পুঁজিবাজারের পতন ঠেকাতে বাজেটে বিশেষ বরাদ্দসহ ১২ দাবি
পুঁজিবাজারে অব্যাহত দরপতনের মধ্যে পড়ে প্রতিদিনই পুঁজি হারাচ্ছেন বিনিয়োগকারীরা। পুঁজিবাজারে পতন ঠেকানো ও স্থিতিশীলতা রক্ষায় আগামী বাজেটে ৫০ হাজার কোটি টাকার বিশেষ বরাদ্দসহ ১২ দফা দাবি জানায় পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী জাতীয় ঐক্য ফাউন্ডেশন (ক্যাপমিনাফ)।
বুধবার (২৯ মে) জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে এক সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি জানানো হয়। এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনের সভাপতি রুহুল আমিন আকন্দ।
তিনি বলেন, দেশের শিল্পপতিরা পুঁজিবাজার থেকে পুঁজি সংগ্রহ করে শিল্পের বিকাশ ঘটাচ্ছেন। এতে করে বেকারত্ব লাঘব হচ্ছে, কর্মসংস্থান সৃষ্টি হচ্ছে ও প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জিত হচ্ছে। ফলে, দেশের অর্থ বিভাগ সমৃদ্ধশালী হচ্ছে। কিন্তু, পুঁজিবাজার আজ চরম হুমকির মধ্যে রয়েছে। বিনিয়োগকারীরা তাদের পুঁজি হারাচ্ছে। অনেক বিনিয়োগকারী ইতিমধ্যে সর্বশান্ত হয়ে পথে বসেছে।
রুহুল আমিন আকন্দ অভিযোগ করে বলেন, পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থার বর্তমান পর্ষদ দায়িত্ব নেওয়ার পর তাদের নানা আশ্বাস ও আহ্বানে নতুন করে অনেক বিনিয়োগকারী বিনিয়োগ করেছে। কিন্তু, দূরদর্শীতার অভাবে কিছু বিতর্কিত গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়ার কারণে খারাপ কোম্পানিগুলোকে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির অনুমোদন দিয়ে বাজার থেকে বেহিসাবি (বিশাল আকারের) অর্থ বের করে নেওয়ার সুযোগ তৈরি করে দিয়েছে। এতে করে দীর্ঘদিন ধরে পুঁজিবাজারে অস্থিতিশীল পরিবেশ বিরাজ করছে।
পুঁজিবাজারে বর্তমান মন্দা পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করে ১২ দফা দাবি তুলে ধরা হয়।
>> পুঁজিবাজার স্থিতিশীল করতে আগামী বাজেটে ৫০ হাজার কোটি টাকার বিশেষ বরাদ্দের ব্যবস্থা করতে হবে।
>> পুঁজিবাজার ভাল করতে আগামী এক বছর সকল ধরণের আইপিও অনুমোদন বন্ধ রাখতে হবে।
>> বর্তমান নেতিবাচক পুঁজিবাজারে টেকনো ড্রাগস লিমিটেডের আইপিও দ্রুত বন্ধ করতে হবে।
>> ক্যাপিটাল গেইন ট্যাক্স আরোপ বন্ধ করতে হবে।
>> বাইব্যাক আইন কার্যকর করতে হবে।
>> শেয়ার দর বৃদ্ধি পেলে যেমন কারণ দর্শানো হয়, তেমনি কমলেও যেন এর কারণ দর্শানোর নোটিশের ব্যবস্থা করতে হবে।
>> পরিচালনা পর্ষদ পরিবর্তনের ইস্যু দেখিয়ে যেসব কোম্পানির শেয়ার দর আকাশচুম্বী করা হয়েছে, সে সব কোম্পানির শেয়ার কারসাজি চক্রের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
>> মিউচ্যুয়াল ফান্ড উন্নয়নে দৃশ্যমান কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে এবং আর্থিক সক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও নো ডিভিডেন্ড দেওয়া কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে তদন্তপূর্বক শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে।
>> ক্যাপিটাল মার্কেট স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ড বাজার উন্নয়নে ব্যবহার করতে হবে ।
>> পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারীদের পুঁজির নিরাপত্তা ও সুরক্ষা তহবিল গঠন করতে হবে ।
>> স্মার্ট বাংলাদেশে স্মার্ট পুঁজিবাজার ও স্বচ্ছতা আনয়নে বিএসইসিতে বিনিয়োগকারীদের প্রতিনিধি রাখার ব্যবস্থা করতে হবে ।
>> আসন্ন বাজেটে অপ্রদর্শিত অর্থ সম্পূর্ণ নিঃশর্তভাবে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের ব্যবস্থা করতে হবে।