জাপানি স্ট্যান্ডার্ডে ব্যাটারি উৎপাদন করছে ওয়ালটন
নিজস্ব প্রোডাকশন প্ল্যান্টে জাপানি স্ট্যান্ডার্ডের ব্যাটারি উৎপাদন করছে মাল্টিন্যাশনাল বাংলাদেশি ব্র্যান্ড ওয়ালটন। পণ্য নিয়ে নিয়মিত গবেষণা করছে ওয়ালটন। বর্তমানে মোটরসাইকেলের ব্যাটারি, রিচার্জেবল ফ্যান, অনলাইন ইউপিএস ও এমার্জেন্সি লাইটসহ বিভিন্ন ডিভাইসের স্মল ব্যাটারি উৎপাদন ও বাজারজাত করছে ওয়ালটন।
এছাড়া খুব শিগগিরই উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন অনলাইন ইউপিএস ব্যাটারি এবং সিএনজি, প্রাইভেটকার, বাস ও ট্রাকের জন্য অটোমোটিভ ব্যাটারিসহ বিভিন্ন ধরনের ব্যাটারি ধীরে ধীরে ওয়ালটনের প্রোডাকশন লাইনে যুক্ত হবে। ওয়ালটনের অন্যান্য পণ্যের মতো স্বল্পম‚ল্যে বাজারজাত করা হচ্ছে আন্তর্জাতিকমান সম্পন্ন ব্যাটারি।
রোববার (১২ জুন) যশোরের শেখ হাসিনা সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্কে অনুষ্ঠিত ‘ওয়ালটন ব্যাটারি মিট দ্য টেকনিশিয়ান কনফারেন্স ২০২২’-এ দেয়া শুভেচ্ছা বক্তব্যে এসব কথা বলেন ওয়ালটন মাইক্রো-টেক করপোরেশনের চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার (সিইও) নিশাত তাসনিম শুচি। তিনি টেকনিশিয়ানদের ওয়ালটন হেডকোয়ার্টার পরিদর্শনের আমন্ত্রণ জানান। ওয়ালটনের পক্ষ থেকে টেকনিশিয়ানদের সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
ওয়ালটন মাইক্রো-টেক করপোরেশনের আয়োজনে অনুষ্ঠিত হয় দিনব্যাপী ওই কনফারেন্স।
‘এক সাথে, একই স্বপ্নে’ এই স্লোগানকে সামনে রেখে ওয়ালটনের স্টেকহোল্ডার ও পার্টনারদের সঙ্গে ব্যবসায়িক সম্পর্ক আরো সুদৃঢ় ও মজবুতের প্রত্যয়ে শেষ হয় কনফারেন্স। অনুষ্ঠানে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে যুক্ত হন সিইও নিশাত তাসনিম শুচি।
সে সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ওয়ালটনের সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর এবং প্রধান বিপণন কর্মকর্তা (সিএমও) ফিরোজ আলম, সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর ও জনপ্রিয় চিত্রনায়ক আমিন খান, ডেপুটি এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর কামাল হোসাইন, কিচেন অ্যাপ্লায়েন্সের সিবিও মাহফুজুর রহমান, ওয়ালটন ব্যাটারির বিজনেস কো-অর্ডিনেটর রেজাউল ইসলাম মিনার, ন্যাশনাল সেলস ম্যানেজার বাবর আলী আপন ও এসএম সেলিমুর রহমান এবং ওয়ালটন ব্যাটারির ব্র্যান্ডিং বিভাগের ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর অনিক আহমেদ প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে ক্রেতাদের দেশি পণ্য কিনতে উৎসাহ প্রদান করতে টেকনিশিয়ানদের প্রতি আহবান জানান সিএমও ফিরোজ আলম। তিনি বলেন, শরীরে অসুখ হলে মানুষ যেমন ডাক্তারে বিশ্বাস রাখে, তেমনি মোটরসাইকেলসহ শখের বিভিন্ন পণ্যে সমস্যা হলে ভরসা রাখেন টেকনিশিয়ানদের ওপর। ওয়ালটনের মতো দেশীয় কোম্পানিগুলোর পণ্য বাজারে থাকলে বিদেশি পণ্য কেনার অর্থ হলো দেশের টাকা বিদেশে পাচার করা। দেশে উৎপাদিত পণ্য যদি বিদেশি পণ্যের সমান বা তারচেয়েও ভালো মানের হয় তাহলে বিদেশি পণ্য কিনে দেশের টাকা বাইরে পাঠানো মানে দেশের অর্থনীতির ক্ষতি করা।
আমিন খান বলেন, টেকনিশিয়ানরা ওয়ালটন পরিবারের সদস্য। টেকনিশিয়ানদের থেকে পাওয়া বিভিন্ন পরামর্শ আমরা অনুপ্রেরণা হিসেবে দেখি। ওয়ালটন কখনোই নিম্মমানের ব্যাটারি উৎপাদন করবে না। অন্যান্য পণ্যের মতোই এর মান নিয়ে প্রশ্ন তোলার কোনো সুযোগ নেই। আসুন আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হই নিজের টাকায় বিদেশি পণ্য না কিনে দেশীয় পণ্য কিনবো। অন্যকেও উৎসাহিত করবো।
কনফারেন্সে নিত্য নতুন ডিজাইনের ব্যাটারি উৎপাদন প্রক্রিয়া, ওয়ালটন ব্যাটারির ফিচার ও গুণগতমান নিয়ে বিস্তারিত তথ্য-উপাত্ত উপস্থাপন করেন ওয়ালটন ব্যাটারির রিসার্চ এন্ড ইনোভেশন (আর অ্যান্ড আই) বিভাগের সিনিয়র ডেপুটি ডিরেক্টর প্রকৌশলী নাহিদ আল মাহমুদ। এছাড়া মার্কেট সম্পর্কিত বিভিন্ন পর্যালোচনা তুলে ধরেন ওয়ালটনের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাবৃন্দ। পাশাপাশি নিজেদের দাবি-দাওয়া ও বিভিন্ন বক্তব্য তুলে ধরেন দেশের নানা প্রান্ত থেকে আসা টেকনিশিয়ানরা।
কনফারেন্সে অন্যান্য সেগমেন্টের সঙ্গে আয়োজিত হয় জনসচেতনতাম‚লক স্বাস্থ্যবিষয়ক অনুষ্ঠান। পেশাগত জীবনে টেকনিশিয়ানরা কিভাবে কাজের মাধ্যমে শারীরিক সমস্যার সম্মুখীন হন এবং তার প্রতিকার বিষয়ে বিস্তারিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন যশোরের আদ-দ্বীন হাসপাতালের ইন্টার্নি ডাক্তার শামসুন মুনিরা। এছাড়া কনফারেন্সে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সঙ্গীত পরিবেশন করেন কণ্ঠশিল্পী ইলমা ও মিষ্টি। অনুষ্ঠান শেষ হয় র্যাফেল ড্র-এর মধ্য দিয়ে।