বাজার দর
পেঁয়াজের কেজি ১৫০ ছুঁইছুঁই, দাম কমেছে সবজির
গেল কয়েক মাস ধরে সবচেয়ে অস্থিতিশীল পেঁয়াজের বাজার। দাম কমার চেয়ে বরং প্রতি সপ্তাহে একটু একটু করে বাড়ছে পেঁয়াজের দাম। তারই রেশ ধরে গত সপ্তাহের তুলনায় পেঁয়াজের দাম কেজিতে বেড়েছে ২০ থেকে ৩০ টাকা। খুচরা বাজারে প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১৪০ থেকে ১৪৫ টাকায়। আবার বাজার ভেদে কোথাও কোথাও ১৫০ টাকায়ও বিক্রি হচ্ছে।
শুক্রবার (১ নভেম্বর ) সকালে রাজধানীর কয়েকটি বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা যায়। তবে বাজারে পেঁয়াজের ঝাঁজ থাকলেও সরবরাহ বাড়ায় কমতে শুরু করেছে শীতকালীন সবজির দাম।
বাজার ঘুরে দেখা যায়, গত সপ্তাহে যে আমদানি করা পেঁয়াজ ১১০ থেকে ১২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছিল তা সপ্তাহের ব্যবধানে আজ ১৩০ থেকে ১৪৫ টাকা বিক্রি হচ্ছে। আর দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা দামে।
মোহাম্মাদপুর কৃষি মার্কেটে বাজার করতে আসা ক্রেতা চাকরীজীবী ইশতিয়াক আহমেদ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, পেঁয়াজের বাজার একেবারেই লাগামছাড়া। ৭০-৮০ টাকার পেঁয়াজ এখন দেড়শ টাকায় এসে ঠেকেছে। এক কেজি পেঁয়াজ কিনতে যদি দেড়শ টাকা লাগে তাহলে অন্য বাজার করবো কী করে? পেঁয়াজের বাজারে সরকারের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই’।
পেঁয়াজের বাজার নিয়ে টাউনহল বাজারের ব্যবসায়ী মো.ইলিয়াস বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, 'পেঁয়াজ নিয়ে বরাবরই ব্যবসায়ীদের দোষারোপ করা হচ্ছে। কিন্তু আসলে পেঁয়াজ নিয়ে ব্যবসায়ীদের কিছুই করার নেই। তার কারণ দেশি পেঁয়াজ বাজারে নেই এবং পেঁয়াজের আমদানিও কম। বাজার স্বাভাবিক হওয়ার জন্য নতুন পেঁয়াজ ওঠার অপেক্ষা করা ছাড়া আর কিছুই করার নেই'।
রাজধানীতে পুরোদমে শীত না পড়লেও শীতের পুরো আমেজ সবজির বাজারে। কাঁচাবাজার সয়লাব শীতের সবজিতে, এ কারণে গত সপ্তাহের তুলনায় কমেছে সবজির দাম।
টাউন হল কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা যায়, বাজারে নতুন আলু উঠেছে। তবে দামও বেশ বাড়তি। প্রতি কেজি নতুন আলু ১২০ টাকা, আর পুরাতন আলু ২৫ থেকে ৩০ টাকা। এছাড়া শীতকালীন অন্যান্য সবজিতে কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা কমেছে। শিম ৭০-৮০ টাকা, টমেটো ১২০ টাকা, কাঁচা মরিচ ১০০-১২০ টাকা, বেগুন ৬০-৭০ টাকা, মুলা ৪০ টাকা, গাজর ৭০ টাকা, কাঁচা পেঁপে ২০ টাকা, বরবটি ৫০ টাকা, পটল ৫০ টাকা, ঢেঁড়স ৪০ টাকা, চিচিঙ্গা ৫০ টাকা, কাকরোল ৬০ টাকা, করলা ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
তাছাড়া প্রতি পিচ ফুলকপি ৩০ টাকা, বাঁধাকপি ৩৫ টাকা ,মিষ্টি কুমড়া ৩৫ টাকা, লাউ ৪০ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
সবজির দাম কমার বিষয়ে স্বস্তি প্রকাশ করে টাউন হল বাজারে আসা ক্রেতা মনির হোসেন বলেন, গত সপ্তাহের থেকে প্রায় সব সবজিতে দাম কিছুটা কমেছে। গত সপ্তাহের থেকে সিমের দাম কমেছে ২০ টাকা আর বেগুনের দাম কমেছে ১০ টাকা। তবে সরবরাহ অনুযায়ী দাম আরও কিছুটা কমা উচিত।
সবজি ব্যবসায়ী বরকত আলী বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, 'নতুন আলু ছাড়া শীতকালীন সকল সবজির দাম কমেছে। শীত পুরোপুরি চলে আসলে সবজির দাম আরো কমে আসবে। বাজারে এখন শীতের সবজি পর্যাপ্ত রয়েছে'।
মাংসের বাজার ঘুরে দেখা যায়, স্থিতিশীল রয়েছে গরুর মাংসের দাম। প্রতি কেজি গরুর মাংস ৫৫০ টাকা, খাসির মাংস ৭৫০ টাকা এবং বকরির মাংস ৬৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া বাজারে ব্রয়লার মুরগি কেজি প্রতি ১২০- ১৩০টাকা, পাকিস্তানি মুরগি ২৫০ টাকা, দেশি মুরগি ৪০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ায় মাছের বাজারে প্রচুর ইলিশ সরবরাহ দেখা গেছে। দামও কিছুটা কম। ছোট ইলিশ ৬৫০-৮০০ টাকা, বড় ইলিশ ৯০০-১২০০ টাকা। এছাড়া বাজারে তেলাপিয়া বিক্রি হচ্ছে ১৪০-১৫০ টাকা, শিং মাছ ৪০০-৭০০ টাকা, মাগুর ১৮০-২০০ টাকা, সুরমা ৪৫০ টাকা, পাঙ্গাস ১৩০ টাকা, রুই ২৩০-৩০০ টাকা, কাতলা ২৫০-৩০০ টাকা, কোরাল ৪৫০-৮০০ টাকা এবং প্রতি কেজি রূপচাঁদা বিক্রি হচ্ছে ৬০০-১২০০ টাকায়।
কৃষি মার্কেটের মুদির দোকান ঘুরে দেখা যায়, সব ধরনের চালের দাম আগের মতই আছে। তাছাড়া স্থিতিশীল রয়েছে আটা-ময়দা, তেল-লবন, ডাল-চিনিসহ সকল প্রকার নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম।