ধামাকার ৭৫০ কোটির মধ্যে আছে মাত্র লাখ টাকা

  • স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: বার্তা ২৪.কম

ছবি: বার্তা ২৪.কম

ধামাকা শপিং ডট কম এ পর্যন্ত প্রায় ৭৫০ কোটি টাকা লেনদেন করেছে। ২০১৮ সালে শুরু হয় ‘ধামাকা ডিজিটাল’ নামে, পরে ২০২০ থেকে ‘ধামাকা শপিং ডট কম’ নামে কার্যক্রম শুরু করে। বিপুল পরিমাণ অর্থ লেনদেন হওয়া সত্ত্বেও বর্তমানে ওই অ্যাকাউন্টে রয়েছে মাত্র লাখ খানেক টাকা।

এছাড়া বর্তমানে ধামাকার কাছে সেলাররা পাবেন ১৮০-১৯০ কোটি টাকা। ধামাকার কাছে কাস্টমাররা পাবেন ১৫০ কোটি টাকা। এছাড়া কাস্টমার রিফান্ড চেক বকেয়া আছে ৩৫-৪০ কোটি টাকা।

বিজ্ঞাপন

প্রতারণা ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে ধামাকার সিওও মো. সিরাজুল ইসলাম রানাসহ তিনজনকে গ্রেফতারের পর এমন তথ্য দিয়েছে পুলিশের এলিট ফোর্স র‍্যাব।

বুধবার (২৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‍্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে র‍্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইং পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন একথা বলেন।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান লাখ লাখ গ্রাহককে পণ্য ডেলিভারি না দিয়ে অর্থ আত্মসাৎ করার বিষয়টি দেশব্যাপী ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে। বিভিন্ন লোভনীয় গগনচুম্বী অফারের মাধ্যমে প্রলুব্ধ করে সাধারণ জনগণের কষ্টার্জিত অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে বেশ কয়েকটি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান। বিভিন্ন সংস্থা ই-কমার্সের কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের ব্যবসায়িক কাঠামো নিয়ে পর্যালোচনা ও অনুসন্ধান অব্যাহত রেখেছে।’

তিনি আরও বলেন, অনিয়মের অভিযোগ ওঠায় ই-কমার্সের আড়ালে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে সুপারিশ করেছে। এছাড়া বিভিন্ন আলোচনায় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়টি উঠে এলে বেশ কয়েকজন ভুক্তভোগী অভিযোগ দায়ের করেন।

গত ২৩ সেপ্টেম্বর টঙ্গী পশ্চিম থানায় এক ভুক্তভোগী প্রতারণা ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে ‘ধামাকা শপিং ডট কম’-এর চেয়ারম্যান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, সিওওসহ ১১জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। এছাড়া আরও বেশকিছু ভুক্তভোগীর অভিযোগ রয়েছে। জানা যায়, ভুক্তভোগীরা বিভিন্ন সময়ে অপমান হেনস্তা ও ভয়ভীতির শিকার হয়েছেন।

এরই ধারাবাহিকতায় আজ বুধবার প্রতিষ্ঠানটির ওই তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রাহকদের প্রতারিত হওয়ার বিভিন্ন বিষয়াদি ও কৌশল সম্পর্কে তথ্য পাওয়া যায়।

খন্দকার আল মঈন বলেন, সিরাজুল ইসলাম রানা ‘ধামাকা শপিং ডট কম’-এর সিওও। ইমতিয়াজ হাসান সবুজ ‘মোবাইল ফ্যাশন ও লাইফ স্টাইল’-এর ক্যাটাগরি হেড এবং ক্যাটাগরি হেড-ইলেক্ট্রনিক্স হিসেবে ইব্রাহীম স্বপন নিযুক্ত রয়েছেন।

জানা যায়, ২০১৮ সালে ‘ধামাকা ডিজিটাল’ যাত্রা শুরু করে। ২০২০ থেকে তারা ‘ধামাকা শপিং ডট কম’ নামে কার্যক্রম শুরু করে। গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তিরা ২০২০ থেকে এই প্রতিষ্ঠানের সাথে যুক্ত। গত বছরের অক্টোবর থেকে প্রতিষ্ঠানটি নেতিবাচক এগ্রেসিভ স্ট্র্যাটেজি নিয়ে মাঠে নামে।

তিনি বলেন, ধামাকার কোনো প্রকার অনুমোদন ও লাইসেন্স নেই; ব্যবসায়িক অ্যাকাউন্ট নেই। ইনভেরিয়েন্ট টেলিকম বাংলাদেশ লিমিটেড নামক প্রতিষ্ঠানের অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে ব্যবসায়িক লেনদেন করা হয়েছে। এ পর্যন্ত প্রায় ৭৫০ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে। বিপুল পরিমাণ অর্থ লেনদেন হওয়া সত্ত্বেও বর্তমানে তাদের অ্যাকাউন্টে মাত্র লাখ খানেক টাকা জমা রয়েছে। বর্তমানে সেলার বকেয়া রয়েছে প্রায় ১৮০-১৯০ কোটি টাকা, কাস্টমার বকেয়া ১৫০ কোটি টাকা এবং কাস্টমার রিফান্ড চেক বকেয়া ৩৫-৪০ কোটি টাকা।