গ্যাস-বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি সরকারের জন্য আত্মঘাতি হতে পারে



সেরাজুল ইসলাম সিরাজ, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ঢাকাঃ এই মুহূর্তে গ্যাস কিংবা বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি সরকারের জন্য চরম আত্মঘাতি সিদ্ধান্ত হয়ে দেখা দিতে পারে। বরং বিকল্প উপায়ে বিদ্যমান দর বহাল রাখার পক্ষে মত দিয়েছেন ক্যাব ও জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা।

ক্যাব বলেছে, গ্যাসের দাম না বাড়িয়ে বরং ইউনিট প্রতি ১৬ পয়সা কমানো সম্ভব আমরা অংক করে দেখিয়ে দিয়েছি। অস্বাভাবিক সিস্টেম লসের নামে পুকুরচুরি কমানো গেলেও দাম বাড়ানোর প্রয়োজন হয় না।

ক্যাবের জ্বালানি বিষয়ক উপদেষ্টা ড. শামসুল আলম বার্তা২৪.কমকে বলেছেন, সামগ্রিকভাবে ৮ শতাংশের উপর সিস্টেম লস দেখানো হচ্ছে, বিশ্বের কোথাও ২ শতাংশের উপর সিস্টেম লস নেই। দৈনিক কমবেশি ৩ হাজার মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের পাইপলাইনে দেওয়া হচ্ছে। এখান থেকে হারিয়ে যাচ্ছে ২৪০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস। অন্যদিকে স্পর্ট মার্কেট থেকে গড়ে মাত্র ৯৯ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস আমদানি করা হচ্ছে যে গ্যাস টুকুর দাম অনেক বেড়ে গেছে। আগে যে পরিমাণ গ্যাস ৫-৬ ডলারে পাওয়া যেতো এখন সেই গ্যাস কিনতে হচ্ছে ৩১ ডলার দিয়ে। চুরি যদি ৩ শতাংশ কমানো যায় তাহলেও স্পর্ট মার্কেট থেকে চড়া দামে এলএনজি (তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস) আমদানি করতে হয় না। আর স্পর্ট মার্কেট থেকে আমদানি করতে না হলে দাম বাড়ানোর প্রসঙ্গ আসে না।

সিস্টেম লস নিয়ে ক্যাবের আপত্তির সঙ্গে এক সুরেই গেয়েছেন বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন। ২১ মার্চ গ্যাসের দাম ‍বৃদ্ধির গণশুনানিতে চেয়ারম্যান আব্দুল জলিল বলেন, গ্যাসের আদর্শ সিস্টেমলস ২ শতাংশের নিচে। বিশ্বের কোথাও এত বেশি সিস্টেমলস নেই। আমাদেরও যৌক্তিক পর্যায়ে নামিয়ে আনতে হবে এভাবে চলতে পারে না।

সবচেয়ে বেশি চুরি হচ্ছে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন এন্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানিতে। সবচেয়ে বৃহৎ বিতরণ কোম্পানিটির নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার এলাকার ৩০ শতাংশের উপরে সিস্টেম লস ধরা পড়েছে। যদিও তারা কাগজে কলমে সামগ্রিক সিস্টেম লস ১২ শতাংশের মতো উল্লেখ করেছে।

জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ড. বদরুল ইমাম বলেছেন, গ্যাস সেক্টর সোজা পথে না গিয়ে ভুলপথে গিয়ে হাবুডুবু খাচ্ছে। যথাযথভাবে অনুসন্ধান কার্যক্রম পরিচালিত হলে আজকে এই সংকট তৈরি হতো না। সবচেয়ে ভালো হয় যদি অনুসন্ধান এবং পুরনো পরিত্যাক্ত কূপগুলো ওয়ার্কওভার করা যায়। স্লামবার্জারের একটি সমীক্ষা রিপোর্টে বলা হয়েছে সামান্য কিছু কাজ ও কিছু কূপের ওয়ার্কওভার করে ৩ থেকে ৪শ’ এমএমসিএফডি গ্যাস উৎপাদন বাড়ানো সম্ভব। সেদিকে যাওয়া উচিত।

