কমুক্ত কোটামুক্ত প্রবেশাধিকার সুবিধা ২০২৬ সালের পরে হারানো এবং মূল্য সংযোজনের হার অন্যতম। এর ফলে বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্যকে ওই সব দেশের বাজারে প্রবেশের সময় সাধারণভাবে আরোপিত শুল্কের সম্মুখীন হতে হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ফলে ওই সকল দেশে বাংলাদেশের রপ্তানি বাজার সংকোচনের সম্ভাবনা রয়েছে।

কবে নাগাদ এফটিএ সই হতে পারে সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে সচিব বলেন, এখনো চুক্তি হয়নি। এখন আলোচনা শুরু হবে। আগামী তিন বছরের মধ্যে চুক্তি সম্পন্ন করতে পারলে ভালো। যদি না হয় আমাদের আলোচনা চালিয়ে যেতে হবে। আলোচনা শেষ না হলে ততোদিন যেন আমাদের এলডিসি হিসাবে এই সুবিধাগুলো তাঁরা দেয় এর জন্য বলবো।

চুক্তির ফলে বাংলাদেশ কি ধরনের সুবিধা পাবে এ বিষয়ে তপন কান্তি ঘোষ বলেন, আমাদের প্রধান রপ্তানি পণ্য গার্মেন্টের বাইরে আরও কিছু পণ্য আছে। রাষ্ট্রদূততের সঙ্গে আলাপকালে তিনি জানিয়েছেন আম ও পাটজাত পণ্যের অনেক সম্ভাবনা আছে। তারপর হস্তশিল্পের বিষয় আছে।

তিনি বলেন, এছাড়া আরও পণ্য আছে। আমরা ইতোমধ্যে চামড়া রপ্তানি করছি। আমরা মানসম্মত চামড়াজাত পণ্য রপ্তানি করতে পারি। চীনে ১৪০ কোটি মানুষ। সেখানে যদি আমরা বৈচিত্র্য পণ্য নিয়ে যেতে পারি, বড় বাজার। চুক্তি হয়ে গেলে বিনিয়োগ বাড়ারও সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানান তিনি।

তপন কান্তি ঘোষ বলেন, আমরা প্রধানত তৈরি পোশাক রপ্তানি করি। ২০২২-২৩ অর্থবছরে আমরা চীনে ৬৭৭ মিলিয় মার্কিন ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছি। বিপরীতে চীন থেকে ২২ দশমিক ৯০ বিলিয়ন ডলার আমদানি করা হয়েছে।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বলেন, বাংলাদেশে চীনের বড় বিনিয়োগ রয়েছে। এখন চীন বাংলাদেশে দ্বিতীয় বৃহৎ বিনিয়োগকারী দেশ। এফটিএ সই হওয়ার পর বিনিয়োগ আরও বাড়বে। বাংলাদেশ চীনে আম, কাঠাল, আলু, পাটপণ্য, চামড়াজাত পণ্য রপ্তানি করতে পারে।

তিনি আরও বলেন, বর্তমান বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা এবং টেকসই অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য এফটিএ করা প্রয়োজন।

অনুষ্ঠানে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়, এলডিসি উত্তরণ পরবর্তী সম্ভাব্য চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সরকারের অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা অনুসারে বাংলাদেশের রপ্তানি বাজার সংরক্ষণ এবং সম্প্রসারণে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যে বাণিজ্যিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন দেশ ও ট্রেড ব্লকের সাথে আঞ্চলিক বাণিজ্য চুক্তি সম্পাদনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।

;

ভারত থেকে পেঁয়াজ আসছে শুক্রবার



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ভারত থেকে পেঁয়াজ আসছে শুক্রবার

ভারত থেকে পেঁয়াজ আসছে শুক্রবার

  • Font increase
  • Font Decrease

দেশের বাজারে পেঁয়াজের দাম নিয়ন্ত্রণে ভারত থেকে ৫০ হাজার টন পেঁয়াজ আমদানি করছে সরকার। আগামীকাল শুক্রবার (২৯ মার্চ) এর মধ্যে ১ হাজার ৬৫০ টন পেঁয়াজ দেশে আসতে পারে বলে জানিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।

বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (আমদানি ও অভ্যন্তরীণ বাণিজ্য অধিশাখা) রেজওয়ানুর রহমান গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, প্রথম পর্যায়ে ১ হাজার ৬৫০ টন পেঁয়াজ ট্রেনে করে দেশে আসছে। শুক্রবারের মধ্যে আসার কথা রয়েছে। অবশিষ্ট পেঁয়াজ পর্যায়ক্রমে আমদানি হবে।

জানা গেছে, দেশের বাজারে পেঁয়াজের দাম অস্বাভাবিক বেড়ে যাওয়ায় ভারত থেকে জিটুজি পদ্ধতিতে পেঁয়াজ আমদানির সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। তবে ভারতের অভ্যন্তরীণ বাজারে দাম বাড়ায় দেশটির সরকার রফতানি বন্ধ করে দেয়। এতে বিপাকে পড়ে বাংলাদেশ। পরে হঠাৎ করে পণ্যটির দাম অনেক বেড়ে যায়।

এর আগে বুধবার (২৭ মার্চ) অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে ভারত থেকে ৫০ হাজার মেট্রিকটন পেঁয়াজ আমদানির একটি প্রস্তাবে নীতিগত অনুমোদন দেয়া হয়।

;