ওজিডিসি ভেঙে কি পেয়েছি, মূল্যায়ন না করে সেই পথেই বাংলাদেশ!



মো. আমজাদ হোসেন
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বাপেক্স বাংলাদেশে তেল, গ্যাস, অনুসন্ধান ও উৎপাদনে একমাত্র জাতীয় প্রতিষ্ঠান। পাকিস্তান আমলের তেল, গ্যাস, ও খনি সম্পদ প্রতিষ্ঠান ছিল ওজিডিসি (ওয়েল এন্ড গ্যাস ডেভেলপমেন্ট করপোরেশন) সেখান থেকে বাপেক্স সৃষ্টি।

কালের বিবর্তনে এটাকে ভেঙে অনেকগুলো কোম্পানি করেছি, কিন্তু কেন? আমরা কি পেয়েছি এ যাবত সেখান থেকে সেটা বিশ্লেষণ না করে এ প্রক্রিয়া এখনো অব্যাহত রেখেছি। অথচ ওজিডিসির ন্যায় ভারতে ওএনজিসি আজও বিদ্যমান। তারা নিজেরা দেশে ও বিদেশে কাজ করার জন্য একই ছাতাতলে ওএনজিসি বিদেশ নামে কাজ করছে।

ওজিডিসি ভাগ করে আমরা যতগুলো কোম্পানি করেছি তা শুধু ঠিকাদার নিয়োগ করে কাজ করার জন্য। যেমন বড়পুকুরিয়া কয়লা উত্তোলনের কাজ ঠিকাদারকে দেওয়া হয়েছিল নির্দিষ্ট সময়ের জন্য। কথা ছিল পরবর্তীতে বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানি (বিসিএমসিএল) নিজেরা সক্ষমতা অর্জন করবে। কিন্তু বিগত দেড় যুগে কয়লা, পাথর ও খনিজ আহরণে কোনো কোম্পানি ঠিকাদার নিয়োগ ছাড়া সক্ষমতা অর্জন করেনি। অথচ বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতা অর্জনের শুরুতে বিদেশিদের ওপর ব্যক্তিগত প্রভাব বিস্তার করে একাধিক (দশ/বার) বিদেশি কোম্পানির মাধ্যমে দেশে কাজ করার অনুমতি প্রদান করেন ও পেট্টোবাংলা গঠন ও কোম্পানিগুলো ওই সময় অগভীর সমুদ্রে ৩২ হাজার লাইন কিলোমিটার সাইসমিক সার্ভে ও ১২টি কূপ খনন করে (২০০০-৪৫০০মিটার)। ইউনিয়ন ওয়েল কোম্পানি ক্যালিফোনিয়া কুতুবদিয়ায় একটি কূপে তিনটি গ্যাস জোন আবিষ্কার করেছিল। উপরের জোনটি ১০ মিটার টেস্ট করে ১৮.৯ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস ৩/৪ চোকে উৎপাদন পরীক্ষা করে। এই কূপের গ্যাস রিজার্ভ বর্তমান সাঙ্গুর উৎপাদিত গ্যাসের দিগুণ। আমরা কেন এসব বিশ্লেষণ করছিনা?

সদ্য স্বাধীন দেশ যুদ্ধ বিধ্বস্ত সব প্রতিষ্ঠান, পরাশক্তির কুদৃষ্টি, দুর্ভিক্ষ, আট টাকা চালের কেজি অথচ নাম মাত্র মূল্যে ১৭.৮৬ কোটি টাকা দিয়ে বিদেশি কোম্পানি শেল থেকে ৫টি গ্যাস ক্ষেত্র ক্রয় করেছিল বঙ্গবন্ধু। অথচ অভাব অনটনে জর্জরিত দেশ যার টাকা বা ডলারের সংস্থান নেই। তবুও বঙ্গবন্ধু এই গ্যাসক্ষেত্র বিক্রি করেনি। কারণ বাংলাদেশকে তিনি সন্তানের মত লালন করেছেন। তাদের সম্পদ গ্যাসক্ষেত্র বাংলাদেশ অর্থাৎ তার সন্তানেরা ভোগ করবে নিজেরা এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্ম উপকৃত হবে। এটাই সব সত্যিকার পিতার কামনা ও চিরন্তন সত্যি। সেদিন সে মাটির নিচের এ বিশাল সম্পদ বিক্রি করলে কেউ বুঝতনা। কারণ তখন আমাদের এসব বোঝার অবস্থা ছিল না আর সুধীজনরা প্রস্ফুটিত জ্ঞান সমৃদ্ধ হলেও এসব বিষয়ে ধারনা ছিল না বললেই চলে।

বঙ্গবন্ধু সবাই হতে পারে না, যে সারা বাংলার ভূমি, জল, স্থল ও সাধারণ জনগণকে বুকের স্নেহ দিয়ে লালন করবে সেইতো প্রকৃত পিতা। মাফ করবেন অনেকটা আবেগকাতর হয়েছি, কারণ স্বধীনতা যুদ্ধে আমাদের বাড়িঘর পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। নিঃস্ব অবস্থায় আমি ও আমার বড় ভাই টগবগে তরুণ স্বাধীনতার স্বপক্ষে কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছিলাম। এই অবস্থায় পাকবাহিনী আমার সম্মুখ থেকে একাত্তরের ৭ আগস্ট মধ্যরাতে আমার বড় ভাই মো. আজিজুল হক তরুণ অধ্যায়নরত প্রকৌশলীকে বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে ও রাইফেলের বাট দিয়ে দাঁতমুখ ভেঙে হত্যা করে। সেদিন মধ্যরাতে রাজারহাট রেল স্টেশন সংলগ্ন বাড়িটি থেকে আকাশ বাতাস ভেদ করে আর্তনাদ হচ্ছিল বাবা আমাকে বাঁচাও, আল্লাহ আমাকে বাঁচাও। আমরা অসহায় কিছু করতে পারিনি। শহীদ ভাইয়ের মৃত্যুর বিপরীতে বঙ্গবন্ধু কর্তৃক ২০০০ টাকা একটি চেক আমার বাবার হস্তগত হলে তা স্থানীয় মসজিদে দান করেন। পরবর্তীতে আমি নিজে কয়েকবার পাকবাহিনী থেকে রক্ষা পেলেও আমার সহযাত্রীকে মাথার পিছনে গুলি করে হত্যা করেছিল। ভাগ্যক্রমে আমি বেঁচে যাই। রাখে আল্লাহ মারে কে এ শান্তনা নিয়ে কর্মের মাধ্যমে দেশকে ভালোবাসার অনুভূতিতে বাপেক্স ও পেট্টোবাংলার কিছু কাজের অভিজ্ঞতা ও সুপারিশ অবগতির জন্য বর্ণনা করছি। আমি মনে করি নিম্নলিখিত কাজগুলো দ্রুততার সঙ্গে করা গেলে গ্যাস সংকট অনেকটাই কমে আসতে বাধ্য।

>> ১৯৭৬ সালে মুলাদী ও বেগমগঞ্জে আমার কর্ম ও প্রশিক্ষণ। তখন না বুঝিলেও এখন বুঝি মুলাদি ১ ও ২ এবং বেগমগঞ্জ ১ ও ২ এ একাধিক গ্যাস জোন থাকতে পারে, এজন্য পরীক্ষা নিরীক্ষা প্রয়োজন।

>> আমি মনে করি ভোলার ১২০০ বর্গ কিলোমিটার এবং নিকটবর্তী দ্বীপ ও জলের তলদেশে গ্যাসের অস্তিত্ব বিরাজমান। বর্তমান ভোলার ৫০০ বর্গ কিলোমিটারের মধ্যে ৯টি কূপের সবগুলোতে গ্যাস পাওয়া গিয়েছে। প্রতিটি কূপের কাজে আমি প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত ছিলাম। ১০০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উৎপাদনের লক্ষে বাপেক্সের সবগুলো রিগ ভোলায় নেওয়া দরকার। পাইপলাইন না হওয়া পর্যন্ত সাঙ্গু প্লাটফর্মের মাধ্যমে ১০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করা উচিত। পাইপলাইন হলেও এই অবকাঠামোর প্রয়োজন হবে। কারণে বিচ্ছিন্ন দ্বীপে এবং সাগরের গ্যাস আনতে পাইপলাইন ব্যয়বহুল হবে। তখন বিচ্ছিন্ন এলাকার গ্যাস ওই পদ্ধতি ব্যবহার করে জাতীয় গ্রিডে যুক্ত করা যাবে।

>> সিলেট গ্যাস ফিল্ডের কূপগুলোতে সেকেন্ডারি কাজ করা প্রয়োজন। সিলেট ৭ নম্বর কূপে এ কাজটি আমার দায়িত্বে কোন সার্ভিস নিয়োগ ও মালামাল ছাড়া ১৫ দিনের মধ্যে সম্পূর্ণ করে তাদের ৫০ কোটি টাকা বাঁচিয়ে দিয়েছি। অথচ কর্তৃপক্ষ কূপটিকে ওয়ার্ক ওভারের জন্য সমস্ত মালামাল ও সার্ভিস নিয়োগের প্রক্রিয়া প্রায় চূড়ান্ত করেছিল।

>> বিজিএফসিএল তিতাস ৩ নম্বর কূপের গ্যাস লিকেজ আমি সনাক্ত ও প্রয়োজনীয় সুপারিশ করি সে মোতাবেক বিদেশি কোম্পানি বুটস এন্ড কুটস কাজ করে এবং সুপারিশ মূলক রিপোর্ট প্রদান করে যা আজও বাপেক্সকে প্রদান করেনি। অথচ পরামর্শক ও কমিটি ও কর্তৃপক্ষ ১০ নম্বর কূপে লিকেজ হয়েছে মর্মে সুপারিশ করে। আমি ও বাপেক্স ঝুঁকি নিয়ে কাজটি করার জন্য কর্তৃপক্ষকে বাধ্য করি।

বাপেক্স কারিগরি ও আর্থিক দিকে সফল ও লাভজনক একটি প্রতিষ্ঠান। তাকে আপনারা অবহেলা করবেন না। বাপেক্সকে কোরবানির পশু না বানিয়ে তার নিজস্ব কর্ম সম্পাদনে সহযোগিতা করুন। কারণ বাপেক্স যা পারে তা বাংলাদেশে এখনো অন্য কোন প্রতিষ্ঠান পারে বলে আমি মনে করি না। জকিগঞ্জের মতো উচ্চচাপ জোনে সফলভাবে কূপ খনন করেছে বাপেক্স। শাহবাজপুরে বাপেক্স যা করে দেখিয়েছে তার নজির কোথাও খুঁজে পাওয়া যাবে না। যে কাজের জন্য ১৬২ কোটি বরাদ্দ ছিল, সেই কাজ মাত্র ৮০ কোটি টাকায় শেষ করেছে বাপেক্ষ। এতে ছিল ৫৩ কিলোমিটার পাইপলাইন, কূপের ওয়ার্ক ওভার, ১০০ একর জমি অধিগ্রহণ, প্রয়োজনীয় অবকাঠামো ও ২ নম্বর কূপ খনন । কাজ শেষ করে অর্ধেকের বেশি অর্থাৎ ৮২ কোটি টাকা ফেরত দেওয়া হয়। ওই প্রকল্প থেকে ৪ বছরে গ্যাস বিক্রি করে আনুমানিক ৮০ কোটি টাকা আয়ও হয়েছিল।

লেখক- মো. আমজাদ হোসেন, সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক, বাপেক্স।

   

বিদেশে বাংলাদেশিদের ক্রেডিট কার্ডে খরচের শীর্ষে ভারত



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

চলতি বছরের এপ্রিল মাসে বিদেশে গিয়ে বাংলাদেশিরা ক্রেডিট কার্ডে বিভিন্ন সেবা ও পণ্য কিনে ৫০৭ কোটি টাকা খরচ করেছেন। যা মার্চের তুলনায় এপ্রিলে ৩ কোটি ৪০ লাখ টাকা বেশি। মার্চে খরচ করেছিল ৫০৩ কোটি ৫০ লাখ টাকা।

বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে থেকে এতথ্য জানা যায়।

তবে, এপ্রিল মাসে বিদেশিরা বাংলাদেশে ২০০ কোটি টাকার লেনদেন করেছেন ক্রেডিট কার্ডে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, বাংলাদেশিরা বিদেশে গিয়ে ক্রেডিট কার্ডে সবচেয়ে বেশি অর্থ খরচ করেন ভারত, যুক্তরাষ্ট্র, থাইল্যান্ড ও আরব আমিরাত। বিদেশে বাংলাদেশিদের ক্রেডিট কার্ডে খরচের ৫০ শতাংশই এই চার দেশে হয়ে থাকে।

বাংলাদেশিদের একটি বড় অংশ প্রতি মাসে ভারতে ভ্রমণ ও চিকিৎসার জন্য যান। সাম্প্রতিক সময়ে দেশটিতে বাংলাদেশিদের ভ্রমণ উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। এ কারণে বাংলাদেশিদের ক্রেডিট কার্ড সবচেয়ে বেশি ব্যবহার হচ্ছে ভারতে। চলতি বছরের এপ্রিলে প্রতিবেশী দেশটিতে ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে বাংলাদেশিরা ৯৭ কোটি ৯০ লাখ টাকা খরচ করেছেন, যা মোট খরচের ১৯ দশমিক ৩১ শতাংশ। ভারতে খরচের এ অঙ্ক মার্চে ছিল ১০৬ কোটি টাকা।

যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে বাংলাদেশিরা ৬৬ কোটি ৫০ লাখ টাকা খরচ করেছে, যা মোট খরচের ১৩ দশমিক ১২ শতাংশ; থাইল্যান্ড গিয়ে ৪৬ কোটি ৬০ লাখ টাকা এবং আরব আমিরাতে খরচ হয়েছে ৪০ কোটি ৪০ লাখ টাকা। এ ছাড়া সৌদি আরবে ৩৭ কোটি, সিঙ্গাপুরে ৩৫ কোটি ৭০ লাখ, যুক্তরাজ্যে ৩১ কোটি ৮০ লাখ এবং কানাডায় প্রায় ২৫ কোটি টাকা কার্ডে খরচ করেছেন বাংলাদেশিরা।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের এক কর্মকর্তা বলেন, একজন বাংলাদেশি নাগরিক বিদেশে গিয়ে প্রতি বছর ১২ হাজার ডলারের সমপরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা খরচ করতে পারেন। এ অর্থ কার্ডের মাধ্যমে খরচ করতে পারেন, আবার বিদেশে যাওয়ার সময় নগদ ডলারও সঙ্গে করে নিয়ে যেতে পারেন। তবে কার্ডের মাধ্যমে ডলার পেমেন্ট করতে গেলে একবারে সর্বোচ্চ ৩০০ ডলার পর্যন্ত খরচ করার সুযোগ রয়েছে।

;

ঈদুল আজহার পশুর হাট

‘শোরুমের একদাম, ১১ মণ দাম সাড়ে তিন লাখ টাকা’



জাহিদ রাকিব, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪
ছবি: বার্তা২৪, রুস্তম-এর দাম সাড়ে তিন লাখ টাকা

ছবি: বার্তা২৪, রুস্তম-এর দাম সাড়ে তিন লাখ টাকা

  • Font increase
  • Font Decrease

রাজধানীর মেরাদিয়া পশুর হাটে প্রবেশ করতেই দেখা মিললো সাদা-লালের সংমিশ্রণে ডোরাকাটা মাঝারি দেহের ‘রুস্তম’।

‘বড় গরু না হলে মালিকের শোরুমের একদাম ১১ মণ দাম সাড়ে তিন লাখ টাকা’র হাঁকডাকে ক্রেতাদের ভিড় এখানে।

‘রুস্তম’ রোজ সকালে নিয়ম করে সাইলেজ, দুপুরে নেপিয়ার ঘাস, বিকেলে খেজুর, রাতে কলা খায়। রুস্তমের আরেকটি বড় সৌখিন স্বভাব রয়েছে। তিন বেলা সে ঘুমায়। ঘুম ভাঙলে তাকে দিতে হয়, গমের ভাঙানো ভূষি দিয়ে কুসুম-গরম পানি।

