বিইআরসি লোয়াব মতপার্থক্য এলপিজির দর ঘোষণা স্থগিত



সেরাজুল ইসলাম সিরাজ, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

পিছিয়ে গেছে সেপ্টেম্বর মাসের এলপি গ্যাসের দর ঘোষণা আয়োজন। ডলারের দরসহ বেশ কিছু ইস্যুতে বিইআরসি (বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের) লোয়াব (এলপিজি অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ) ঐক্যমত না হওয়ায় পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে।

আনুষ্ঠানিক দর ঘোষণা আগামী ৭ সেপ্টেম্বর আসতে পারে বলে জানিয়েছেন কমিশনের সদস্য মকবুল ই-এলাহী চৌধুরী।

কমিশনের ওই সদস্য বার্তা২৪.কম-কে বলেছেন, ব্যবসায়ীরা দাবি করেছেন তারা সরকারি ব্যাংকের দর অনুযায়ী ডলার পাচ্ছে না। তাদেরকে বেসরকারি ব্যাংক থেকে বাড়তি দরে ডলার কিনতে হচ্ছে। সেই বাড়তি দর অনুযায়ী ডলারের ধর নির্ধারণের দাবি জানিয়েছে। বেসরকারি একেক ব্যাংক একেক দরে বিক্রি করছে। এখানে আইনগত কিছু বিধি নিষেধ থাকায় বেসরকারি ব্যাংকের ডলার রেট অনুসরণ করা কঠিন।

বিইআরসি সূত্র জানিয়েছে, ডলারের দর ছাড়াও জ্বালানি তেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় লোয়াব পরিবহন খরচ বৃদ্ধির দাবি জানিয়েছে। ১১টি কোম্পানি ইতিমধ্যে গণশুনানির জন্য আবেদন দিয়েছে। আমরা তাদের প্রস্তাবগুলো পর্যালোচনা করছি। পরিবহন খরচ যে বেড়েছে তা প্রমাণের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজ দিতে বলা হয়েছে। এক্ষেত্রে কয়েকটি কোম্পানি কাগজ দিলেও বেশিরভাগ কোম্পানি সহযোগিতা করছে না।

অভিযোগ রয়েছে, বিইআরসির আদেশকে তোয়াক্কাই করছে না এলপি গ্যাস আমদানিকারকরা। তাদের যখন সুবিধা হয়েছে মেনে নিয়েছে যখনই মুনাফা কমে গেছে তখনই নিজেদের ইচ্ছায় চলছে।

জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, আজম জে চৌধুরীর ইস্ট-কোস্ট গ্রুপ (ওমেরা এলপিজি), সালমান এফ রহমানের বেক্সিমকো গ্রুপ (বেক্সিমকো এলপিজি), মোস্তফা কামালের মেঘনা গ্রুপসহ (ফ্রেশ এলপিজি) এ খাতের ব্যবসায়ীদের হাতের পুতুল হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে বিইআরসি। আর সরকারও নিজেকে সপে দিয়ে বসে রয়েছে। তারা যা খুশি তাই করছেন, যেনো কারো কিছু করার নেই, কেউ কিছু করারও সাহস দেখাচ্ছে না। বিইআরসি কিছুটা উদ্যোগী হলেও পিছু হটেছে বাধ্য হয়ে। সরকারের পক্ষ থেকে যে সার্পোট পাওয়ার কথা তা কখনই পাচ্ছে না।

২০২১ সালের ১২ এপ্রিল প্রথমবারের মতো এলপি গ্যাসের দর ঘোষণা করে বিইআরসি। বিইআরসির আদেশে বলা হয়েছিল সৌদি রাষ্ট্রীয় কোম্পানি আরামকো ঘোষিত দরকে প্রতি মাসের ভিত্তি মূল্য বিবেচিত হবে। সৌদির দর উঠা-নামা করলে এলপিজির মূল্য উঠা-নামা করবে। আমদানিকারকের অন্যান্য কমিশন ও খরচ অপরিবর্তিত থাকবে।