আশার কথা হচ্ছে, পেট্রোবাংলা সম্প্রতি এই পথে হাঁটতে শুরু করেছে। এরই মধ্যে কৈলাশটিলা কূপ ৭ ওয়ার্কওভার করে ১৫ মিলিয়ন গ্যাস উত্তোলন বাড়িয়েছে। সিলেট ৮ নম্বর কূপ ওয়ার্কওভারের মাধ্যমে ৫ মিলিয়ন ও পরিত্যক্ত সালদা ২ নম্বর কূপে নতুন স্তর আবিষ্কার করে বাপেক্স।

গ্যাসের দাম বৃদ্ধি ইস্যুতে পেট্রোবাংলা বারবার বলেছে তার ভর্তুকির প্রতিশ্রুত ৭ হাজার ৬৮৬ কোটি টাকা পায় নি। মার্চ ২০২২ পর্যন্ত মাত্র ৩ হাজার কোটি টাকা পেয়েছে। অর্থমন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ করলেও সাড়া মেলেনি। আর এই ৩ হাজার কোটি ভর্তুকি ধরেই আগামী বছরের অংক কষা হয়েছে। এতে বেজায় চটেছেন ক্যাব। তাদের বক্তব্য হচ্ছে এমন আপদকালীন সময়ে ভর্তুকি বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। উল্টো অর্ধেকে নামিয়ে আনা হলো, কে এই সিদ্ধান্ত দিলো। সরকার কি বলেছে আর ভর্তুকি দেবে না। গণশুনানিতে ক্যাবের জেরার মুখে টিইসি (কারিগরি মূল্যায়ন কমিটি) স্বীকার করেন, সরকার যেটুকু দিয়েছে সেটাই ধরে নেওয়া হয়েছে। ভবিষ্যতে আর দেবে কি, দেবে না সে বিষয়টি বিবেচনায় নেওয়া হয়নি। অবশ্য গণশুনানি পরবর্তী বিইআরসি জ্বালানি বিভাগকে চিঠি দিয়ে জানতে চেয়েছে সরকার ভর্তুকি কত দিবে। সেই চিঠির কোন জবাব এখন পর্য ন্ত মেলেনি বলে জানিয়েছে বিইআরসি সূত্র।

জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের একাধিক পদস্থ কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে অর্থবিভাগ ও এনবিআর’র প্রতি ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। তারা বলেছেন, এনবিআর যেভাবে চর্তুদিক দিয়ে টাকা তুলে নিয়ে যাচ্ছে। সেখানে কিছুটা ছাড় দিলে দাম বাড়াতে হয় না। আগে যে তেলের দাম টন প্রতি ছিল ২৫০ ডলার, তখন ৩৪ শতাংশ ডিউটি আদায় করতো। সেই তেলের দাম ৭০০ ডলার ছাড়িয়ে গেছে এখনও ৩৪ শতাংশ ডিউটি অর্থাৎ ২৩৮ ডলার ডিউটি দিতে হচ্ছে। যা পূর্বের তেলের দামের সমান। এক ইউনিট এলএনজিতে ১৬ টাকার মতো ডিউটি দিতে হচ্ছে। এনবিআর’রতো লক্ষ্যমাত্রা থাকে, এখন যেহেতু কমহারে আদায় করলেও তাদের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়, তাই হার কমিয়ে আনা উচিত। কিন্তু তারা লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাওয়ার বাহাবা নিতে গিয়ে জনগণকে চাপে ফেলছে।

বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ জানিয়েছেন, ভ্যাট-ট্যাক্সের বিষয়টি নিয়ে এনবিআর’র সঙ্গে বৈঠক করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আমরা আশা করছি বিষয়টি সমাধান হবে। আর সমাধান হলে কিছুটা চাপ কমবে। তবে পরিবর্তিত পরিস্থিতির বিষয়টি জনগণকে বুঝতে হবে। এমন অবস্থা দাঁড়িয়ে টাকা থাকলেও পণ্য পাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিতে পারে। দাম না বাড়িয়ে কিভাবে সামাল দেওয়া যায় তার জন্য আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছি।

