এলপি গ্যাসের নতুন মূল্য বাস্তবায়নে শঙ্কা
এলপি গ্যাসের সিলিন্ডারে (১২ কেজি) ২ টাকা বাড়িয়ে ৯৯৩ টাকা পুনঃনির্ধারণ করেছে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)। আগামী ১ আগস্ট থেকে নতুন দর কার্যকর হওয়ার কথা।
বৃহস্পতিবার (২৯ জুলাই) এলপিজির নতুন দর ঘোষণা করেন বিইআরসি চেয়ারম্যান আব্দুল জলিল। সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন কমিশনের সদস্য মকবুল ই এলাহী চৌধুরী।
অন্যদিকে যানবাহনে ব্যবহৃত এলপিজি প্রতি লিটারের দর ৪৮ দশমিক ৭১ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। জুলাই মাসে এই দাম ছিলো ৪৪ টাকা।
চলতি মাসে এলপিজির দর ছিলো ৯৯১ টাকা। যদিও তা খুব একটা কার্যকর হতে দেখা যায়নি।
বিইআরসির আদেশ খুব একটা মানছে না এলপিজি আমদানিকারকরা। জুন মাসের জন্য সিলিন্ডার (১২ কেজি) প্রতি খুচরা মূল্য ৮৪২ টাকা ঘোষণা করে। কিন্তু কোথাও এই দামে কেনা-বেচা হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি। পাইকারিতে এই দরের চেয়ে বেশি দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে তখন।
দর বাস্তবায়ন না হওয়া প্রসঙ্গে বিইআরসি চেয়ারম্যান বলেন, ‘কিছু কিছু কাজ হচ্ছে। নতুন একটি বিষয় বাস্তবায়ন করতে কিছুটা সময় লাগে। দর না মানলে ফৌজদারি ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ রয়েছে আইনে। বিধি প্রণয়ন করতে হবে, আর বিধি করবে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ। আমরা যোগাযোগ রক্ষা করে চলছি।’
চলতি বছরের ১২ এপ্রিল প্রথমবারের মতো এলপি গ্যাসের দর ঘোষণা করে বিইআরসি। তখন বলা হয়েছিল- যেহেতু এলপিজি পুরোপুরি আমদানি নির্ভর, তাই প্রতি মাসে আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে শুধু গ্যাসের মূল্যটুকু ওঠা-নামা করবে। অন্যান্য কমিশন অপরিবর্তিত থাকবে পরবর্তী গণশুনানি না হওয়া পর্যন্ত। সেই থেকে প্রতি মাসে দর সমন্বয় করে যাচ্ছে বিইআরসি।
অন্যদিকে আমদানিকারকরা প্রথম থেকেই আপত্তি জানিয়ে আসছে। তারা কমিশন বাড়ানোর দাবি দিয়ে এসেছে। গত ৮ জুলাই এ বিষয়ে গণশুনানি হওয়ার কথা ছিলো, কিন্তু লকডাউনের কারণে তা স্থগিত হয়ে যায়।
মার্চের সিপি (সৌদি আরামকো কন্ট্রাক্ট প্রাইস) দর ছিলো যথাক্রমে প্রতি টন প্রোপেন বিউটেন ৬২৫ ও ৫৯৫ ডলার। পরের মাস এপ্রিলে যথাক্রমে ৫৬০ ও ৫৩০ ইউএস ডলার হলে সিলিন্ডার (১২ কেজি) প্রতি এলপি গ্যাসের দর নির্ধারণ করা হয় ৯০৭ টাকা। মে মাসে ৪৯৫ ও ৪৭৫ ডলারে নেমে এলে দর নির্ধারণ করা হয় ৮৪২ টাকা, জুনে যথাক্রমে ৫৩০ ও ৫২৫ ডলার ও জুলাই মাসে ৬২০ ডলারে গিয়ে ঠেকেছে।
দ্রুত বাড়ছে এলপি গ্যাসের ব্যবহার। ২০০৮-০৯ অর্থবছরে দেশে এলপিজি ব্যবহৃত হয়েছে ৪৪ হাজার ৯৭৪ মেট্রিক টন।কয়েক বছরে চাহিদা বেড়ে ১২ লাখ টনে উন্নীত হয়েছে। জাইকার এক সমীক্ষায় বলা হয়েছে, ২০২৫ সালে ৩০ লাখ টন ও ২০৪১ সালে চাহিদা হবে ৬০ লাখ টন।