১২ এপ্রিল দর ঘোষণার দিনেই আমদানিকারকদের পক্ষ থেকে আপত্তি তোলা হয়। তারা দাবি করে দর বেশি হওয়া উচিত ছিল। ঘোষিত দরে তাদের ব্যবসা চালিয়ে নেওয়া সম্ভব না। এরপর থেকে বিইআরসির সঙ্গে টানাপোড়েন শুরু হয় লোয়াবের। তারা প্রতিমাসের দর ঘোষণাও বর্জন করে। নিজেদের ইচ্ছামতো দরে বেচাকেনা করতে থাকে। অন্যদিকে বিভিন্নভাবে বিইআরসির ওপর চাপ তৈরি করে, এলপিজি আমদানি বন্ধ করার হুমকি দেন লোয়াব সভাপতি আজম জে চৌধুরী। এক পর্যায়ে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ অনেকটা ব্যবসায়ীদের সুরেই কথা বলতে থাকেন।

লোয়াবের চাপে বিইআরসি অনেকটা বাধ্য হয়েই (৫ মাসের মাথায় ১৩ সেপ্টেম্বর) ফের শুনানি নিয়ে কমিশন বাড়িয়ে দেয়। এপ্রিলে ঘোষিত দরে এলপিজির আমদানিকারক, ডিলার ও খুচরা বিক্রেতার জন্য ১২ কেজির সিলিন্ডারে মোট ৩৫৯ দশমিক ৪০ টাকা কমিশন নির্ধারণ করা হয়েছিল। পরের দফায় সেই চার্জ বাড়িযে ৪৪১ টাকা করা হয়। অর্থাৎ ১২ কেজি সিলিন্ডারে কমিশন বাড়ানো হয়েছে ৮১ দশমিক ৬ টাকা। ডিলার এবং খুচরা বিক্রেতার কমিশন বাড়িয়ে যথাক্রমে ৩৪ ও ৩৮ টাকা করা হয়েছে।

দর যখন নিম্নগামী তখন মাইনাস ওয়ান (আগের মাসের) ফর্মুলায় তাদের কোন আপত্তি ছিল না। আমদানিকৃত গ্যাস সিস্টেমে আসতে ১৫ থেকে ২০ দিন সময় লেগে যায় সে কারণে দ্বি-পাক্ষিক আলোচনার ভিত্তিতেই মাইনাস ওয়ান ফর্মুলা নির্ধারণ করা হয়। অর্থাৎ আগের মাসের দর অনুযায়ী পরের মাসে গ্যাসের দর নির্ধারিত হতে থাকল। কয়েক মাস পরে যখন বাজারে ঊর্ধ্বগতি শুরু হলো, তখনেই বাগড়া দিয়ে বসে এলপিজি আমদানিকারকরা। তারা বলা শুরু করে, মাইনাস ওয়ার্ন ফর্মুলায় তারা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন, বর্তমান মাসের দর অনুযায়ী মূল্য নির্ধারণ করতে হবে। বিইআরসি দর ঘোষণার আগেই দাম বাড়িয়ে দেয়। বিইআরসিও তাদের কথায় বাধ্য হয়ে মাইনাস ওয়ান বাতিল করে ।

লোয়াব দাবি করে আসছে তাদের বিদেশ থেকে আনতে জাহাজ ভাড়া যথাযথভাবে আমলে নেওয়া হয়নি। জবাবে বিইআরসি তাদের কমার্শিয়াল এনভয়েস দাখিল করতে বললেও দাখিল থেকে অনেকেই বিরত থেকেছে। যারা ছোট ছোট জাহাজে এলপিজি আনছে তাদের কয়েকটি এনভয়েস দাখিল করে। লোয়াব বরাবরই দাবি করে আসছে টন প্রতি তাদের পরিবহন খরচ পড়ছে ১১০ ডলার থেকে ১৩০ ডলার পর্যন্ত। লোয়াব যখন এই দাবি করেছে সেই সময়ে মোংলা বন্দর থেকে টিকে গ্রুপের একটি এনভয়েসে সংগ্রহ করে তাতে টন প্রতি মাত্র ৬৫ ডলার জাহাজ ভাড়া দেখা গেছে। বিষয়টি বিইআরসি জানলেও চাপের মুখেই পরিবহন খরচ ৯৫ ডলার করে দেয়। যদিও তাদের এপ্রিলের আদেশে বলা হয়েছিল জাহাজ ভাড়া কমিয়ে আনতে হবে। দরকার হলে কয়েকজন মিলে গ্রুপ করে বড় জাহাজে আমদানি করে পশ্চিমবঙ্গের মতো জাহাজ ভাড়া কমাতে হবে।

লোয়াব নতুন করে ডিজেলের দাম বৃদ্ধির কথা বলে আবার কমিশন বাড়ানোর দাবি তুলেছে । অবাক করার হচ্ছে ইতিমধ্যেই তারা বাজারে দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। আগস্টে ১২ কেজি সিলিন্ডারের খুচরা মূল্য ১২১৯ টাকা করা হলেও তারা ১২৮০ টাকা পাইকারি দরে বিক্রি করছে। বিস্ময়কর হচ্ছে কোম্পানিগুলো প্রকাশ্য বলছে বিইআরসি নির্ধারিত দরে বিক্রি করা সম্ভব নয়। তাদের সেই বক্তব্যের পর লাইসেন্স বাতিল হওয়ার কথা, কিন্তু বিইআরসি হাত গুটিয়ে বসে রয়েছে। পরিবহন খরচ বৃদ্ধির জন্য যে আবেদন করেছে এবারও কমার্শিয়াল এনভয়েস জমা দেননি অনেকেই। বিইআরসি তাদের আবেদনের সত্যতা যাচাইয়ে এনবিআর থেকে তথ্য সংগ্রহ করতে পারতো। বিইআরসিরও অনীহার কারণে প্রকৃত সত্য থেকে যাচ্ছে আড়ালে।

২০০৮-০৯ অর্থবছরে দেশে এলপিজি ব্যবহৃত হয়েছে ৪৪ হাজার ৯৭৪ মেট্রিক টন। কয়েক বছরে চাহিদা বেড়ে ১২ লাখ টনে উন্নীত হয়েছে। জাইকার এক সমীক্ষায় বলা হয়েছে, ২০২৫ সালে ৩০ লাখ টন ও ২০৪১ সালে চাহিদা হবে ৬০ লাখ টন। দেশে ব্যবহৃত এলপিজির সাড়ে ৯৮ ভাগ আমদানি নির্ভর। সরকারি (বাংলাদেশ এলপি গ্যাস কোম্পানি লিমিটেড) কোম্পানির মার্কেট শেয়ার মাত্র দেড় শতাংশের মতো। সরকার এখন পর্যন্ত ৫৬টি কোম্পানি অনুমোদন দিয়েছে। এরমধ্যে ২৮ টির মতো মার্কেটে রয়েছে বেশকিছু কোম্পানি প্রস্তুতি পর্যায়ে রয়েছে।

   

ইসলামী ব্যাংকের ১০ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড ঘোষণা



নিউজ ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি-এর পরিচালনা পর্ষদ ব্যাংকের শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ২০২৩ সালে ১০% ক্যাশ ডিভিডেন্ড সুপারিশ করেছে। ব্যাংকের ৪১তম বার্ষিক সাধারণ সভার অনুমোদন সাপেক্ষে এ ডিভিডেন্ড প্রদান করা হবে।

