১০০ কূপ খনন প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী



সেরাজুল ইসলাম সিরাজ, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
কূপ খনন প্রকল্প/ছবি: বার্তা২৪.কম

কূপ খনন প্রকল্প/ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

তেল-গ্যাস অনুসন্ধান ও উৎপাদনে ১০০ কূপ খনন প্রকল্প প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নীতিগত অনুমোদন দিয়েছেন বলে বার্তা২৪কমকে নিশ্চিত করেছেন পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান জনেন্দ্র নাথ সরকার।

তিনি বার্তা২৪.কমকে বলেন, প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন পাওয়ার আগে থেকেই আমরা কাজগুলো এগিয়ে রেখেছিলাম। যাতে দ্রুত উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) করা যায় সে বিষয়ে কাজ এগিয়ে রাখা হয়েছে। আমরা সময় ও অর্থ সাশ্রয় করার জন্য কনসালটেন্ট নিয়োগ এড়াতে চাইছি। একটি বিশেষজ্ঞ কমিটির মাধ্যমে কাজগুলো করতে চাচ্ছি, যেখানে পেট্রোবাংলার পাশাপাশি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও বিশেষজ্ঞরা যুক্ত থাকবেন।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কনসালটেন্ট নিয়োগ প্রক্রিয়া খুবই দীর্ঘ প্রক্রিয়া, আবার অনেক ব্যয়বহুল। কনসালটেন্টের মাধ্যমে যে কাজ ৫০ থেকে ৬০ লাখ টাকা খরচ হবে। একই কাজ আমরা নামমাত্র মূল্য ৫০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকায় সম্পন্ন করতে পারবো। কনসালটেন্ট যে কাজ করতে কয়েকমাস সময় নেবে আমরা সেই কাজ ১৫ দিনের মধ্যে শেষ করতে পারবো।

পেট্রোবাংলার চেয়ার‌ম্যান বলেন, পেট্রোবাংলা কূপ খনন করবে সেই কূপে গ্যাস পাওয়া যেতে পারে আবার নাও পাওয়া যেতে পারে। যেখানে শতভাগ ফেল করার সম্ভাবনা থাকে সেখানে ফিজিবিলিটি স্ট্যাডির বাধ্যবাধকতা থাকা উচিত না। পেট্রোবাংলার কাজের ধরণ পুরোপুরি ভিন্ন বিধায় সেইভাবে কাজ করতে দেওয়া উচিত। তাহলেই দেশের তেল-গ্যাস অনুসন্ধান ও উৎপাদনে গতি আসবে।

বর্তমানে ৪৮ কূপ খননের একটি প্রকল্প চলমান রয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন পাওয়া ১০০ কূপ খনন প্রকল্প ২০২৬ সাল থেকে ২০২৮ সালের মধ্যে শেষ হবে। এতে ২০ হাজার কোটি টাকা প্রয়োজন হবে। সংস্থার নিজস্ব তহবিল থেকে যোগান দেওয়া হবে ৭ হাজার কোটি টাকা। সরকারের কাছে প্রত্যেক বছরে সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা করে অর্থায়ন চাওয়া হয়েছে।

দেশে গ্যাস সংকটের জন্য অনুসন্ধান স্থবিরতাকেই দায়ী করে আসছেন জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা। পেট্রোবাংলার কয়েক দশকের ঢিলেমির কারণে সমালোচনায় মুখর ছিলেন জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা। তবে সেই দিন এখন বদলে যেতে শুরু করেছে। পেট্রোবাংলার খোলনলচে বদলে দিয়েছেন বর্তমান চেয়ারম্যান জনেন্দ্র নাথ সরকার। একদিকে যেমন গতিময় হয়েছে, অন্যদিকে নতুন মাত্রাও যুক্ত হয়েছে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানে।

পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান জনেন্দ্র নাথ সরকার

এতদিন তেল-গ্যাস অনুসন্ধান একটি নির্দিষ্ট গন্ডির মধ্যে আটকে ছিল বাংলাদেশ। আরও ছোট করে বলতে গেলে সুরমা বেসিন তথা, সিলেট থেকে শুরু করে মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কুমিল্লা, ফেনী, নোয়াখালী এবং ভোলার মধ্যে আটকে ছিল। অন্যান্য এলাকায় কিছু অনুসন্ধান কার্যক্রম হলেও তার পরিমাণ নগণ্য বলাই যায়। সেখানেও আমূল পরিবর্তন আনতে যাচ্ছে পেট্রোবাংলা।

বাংলাদেশ ভূ-খণ্ডে ১১২ বছরে অনুসন্ধান কূপ খনন করা হয়েছে কমবেশি ৯৯টি। আর ৩ বছরে ৬৯টি কূপ খনন করতে চায় পেট্রোবাংলা। একে অনেকে উচ্চাভিলাষী মনে করলেও খুবই জরুরি বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভূতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. বদরুল ইমাম বলেন, একটি কূপে গ্যাস পাওয়া না গেলে হৈচৈ শুরু করলে চলবে না। ১০টির মধ্যে ৮টি ড্রাই হলে ফেলে আসবো তাহলে সম্ভব না। রাজস্থানে ইউনোকল টানা ১৩টি কূপ খনন করে ড্রাই পায়। এরপর কোম্পানির সদরদফতর বলেছিল আর কূপ খনন না করতে, কিন্তু জিওলজিস্ট অনেকটা ঝুঁকি নিয়ে চৌদ্দ নম্বর কূপ খনন করে ভারতের মধ্যে সবচেয়ে বড় খনি আবিষ্কার করেছে।

পেট্রোবাংলার ১০০ কূপ খনন প্রকল্প সংক্রান্ত সেমিনারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেন ভূঁইয়া বলেছিলেন, ২৫টি কূপ খনন করে যদি ব্যর্থ হন, আর ছাব্বিশ নম্বর কূপে গিয়ে যদি গ্যাস পাওয়া যায়, তার দাম অনেক বেশি। খরচের কয়েকগুণ উঠে আসবে।

ওই অনুষ্ঠানে পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান বলেছিলেন, আমরা অন্ধকার যুগ থেকে বের করে এনেছি। কূপ ফেল করলে আমি চেয়ারম্যান দায় গ্রহণ করবো। কথা দিচ্ছি কোন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা কিংবা তদন্ত কমিটি হবে না। সাফল্য পেলে সবার আর ফেল করলে দায়িত্ব আমি মাথা পেতে নেবো।

পেট্রোবাংলা চেয়ারম্যানের এমন ঘোষণা কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে সাহসের সঞ্চার করেছে। যে কারণে বাস্তবিক অর্থেই গতিতে ফিরেছে পেট্রোবাংলায়।

যেসব কারণে চ্যালেঞ্জের মুখে নতুন ইএফডিএমএস প্রকল্পের সাফল্য



স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের অসহযোগিতা এবং প্রযুক্তিগত জটিলতার কারণে ঝুঁকির মুখে পড়েছে ইলেক্ট্রনিক ফিসক্যাল ডিভাইস ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (ইএফডিএমএস) প্রকল্পের সাফল্য। রাজস্ব ভ্যাট আহরণে স্বচ্ছতা এবং গতি বৃদ্ধির লক্ষ্যে গত বছরের অগাস্টে প্রকল্পটি চালু করে (এনবিআর)।

কিন্তু এনবিআর’র মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা পদক্ষেপটিকে স্বাগত জানননি। তারা খুচরা পর্যায়ে সনাতন পদ্ধতিতে ভ্যাট সংগ্রহ করতে বেশি আগ্রহী। এজন্য শুরুর দিকে এই ডিভাইসের জন্য তারা কম রাজস্ব আহরণ হয় এমন বিজনেস আইডেনটিফিকেশন নাম্বারগুলো (বিআইএন) প্রদান করেছিলেন এবং সেগুলোও বিক্ষিপ্ত উপায়ে। এর ফলে ইএফডি মেশিনের জন্য সঠিক ব্যবসায়িক আবহ তৈরি হয়নি এবং প্রত্যাশিত সাফল্যও আসেনি। অন্যদিকে ইএফডিএমএস সিস্টেমের কারিগরি কোন ত্রুটি দেখা দিলে তা মেরাতম করতে চারটি পক্ষের উপর নির্ভর করতে হয়।