করোনার ধাক্কা এখনও অনেকে সামলে উঠতে পারেন নি। অনেক প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেছে। কমবেশি সবপেশায় কিছু কিছু লোকজন চাকরি হারিয়ে বেকার জীবন যাপন করছেন। অন্যদিকে বৈশ্বিক পরিবর্তিত পরিস্থিতিসহ নানা কারণে দ্রব্যমূল্যের লাগাম টানা যাচ্ছে না। আজকে ভোজ্যতেল তো পরশু পেঁয়াজ, তার পরদিন রসুন কিংবা আদা এভাবেই বাজারকে অস্থির করে রেখেছে ভোগ্যপণ্য। এমন পরিস্থিতিতে গ্যাস কিংবা বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি হলে তার প্রতিঘাত অনেক দূর পর্যন্ত গড়াবে। গ্যাসের দাম সামান্য পরিমাণে বাড়লেও মধ্যস্বত্বভোগীরা সেই সুযোগ নিতে পারেন। যা সরকারের পক্ষে নিয়ন্ত্রণ করা কষ্টকর হয়ে পড়তে পারে। অতীতে দেখা গেছে তেলের দাম ১৫ টাকা বাড়লো আর বাস মালিকরা দ্বিগুণ ভাড়া আদায় শুরু করে দিলেন। তারপর অনেক লঙ্কাকান্ড ঘটে গেলো। গ্যাস-বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি হলে তেমনটি হবে না তার গ্যারান্টি নেই। আর সেটি হলে জনগণের ক্ষোভ গিয়ে পড়তে পারে সরকারের উপর।

পেট্রোবাংলা দাবি করেছে মিশ্রিত গ্যাসের পাইকারি ব্যায় (২০২২ সালে প্রতি ঘনমিটার) ১৫.৩০ টাকায় গিয়ে ঠেকবে। এ কারণে তারা ১১৭ শতাংশ দাম বৃদ্ধির আবেদন করে। তবে বিইআরসি কারিগরি মূল্যায়ণ কমিটি ২০ শতাংশ দাম বৃদ্ধির পক্ষে মতামত দেয় গণশুনানিতে।

সবশেষ গ্যাসের দাম বৃদ্ধির আদেশে (২০১৯ সালে) পাইকারি দর প্রতি ঘনমিটার ১২.৬০ টাকা করা হয়। ভর্তুকি দিয়ে ৯.৭০ টাকায় বিক্রির নির্দেশ দেয় বিইআরসি। মার্চে টানা ৪দিনব্যাপী গ্যাসের দামবৃদ্ধির উপর গণশুনানি অনুষ্ঠিত হয়। সেই রিপোর্ট চূড়ান্ত পর্যায়ে, যে কোন দিন ঘোষণা আসতে পারে।

অন্যদিকে বুধবার (১৮ মে) বিদ্যুতের পাইকারি মুল্য বৃদ্ধির উপর গণশুনানি অনুষ্ঠিত হবে। পাইকারি পরেই স্বাভাবিকভাবে খুচরা দামবৃদ্ধির প্রসঙ্গ সামনে চলে আসবে।

   

সরবরাহ বাড়ায় কমেছে পেঁয়াজের দাম



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা ২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

রমজানে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দামে যখন ঊর্ধ্বগতি তখন স্বস্তির বার্তা হয়ে এসেছে পেঁয়াজের দাম। গেলো কয়েক সপ্তাহে যেখানে পেঁয়াজের ঝাঁজে ক্রেতাদের নাজেহাল অবস্থা। সেই পেঁয়াজ এখন বাজারে পাওয়া যাচ্ছে সুলভ মূল্যে। মূলত দেশি পেঁয়াজের সরবরাহ বাড়ায় এবং ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানির ঘোষণার পর থেকে নেমে এসেছে পেঁয়াজের দাম।

শুক্রবার (২৯ মার্চ) সকালে রাজধানীর হাতিরপুল বাজার ঘুরে দেখা গেছে গত সপ্তাহে যে পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছিল ৯০-১০০ টাকা তা মাত্র এক সপ্তাহের ব্যবধানে নেমে এসেছে অর্ধেকেরও কম দামে। বাজার ঘুরে দেখা যায় প্রকারভেদে প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৪০-৪৫ টাকা যা পাইকারি বাজারে ৩০-৩৫ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে।

ক্রেতারা বলছেন গত কয়েক সপ্তাহে সবকিছুর দামে যে আগুন লেগেছিল তা মনে হয় কিছুটা কমতে শুরু করেছে। যদিও অসাধু ব্যবসায়ীরা যা ব্যবসা করার তা করে ফেলেছে। সবার বাসায় এখন পর্যাপ্ত পেঁয়াজ, আলু ও অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের পর্যাপ্ত মজুদ আছে। তাই ক্রেতাদের আনাগোনা বাজারে কমে যাওয়ায় কমেছে জিনিসপত্রের দাম।

শুক্রবার বাজারে প্রতি কেজি শশা বিক্রি হচ্ছে ৬০-৭০। ক্যাপসিকাম ২৫০-৩০০ টাকা। বেগুন প্রতি কেজি ৫০-৬০, লেবুর হালি প্রকারভেদে ২০-৫০ টাকা, কচুর লতি ৬০ টাকা, শিম ৪০ টাকা, মুলা ৩০ টাকা, লাউ ৮০ টাকা, চাল কুমড়া ৫০, করলা ৬০-৭০, টমেটো ৫০-৬০ কেজি, পটল ৬০ টাকা, ঢেঁড়স ৬০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া প্রতি পিছ ৪০টাকা, বাঁধাকপি ৪০, ফুলকপি ৫০ এবং কাঁচকলা বিক্রি হচ্ছে ৩০-৪০ টাকা দরে।

পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকায় আগের দামেই পাওয়া যাচ্ছে সকল মাছ

এছাড়া আলু ৪০ টাকা প্রতি কেজি, আদা ২২০, রসুন ২০০, কাঁচামরিচ ৪০ টাকা, পেয়াজ ৪০-৪৫ টাকা , ধনেপাতা ৬০ টাকা কেজি।

হাতিরপুল বাজারের বিক্রেতা নিরব জানান, গত সপ্তাহের চাইতে এই সপ্তাহে সবজির দাম কিছুটা কম। মূলত আমদানি বাড়ার কারণে দাম কমেছে পেঁয়াজ সহ সকল শাক সবজির দাম। আগে ৮০ টাকার নিচে সবজির গায়ে হাত দেয়া যেতো না। কিন্তু এখন তা ৩০ থেকে ৪০ টাকায় নেমে এসেছে।

আরেক ব্যবসায়ী আমান হোসেন জানান, বেগুন ব্যবসায়ীরা এবার ধরা খাইছে। রমজানের প্রথম দুই দিনে বেগুন নিয়ে যে সিন্ডিকেট হইছিলো তাতে পাবলিক ক্ষেপে গিয়ে বেগুন কেনা কমাইয়া দিছে তাই প্রথম দুই দিনে বেগুন ১২০ টাকা করে পাইকারি বিক্রি হলেও এখন তা প্রকারভেদে মাত্র ১০-৩০ টাকা পাইকারিতে পাওয়া যাচ্ছে। এছাড়া ঈদের আগে আর কোন জিনিসের দাম বাড়ার সম্ভাবনা নাই আশাকরি।

এদিকে মাছের বাজারেও দেখা গেছে একই চিত্র। বাজারে ক্রেতা কম থাকায় এবং মাছের পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকায় আগের দামেই পাওয়া যাচ্ছে সকল মাছ।

বাজারে প্রতি কেজি কাচকি পাওয়া যাচ্ছে ৪০০-৬০০ টাকা কেজি। এছাড়া বেলে মাছ ৫০০, ফলি ৫০০, কোরাল ৭০০, পাবদা ৪৫০, লইট্টা ৩০০, বোয়াল ৬০০, আইর ৮০০, রুই ৩৫০, চিতল ৮০০, পাঙ্গাশ ২০০ তেলাপিয়া ২২০, বড় চিংড়ি ১০০০, রুপচাঁদা ১৩৫০, এবং ইলিশ মাছ বিক্রি হচ্ছে ১২০০ টাকা কেজি দরে।

;

রিজার্ভের পরিমাণ জানাল কেন্দ্রীয় ব্যাংক



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
রিজার্ভের পরিমাণ জানাল কেন্দ্রীয় ব্যাংক

রিজার্ভের পরিমাণ জানাল কেন্দ্রীয় ব্যাংক

  • Font increase
  • Font Decrease

দীর্ঘদিন ধরে দেশে ডলার সংকটের প্রভাবে বৈদেশিক মুদ্রার সঞ্চয় বা রিজার্ভ ধারাবাহিকভাবে কমছে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সর্বেশষ গণনায় দেশের রিজার্ভ ১৯ দশমিক ৪৫ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে। অন্যদিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসেবে তা ২৪ দশমিক ৮১ বিলিয়ন ডলার।

বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) সাপ্তাহিক হালনাগাদ প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। 

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত এক সপ্তাহে গ্রস রিজার্ভ কমেছে ৫৩ কোটি ডলার। বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবে গত ২১ মার্চ সঞ্চিত বিদেশি অর্থের পরিমাণ ছিল ২৫ দশমিক ২৪ বিলিয়ন ডলার। আর আইএমএফের গণনা পদ্ধতি বিপিএম-৬ অনুযায়ী তা ছিল ১৯ দশমিক ৯৮ বিলিয়ন ডলার।

এ ছাড়া কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিট রিজার্ভের আরেকটি হিসাব রয়েছে। যা শুধু প্রকাশ করা হয় না, শুধুমাত্র আইএমএফকে দেওয়া হয়। জানা গেছে, ওই হিসাবে বর্তমানে দেশের প্রকৃত রিজার্ভ এখন প্রায় সাড়ে ১৭ বিলিয়ন ডলার। যা দিয়ে ৩ মাসের আমদানি ব্যয় মিটবে।

অর্থাৎ, পণ্য কেনা বাবদ মাসিক প্রায় ৬ বিলিয়ন ডলার করে দায় পরিশোধ করা হয়। নিয়ম অনুযায়ী যেকোনো দেশের ন্যূনতম ৩ মাসের আমদানি খরচের সমান রিজার্ভ থাকতে হয়। বাংলাদেশেরও সেই পরিমাণ রিজার্ভ রয়েছে।

;

ইসলামী ব্যাংকে বঙ্গবন্ধুর জীবনাদর্শের উপর আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির উদ্যোগে এবং বঙ্গবন্ধু পরিষদ ইসলামী ব্যাংক ইউনিটের সহযোগিতায় “বঙ্গবন্ধুর জীবনাদর্শ ও বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবন” শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মবার্ষিকী এবং স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষ্যে ইসলামী ব্যাংক টাওয়ারে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন। ব্যাংকের ম্যানেজিং ডাইরেক্টর ও সিইও মুহাম্মদ মুনিরুল মওলার সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধু পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আ.ব.ম ফারুক, ইসলামী ব্যাংকের পরিচালক, মুক্তিযোদ্ধা মো. জয়নাল আবেদীন, বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষক কর্মচারী কল্যাণ ট্রাস্টের সচিব অধ্যক্ষ মো. শাহজাহান আলম সাজু, বাংলাদেশ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক একেএম আফজালুর রহমান বাবু, বঙ্গবন্ধু পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডাঃ শেখ আব্দুল্লাহ আল মামুন। স্বাগত বক্তব্য দেন বঙ্গবন্ধু পরিষদ ইসলামী ব্যাংক ইউনিটের সভাপতি মো. মোজাহারুল ইসলাম মেহেদী। অনুষ্ঠানে প্রধান কার্যালয়ের নির্বাহী ও কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।

;

চীনের সঙ্গে এফটিএ করতে সম্ভাব্যতা সমীক্ষা প্রতিবেদন বিনিময়



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
চীনের সঙ্গে এফটিএ করতে সম্ভাব্যতা সমীক্ষা প্রতিবেদন বিনিময়

চীনের সঙ্গে এফটিএ করতে সম্ভাব্যতা সমীক্ষা প্রতিবেদন বিনিময়

  • Font increase
  • Font Decrease

বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে বাণিজ্য এবং বিনিয়োগ বাড়ানোর লক্ষ্যে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) সই করার বিষয়ে যৌথভাবে খসড়া সম্ভাব্যতা সমীক্ষা প্রতিবেদন বিনিময় করেছে দুই দেশ।

বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে এ সমীক্ষা প্রতিবেদন বিনিময় করে বাংলাদেশ ও চীন।

এসময় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ, বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

তপন কান্তি ঘোষ বলেন, বাংলাদেশের স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণ বর্তমান সরকারের অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রার উল্লেখযোগ্য অর্জন। এ অর্জন বিশ্বে বাংলাদেশের ইতিবাচক ভাবমূর্তি সৃষ্টি এবং বিনিয়োগ ও বাণিজ্যে নতুন সম্ভাবনা তৈরির পাশাপাশি বেশ কিছু চ্যালেঞ্জও তৈরি করবে।

তিনি আরও বলেন, যার মধ্যে স্বল্পোন্নত দেশ হিসাবে উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশে পণ্য রপ্তানির সময় শুল্কমুক্ত কোটামুক্ত প্রবেশাধিকার সুবিধা ২০২৬ সালের পরে হারানো এবং মূল্য সংযোজনের হার অন্যতম। এর ফলে বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্যকে ওই সব দেশের বাজারে প্রবেশের সময় সাধারণভাবে আরোপিত শুল্কের সম্মুখীন হতে হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ফলে ওই সকল দেশে বাংলাদেশের রপ্তানি বাজার সংকোচনের সম্ভাবনা রয়েছে।

কবে নাগাদ এফটিএ সই হতে পারে সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে সচিব বলেন, এখনো চুক্তি হয়নি। এখন আলোচনা শুরু হবে। আগামী তিন বছরের মধ্যে চুক্তি সম্পন্ন করতে পারলে ভালো। যদি না হয় আমাদের আলোচনা চালিয়ে যেতে হবে। আলোচনা শেষ না হলে ততোদিন যেন আমাদের এলডিসি হিসাবে এই সুবিধাগুলো তাঁরা দেয় এর জন্য বলবো।

চুক্তির ফলে বাংলাদেশ কি ধরনের সুবিধা পাবে এ বিষয়ে তপন কান্তি ঘোষ বলেন, আমাদের প্রধান রপ্তানি পণ্য গার্মেন্টের বাইরে আরও কিছু পণ্য আছে। রাষ্ট্রদূততের সঙ্গে আলাপকালে তিনি জানিয়েছেন আম ও পাটজাত পণ্যের অনেক সম্ভাবনা আছে। তারপর হস্তশিল্পের বিষয় আছে।

তিনি বলেন, এছাড়া আরও পণ্য আছে। আমরা ইতোমধ্যে চামড়া রপ্তানি করছি। আমরা মানসম্মত চামড়াজাত পণ্য রপ্তানি করতে পারি। চীনে ১৪০ কোটি মানুষ। সেখানে যদি আমরা বৈচিত্র্য পণ্য নিয়ে যেতে পারি, বড় বাজার। চুক্তি হয়ে গেলে বিনিয়োগ বাড়ারও সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানান তিনি।

তপন কান্তি ঘোষ বলেন, আমরা প্রধানত তৈরি পোশাক রপ্তানি করি। ২০২২-২৩ অর্থবছরে আমরা চীনে ৬৭৭ মিলিয় মার্কিন ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছি। বিপরীতে চীন থেকে ২২ দশমিক ৯০ বিলিয়ন ডলার আমদানি করা হয়েছে।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বলেন, বাংলাদেশে চীনের বড় বিনিয়োগ রয়েছে। এখন চীন বাংলাদেশে দ্বিতীয় বৃহৎ বিনিয়োগকারী দেশ। এফটিএ সই হওয়ার পর বিনিয়োগ আরও বাড়বে। বাংলাদেশ চীনে আম, কাঠাল, আলু, পাটপণ্য, চামড়াজাত পণ্য রপ্তানি করতে পারে।

তিনি আরও বলেন, বর্তমান বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা এবং টেকসই অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য এফটিএ করা প্রয়োজন।

অনুষ্ঠানে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়, এলডিসি উত্তরণ পরবর্তী সম্ভাব্য চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সরকারের অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা অনুসারে বাংলাদেশের রপ্তানি বাজার সংরক্ষণ এবং সম্প্রসারণে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যে বাণিজ্যিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন দেশ ও ট্রেড ব্লকের সাথে আঞ্চলিক বাণিজ্য চুক্তি সম্পাদনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।

;