তিতাস-১৪ কূপ থেকে গ্যাস সরবরাহের উদ্বোধন



স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

তিতাস গ্যাস ফিল্ডের ১৪ নম্বর কূপ থেকে জাতীয় গ্রিডে গ্যাস সরবরাহ উদ্বোধন করা হয়েছে। পরীক্ষামূলকভাবে দৈনিক কমবেশি ১২ মিলিয়ন ঘনফুট জাতীয় গ্রিডে গ্যাস সরবরাহ শুরু করা হয়েছে।

শনিবার (২৫ মে) গ্যাস সরবরাহের উদ্বোধন করেন জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের সচিব মো. নূরুল আলম। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান জনেন্দ্র নাথ সরকার, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. হুমায়ুন কবীর ও ড. মো. রফিকুল ইসলাম, বাপেক্স, এসজিএফএল ও বিজিএফসিএল এর ব্যবস্থাপনা পরিচালকগণ।

বাপেক্স তাদের বিজয়-১১ রিগ ব্যবহার করে তিতাস ১৪ নম্বর কূপের ওয়ার্কওভার শুরু করে গত ১৯ মার্চ। শুরুতে কূপটি হতে এক সময় ২৪৮৮ পিএসআই চাপে দৈনিক ২৯.৫০ মিলিয়ন ঘনফুট হারে গ্যাস উৎপাদন করা হতো। অতিরিক্ত পানি উৎপাদনের কারণে ২০০৯ সালে কূপটি ওয়ার্কওভার করে ১৮৭৯ পিএসআইজি চাপে দৈনিক ১৯.৫০ মিলিয়ন ঘনফুট হারে গ্যাস উৎপাদন করা হয়। আবার পানির প্রবাহ বৃদ্ধি পেয়ে গ্যাসের উৎপাদন দৈনিক ৬ মিলিয়নে নেমে আসে, পানি উৎপাদনের হার ৩৯ মিলিয়ন ঘনফুটে পৌঁছায়। অতিরিক্ত পানির কারণে ২০২১ সালের ১ নভেম্বর কূপটির গ্যাস উৎপাদন বন্ধ করে দেওয়া হয়। নভেম্বর পর্যন্ত তিতাস-১৪ কূপ হতে ক্রমপুঞ্জিভূত উৎপাদিত গ্যাসের পরিমাণ ছিল ১৬৩ বিলিয়ন ঘনফুট।

তিতাস ফিল্ডে তিনটি প্রধান গ্যাস স্তর রয়েছে। তিনটির মধ্যে বিস্তরের উত্তোলনযোগ্য গ্যাস মজুদের পরিমাণ ৫৬৪ বিলিয়ন ঘনফুট। তিতাস কূপ নং-১৪ বি স্তরে অবস্থিত। কূপটি থেকে মোট ৪০ বিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উৎপাদন করা সম্ভব হবে আশা করা হচ্ছে। যার বর্তমান বাজার মূল্য (প্রতি ঘনমিটার গ্যাসের গ্রাহক প্রান্তে ওয়েটেড গড় মূল্য ২২.৮৭ টাকা হিসাবে) ২ হাজার ৫৯০ কোটি টাকা।

তিতাস কূপ-১৪ ওয়ার্কওভার শেষ করতে সর্বমোট ৭৫ কোটি টাকা ব্যয় হবে। দেশে বিরাজমান গ্যাস সংকট মোকাবিলায় সরকারকে বিপুল বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয় করে এলএনজি আমদানি করতে হচ্ছে। সংকটময় মুহূর্তে ওয়ার্কওভারকৃত কূপ হতে জাতীয় গ্রিডে দৈনিক ১০-১২ মিলিয়ন ঘনফুট হারে গ্যাস সরবরাহ করা হলে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হবে।

পেট্রোবাংলার অধীনে বিজিএফসিএল প্রাকৃতিক গ্যাস উৎপাদন ও গ্যাসের উপজাত কনডেনসেট প্রক্রিয়াজাতকারী একটি অন্যতম প্রতিষ্ঠান। কোম্পানির আওতায় তিতাস, হবিগঞ্জ, বাখরাবাদ, নরসিংদী, মেঘনা ও কামতা রয়েছে। এর মধ্যে উৎপাদনে রয়েছে তিতাস, হবিগঞ্জ, বাখরাবাদ, নরসিংদী ও মেঘনা। ৫টি গ্যাস ফিল্ডের ৩৯টি কূপের মাধ্যমে দৈনিক গড়ে ৫৬০ মিলিয়ন ঘনফুট হারে গ্যাস উত্তোলন করা হচ্ছে। পেট্রোবাংলার সর্ববৃহৎ দেশীয় গ্যাস উৎপাদনকারী কোম্পানি হিসেবে বিজিএফসিএল দেশীয় কোম্পানির মোট উৎপাদনের শতকরা প্রায় ৭১ ভাগ গ্যাস জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।

দীর্ঘদিনের স্থবিরতা কাটিয়ে গতিতে ফিরেছে পেট্রোবাংলা। যার ফল ইতোমধ্যেই পাওয়া শুরু করেছে বাংলাদেশ। একদিন আগে ২৪ মে, কৈলাশটিলা থেকে ৮ নম্বর কূপ থেকে গ্যাস সরবরাহ শুরু হয়েছে। নতুন খননকৃত ওই কূপটি থেকে দৈনিক ২১ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ আসছে। মাস দুয়েক আগে রশিদপুর-৯ নম্বর কূপ থেকে গ্যাস সরবরাহ শুরু করা হয়েছে। আরও অনেকগুলো প্রকল্প চলমান রয়েছে বলে পেট্রোবাংলা জানিয়েছেন।

   

প্রবৃদ্ধি ও মূল্যস্ফীতির সংশোধিত লক্ষ্যও পূরণ হচ্ছে না: আইএমএফ



স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

চলতি ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে বাংলাদেশে মোট দেশজ উৎপাদনে মাত্র ৫.৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হবে বলে আশঙ্কা করেছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। এই আশঙ্কা সত্যি হলে কোভিড-১৯ এর সংক্রমণে ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে বড় ধরনের পতনের পর চার বছরের মধ্যে এবারই সর্বনিম্ন প্রবৃদ্ধি হচ্ছে।

চলতি অর্থবছরের বাজেটে ৭.৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য নির্ধারণ করা হলেও প্রথম ছয় মাসের গতিপ্রকৃতি পর্যালোচনা করে পুরো বছরে ৫.৮২ শকাংশ প্রবৃদ্ধি হবে বলে প্রাথমিক হিসাবে জানিয়েছে সরকারি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)।

পরিসংখ্যান ব্যুরোর সাময়িক হিসাবের চেয়ে বছর শেষে প্রায় ০.৪২ শতাংশীয় পয়েন্ট কম প্রবৃদ্ধি হবে বলে ধারণা আইএমএফ’র।

বাংলাদেশের জন্য পূর্ব প্রতিশ্রুত ঋণ সহায়তার তৃতীয় কিস্তির ১১৪৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার অনুমোদনের লক্ষ্যে তৈরি করা এক প্রকাশনায় এ সব তথ্য জানিয়েছে সংস্থাটি।

জিডিপির প্রবৃদ্ধি বাড়ানোর পাশাপাশি নিত্যপণ্যের মূল্য নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যও পূরণ হচ্ছে না জানিয়ে আইএমএফ বলেছে, চলতি অর্থবছরে গড় মূল্যস্ফীতি দাঁড়াবে ৯.৪ শতাংশে। অর্থবছরের শুরুতে মূল্যস্ফীতির হার ৬ শতাংশে নামিয়ে আনার লক্ষ্য থাকলেও বছর ব্যাপী নিত্যপণ্যের বাড়তি মূল্যের কারণে সংশোধিত বাজেটে লক্ষ্য বাড়িয়ে নির্ধারণ করা হয় ৮ শতাংশ।

জুন মাসের শুরুতে আগামী অর্থবছরের বাজেট বক্তৃতায় ঘোষণা করা এই সংশোধিত লক্ষ্যের চাইতে প্রকৃত মূল্যস্ফীতি ১.৪ শতাংশীয় পয়েন্ট বেশি হবে বলে আইএমএফ এর প্রাক্কলনে উঠে এসেছে।

মে মাস পর্যন্ত প্রকাশিত পরিসংখ্যান ব্যুরোর প্রতিবেদন বলছে, গত ১২ মাসে গড়ে ৯.৭৩ শতাংশ মূল্যস্ফীতি হয়েছে। এ হিসাবে পুরো বছরের মূল্যস্ফীতি আইএমএফ এর প্রাক্কলনের চাইতে বেশি থাকবে বলে ধারণা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

আগামী অর্থবছরে মূল্যস্ফীতির হার ৬.৫ শতাংশে নামিয়ে আনার পাশাপাশি জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৬.৭৫ শতাংশে উন্নীত করতে জাতীয় বাজেটে যে লক্ষ্য ঘোষণা করা হয়েছে তা পূরণ হবে না বলেও মনে করে বৈশ্বিক ঋণদাতা সংস্থাটি।