বুধবার (২৪ এপ্রিল) ব্যাংকের চেয়ারম্যান আহসানুল আলম-এর সভাপতিত্বে পরিচালনা পর্ষদের সভায় এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সভায় ভাইস চেয়ারম্যান তানভীর আহমেদসহ অন্যান্য পরিচালকবৃন্দ, ম্যানেজিং ডাইরেক্টর ও সিইও মুহাম্মদ মুনিরুল মওলা এবং অ্যাডিশনাল ম্যানেজিং ডাইরেক্টর ও কোম্পানি সেক্রেটারি জে কিউ এম হাবিবুল্লাহ, এফসিএস উপস্থিত ছিলেন।

আগামী ২৫ জুন ২০২৪, মঙ্গলবার ব্যাংকের ৪১তম বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠানের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। লভ্যাংশ প্রাপ্তি এবং সাধারণ সভায় যোগদানের ক্ষেত্রে রেকর্ড তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে ১৬ মে ২০২৪। এ ছাড়া সভায় অন্যান্য আলোচ্যসূচির সাথে ৩১ মার্চ শেষ হওয়া ২০২৪ সালের প্রথম প্রান্তিকের অনিরীক্ষিত আর্থিক বিবরণী অনুমোদন করা হয়।

;

টেন মিনিট স্কুলের কোর্স ফি বিকাশ পেমেন্টে ১৫% ক্যাশব্যাক



নিউজ ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বিকাশ অ্যাপ থেকে দেশের শীর্ষস্থানীয় অনলাইন শিক্ষামূলক প্ল্যাটফর্ম টেন মিনিট স্কুল-এর নির্দিষ্ট কোর্স নিয়ে পেমেন্ট করলেই গ্রাহকরা পাচ্ছেন ১৫% ইনস্ট্যান্ট ক্যাশব্যাক, সর্বোচ্চ ২০০ টাকা পর্যন্ত। বিকাশ অ্যাপের হোম স্ক্রিনের সাজেশনস সেকশন থেকে ‘টেন মিনিট স্কুল’ সিলেক্ট করে ৩০ জুন পর্যন্ত অফারটি গ্রহণ করা যাবে।

টেন মিনিট স্কুল-এর লাইভ কোর্স, স্পোকেন ইংলিশ, আইইএলটিএস, ফ্রিল্যান্সিং এর মতো ভাষা শিক্ষা ও স্কিল ডেভেলপমেন্ট কোর্স, ইংলিশ মাস্টার্স, কনটেন্ট ক্রিয়েশন, ডিজিটাল মার্কেটিং-এর মতো বান্ডেল কোর্স, বুয়েট, মেডিকেল, ভার্সিটির ভর্তি পরীক্ষার কোর্স, এসএসসি-এইচএসসি প্রস্তুতি ও অনলাইন ব্যাচের জন্য একাডেমিক কোর্স, চাকরির নিয়োগ পরীক্ষার প্রস্তুতি সহ নানা ধরনের কোর্স নিতে পারবেন বিকাশ গ্রাহকরা এই অফারের আওতায়।

অফারের সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যাবে https://www.bkash.com/campaign/10minuteschool-bkash-offer লিংকটিতে।

 

;

এক দিনের ব্যবধানে ফের কমল সোনার দাম



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

দেশের বাজারে সোনার দামের উত্থান-পতন অব্যাহত আছে। একদিনের ব্যবধানে সোনার দাম ভরিতে ২ হাজার ১০০ টাকা কমছে। তাতে ভালো মানের, অর্থাৎ হল-মার্ক করা ২২ ক্যারেট সোনার দাম দাঁড়িয়েছে প্রতি ভরি ১ লাখ ১৪ হাজার ১৯০ টাকায়। নতুন এ দাম আজ বুধবার থেকেই কার্যকর হবে।

বুধবার (২৪ এপ্রিল) বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানিয়েছে। এতে বলা হয়, স্থানীয় বাজারে খাঁটি সোনার দাম কমেছে, সে জন্য সোনার নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে।

নতুন দাম অনুযায়ী প্রতি ভরি (১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রাম) ২২ ক্যারেটের স্বর্ণের দাম পড়বে ১ লাখ ১৪ হাজার ১৯০ টাকা। এছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ৯ হাজার টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ৯৩ হাজার ৪২৯ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ৭৫ হাজার ২০৯ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