মেরাদিয়া হাটের এই রুস্তম এসেছে নাটোর জেলা থেকে। কৃষক কালাম মিয়া তিনবছর লালন-পালন করে রুস্তমকে নিয়ে এসেছেন এবারের পশু কোরবানির হাটে।

কালাম মিয়া বার্তা২৪.কমকে বলেন, অস্ট্রেলিয়ান ক্রস জাতের গরুটির বয়স তিন বছর। লালন-পালনের পর গরুটির ওজন এখন ১১ মণ। সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক খাবার দিয়েছি। হাটে আনার আগে ওজন মেশিনে পরিমাপ করে দেখেছি, এর ওজন প্রায় ৪শ ৫০ কেজি।

রুস্তমের খাবারের সৌখিন স্বভাব নিয়ে কালাম মিয়া বলেন, রুস্তমকে সকালে দানাদার খাবার সাইলেজ দিতে হয় ২ কেজি ও দুপুরে নেপিয়ার কাঁচাঘাস, বিকেলে নিয়ম করে দুটো খেজুর খাওয়াতে হয়। সেইসঙ্গে রোজ রুস্তমকে গমের ভূষি, খেসারি, জব, ধানের কুড়া খাওয়ানো হয়। দেখতে গম্ভীর হলেও স্বভাবে বেশ শান্ত রুস্তম।

মেরাদিয়ার গরুর হাট, ছবি- বার্তা২৪.কম

রুস্তমকে একদামে কেন বিক্রি করছেন এমন প্রশ্নের জবাবে কালাম মিয়া বলেন, রুস্তম আমার অনেক শখের গরু আর বড় করার ইচ্ছেও ছিল। হঠাৎ করে আমার স্ত্রী অসুস্থ হয়ে যাওয়ায় টাকার প্রয়োজনে রুস্তমকে বিক্রি করতে হচ্ছে। শখের গরুকে কেউ যাতে দামাদামি করে ছোট করতে না পারে, সে কারণে শোরুমের মতো একদাম বলে দিয়েছি।

মেরাদিয়া হাটে মহাখালী থেকে আসা ক্রেতা নূর উদ্দিন বার্তা২৪.কমকে বলেন, গরুটি পছন্দ হয়েছে। দাম একটু বেশি। একদামে কী আর গরু বিক্রি হয়! তাই আরেকটু দেখবো।

এদিকে, হাট ঘুরে দেখা গেছে, কোরবানির ঈদ উপলক্ষে হাটে সব ধরনের পশুর সরবরাহ বেড়েছে। দেশের বিভিন্ন জেলা খামারি ও মৌসুমি ব্যবসায়ীরা তাদের গরু, ছাগল, মহিষ নিয়ে হাটে নিয়ে এসেছেন। এখনো ঈদের ছুটি হয়নি; তাই হাটগুলোতে এখনো বেচাবিক্রি তেমন একটা শুরু হয়নি। ব্যবসায়ীদের আশা, শুক্রবার থেকে হাটে বেচাবিক্রি বাড়বে।

;

‘প্রস্তাবিত বাজেটে ইভিকে এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে’



স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
‘প্রস্তাবিত বাজেটে ইভিকে এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে’

‘প্রস্তাবিত বাজেটে ইভিকে এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে’

  • Font increase
  • Font Decrease

ভবিষ্যতের যানবাহন হচ্ছে ইলেক্ট্রিক যানবাহন (ইভি)। প্রস্তাবিত বাজেটে (২০২৪-২৫) ইভির ক্ষেত্রে কোন সহায়তা দেখিনি। বিনিয়োগের শর্তে যদি ডিউটি সুবিধা দেওয়া যায় তাহলে বিকাশ সম্ভব, না হলে এই খাতের বিকাশ কঠিন।

বুধবার (১২ জুন) রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে বাংলাদেশ অটোমোবাইলস এসেম্বলার্স এন্ড ম্যানুফ্যাকক্সারার্স এসোসিয়েশন (বামা) নেতৃবৃন্দ আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে এমন দাবি করেছেন।

বাংলাদেশ অটোমোবাইলস এসেম্বলার্স এন্ড ম্যানুফ্যাকক্সারার্স এসোসিয়েশন (বামা) প্রেসিডেন্ট আব্দুল মাতলুব আহমাদ বলেন, চ্যালেঞ্জিং সময়ে সরকার ভালোভাবে বাজেট দিয়েছে, আমরা মনে করেছিলাম সব জায়গায় ডিউটি আরোপ হবে তেমনটি হয়নি। তবে বাজেটে অনেক আশা ছিল, কিছু সাপোর্ট পাবো, কিছু সাপোর্ট পেয়েছি সফটওয়্যারের ক্ষেত্রে অন্য ক্ষেত্রে সেভাবে পাওয়া যায়নি। ইভিকে এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে। চীন পনের বছর ধরে সহায়তা দিয়েছে, ভারত সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে, আমাদের দেশেও সহায়তা প্রয়োজন, না হলে এই খাতটি বিকশিত হবে না।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের সড়ক রক্ষণাবেক্ষণের খরচ দিন দিন বেড়েই চলেছে। ২০২০-২১ অর্থবছরে খরচ হয়েছিল ২ হাজার ৬৮৭ কোটি টাকা, আর ২০২৩-২৪ অর্থবছরে এ খাতে ব্যয় হয়েছে ৯ হাজার ৪৭৯ কোটি টাকা। সরকার যদি বহুচাকার ট্রাকে ছাড় দেন, হাজার হাজার কোটি টাকা বেঁচে যাবে। সারাবিশ্বে বহুচাকার ট্রাকের উপর ছাড় দেওয়া হয়। রোড, ব্রীজ ও ফেরীর টোল কমিয়ে আনা উচিত। তাহলে বড়গাড়ির সংখ্যা বেড়ে গেলে সড়কের ক্ষতি কমে আসবে।

তিনি বলেন, আমরা সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ে খুবই বিব্রত, সরকারও বিব্রত। আমরা যে চ্যাসিস দেই, সবাই বডি বানায়। আমার মনে হয় বডি বানানোর ক্ষেত্রে নীতিমালা থাকা উচিত। সরকার অনুমোদিত ছাড়া কেউ বডি বানাতে পারবে না, সরকারের রেগুলেশন করা দরকার। টায়ারের ডিউটি বেশি অনেকে টায়ার নির্ধারিত সময়ে বদলাচ্ছে না। এতে দুর্ঘটনার হার বাড়ছে। চাকার ডিউটি শূন্য না হলেও অর্ধেকে নামিয়ে আনা উচিত।

রানার গ্রুপের চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান খান বলেন, অতীতে যে প্রোনোদনা দিয়েছে, তার ভিত্তিতে টু হুইলার শিল্পে বিশাল কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। ইভির ক্ষেত্রে সারাবিশ্বে সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। বাংলাদেশেও সহায়তা দেওয়া জরুরি।

ইজিবাইক প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে হাফিজুর রহমান খান বলেন, টেকনিক্যাল বিষয়টি দেখার জন্য বলা হয়েছে। একটি প্রতিষ্ঠান কাজ করছে, আমার মনে হয় একটা সিদ্ধান্ত আসবে। এটাকে কিছুটা আধুনিকায়ন করে অনুমোদন দেওয়া হতে পারে।

আকিজ মটরস এর প্রতিষ্ঠাতা শেখ আমিন উদ্দিন বলেন, সবার আগে হচ্ছে আমাদের স্বাস্থ্য। আজকে ঢাকার অবস্থা কি, আমাদের গর্ভবতী মায়েদের কি অবস্থা এসব বিষয়ে বিবেচনায় নিতে হবে। ইভি পরিবেশ বান্ধব যানবাহন সারাবিশ্বে এর ব্যবহার বাড়ছে। বাংলাদেশে সহায়তা দেওয়া না হলে পিছিয়ে পড়বে এই খাত। আমরা চাই কমপ্লিট ইভি নীতিমালা।

বিভাটেক এন ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাইদুর রহমান পরাগ, ইফাদ গ্রুপের পরিচালক আবির বকশীসহ অনেক উদ্যোক্তা এতে অংশ নেন। তারা সরকারের কাছে বাজেট রিভিউ করার দাবি জানান।

;

‘শিক্ষায় অগ্রাধিকারের প্রতিশ্রুতি থাকলেও বরাদ্দে অবহেলা’



স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও শিক্ষাবিদ রাশেদা কে চৌধুরী

সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও শিক্ষাবিদ রাশেদা কে চৌধুরী

  • Font increase
  • Font Decrease

শিক্ষাখাতে বিনিয়োগ বৃদ্ধির ঐতিহাসিকভাবে প্রতিশ্রুতি থাকলেও জাতীয় বাজেটে বরাদ্দের ক্ষেত্রে কোনো বছরই তা অনুসরণ করা হয় না বলে মন্তব্য করেছেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও শিক্ষাবিদ রাশেদা কে চৌধুরী।

তিনি বলেছেন, শিক্ষায় বাজেটে বরাদ্দ সামান্য করে বাড়লেও প্রতি বছর শিক্ষার্থী বাড়ছে ব্যাপক হারে। এর ফলে সরকারের শিক্ষার্থীপ্রতি বরাদ্দ কমে আসছে।

সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের আয়োজনে বাজেট বিষয়ক এক ডায়ালগে বুধবার (১২ জুন) তিনি এ সব কথা বলেন। রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনের সময় শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দের অপ্রতুলতা তুলে ধরেন সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন।

‘১৯৭৪ সালে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, শিক্ষায় বিনিয়োগ শ্রেষ্ট বিনিয়োগ। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে বাজেটে এর প্রতিফলন নেই। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন নিয়ে কথা বলে মুখে ফেনা তুলে ফেলি। কিন্তু স্বপ্নের বাস্তবায়নটা কোথায়?’ প্রশ্ন রাখেন রাশেদা কে চৌধুরী।

তিনি বলেন, এখনও শিক্ষা খাতে সরকারের ব্যয়কে বরাদ্দ হিসেবে বিবেচনা করা হয়ে থাকে। অথচ, এত বছর আগেও এটাকে বিনিয়োগ হিসেবে চিহ্নিত করে গেছেন বঙ্গবন্ধু।

তিনি বলেন, বাজেট বক্তৃতায় শিক্ষায় প্রাধান্যের কথা বলা হলেও বরাদ্দের ক্ষেত্রে অবহেলা করা হয়ে থাকে। এই বরাদ্দের পুরোটা আবার ব্যয় না করে ফেরত দেওয়া হয়।

তিনি আরও বলেন, চলতি অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) সংশোধনের সময় অন্যান্য খাতে ছুরি দিয়ে কাঁটা হলে শিক্ষা ও স্বাস্থ্যের বরাদ্দ কাঁটা হয়েছে কোদাল দিয়ে।

শিক্ষা খাতের ১২ হাজার কোটি টাকা ও স্বাস্থ্য খাতে চার হাজার কোটি টাকা এডিপি বরাদ্দ কমিয়ে আনায় তিনি হতাশা প্রকাশ করেন। প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, বাজেট কাঁটছাটে শিক্ষায় কেন আঘাত সবার আগে আসে? বাস্তবায়নে সক্ষমতা নেই কেনো?

রাশেদা কে চৌধুরী বলেন, ডিজিটাল লার্নিং, ডিসটেন্স লার্নিং এর কথা বলা হলেও মোবাইলের ভয়েজ কল, ডাটা ডিও ভাইসে কর বাড়ানো হয়েছে। তিনি আরও বলেন, আইসিটির কথা বলা হয়, শিক্ষক প্রশিক্ষণের কথা বলা, ডিজিটাল ল্যাবের কথা বলা হয়, বাস্তবতা হচ্ছে, এ সব অবকাঠামোর বেশিরভাগই অকেজো।

;