বেসরকারি অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে এই প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছিল। এই প্রকল্পে এনবিআর’র কোন খরচ হয়নি, পুরোটা বেসরকারি বিনিয়োগ। সহযোগী প্রতিষ্ঠান ইতোমধ্যে বড় অঙ্কের টাকা বিনিয়োগ করেছে। কিন্তু তারা যখন কাজটি পায় তখন ডলার রেট ছিল ৮৮ টাকা, যা বর্তমানে প্রায় ১২০ টাকা। এতে ডিভাইস কেনার খরচ অনেক বেড়ে গেছে। অন্যদিকে ব্যাংকগুলোতে লেটার অব ক্রেডিট (এলসি) নিয়েও চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হচ্ছে তাদের।

;

কলড্রপ ইস্যুতে কঠোর অবস্থানে বিটিআরসি

কক্সবাজারে প্রতিমন্ত্রীর ড্রাইভ টেস্ট



স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত,  কল ড্রপ নিয়ে কঠোর অবস্থানে বিটিআরসি

ছবি: সংগৃহীত, কল ড্রপ নিয়ে কঠোর অবস্থানে বিটিআরসি

  • Font increase
  • Font Decrease

মোবাইল ফোনে কলড্রপ নিয়ে কঠোর অবস্থান নিয়েছে, বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। নিয়ন্ত্রক সংস্থা এরই মধ্যে কল ড্রপ ইস্যুতে গ্রামীণফোনকে কারণ দর্শাও নোটিশ (শোকজ) দিয়েছে। শুধু গ্রামীণফোনই নয়, অন্য অপারেটরদের কলড্রপও মনিটরিং করা হচ্ছে।

সোমবার (১ জুলাই) ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বিটিআরসিতে এক বৈঠকে মোবাইল অপারেটরদের মান্নোয়ন সংক্রান্ত এক বৈঠকে আগামী ৬ মাসের মধ্যে গ্রাহক পর্যায়ে কলড্রপের হার উল্লেখযোগ্য সংখ্যক কমিয়ে আনতে কঠোর নির্দেশ দিয়েছেন। তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী কলড্রপের বিষয়ে গ্রাহক অসন্তোষের কথা উল্লেখ করেন এবং এ বিষয়ে কোনো মোবাইল অপারেটরকে ছাড় দেওয়া হবে না বলে জানান। এজন্য ক্ষতিপূরণের পাশাপাশি জরিমানা আদায়ের ঘোষণা দেন পলক।

বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) কক্সবাজারে ড্রাইভ টেস্ট মনিটরিং করেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, ছবি-বার্তা২৪.কম


 

এরই মধ্যে প্রতিমন্ত্রী বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) কক্সবাজার বিমানবন্দরে নিজে উপস্থিত থেকে ড্রাইভ টেস্ট মনিটরিং করেন।

জানা গেছে, প্রতিমন্ত্রীর নির্দেশে দেশব্যাপী টেস্ট ড্রাইভ শুরু হয়ে গেছে। ড্রাইভ টেস্টের তথ্যের ওপর ভিত্তি করে অপারেটরদের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ইন্টারন্যাশনাল টেলিকমিনিউকেশন ইউনিয়নের (আইটিইউ) স্বীকৃত কলড্রপের হার ৩ শতাংশ বা এর নিচে। সম্প্রতি, টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসির তথ্যমতে, গ্রামীণফোন, রবি ও বাংলালিংক সবারই কলড্রপ ওই সীমার নিচে রয়েছে।