প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, আগামী অর্থবছরে কিছুটা বেড়ে প্রবৃদ্ধি দাঁড়াতে পারে ৬.৬ শতাংশে। আর বার্ষিক গড় মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমে দাঁড়াতে পারে ৭.২ শতাংশে।

সরকারের লক্ষ্যের চাইতে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ০.১৫ শতাংশীয় পয়েন্ট কম ও গড় মূল্যস্ফীতি ০.৭ শতাংশীয় পয়েন্ট বেশি হবে বলে মনে করে সংস্থাটি।

গত এপ্রিলে চলতি অর্থবছরের জন্য প্রায় ছয় শতাংশ প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস দিয়েছিল আইএমএফ। প্রবৃদ্ধি ও মূল্যস্ফীতির লক্ষ্য পূরণ না হওয়ার বিষয়ে সংস্থাটি বলেছে, অর্থবছরের প্রথম অর্ধেক সময়ে জিডিপির প্রবৃদ্ধি ৪.৮ শতাংশে নেমেছে। এপ্রিলে মূল্যস্ফীতি উঠেছে এক দশকের সর্বোচ্চ ৯.৭ শতাংশে।

চলমান আমদানি সংকোচন এবং নীতি কঠোর করণের কারণে প্রকৃত জিডিপি প্রবৃদ্ধি চলতি বছর ৫.৪ শতাংশে দাঁড়াবে। আর আমদানি পুনরুদ্ধার ও বিদেশি মুদ্রার চাপ কিছুটা কমে আসলে তা আগামী অর্থবছরে ৬.৬ শতাংশে উঠবে৷

চলতি অর্থবছরে গড় মূল্যস্ফীতি ৯.৪ শতাংশে উন্নীত হলেও ক্রমাগত কঠোর নীতির পাশাপাশি বিশ্বব্যাপী খাদ্যসহ অন্যান্য পণ্যের দাম কমে আসলে মূল্যস্ফীতি ৭.২ শতাংশে নেমে আসতে পারে।

;

ঈদ উপলক্ষে বিকাশে রেমিটেন্স আসার হার বেড়েছে ৬৬ শতাংশ



নিউজ ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

প্রতিবারের মতো এবারও ঈদের সময় দেশে থাকা প্রিয়জনের বিকাশ অ্যাকাউন্টে রেমিটেন্স পাঠিয়েছেন সারা বিশ্বে অবস্থান করা প্রবাসী বাংলাদেশিরা। বিশ্বব্যাপী বিকাশ-এর পার্টনার মানি ট্রান্সফার অর্গানাইজেশন (এমটিও)-গুলোর মাধ্যমে নিজেদের সুবিধামতো সময়ে মোবাইল ওয়ালেট কিংবা সংশ্লিষ্ট এমটিও-এর এজেন্ট পয়েন্ট থেকে ব্যাংকিং চ্যানেল হয়ে বৈধপথে রেমিটেন্স পাঠাতে পারছেন প্রবাসীরা।

গত বছরের তুলনায় এ বছর ঈদ উপলক্ষে বিকাশে রেমিটেন্স আসার হার বেড়েছে প্রায় ৬৬ শতাংশ, যা সম্প্রতি বাড়তে থাকা দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভকে শক্তিশালী করতেও অবদান রাখছে।

এদিকে, প্রবাসীর পাঠানো রেমিটেন্সের উপর প্রতি হাজারে ২৫ টাকা সরকারি প্রণোদনাসহ পুরো অর্থ মুহূর্তেই বিকাশ অ্যাকাউন্টে পেয়ে যাচ্ছেন দেশে থাকা স্বজনেরা। পাশাপাশি, রেমিটেন্সের টাকা এখন আরো কম খরচে ক্যাশ আউটের সুযোগ নিতে পারছেন প্রবাসীর স্বজনেরা। দেশজুড়ে ১৯টি বাণিজ্যিক ব্যাংক-এর প্রায় ২,৭০০ এটিএম বুথ থেকে হাজারে মাত্র ৭ টাকা চার্জে *২৪৭# ডায়াল করে বা বিকাশ অ্যাপ ব্যবহার করে গ্রাহকরা রেমিটেন্সের টাকা ক্যাশ আউট করতে পারছেন। এছাড়া, বিকাশ-এর এজেন্ট পয়েন্ট থেকে ক্যাশআউটও এখন আরো সাশ্রয়ী, কারণ মাসে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত হাজারে ১৪.৯০ টাকা খরচে দুটি প্রিয় এজেন্ট থেকে ক্যাশ আউট করতে পারছেন। দেশজুড়ে ছড়িয়ে থাকা ৩ লক্ষ ৭৯ হাজার এজেন্ট পয়েন্টে এই সুবিধা গ্রহণ করতে পারছেন তাঁরা।

