টবগি-১ কূপে ২০ এমএমসিএফডি গ্যাস পাওয়া যাবে

  • স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

টবগি-১ কূপে ২০ এমএমসিএফডি গ্যাস পাওয়া যাবে

টবগি-১ কূপে ২০ এমএমসিএফডি গ্যাস পাওয়া যাবে

ভোলা গ্যাস ফিল্ডের টবগি-১ খনন দারুণভাবে সফল হয়েছে। কূপটি থেকে দৈনিক ২০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উত্তোলন করা সম্ভব বলে মন্তব্য করেছেন বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।

বৃহস্পতিবার (৩ নভেম্বর ) সচিবালয়ে এক সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।

বিজ্ঞাপন

প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, বাপেক্সের তত্ত্বাবধানে কূপটি খনন করেছে গ্যাজপ্রম। ৩৫১৯ মিটার খনন শেষ হয়েছে। কূপটি থেকে পাইপ লাইনের দূরত্ব ৩.১৭ কিলোমিটার। মজুদ বিবেচনায় ৩০-৩১ বছর উত্তোলন করা সম্ভব হবে। প্রতি ইউনিটের মূল্য ১১ টাকা করে ধরলে ৮ হাজার কোটি টাকা দাঁড়াবে। তবে এই গ্যাস ব্যবহারের জন্য দুই বছর সময় লাগতে পারে।

এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ভোলার গ্যাস মূল ভূখণ্ডে আনার পরিকল্পনা নিয়েছি, পাইপলাইন করার বিষয়ে সম্ভাব্যতা যাচাই চলছে।

তিনি বলেন, ইলিশা-১ ও ভোলা নর্থ-২ খনন করা হবে। এখান থেকে আগামী জুনে আরও ৫৫ মিলিয়ন পাওয়া যাবে। সরকার ২০২৫ সালের মধ্যে ৪৬টি কূপ খনন করা হবে, এতে ৬শ মিলিয়ন গ্যাস পাওয়া যাবে। আমাদের দেশীয় গ্যাসফিল্ড গুলোর উৎপাদন কমে যাচ্ছে। বছরে ১০০ করে কমে যাচ্ছে, কমে যাওয়ার পরও ২শ বেশি থাকবে। আগামী ৩-৪ বছরের মাথায় ৭০০ থেকে ৮০০ মিলিয়ন গ্যাস যোগ করতে পারবো। তবে চাহিদা বেড়ে যাবে, কিভাবে সামাল দেবো সেই পরিকল্পনা করা হচ্ছে।

এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ফেব্রুয়ারি থেকে লোডশেডিং হচ্ছে। বিদ্যুতের উৎপাদন জ্বালানির উপর নির্ভরশীল। ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে জ্বালানির দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে গেছে। সবদেশেই দাম সমন্বয় করা হচ্ছে। ইউকে ৮০ শতাংশ বাড়িয়েছে। আমরা দাম বাড়াইনি, দ্বিতীয় অপশন ছিল বেশি দামের জ্বালানি কিনবো না। সব দেশ কিন্তু সাশ্রয়ীর দিকে যাচ্ছে। আমরাও সেদিকে যাচ্ছি। পরিস্থিতি এখনও আমাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। লোডশেড করাতে অনেক সাশ্রয় হচ্ছে। এক জাহাজ এলএনজি আনলে ১৫শ কোটি টাকা লাগতো, আর বিক্রি হতো ৬৭ কোটি টাকা।

তিনি বলেন পরিস্থিতি এখনও নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। ভবিষ্যতে আরও খারাপ অবস্থা হলে তার পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে। শিল্পকে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। গত সেপ্টেম্বর যে পরিমাণ সরবরাহ ছিল এবারও তাই দেওয়া।

এক সময় দেশীয় গ্যাসফিল্ড থেকে দৈনিক ২৮০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উত্তোলন করা হতো। মজুদ কমে যাওয়া, বর্তমানে কমবেশি ২৩০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উত্তোলন করা হচ্ছে। এরমধ্যে আমেরিকান কোম্পানির মালিকানাধীন বিবিয়ানা ফিল্ড থেকেই আসছে ১২৫০ মিলিয়ন ঘনফুটের মতো। অর্থাৎ অর্ধেকের বেশি উৎপাদন হচ্ছে ওই একটি গ্যাস ফিল্ডেই। শঙ্কার কথা হচ্ছে গ্যাসক্ষেত্রটির মজুদ শেষ হয়ে আসছে। পেট্রোবাংলার তথ্য অনুযায়ী (২০২১ সালের ৩১ ডিসেম্বর) গ্যাস ফিল্ডটিতে অবশিষ্ট মজুদ (প্রমাণিত ৪৪১৫ বিলিয়ন ঘনফুট, প্রমাণিত ও সম্ভাব্য মিলে ৫৭৫৫ বিলিয়ন ঘনফুট, এবং প্রমাণিত সম্ভাব্য ও সম্ভাবনাময় মিলে ৭০৮৪ বিসিএফ) রয়েছে মাত্র ৭৬৩ বিসিএফ, অন্যদিকে দৈনিক সাড়ে ১২শ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উত্তোলন করা হচ্ছে বছরে যার অংক দাঁড়ায় প্রায় ৪৫৬ বিসিএফ। অর্থাৎ ২ বছর গ্যাস উত্তোলন করার মতো অবস্থায় নেই বিবিয়ানা। পেট্রোবাংলার হিসাব প্রকাশের পর ইতোমধ্যেই ১০ মাস গত হয়েছে, সে হিসেবে বড়জোর ১বছর গ্যাস পাওয়া যাবে বিবিয়ানায়। সেটুকুও অনেকগুলো যদির উপর নির্ভরশীল।

জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, তেল-গ্যাস অনুসন্ধানে দীর্ঘদিনের পুঞ্জিভূত স্থবিরতা দেশকে চরম সংকটের মধ্যে ঠেলে দিয়েছে। ১৯৯৫ সালের জাতীয় জ্বালানি নীতিমালা অনুসরণ করা হলে আজকে এই সংকট হতো না। ওই নীতিমালায় প্রতি বছরে মোট ৪টি করে অনুসন্ধান কূপ খনন করার কথা থাকলে কোনো সরকারেই তা মেনে চলেনি। তেল-গ্যাস প্রাপ্তির সম্ভাবনা, সফলতা ও অনুসন্ধানস্তর বিবেচনায় ব্যাপক ভিত্তিতে অনুসন্ধান করা হলে তেল-গ্যাস প্রাপ্তির আরও যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে।