সিত্রাংয়ের প্রভাবে অর্ধকোটি গ্রাহক বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন
ঘূর্ণিঝড় ‘সিত্রাংয়ের প্রভাবে’ দেশে প্রায় এক-তৃতীয়াংশ গ্রাহক বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। উপকূলীয় এলাকায় প্রায় অর্ধকোটি গ্রাহক অন্ধকারে রয়েছে বলে জানা গেছে।
পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের (আরইবি) গ্রাহক রয়েছে ৪৪ লাখের মতো। আরইবি বলছে, সন্ধ্যা যতই ঘনিয়ে আসছে, ঝড়ের আওতা ততই বাড়তে থাকায় একে একে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিগুলোর সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।
সোমবার (২৪ অক্টোবর) সন্ধ্যায় পল্লী বিদ্যুতের চাঁদপুর, যশোর, ফরিদপুর, খুলনা, লক্ষ্মীপুর, সিলেট, সুনামগঞ্জ, নোয়াখালী, শরীয়তপুর, মাদারীপুর, বরিশাল, পিরোজপুর, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, বাগেরহাট, গোপালগঞ্জ, সাতক্ষীরা, মাগুরা, মানিকগঞ্জ সমিতির প্রায় ৪৪ লাখ গ্রাহকের বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেছে। ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি বলছে, বিকাল নাগাদ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের পাঁচ জেলা একেবারেই বিদ্যুৎ বিতরণের বাইরে চলে গেছে। এ জেলাগুলো হচ্ছে বরগুনা, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, নড়াইল ও মাগুরা। ওয়েস্ট জোনের এসব এলাকায় ১২ লাখের কাছাকাছি গ্রাহক রয়েছে।
ওজোপাডিকোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী মো. আজহারুল ইসলাম বলেছেন, এখন পরিস্থিতি ভালো বলতে পারছি না। আমাদের পাঁচটি জেলায় একেবারেই বিদ্যুৎ নেই। এসব জেলার মধ্যে চারটিতে ৩৩ কেভি লাইনে সমস্যার কারণে বিদ্যুৎ নেই। ঝড় শেষ না হলে এগুলো মেরামত করা কঠিন হবে। অন্যদিকে গ্রিড ট্রান্সফরমারে সমস্যার কারণে মাগুরায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করা যাচ্ছে না। আমরা চেষ্টা করছি ঠিক করার জন্য।
পিজিসিবির সূত্র জানিয়েছে, সোমবার বেলা ১১টায় ৭ হাজার ৫০১ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়েছে। বেলা ২টার পর থেকে বিদ্যুৎ চাহিদা কমতে শুরু করে। ওই সময় উৎপাদন কমিয়ে ৬ হাজার ৬৮০ মেগাওয়াট করা হয়। বিকাল ৪টায় যা আরও কমিয়ে ৫ হাজার ৮১৩ মেগাওয়াটে নামিয়ে আনা হয়।
পিডিবি সূত্র বলছে, ভোলায় ঝড়ের তীব্রতা বেশি হওয়ায় বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ রাখা হয়েছে। একই সঙ্গে ভোলার সরবরাহও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
এদিকে বিদ্যুৎ বিতরণ ও সঞ্চালন লাইনের ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলা এবং তদারক করতে পৃথক নিয়ন্ত্রণকক্ষ স্থাপনের নির্দেশ দিয়েছে বিদ্যুৎ বিভাগ। বিদ্যুৎ বিভাগের জারি করা দুটি অফিস আদেশের একটিতে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়। অপর আদেশে বিদ্যুৎ বিভাগের সব কেপিআই স্থাপনায় নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সিত্রাংয়ের কারণে বিদ্যুৎ বিতরণ ও সঞ্চালন লাইনের ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলা/তদারকে নির্মিত বিদ্যুৎ বিভাগের অধীন সকল বিতরণ সংস্থা, কোম্পানি ও সঞ্চালন কোম্পানিকে পৃথক কন্ট্রোল রুম স্থাপনের অনুরোধ করা হয়েছে।