কর অবকাশ পেতে একতা পাওয়ারের জালিয়াতির আশ্রয়
বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমার উৎপাদন প্রতিষ্ঠান একতা পাওয়ার লিমিটেড কর অবকাশ পেতে প্রতারণার আশ্রয় নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। জালিয়াতির মাধ্যমে কর অবকাশ সুবিধা নিয়েছে বলে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) তদন্তে উঠে এসেছে।
একতা পাওয়ার লিমিটেড প্রতিষ্ঠা হয় ২০১৭ সালে। কোম্পানিটি ২০১৯ সালের মে এবং জুন মাসে দুই দফায় বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডে (বিআরইবি) ৩ হাজার ৫০৩টি বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমার সরবরাহ করে। ওই সরবরাহের বিপরীতে তারা মূসকও জমা দেয়। এরপর কোম্পানিটি কর অবকাশ সুবিধার জন্য এনবিআর বরাবরে আবেদন করে ২০২০ সালের ২৬ আগস্ট।
কিন্তু আয়কর অধ্যাদেশ (১৯৮৪-এর ধারা ৪৬বিবি (৪) (ই)) অনুযায়ী কোনো কোম্পানির বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরুর মাস থেকে পরবর্তী ৬ মাসের মধ্যে কর অবকাশ সুবিধার জন্য আবেদন করা বাধ্যতামূলক। তারা তা করেছে বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু করার অনেক পরে দুই দফায় মালামাল সরবরাহের পর।
কর অবকাশ সুবিধার জন্য এনবিআরে করা আবেদনে কোম্পানিটি জালিয়াতির আশ্রয় নেয়। বিআরইবিতে দুই দফায় তাদের তৈরি ৩ হাজার ৫০৩টি ট্রান্সফরমার সরবরাহের কথা গোপন করেছে। ফলে এনবিআর কোম্পানিটির কর অবকাশ সুবিধা অনুমোদন করে।
ওই ঘটনায় সংক্ষুব্ধ টি এস ট্রান্সফরমার লিমিটেড নামের একটি প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ পাঁচজন অভিযোগকারী একতা পাওয়ারকে দেওয়া কর অবকাশ সুবিধা আইনানুগ এখতিয়ার বহির্ভূত ঘোষণার আদেশ চেয়ে হাইকোর্টে রিট (৫৯৩৯/২০২২) দায়ের করেছে । ওই আবেদনের প্রেক্ষিতে হাইকোর্ট রুল জারি করেন।
এরপর এনবিআর বিষয়টি তদন্ত নেমে জালিয়াতির কথা জানতে পারে। তদন্তে একতা পাওয়ার লিমিটেডের তথ্য গোপন করা ও বিধি ভঙ্গের প্রমাণ পায়।
বিআরইবি সূত্র জানিয়েছে, একতা পাওয়ার লিমিটেড এর আগে ২০১৯ সালেও একবার প্রতারণার আশ্রয় নিয়েছিল। কিন্তু সফল হতে পারেনি। সেবার এনবিআরের একটি জাল চিঠি উপস্থাপন করে বিআরইবির কাছে অগ্রিম আয় কর ফেরত চেয়েছিল। বিআরইবি সেই চিঠি যাচাইয়ের জন্য এনবিআরে পাঠালে এনবিআর চিঠিটি জাল বলে বিআরইবিকে জানায়। ফলে অগ্রিম আয়কর হিসেবে বিআরইবি যে অর্থ কেটে রেখেছিল তা ফেরত নিতে ব্যর্থ হয় কোম্পানিটি। এরপর তারা কর অবকাশ সুবিধা পাওয়ার জন্য এনবিআরের সঙ্গেই প্রতারণার আশ্রয় নেয়।
একতা পাওয়ার লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল হান্নানকে ফোন দিলেও তাকে পাওয়া যায়নি।