সহজ, তাৎক্ষণিক ও নিরাপদ হওয়ায় দিন দিন জনপ্রিয় হচ্ছে বিকাশ-এর মাধ্যমে রেমিটেন্স প্রেরণ। বর্তমানে বিশ্বের শতাধিক দেশ থেকে ১০০টিরও বেশি মানি ট্রান্সফার অর্গানাইজেশন (এমটিও)-এর হয়ে দেশের শীর্ষ বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোয় সেটেলমেন্টের মাধ্যমে বৈধপথে প্রিয়জনের বিকাশ অ্যাকাউন্টে সরাসরি রেমিটেন্স পাঠাতে পারছেন প্রবাসীরা। বিকাশ অ্যাকাউন্টে সরাসরি রেমিটেন্স আসায় প্রবাসীর প্রিয়জনরা বিকাশ-এর মাধ্যমেই বিভিন্ন ধরনের পেমেন্ট, গ্যাস-বিদ্যুৎ-পানির মতো ইউটিলিটি সেবার বিল পরিশোধ, টাকা পাঠানো, মোবাইল রিচার্জ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বা সরকারি সেবার ফি পরিশোধ, যাকাত-ফিতরা, অনুদান প্রদানসহ অসংখ্য সেবা নিতে পারছেন ঘরে বসেই।

;

ইসলামী ব্যাংকের ৪১তম বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি-এর ৪১তম বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার (২৫ জুন) ভার্চুয়াল প্লাটফর্মে এ সভার সভাপতিত্ব করেন ব্যাংকের চেয়ারম্যান আহসানুল আলম।

ব্যাংকের ভাইস চেয়ারম্যান সৌদি আরবের ইউসিফ আব্দুল্লাহ আল-রাজী ও ডা. তানভীর আহমেদ, অন্যান্য পরিচালকবৃন্দ, ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুহাম্মদ মুনিরুল মওলা, শরী‘আহ সুপারভাইজরি কমিটির চেয়ারম্যান মাওলানা ওবায়দুল্লাহ হামযাহ, অ্যাডিশনাল ম্যানেজিং ডাইরেক্টর ও কোম্পানি সেক্রেটারি জে কিউ এম হাবিবুল্লাহ, এফসিএস এবং বিদেশী প্রাতিষ্ঠানিক শেয়ারহোল্ডারসহ উল্লেখযোগ্য সংখ্যক শেয়ারহোল্ডার ভার্চুয়াল প্লাটফর্মে এ সভায় অংশগ্রহণ করেন। সভায় ২০২৩ সালের আর্থিক বিবরণী অনুমোদনসহ শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ অনুমোদন করা হয়।

;

ব্যাংকিং খাতে সুশৃঙ্খলা ফেরাতে পারবে কি বাংলাদেশ ব্যাংক?



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
বাংলাদেশ ব্যাংক, ছবি: বার্তা২৪.কম

বাংলাদেশ ব্যাংক, ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

নতুন অর্থবছরের বাজেটে সামষ্টিক অর্থনীতির বিরাজমান চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় নেই কোনো সঠিক দিকনির্দেশনা বলে দাবি করেছেন অর্থনীতি বিশ্লেষকরা। তারা বাংলাদেশ ব্যাংককেও সমালোচনার বাইরে রাখছেন না। অন্যদিকে বিশ্লেষকদের এই অভিযোগ মানতে নারাজ কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

বাংলাদেশ ব্যাংকের শীর্ষ কর্মকর্তারা দাবি করেছেন, সময়োপযোগী মুদ্রানীতি প্রণয়ন, তার প্রয়োগ ও তদারকিই কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মূল কাজ এবং সেটি ঠিকমতোই করা হচ্ছে। সামষ্টিক অর্থনীতির বৃহৎ অংশ হলো আর্থিক নীতি ব্যবস্থাপনা এবং সেটি সরকার করে থাকে। সরকারের অর্থ, পরিকল্পনা ও অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ তা করে থাকে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাজ হলো আর্থিক নীতির সঙ্গে সমন্বয় সাধন করে মুদ্রানীতি প্রণয়ন ও তা বাস্তবায়ন করা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর মো. হাবিবুর রহমান বলেন, ‘আমরা প্রতিনিয়ত অর্থনীতির গতি-প্রকৃতি নজরদারি করি, প্রয়োজনে গবেষণা করি এবং নীতি প্রণয়ন করে তা বাস্তবায়ন করি। এই মুহূর্তে আমাদের সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতা ফেরাতে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ ও বিনিময় হার বাজারমুখী করতে বাংলাদেশ ব্যাংক নীতি প্রয়োগের অন্তর্বর্তীকালে রয়েছে। গত মে মাসে মুদ্রা বিনিময় হারে ক্রলিং পেগ পদ্ধতি সূচনার পর থেকে একধরনের সুফল আসতে শুরু করেছে। আগামী দিনে রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আরও বাড়বে এবং ডলার সরবরাহ ও বিনিময় হারে প্রত্যাশিত না হলেও কাছাকাছি ফলাফল আমরা পাব বলে আশা করি। তবে মূল্যস্ফীতি কমিয়ে আনতে বর্ধিত সুদহারের প্রতিফলন পেতে আরও পাঁচ-ছয় মাস অপেক্ষা করতে হবে। আগামী ডিসেম্বর নাগাদ আমরা ভালো কিছু পাব।’

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতিমালায় ঘাটতি নেই জানিয়ে নির্বাহী পরিচালক ড. মো. এজাজুল ইসলাম  বলেন, ‘নীতিমালায় ঘাটতি নেই তবে সময় লাগবে। যেমন, সুদহার আজ বাড়ালে এর প্রভাব কালই পড়বে না। কারণ সুদহার বাড়ানো হয়েছে নতুন ঋণের ক্ষেত্রে। সুতরাং নতুন ঋণের প্রবৃদ্ধি কতটুকু হলো সেই সূচক আসার আগ পর্যন্ত মূল্যস্ফীতি কমেছে কি না, তা পরিমাপ করা যাবে না।’

গত মে মাসে সুদহারে আরোপিত স্মার্ট করিডর পদ্ধতি তুলে দিয়ে সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি আরও কঠোর করা হয়। এতে ঋণের সুদ ১৩-১৪ শতাংশ পর্যন্ত উঠে যায়। এর ফলে বেসরকারি খাতে ঋণপ্রবাহ পর্যায়ক্রমে আরও কমে আসতে শুরু করেছে।

এদিকে দেশের বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদরা বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতি পদক্ষেপসমূহ নিয়ে সমালোচনা করে বলেছেন, এসব সময়োপযোগী ছিল না। অর্থাৎ যেটি যখন করা দরকার ছিল, তা তখন করা হয়নি। ফলে নীতিমালা ঠিকমতো কাজ করছে না। এর জবাবে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে কর্মকর্তারা বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক গত বছরের নভেম্বরে মুদ্রানীতিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বাইরের বিশেষজ্ঞ ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্ত করেছে। এখন যে মুদ্রানীতি চলছে, তা ওই পরামর্শ ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গবেষণার ভিত্তিতে প্রস্তুত করা হয়েছিল। সেরা অর্থনীতিবিদদের পরামর্শ নিয়ে গবেষণার ভিত্তিতে গত জানুয়ারিতে প্রাজ্ঞ মুদ্রানীতির কারণেই অর্থনীতিতে ধীরে ধীরে স্থিতাবস্থা ফিরে আসবে।

সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক ফর ইকোনমিক মডেলিংয়ের (সানেম) নির্বাহী পরিচালক ড. সেলিম রায়হান বলেন, ‘সামষ্টিক অর্থনীতির ব্যবস্থাপনা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাজ নয়। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সুনির্দিষ্ট দায়িত্ব রয়েছে। মুদ্রানীতির পাশাপাশি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একটি বড় কাজ হলো ব্যাংকিং খাতের সুশাসন নিশ্চিত করা। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংক এ ক্ষেত্রে স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারে না। এখানে গোষ্ঠী ও ব্যক্তির স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রভাব থাকে।’

শীর্ষস্থানীয় একটি বেসরকারি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংক শতভাগ নিজস্বতা ও নিরপেক্ষতার সঙ্গে কাজ করতে পারে না। এর একটি কারণ হলো রাজনৈতিক। গবেষণা বাড়াতে হবে ও দূরদর্শিতার প্রসার ঘটাতে হবে। সম্প্রতি যোগ হয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের শর্তাবলি। দেশের ব্যাংকিং খাতকে বাঁচিয়ে অর্থনীতিকে রক্ষা করতে পারলেই তাদের প্রকৃত পারদর্শিতা প্রমাণিত হবে।’

;