ঝাঁজ কমতে শুরু করেছে পেঁয়াজের



তৌফিকুল ইসলাম, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, ঢাকা
খুচরা বাজারে পেঁয়াজ বিক্রি করছেন বিক্রেতারা, ছবি: সুমন শেখ

খুচরা বাজারে পেঁয়াজ বিক্রি করছেন বিক্রেতারা, ছবি: সুমন শেখ

  • Font increase
  • Font Decrease

গত সপ্তাহে প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ১৫০ টাকায়। এক সপ্তাহের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম কেজিতে ৩০ টাকা কমেছে। দাম কমে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ১৩০ টাকায় এবং আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকায়।

এদিকে সাপ্তাহিক ছুটির দিনে গত সপ্তাহের মত স্থিতিশীল রয়েছে শীতকালীন সবজির বাজার।

শুক্রবার (৮ অক্টোবর) সকালে রাজধানীর সবচেয়ে বড় বাজার কারওয়ান বাজার ঘুরে এমন চিত্রই দেখা গেছে।

কারওয়ান বাজারের খুচরা ব্যবসায়ী মো. রুস্তম আলী বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, সরকার বারবার ঘোষণা দিচ্ছে যে পাইকারি বাজারে পেঁয়াজ ৫০ থেকে ৬০ টাকায় পাওয়া যাবে। কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন, খুচরা পর্যায়ে বিক্রি করার জন্য পাইকারি পর্যায়ে এ দামে কিনতে পারছি না পেঁয়াজ। পাইকারি পর্যায়ে পেঁয়াজ কিনতে হচ্ছে ১২০ থেকে ১২৫ টাকায় এবং আমদানি করা পেঁয়াজ কিনতে হচ্ছে ১১০ টাকায়। পাইকারি পর্যায়ে বেশি দাম দিয়ে কিনতে হচ্ছে। ফলে বিক্রিও করতে হচ্ছে বেশি দামে। বাজারে দেশি কোনো পেঁয়াজ নেই। ফলে দামের এ ঊর্ধ্বগতি।

পেঁয়াজ, ছবি: সুমন শেখ

এদিকে শীতকালীন সবজির বাজার ঘুরে দেখা যায়, রাজধানীবাসীর সবজির যোগান দিতে এর মধ্যেই সব ধরনের শীতকালীন সবজি বাজারে চলে এসেছে। দাম গত সপ্তাহের মতই আছে।

এ বাজারে প্রতি পিস ফুলকপি ৩৫ টাকা, বাঁধাকপি ৩০ টাকা, ছোট মিষ্টি কুমড়া ৩০ টাকা, লাউ ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি নতুন আলু ১১০ টাকা, আর পুরনো আলু ২৫ টাকা, শিম ৮০ টাকা, টমেটো ১৪০ থেকে ১৬০ টাকা, কাঁচা মরিচ ১০০ টাকা, বেগুন ৬০-৭০ টাকা, মূলা ৩০ টাকা, গাজর ১০০ টাকা, বরবটি ৫০ টাকা, পটল ৫০ টাকা, ঢেঁড়স ৬০ টাকা, কাকরোল ৬০ টাকা, করলা ৭০ থেকে ৮০ টাকা, পেঁপে ৩০ টাকা ও কাঁচা কলা ৩০ টাকা বিক্রি হচ্ছে।

বাজারে উঠেছে শীতের সবজি টমেটো, ছবি: সুমন শেখ

বাজার করতে আসা ফিরোজ মিয়া বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, শীতকালীন সবজির দাম আগের মতই আছে। খুব একটা বাড়েনি। নতুন আলুর দাম খানিকটা বেশি। আর পেঁয়াজ নিয়ে যে নোংরা খেলা চলছে, তার অবসান কোথায় আমরা জানি না। পেঁয়াজের দামের যাঁতাকলে সাধারণ ক্রেতা হিসেবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি আমরা। সরকার বারবার বলছে, সিন্ডিকেটের জন্য দাম বাড়তি। তাহলে সেই সিন্ডিকেটকে ধরে পেঁয়াজের দাম স্বাভাবিক কেন করতে পারছে না তারা। কর্তৃপক্ষের ব্যর্থতা এটা।

এখন ইলিশের ভরা মৌসুম। কারওয়ান বাজারে ইলিশের সরবরাহ স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে বেশি রয়েছে। বর্তমান বাজারে এক কেজি ওজনের ইলিশ মাছ বিক্রি হচ্ছে ৮০০ থেকে ৯০০ টাকায়, ৭০০ থেকে ৮০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৬০০ থেকে ৭০০ টাকায়, ৫০০ গ্রামের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৪০০ টাকা কেজি দরে। এছাড়া এক কেজি ওজনের এক হালি ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৩৬০০ থেকে ৪০০০ টাকায়। যা গত সপ্তাহে ছিল ২৬০০ টাকা থেকে ৩২০০ টাকার মধ্যে।