এই প্রসঙ্গে প্রতিমন্ত্রী কলড্রপের জন্য ক্ষতিপূরণ দিতে হবে বলে উল্লেখ করে বলেন, মনিটরিং এবং অডিট নিয়মিত করা হবে। বেঞ্চমার্ক যাই থাকুক, কলড্রপ রেট কাগজে-কলমে যাই থাকুক, আমরা গ্রাহক সন্তষ্টির ওপর জোর দেবো।

সাধারণত, মোবাইল অপারেটরদের নেটওয়ার্কের কারণে কলড্রপ হয়ে থাকে। মূলত, প্রযুক্তিগত সীমাবদ্ধতা, নেটওয়ার্কের অপ্রতুলতা, স্প্রেকট্রাম স্বল্পতা, এন্টেনা ও রেডিওতে ক্যাবলের কানেকশন দুর্বলতার কারণে কলড্রপ হয়ে থাকে।

তবে শুধুমাত্র এসব কারণেই অনেক সময় কলড্রপের জন্য এককভাবে দায়ী থাকে না। হ্যান্ডসেট সমস্যা, ভূগর্ভস্থ ক্যাবল কাটা পড়া বা এর মানের অবনতি এবং টাওয়ার কোম্পানির সেবার মানের কমতি থাকলেও এই সমস্যা তৈরি হতে পারে। তবে ঢাকা শহরে উঁচু ভবন, টাওয়ার রেডিয়েশন নিয়ে বিভ্রান্তি থাকায় অনেক গুরুত্বপূর্ণ স্থানে স্থাপনে বাধা, অবৈধ জ্যামার, রিপিটার, বুস্টারের কারণেই নেটওয়ার্ক বাধাগ্রস্ত হয়।

২০২২ সালে জাতীয় সংসদে তৎকালীন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার কলড্রপের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন। ২০১৮ সালে তৎকালীন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ জাতীয় সংসদে কলড্রপ নিয়েও অসন্তোষ প্রকাশ করেন।

;

লোকসানে থাকা চিনিকল নিয়ে সরকারের সাথে এস.আলমের যৌথ উদ্যোগ



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
লোকসানে থাকা চিনিকল নিয়ে সরকারের সাথে এস.আলমের যৌথ উদ্যোগ

লোকসানে থাকা চিনিকল নিয়ে সরকারের সাথে এস.আলমের যৌথ উদ্যোগ

  • Font increase
  • Font Decrease

দেশের চিনিশিল্পের রুগ্নদশা কাটাতে আখ উৎপাদন ও চিনিকলের আধুনিকায়নে সরকারের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে বিভিন্ন প্রকল্পের মহাপরিকল্পনা গ্রহণ করেছে দেশের অন্যতম শীর্ষ শিল্পগ্রুপ এস.আলম অ্যান্ড কো.। বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশন- বিএসএফআইসি এবং শিল্প মন্ত্রণালয়কে সঙ্গে নিয়ে এসব প্রকল্প বাস্তবায়িত হবে। যার মধ্যে রয়েছে- প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে উন্নত আখ উৎপাদন ও কৃষকদের প্রশিক্ষণ, আধুনিক আখ প্রক্রিয়াকরণ কারখানা গড়ে তোলা, ৬ মেগাওয়াট পাওয়ার কো-জেনারেশন, অ্যাগ্রো-ভোলটিক সোলার পাওয়ার প্ল্যান্ট নির্মাণ, বাই-প্রোডাক্ট ভিত্তিক প্ল্যান্ট তৈরি, কোল্ড স্টোরেজ ও অ্যাগ্রো প্রসেসিং ইন্ডাস্ট্রিজ গড়ে তোলা, প্যাকেজিং ফ্যাক্টরি নির্মাণ ইত্যাদি। দিনাজপুরের সেতাবগঞ্জ ও ফরিদপুর এর চিনি কল অঞ্চলে উক্ত প্রকল্পগুলো বাস্তবায়িত হবে।

উচ্চ মানসম্পন্ন আখ উৎপাদনে উদ্যোগ নেবে এস.আলম অ্যান্ড কো.। এক্ষেত্রে কোম্পানিটি যৌথভাবে কাজ করবে বিএসএফআইসি, বিএসআরআই এবং আন্তর্জাতিক গবেষকদের সঙ্গে। বিভিন্ন হাইব্রিড জাত উদ্ভাবনে ব্যবহার করা হবে ক্লোনিং, জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিংসহ আধুনিক প্রযুক্তি। একইসঙ্গে কৃষকদের প্রশিক্ষিত করার মাধ্যমে সর্বোচ্চ উৎপাদনের উদ্যোগ নেওয়া হবে। 

এছাড়া, এস.আলম অ্যান্ড কো. দিনাজপুরের সেতাবগঞ্জ চিনি কল এ ১২৫০টিসিডি সক্ষমতার একটি আধুনিক আখ প্রক্রিয়াকরণ কারখানা গড়ে তুলবে, যেটির সক্ষমতা সর্বোচ্চ ২৫০০টিসিডি পর্যন্ত বর্ধিতযোগ্য। এবং ফরিদপুরে চিনি কল এ ১০০০টিসিডি সক্ষমতার একটি আধুনিক আখ প্রক্রিয়াকরণ কারখানা গড়ে তুলবে, যেটির সক্ষমতাও সর্বোচ্চ ২৫০০টিসিডি পর্যন্ত বর্ধিতযোগ্য।

এখান থেকে প্রতি বছর ১২ হাজার টন প্রিমিয়াম কোয়ালিটির ব্রাউন সুগার উৎপাদিত হবে। যা পরে বৃদ্ধি পেয়ে প্রতি বছর ১৫ থেকে ১৮ হাজার টন হবে। যেহেতু সারা বছর ধরে কোনো শিল্প প্রতিষ্ঠান চালু না রাখলে সেখান থেকে মুনাফা অর্জন করা সম্ভব নয়, তাই একটি চিনি শোধনাগার  প্রতিষ্ঠা করবে এস.আলম অ্যান্ড কো.। এর মাধ্যমে চাহিদা থাকলে (সিজনে) বছরে প্রায় ৯০০ টিপিডি আমদানিকৃত কাঁচা চিনি এবং কম চাহিদার সময় (অফ সিজনে) ১ হাজার টিপিডি কাঁচা চিনি পরিশোধন করা সম্ভব হবে।

অধিকন্তু, চিনি কারখানার, চিনি রিফাইনারি এবং অন্যান্য প্ল্যান্ট, ফ্যাক্টরির চাহিদা মেটাতে তৈরি করা হবে ৬ মেগাওয়াট বা এর বেশি সক্ষমতার পাওয়ার প্ল্যান্ট। এক্ষেত্রে বয়লার জ্বালানি হিসেবে আখের অবশিষ্ট অংশ বা ছোবড়া ব্যবহার করা হবে। এছাড়া- ডুয়েল ফুয়েল বয়লার ব্যবহার করা হতে পারে, যেখানে জ্বালানি হিসেবে কয়লারও ব্যবহার থাকবে।    

পাশাপাশি সেতাবগঞ্জ এ ১০০ মেগাওয়াট সক্ষমতার এবং ফরিদপুর এ চিনি কল অঞ্চলে ১০ মেগাওয়াট সক্ষমতার অ্যাগ্রো-ভোলটিক সোলার পাওয়ার প্ল্যান্ট তৈরি করবে এস.আলম অ্যান্ড কো.। তাতে যথাক্রমে ৪০০ একর ও ৪০ একর ভূমির প্রয়োজন হবে। বিভিন্ন শস্য এই সোলার প্ল্যান্ট প্রকল্পের আওতায় উৎপাদন করা হবে। অভ্যন্তরীণ ব্যবহারের পর সোলার প্ল্যান্টের অতিরিক্ত বিদ্যুৎ যুক্ত করা হবে জাতীয় গ্রিডে।

চিনি কলে বিভিন্ন বাই-প্রোডাক্ট থাকে যেমন- মোলাসেস, ফিল্টার প্রেস মাড ও ছাই। মোলাসেস বিক্রি করা হবে কেরু অ্যান্ড কো. এর কাছে। অন্যান্য বাই-প্রোডাক্ট এর জন্য সে অনুযায়ী প্ল্যান্ট নির্মিত হবে। এছাড়া- সোলার প্ল্যান্ট ও দিনাজপুর ও ফরিদপুর এলাকার মৌসুমী শস্যের সংরক্ষণ প্রয়োজন হবে। তাই ২০০০০ মেট্রিক টন সক্ষমতার কোল্ড স্টোরেজ নির্মিত হবে সেতাবগঞ্জ  ও ফরিদপুর এর চিনি কল অঞ্চলে।

সেতাবগঞ্জ চিনিকল ও ফরিদপুর চিনিকলকে লাভজনক উদ্যোগে রূপান্তর করতে পণ্য বহুমুখীকরণ অপরিহার্য। দিনাজপুর ও ফরিদপুর অঞ্চলে শাকসবজি ও ফলমূলের প্রাচুর্য রয়েছে, যা কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণের জন্য একটি উল্লেখযোগ্য সুযোগ উপস্থাপন করে।  এস.আলম অ্যান্ড কো. এর পরিকল্পনায় হিমায়িত, টিনজাত, ডিহাইড্রেটেড এবং আচারযুক্ত শাকসবজি প্রক্রিয়াকরণ-উত্পাদনে একটি উদ্ভিজ্জ প্রক্রিয়াকরণ প্ল্যান্ট স্থাপনের পরিকল্পনা রয়েছে।

এছাড়া- টিনজাত ফলের শাঁস, ফলের রস, মিশ্র ফলের রস এবং বিভিন্ন ধরণের ফল থেকে শুকনো ফল উত্পাদন, হিমায়িত ফ্রেঞ্চ ফ্রাই, আলুর চিপস, স্টার্চ, পাস্তা, নুডলস, স্যুপ, হিমায়িত খাবার, টিনজাত খাবার, আচার, সিরিয়াল এবং অন্যান্য খাদ্য পণ্য উত্পাদন ও প্রক্রিয়াজাতের পরিকল্পনাও রয়েছে এস.আলম অ্যান্ড কো. এর।

প্রস্তাবিত কারখানাগুলোতে পণ্যের জন্য বিভিন্ন ধরনের পিপি ব্যাগ, এলডিপিই প্যাকেট ও বিভিন্ন ধরনের প্যাকেজিং প্রয়োজন হবে। তাই সেতাবগঞ্জ ও ফরিদপুর দুই জায়গাতেই একটি করে প্যাকেজিং ফ্যাক্টরি স্থাপন করবে এস.আলম অ্যান্ড কো.। সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের মাধ্যমে এসব কারখানার উৎপাদন সক্ষমতা নির্ধারণ করা হবে।

টেকসই কৃষি-ভিত্তিক শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার মাধ্যমে কর্মসংস্থান তৈরি, স্থানীয় অর্থনীতির পালে হাওয়া দিতে ও দেশের অর্থনীতি আরো শক্তিশালী করতে এস.আলম অ্যান্ড কো. এর এসব বিনিয়োগ গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।

এই উদ্যোগের সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন- শিল্প মন্ত্রণালয় এর মাননীয় মন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হূমায়ুন, এমপি; শিল্প মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব জাকিয়া সুলতানা; শিল্প মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (রাষ্ট্রায়ত্ত কর্পোরেশন) এস এম আলম; শিল্প মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (পরিকল্পনা) মো. শামীমুল হক; বিএসএফআইসি এর সচিব চৌধুরী রুহুল আমিন কায়সার এবং বিএসএফআইসি এর চেয়ারম্যান শেখ শোয়েবুল আলম এনডিসি। এছাড়া এস.আলম অ্যান্ড কো. এর পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন- প্রতিষ্ঠানটির ডিরেক্টর বেলাল আহমেদ, ডিরেক্টর আশরাফুল আলম, নির্বাহী পরিচালক (অর্থ), সুব্রত কুমার ভৌমিক, এফসিএ; উপদেষ্টা মো. আরিফুর রহমান অপু; অ্যাকাউন্টস, ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার, মো. মনিরুজ্জামান, এফসিএ; অ্যাকাউন্টস, এজিএম মো. নজরুল ইসলাম, এসিএ; এসএস পাওয়ার ১ লিমিটেড এর ম্যানেজার, টেকনিক্যাল সার্ভিস নাগিব মাহফুজ সহ অন্যান্যরা।

;

সরকার যখন বলবে তখন বিদ্যুতের দাম সমন্বয় হবে: প্রতিমন্ত্রী



স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।

বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।

  • Font increase
  • Font Decrease

বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ এমপি বলেছেন, বিদ্যুতের দাম সময় অনুযায়ী সমন্বয় হবে, সরকার যখন বলবে তখন সমন্বয় করা হবে। আমরা চাই, যতো কম সময়ে সমন্বয় করা যায়।

বৃহস্পতিবার (০৪ জুন) দুপুরে বিদ্যুৎ বিভাগের কনফারেন্স রুমে সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।

প্রতিমন্ত্রী আর বলেন, প্রত্যেকটি বিতরণ কোম্পানি লোকসান দিয়ে যাচ্ছে। আমরা লোডশেডিং বন্ধ করতে পারতাম, কিন্তু ডিজেলের বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো চালাইনি। কিছু তেল ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র রাখা হচ্ছে বিকল্প হিসেবে। যাতে কোনোটি বন্ধ হয়ে গেলে চালাতে পারি। তবে চুক্তি হচ্ছে কোনো ক্যাপাসিটি চার্জ থাকছে না। একটা বিষয় ভালো, তেলের বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে বের হয়ে আসছি। বেজডলোড বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো চলে এসেছে।

তিনি বলেন, বিদ্যুতের উৎপাদন ও বিক্রির মধ্যে অনেক তারতম্য রয়ে গেছে। বিশেষ করে ডলারের দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে। সরকার বিদ্যুতের ক্ষেত্রে ৫০ শতাংশ ভর্তুকি দিয়ে থাকে। ধীরে ধরে এখান থেকে বের হয়ে আসতে হবে। অনেকে আমাকে প্রশ্ন করেন, কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর চুক্তি যখন করলেন তখন দাম কম ছিল, এখন বেশি কেন। যখন চুক্তি করি তখন ডলারের দাম ছিল ৭৯ টাকা, এখন ১১৭ টাকা। শুধু ডলারের কারণেই অনেক তারতম্য ঘটেছে। শুধু কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নয়, অন্যান্য ক্ষেত্রে ডলারের কারণে ব্যয় বেড়েছে।

তিনি বলেন, বন্যার কারণে সিলেট অঞ্চলে অধিকাংশ উপকেন্দ্র পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে। বন্যার পানি নিয়ে নতুন করে ভাবতে হচ্ছে। বাংলাদেশ ৭০০ নদীর দেশ, নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ জ্বালানি সরবরাহ রাখাটা বড় চ্যালেঞ্জ। আমাদের মতো দেশে অর্থ নিয়ে কিছুটা চ্যালেঞ্জ থাকে সবসময়। গত একমাস যাবত বিদ্যুতের কিছুটা ঘাটতি ছিল, ভবিষ্যতের যাতে এমন অবস্থা না হয় তার জন্য পরিকল্পনা করা দরকার। বিদ্যুৎ সরবরাহ উন্নতি হচ্ছে, আগামী তিন-চার দিনের মধ্যে আরও ভালো হবে। আমাদের একটি ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল না থাকায় গ্যাস সরবরাহে ঘাটতি দেখা দিয়েছে। চলতি মাসের মাঝামাঝি সময়ে উন্নতি হবে।

নসরুল হামিদ বলেন, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বিদ্যুৎ বিভাগ ১০১ শতাংশ এডিপি বাস্তবায়ন করেছে, আর জ্বালানি বিভাগ ১০৫ শতাংশ কাজ সম্পন্ন করেছে। জাতীয় পর্যায়ে এডিপি বাস্তবায়নের তুলনায় ৫০ শতাংশ বেশি। এবারও এডিপি বাস্তবায়নের শীর্ষে থাকবে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি বিভাগ। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি ৩৮ হাজার ৯৪১ কোটি টাকা, সরকারের ২৩ হাজার কোটি টাকা, আর নিজস্ব অর্থায়নে প্রায় ৯ হাজার কোটি টাকা ব্যয় হবে। জ্বালানি বিভাগে ১০৮৬ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। জ্বালানি বিভাগ সাধারণ নিজস্ব অর্থ ব্যয় করে প্রকল্প বাস্তবায়ন করে। তারা গ্যাস কেনা তেল কেনায় নিজেদের অর্থ ব্যয় করে। কিন্তু উন্নয়ন প্রকল্পে কিছু অর্থ প্রয়োজন হয়।

বিদ্যুৎ খাতে ২৯১৭৬ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে, সৈয়দপুরের বিদ্যুৎ কেন্দ্র শেষ করতে কিছু টাকা লাগবে। অনেকদিন ধরে বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির কাজ করছি, এটা খুবই জরুরি। কুমিল্লা জোন ও যশোর জোনে যে চাহিদা বাড়ছে সেখানে কাজ হবে। প্রিপেইড মিটার স্থাপন ট্রান্সমিশন লাইন আধুনিকায়নে ব্যয় হবে।

নবায়নযোগ্য জ্বালানি প্রসঙ্গে বলেন, আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে, অবিলম্বে ১০ শতাংশ নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে নিশ্চিত করা। ২৫০০ মেগাওয়াটের এলওআই দিয়েছি, এবছরের শেষে না হলে সামনে বছরের মধ্যে চলে আসবে। আরও ৬০০০ মেগাওয়াট পাইপলাইনে রয়েছে। এগুলোর সবগুলো বেসরকারি, যে কারণে বাজেটের কোন ইস্যু নেই। ২০৪০ সালের মধ্যে ৪০ শতাংশ ক্লিন এনার্জির দিকে যেতে চাই।

জমির পাশাপাশি সোলারের কিছু টেকনিক্যাল সমস্যাও রয়েছে উল্লেখ করে বলেন, সৌর বিদ্যুতে ১১টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত সারা বছরে ১৭-২০ শতাংশ বিদ্যুৎ দিতে পারে। অর্থাৎ ৮০ শতাংশ বিদ্যুৎ দিতে পারে না। স্টোরেজ রাখতে হবে, আমরা বায়ু বিদ্যুৎ নিয়ে ভাবছি। কুরুশকুল বায়ু বিদ্যুতে ভালো ফল এসেছে। ৬০০০ মেগাওয়াট নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ এলে যেকোনো সময় সিস্টেম ফল করতে পারে। এ জন্য সিস্টিম আপগ্রেডেশনের একটি প্রকল্প নেওয়া হয়েছে।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর চীন সফরে বিদ্যুতের ৬টি প্রকল্প নিয়ে আলোচনা হতে পারে। মহেশখালী থেকে গ্যাসের আরেকটি সমানতরাল পাইপলাইন করার জন্য আলোচনা হবে। আমরা চাই প্রকল্পটি জি টু জি ভিত্তিতে করার জন্য চীনের কাছে সহায়তা চেয়েছি। আমাদের ২টি এফএসআরইউ রয়েছে, আরও দু’টি এফএসআরইউ আনতে চাই। ২০২৭ সালের পর আর ওকোন গ্যাস ঘাটতি থাকবে না। তখন দৈনিক ৬ হাজার মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের দরকার হবে।

;