এর আগে, ২৩ এপ্রিল সোনার দাম ভরিতে ৩ হাজার ১৩৮ টাকা কমিয়ে ভালো মানের, অর্থাৎ হল-মার্ক করা ২২ ক্যারেট সোনার দাম নির্ধারণ করা হয় ১ লাখ ১৬ হাজার ২৯০ টাকা। এছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ১০ হাজার ৯৯৫ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ৯৫ হাজার ১৪৩ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি সোনার দাম ৭৬ হাজার ৫৮৬ টাকা নির্ধারণ করা হয়।

আর গত ২১ এপ্রিল ভরিতে ৬৩০ টাকা বাড়িয়ে ২২ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম ১ লাখ ১৯ হাজার ৪২৮ টাকা নির্ধারণ করেছিল বাজুস। এছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ১৪ হাজার ৪ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ৯৭ হাজার ৭০৯ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি সোনার দাম ৭৮ হাজার ৬৬২ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল। যা সেদিন বিকেল ৩টা ৩০ মিনিট থেকে কার্যকর হয়েছিল।

তার আগে, ২০ এপ্রিল সোনার দাম ক‌মিয়ে‌ছিল বাজুস। যা ওইদিনই কার্যকর হয়। ওই দাম অনুযায়ী রোববার বিকেল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি সোনার দাম ছিল ১ লাখ ১৮ হাজার ৭৯৮ টাকা, ২১ ক্যারেট সোনার দাম ১ লাখ ১৩ হাজার ৩৯৭ টাকা, ১৮ ক্যারেট ৯৭ হাজার ১৯৭ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি সোনার দাম ছিল ৭৮ হাজার ২৪২ টাকা।

;

জ্বালানি তেল পরিবহনের খোলনলচে বদলে দিচ্ছে ৩ মেগা প্রকল্প



সেরাজুল ইসলাম সিরাজ, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

তিন মেগা প্রকল্প বাংলাদেশের জ্বালানি তেল পরিবহনের খোলনলচে বদলে দিতে যাচ্ছে। মেগা প্রকল্প তিনটি হলো, এসপিএম (সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিং), বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া ফ্রেন্ডশিপ পাইপলাইন প্রকল্প এবং ঢাকা-চট্টগ্রাম পাইপলাইন প্রকল্প।

এর মধ্যে এসপিএম (সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিং) ও বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া ফ্রেন্ডশিপ পাইপলাইন ইতোমধ্যেই অপারেশনে এসেছে। আর ঢাকা-চট্টগ্রাম পাইপলাইন চলতি বছরেই শেষ হতে যাচ্ছে বলে জানিয়েছে মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র।

এখন ভোক্তার হাতে জ্বালানি তেল পৌঁছাতে বহুঘাট ঘুরতে হবে না। আবার বৃষ্টি-বাদল কিংবা হরতাল, ধর্মঘটেও জ্বালানি তেল সরবরাহ থাকবে নির্ভার। শুধু কী নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ নিশ্চয়তা, তাও নয়, এক এসপিএম বছরে সাশ্রয় করবে কমপক্ষে ১ হাজার কোটি টাকা! কমে যাবে জ্বালানি তেলের সিস্টেম লসও।

জ্বালানি তেল পরিবহনের খোলনলচে পাল্টে দিচ্ছে মেগা তিন প্রকল্প

এজন্য কক্সবাজারের মহেশখালীতে স্থাপন করা হয়েছে, এসপিএম উইথ ডাবল পাইপলাইন। এতদিন আমদানি করা জ্বালানি তেলের জাহাজ গভীর সমুদ্রে নোঙর করতো। সেখান থেকে লাইটার জাহাজে করে রিফাইনারি ট্যাংকে পৌঁছাতে সময় লাগত ১১, ১২ দিন। এসপিএম হওয়ায় সমপরিমাণ তেল পরিবহনে সময় লাগবে মাত্র ৪৮ ঘণ্টা। এতে করে মাদার ভেসেলের ওয়েটিং চার্জ এবং লাইটারেজ জাহাজের পরিবহন খরচ আর থাকছে না।

মহেশখালী দ্বীপের দক্ষিণ-পশ্চিমে গভীর সমুদ্রে স্থাপন করা হয়েছে, ভাসমান বয়া। সেই বয়া থেকে সাগরের তলদেশ দিয়ে ৩৬ ইঞ্চি ব্যাসের পৃথক দুটি পাইপলাইন পৌঁছে গেছে স্টোরেজ ট্যাংক টার্মিনালে। একটি ক্রড অয়েল সঞ্চালনের জন্য। আরেকটি দিয়ে সফলভাবে ডিজেল পরিবহন কার্যক্রম ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে।

গভীর সমুদ্রে বয়াতে এসে নোঙর করবে মাদার ভেসেল। সেখান থেকে পাাইপলাইনের মাধ্যমে কয়েক ঘণ্টায় তেল পৌঁছে যাবে চট্টগ্রামের জ্বালানি তেলের প্রধান স্থাপনায়।

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, জ্বালানি তেল ব্যবস্থাপনা সাশ্রয়ী ও টেকসই করতে এসপিএম (সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিং) কার্যকরী অবদান রাখবে। প্রকল্পটি চালু হলে বছরে ১ হাজার কোটি টাকা খরচ সাশ্রয় হবে।

তিনি বলেন, প্রকল্পের আওতায় ২শ ২০ কিলোমিটার পাইপলাইনে পাশাপাশি তৈরি করা হয়েছে ৬টি বিশালাকৃতির স্টোরেজ ট্যাঙ্ক; যার মাধ্যমে বাংলাদেশের তেল মজুত সক্ষমতা পৌঁছে গেছে নতুন এক উচ্চতায়।

এসপিএম প্রকল্পের পরিচালক শরীফ হাসনাত বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘বড় জাহাজ থেকে তেল খালাস করতে অন্তত ১১ দিন সময় লাগে। কখনো কখনো এই তেল খালাস করতে আরো সময় লেগে যায়। বিশেষ করে সমুদ্র উত্তাল হয়ে পড়লে তখন খালাস করা অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। জাহাজ মালিকদের সঙ্গে চুক্তির চেয়ে বেশি সময় লাগায় কখনো কখনো জরিমানা গুণতে হতো। এসপিএম প্রকল্প বাস্তবায়ন হওয়ায় ২৮ থেকে ৪৮ ঘণ্টায় ডিজেল ও ক্রুড অয়েল খালাস করা সম্ভব হবে। এতে একদিকে যেমন জাহাজ ভাড়া কমে আসবে, অন্যদিকে তেল পরিবহনে সিস্টেম লস ও নানান ধরনের চুরিও প্রতিরোধ সম্ভবপর হবে।

বাংলাদেশ জ্বালানি তেল উৎপাদন করে না। গ্যাস ফিল্ডগুলো থেকে প্রাপ্ত কনডেনসেট থেকে পেট্রোল এবং ৪০ শতাংশের মতো অকটেন জোগান আসে। বিপুল পরিমাণ ডিজেলসহ অন্যান্য পণ্য আমদানি করে জোগান দেওয়া হয়। বিপুল পরিমাণ জ্বালানি আমদানি করা হয়, নদীপথে। কিন্তু নদী বন্দরগুলোতে নাব্যতার অভাবে বড় বড় জাহাজ বন্দরে ভিড়তে পারে না। সে কারণে নির্ভর করতে হয় লাইটারেজ জাহাজের ওপর।

মেগা প্রকল্প বদলে দিচ্ছে জ্বালানি তেল পরিবহনের ব্যবস্থা

মাদারভেসেল থেকে লাইটার বা ছোট জাহাজে করে তেল আনা হয়, বিপিসি’র (বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন) ডিপোতে।

বিপিসি থেকে আবার জাহাজে করে তেল দেশের বিভিন্ন জায়গায় পৌঁছে দেওয়া হয়। ক্ষেত্র বিশেষে রেলের ওয়াগন এবং ট্যাংকলরিতে করেও তেল পৌঁছাতে নানান রকম ঝাক্কি-ঝামেলা পোহাতে হয়। বিষয়টি ছিল সময়সাপেক্ষ ও অনেক কিছুর ওপর নির্ভরশীল। সেখানেও পরিবর্তনের হাওয়া লাগতে শুরু করেছে।

অবশেষে, ঢাকা-চট্টগ্রাম তেলের পাইপলাইন করার কাজও প্রায় শেষ হয়ে এসেছে। ২০১৭ সালে প্রাক-সমীক্ষা শেষ হলেও নানা কারণে নির্ধারিত গতিতে চলতে পারেনি প্রকল্পটি।

বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) অর্থায়নে গৃহীত এই প্রকল্পের আওতায় ঢাকা-চট্টগ্রাম ২শ ৩৭ কিলোমিটার, কুমিল্লা থেকে চাঁদপুর পর্যন্ত ৫৯ কিলোমিটার, ফতুল্লা থেকে থেকে গোদনাইল ডিপো পর্যন্ত সাড়ে ৮ কিলোমিটার পাইপলাইন স্থাপন করা হবে। পাইপলাইনটি চালু হলে বছরে ৬৫ কোটি টাকা পরিবহন খরচ সাশ্রয় হবে বলে আশা করছে বিপিসি।

প্রকল্পের আওতায় ২শ ৩৭ কিলোমিটার পাইপলাইন নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। এখন চট্টগ্রাম ডেচপার্স টার্মিনাল ও নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় রিসিভিং পয়েন্টের ফিনিশিংয়ের কাজ চলছে। ডিসেম্বরের আগেই পাইপলাইনটি চালু করার বিষয়ে আশাবাদী জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগ।

অন্যদিকে, দেশের শস্যভাণ্ডার খ্যাত উত্তরাঞ্চলের জ্বালানি পরিবহন ব্যবস্থা ছিল খুবই জটিল ও বহুঘাট, হাত ঘুরে। লাইটারেজে করে তেল নেওয়া হতো। এছাড়াও ট্যাংকলরি, আরেকটি রুট হচ্ছে রেলওয়ের মাধ্যমে পৌঁছানো। এখন সেখানেও পরিবর্তন এনেছে, বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া ফ্রেন্ডশিপ পাইপলাইন।

দেশের উত্তরাঞ্চলের ১৬ জেলায় নিরবচ্ছিন্ন, দ্রুত ও সাশ্রয়ীভাবে জ্বালানি সরবরাহের জন্য ২০১৮ সালে ইন্ডিয়া-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ পাইপ লাইন নির্মাণ প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়। ৩ হাজার ৬শ ২৩ কোটি টাকা ব্যয়ে ১শ ৩১.৫০ কিলোমিটার পাইপ লাইন নির্মাণের সময়কাল ছিল ২০২৩ সালের জুন মাস পর্যন্ত। নির্ধারিত সময়ের আগেই পাইপলাইনটি চালু করা হয়েছে বলে জানা গেছে।

ভারতের নুমালীগড় থেকে বাংলাদেশের পার্বতীপুর ডিপো পর্যন্ত বিস্তৃত এই পাইপলাইনের কারণে উত্তরাঞ্চলের দৈনিক অতিরিক্ত ২৯ হাজার মেট্রিক টন জ্বালানি মজুত সক্ষমতা বৃদ্ধি হবে। সহজে বিদ্যুৎকেন্দ্রে জ্বালানি সরবরাহ করা, উত্তরাঞ্চলের ১৬টি জেলায় কম খরচে এবং দ্রুততম উপায়ে জ্বালানি তেল সরবরাহ করা সম্ভব হবে এই পাইপ লাইনের কারণে।

;