এছাড়া অন্যান্য মাছের মধ্যে প্রতি কেজি রুই ৩০০ টাকা, তেলাপিয়া ১৬০ টাকা, রূপচাঁদা ৮০০ টাকা, শিং ৬০০ টাকা, পাবদা ৫০০ টাকা, বেলে ৫৫০ টাকা, কৈ ৪০০ টাকা, চিংড়ি ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা, ছোট মাছ ৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

ইলিশে সয়লাব বাজার, ছবি: সুমন শেখ

ইলিশ ব্যবসায়ী মো. এখলাছ বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, পর্যাপ্ত সরবরাহ রয়েছে ইলিশের। গত সপ্তাহের তুলনায় পাইকারি বাজারে ১০০ টাকার মত বেড়েছে ইলিশের দাম। তবে খুচরা বাজারে এ দাম তেমন একটা প্রভাব ফেলতে পারেনি। চাহিদা বাড়লে দাম বাড়তে পারে।

সাপ্তাহিক বাজার করতে আসা হাবিবুর রহমান বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, ইলিশের দাম বিক্রেতারা বেশিই চায়। তবে দর কষাকষি করে আমাদের একটি সহনীয় পর্যায়ে নিয়ে আসতে হয়। অন্যান্য সময়ের তুলনায় ইলিশের দাম এখন কিছুটা কম। তবে আমাদের নাগালের মধ্যে বলা যাবে না। অন্যান্য মাছের দাম স্বাভাবিক রয়েছে।

মাংসের বাজার ঘুরে দেখা যায়, গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই স্থিতিশীল রয়েছে মাংসের দাম। ফলে ক্রেতাদের তেমন কোনো অভিযোগ না থাকলেও বিক্রেতাদের রয়েছে আক্ষেপ।

বাজারে উঠেছে শীতের সবজি, ছবি: সুমন শেখ

বর্তমান বাজারে প্রতি কেজি গরুর মাংস ৫৫০ টাকা, খাসির মাংস ৭৫০ টাকা এবং খাসির মাংশ ৬৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তাছাড়া ফার্মের মুরগি কেজি প্রতি ১৩০ টাকা, সোনালী মুরগি ২৫০ টাকা, দেশি মুরগি ৪৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

মাংস বিক্রেতা মো. নুরনবী আক্ষেপ করে বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, বর্তমান বাজারে মাংসের চাহিদা কম। ফলে দাম আগের মতই আছে। বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরে মাংসের বেচাকেনা খুব একটা ভালো না। মানুষের চাহিদা বেড়েছে ইলিশের প্রতি। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে মাংস ব্যবসায়ীরা।

এদিকে কারওয়ান বাজারের মুদি দোকান ঘুরে দেখা যায়, চাল, ডাল, আটা, ময়দা, তেল, লবণসহ বেশিরভাগ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম স্থিতিশীল রয়েছে।

   

ইসলামী ব্যাংকের ১০ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড ঘোষণা



নিউজ ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি-এর পরিচালনা পর্ষদ ব্যাংকের শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ২০২৩ সালে ১০% ক্যাশ ডিভিডেন্ড সুপারিশ করেছে। ব্যাংকের ৪১তম বার্ষিক সাধারণ সভার অনুমোদন সাপেক্ষে এ ডিভিডেন্ড প্রদান করা হবে।

বুধবার (২৪ এপ্রিল) ব্যাংকের চেয়ারম্যান আহসানুল আলম-এর সভাপতিত্বে পরিচালনা পর্ষদের সভায় এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সভায় ভাইস চেয়ারম্যান তানভীর আহমেদসহ অন্যান্য পরিচালকবৃন্দ, ম্যানেজিং ডাইরেক্টর ও সিইও মুহাম্মদ মুনিরুল মওলা এবং অ্যাডিশনাল ম্যানেজিং ডাইরেক্টর ও কোম্পানি সেক্রেটারি জে কিউ এম হাবিবুল্লাহ, এফসিএস উপস্থিত ছিলেন।

আগামী ২৫ জুন ২০২৪, মঙ্গলবার ব্যাংকের ৪১তম বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠানের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। লভ্যাংশ প্রাপ্তি এবং সাধারণ সভায় যোগদানের ক্ষেত্রে রেকর্ড তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে ১৬ মে ২০২৪। এ ছাড়া সভায় অন্যান্য আলোচ্যসূচির সাথে ৩১ মার্চ শেষ হওয়া ২০২৪ সালের প্রথম প্রান্তিকের অনিরীক্ষিত আর্থিক বিবরণী অনুমোদন করা হয়।

;

টেন মিনিট স্কুলের কোর্স ফি বিকাশ পেমেন্টে ১৫% ক্যাশব্যাক



নিউজ ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বিকাশ অ্যাপ থেকে দেশের শীর্ষস্থানীয় অনলাইন শিক্ষামূলক প্ল্যাটফর্ম টেন মিনিট স্কুল-এর নির্দিষ্ট কোর্স নিয়ে পেমেন্ট করলেই গ্রাহকরা পাচ্ছেন ১৫% ইনস্ট্যান্ট ক্যাশব্যাক, সর্বোচ্চ ২০০ টাকা পর্যন্ত। বিকাশ অ্যাপের হোম স্ক্রিনের সাজেশনস সেকশন থেকে ‘টেন মিনিট স্কুল’ সিলেক্ট করে ৩০ জুন পর্যন্ত অফারটি গ্রহণ করা যাবে।

টেন মিনিট স্কুল-এর লাইভ কোর্স, স্পোকেন ইংলিশ, আইইএলটিএস, ফ্রিল্যান্সিং এর মতো ভাষা শিক্ষা ও স্কিল ডেভেলপমেন্ট কোর্স, ইংলিশ মাস্টার্স, কনটেন্ট ক্রিয়েশন, ডিজিটাল মার্কেটিং-এর মতো বান্ডেল কোর্স, বুয়েট, মেডিকেল, ভার্সিটির ভর্তি পরীক্ষার কোর্স, এসএসসি-এইচএসসি প্রস্তুতি ও অনলাইন ব্যাচের জন্য একাডেমিক কোর্স, চাকরির নিয়োগ পরীক্ষার প্রস্তুতি সহ নানা ধরনের কোর্স নিতে পারবেন বিকাশ গ্রাহকরা এই অফারের আওতায়।

অফারের সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যাবে https://www.bkash.com/campaign/10minuteschool-bkash-offer লিংকটিতে।

 

;

এক দিনের ব্যবধানে ফের কমল সোনার দাম



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

দেশের বাজারে সোনার দামের উত্থান-পতন অব্যাহত আছে। একদিনের ব্যবধানে সোনার দাম ভরিতে ২ হাজার ১০০ টাকা কমছে। তাতে ভালো মানের, অর্থাৎ হল-মার্ক করা ২২ ক্যারেট সোনার দাম দাঁড়িয়েছে প্রতি ভরি ১ লাখ ১৪ হাজার ১৯০ টাকায়। নতুন এ দাম আজ বুধবার থেকেই কার্যকর হবে।

বুধবার (২৪ এপ্রিল) বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানিয়েছে। এতে বলা হয়, স্থানীয় বাজারে খাঁটি সোনার দাম কমেছে, সে জন্য সোনার নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে।

নতুন দাম অনুযায়ী প্রতি ভরি (১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রাম) ২২ ক্যারেটের স্বর্ণের দাম পড়বে ১ লাখ ১৪ হাজার ১৯০ টাকা। এছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ৯ হাজার টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ৯৩ হাজার ৪২৯ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ৭৫ হাজার ২০৯ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

এর আগে, ২৩ এপ্রিল সোনার দাম ভরিতে ৩ হাজার ১৩৮ টাকা কমিয়ে ভালো মানের, অর্থাৎ হল-মার্ক করা ২২ ক্যারেট সোনার দাম নির্ধারণ করা হয় ১ লাখ ১৬ হাজার ২৯০ টাকা। এছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ১০ হাজার ৯৯৫ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ৯৫ হাজার ১৪৩ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি সোনার দাম ৭৬ হাজার ৫৮৬ টাকা নির্ধারণ করা হয়।

আর গত ২১ এপ্রিল ভরিতে ৬৩০ টাকা বাড়িয়ে ২২ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম ১ লাখ ১৯ হাজার ৪২৮ টাকা নির্ধারণ করেছিল বাজুস। এছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ১৪ হাজার ৪ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ৯৭ হাজার ৭০৯ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি সোনার দাম ৭৮ হাজার ৬৬২ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল। যা সেদিন বিকেল ৩টা ৩০ মিনিট থেকে কার্যকর হয়েছিল।

তার আগে, ২০ এপ্রিল সোনার দাম ক‌মিয়ে‌ছিল বাজুস। যা ওইদিনই কার্যকর হয়। ওই দাম অনুযায়ী রোববার বিকেল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি সোনার দাম ছিল ১ লাখ ১৮ হাজার ৭৯৮ টাকা, ২১ ক্যারেট সোনার দাম ১ লাখ ১৩ হাজার ৩৯৭ টাকা, ১৮ ক্যারেট ৯৭ হাজার ১৯৭ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি সোনার দাম ছিল ৭৮ হাজার ২৪২ টাকা।

;

জ্বালানি তেল পরিবহনের খোলনলচে বদলে দিচ্ছে ৩ মেগা প্রকল্প



সেরাজুল ইসলাম সিরাজ, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

তিন মেগা প্রকল্প বাংলাদেশের জ্বালানি তেল পরিবহনের খোলনলচে বদলে দিতে যাচ্ছে। মেগা প্রকল্প তিনটি হলো, এসপিএম (সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিং), বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া ফ্রেন্ডশিপ পাইপলাইন প্রকল্প এবং ঢাকা-চট্টগ্রাম পাইপলাইন প্রকল্প।

এর মধ্যে এসপিএম (সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিং) ও বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া ফ্রেন্ডশিপ পাইপলাইন ইতোমধ্যেই অপারেশনে এসেছে। আর ঢাকা-চট্টগ্রাম পাইপলাইন চলতি বছরেই শেষ হতে যাচ্ছে বলে জানিয়েছে মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র।

এখন ভোক্তার হাতে জ্বালানি তেল পৌঁছাতে বহুঘাট ঘুরতে হবে না। আবার বৃষ্টি-বাদল কিংবা হরতাল, ধর্মঘটেও জ্বালানি তেল সরবরাহ থাকবে নির্ভার। শুধু কী নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ নিশ্চয়তা, তাও নয়, এক এসপিএম বছরে সাশ্রয় করবে কমপক্ষে ১ হাজার কোটি টাকা! কমে যাবে জ্বালানি তেলের সিস্টেম লসও।

জ্বালানি তেল পরিবহনের খোলনলচে পাল্টে দিচ্ছে মেগা তিন প্রকল্প

এজন্য কক্সবাজারের মহেশখালীতে স্থাপন করা হয়েছে, এসপিএম উইথ ডাবল পাইপলাইন। এতদিন আমদানি করা জ্বালানি তেলের জাহাজ গভীর সমুদ্রে নোঙর করতো। সেখান থেকে লাইটার জাহাজে করে রিফাইনারি ট্যাংকে পৌঁছাতে সময় লাগত ১১, ১২ দিন। এসপিএম হওয়ায় সমপরিমাণ তেল পরিবহনে সময় লাগবে মাত্র ৪৮ ঘণ্টা। এতে করে মাদার ভেসেলের ওয়েটিং চার্জ এবং লাইটারেজ জাহাজের পরিবহন খরচ আর থাকছে না।

মহেশখালী দ্বীপের দক্ষিণ-পশ্চিমে গভীর সমুদ্রে স্থাপন করা হয়েছে, ভাসমান বয়া। সেই বয়া থেকে সাগরের তলদেশ দিয়ে ৩৬ ইঞ্চি ব্যাসের পৃথক দুটি পাইপলাইন পৌঁছে গেছে স্টোরেজ ট্যাংক টার্মিনালে। একটি ক্রড অয়েল সঞ্চালনের জন্য। আরেকটি দিয়ে সফলভাবে ডিজেল পরিবহন কার্যক্রম ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে।

গভীর সমুদ্রে বয়াতে এসে নোঙর করবে মাদার ভেসেল। সেখান থেকে পাাইপলাইনের মাধ্যমে কয়েক ঘণ্টায় তেল পৌঁছে যাবে চট্টগ্রামের জ্বালানি তেলের প্রধান স্থাপনায়।

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, জ্বালানি তেল ব্যবস্থাপনা সাশ্রয়ী ও টেকসই করতে এসপিএম (সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিং) কার্যকরী অবদান রাখবে। প্রকল্পটি চালু হলে বছরে ১ হাজার কোটি টাকা খরচ সাশ্রয় হবে।

তিনি বলেন, প্রকল্পের আওতায় ২শ ২০ কিলোমিটার পাইপলাইনে পাশাপাশি তৈরি করা হয়েছে ৬টি বিশালাকৃতির স্টোরেজ ট্যাঙ্ক; যার মাধ্যমে বাংলাদেশের তেল মজুত সক্ষমতা পৌঁছে গেছে নতুন এক উচ্চতায়।

এসপিএম প্রকল্পের পরিচালক শরীফ হাসনাত বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘বড় জাহাজ থেকে তেল খালাস করতে অন্তত ১১ দিন সময় লাগে। কখনো কখনো এই তেল খালাস করতে আরো সময় লেগে যায়। বিশেষ করে সমুদ্র উত্তাল হয়ে পড়লে তখন খালাস করা অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। জাহাজ মালিকদের সঙ্গে চুক্তির চেয়ে বেশি সময় লাগায় কখনো কখনো জরিমানা গুণতে হতো। এসপিএম প্রকল্প বাস্তবায়ন হওয়ায় ২৮ থেকে ৪৮ ঘণ্টায় ডিজেল ও ক্রুড অয়েল খালাস করা সম্ভব হবে। এতে একদিকে যেমন জাহাজ ভাড়া কমে আসবে, অন্যদিকে তেল পরিবহনে সিস্টেম লস ও নানান ধরনের চুরিও প্রতিরোধ সম্ভবপর হবে।

বাংলাদেশ জ্বালানি তেল উৎপাদন করে না। গ্যাস ফিল্ডগুলো থেকে প্রাপ্ত কনডেনসেট থেকে পেট্রোল এবং ৪০ শতাংশের মতো অকটেন জোগান আসে। বিপুল পরিমাণ ডিজেলসহ অন্যান্য পণ্য আমদানি করে জোগান দেওয়া হয়। বিপুল পরিমাণ জ্বালানি আমদানি করা হয়, নদীপথে। কিন্তু নদী বন্দরগুলোতে নাব্যতার অভাবে বড় বড় জাহাজ বন্দরে ভিড়তে পারে না। সে কারণে নির্ভর করতে হয় লাইটারেজ জাহাজের ওপর।

মেগা প্রকল্প বদলে দিচ্ছে জ্বালানি তেল পরিবহনের ব্যবস্থা

মাদারভেসেল থেকে লাইটার বা ছোট জাহাজে করে তেল আনা হয়, বিপিসি’র (বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন) ডিপোতে।

বিপিসি থেকে আবার জাহাজে করে তেল দেশের বিভিন্ন জায়গায় পৌঁছে দেওয়া হয়। ক্ষেত্র বিশেষে রেলের ওয়াগন এবং ট্যাংকলরিতে করেও তেল পৌঁছাতে নানান রকম ঝাক্কি-ঝামেলা পোহাতে হয়। বিষয়টি ছিল সময়সাপেক্ষ ও অনেক কিছুর ওপর নির্ভরশীল। সেখানেও পরিবর্তনের হাওয়া লাগতে শুরু করেছে।

অবশেষে, ঢাকা-চট্টগ্রাম তেলের পাইপলাইন করার কাজও প্রায় শেষ হয়ে এসেছে। ২০১৭ সালে প্রাক-সমীক্ষা শেষ হলেও নানা কারণে নির্ধারিত গতিতে চলতে পারেনি প্রকল্পটি।

বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) অর্থায়নে গৃহীত এই প্রকল্পের আওতায় ঢাকা-চট্টগ্রাম ২শ ৩৭ কিলোমিটার, কুমিল্লা থেকে চাঁদপুর পর্যন্ত ৫৯ কিলোমিটার, ফতুল্লা থেকে থেকে গোদনাইল ডিপো পর্যন্ত সাড়ে ৮ কিলোমিটার পাইপলাইন স্থাপন করা হবে। পাইপলাইনটি চালু হলে বছরে ৬৫ কোটি টাকা পরিবহন খরচ সাশ্রয় হবে বলে আশা করছে বিপিসি।

প্রকল্পের আওতায় ২শ ৩৭ কিলোমিটার পাইপলাইন নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। এখন চট্টগ্রাম ডেচপার্স টার্মিনাল ও নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় রিসিভিং পয়েন্টের ফিনিশিংয়ের কাজ চলছে। ডিসেম্বরের আগেই পাইপলাইনটি চালু করার বিষয়ে আশাবাদী জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগ।

অন্যদিকে, দেশের শস্যভাণ্ডার খ্যাত উত্তরাঞ্চলের জ্বালানি পরিবহন ব্যবস্থা ছিল খুবই জটিল ও বহুঘাট, হাত ঘুরে। লাইটারেজে করে তেল নেওয়া হতো। এছাড়াও ট্যাংকলরি, আরেকটি রুট হচ্ছে রেলওয়ের মাধ্যমে পৌঁছানো। এখন সেখানেও পরিবর্তন এনেছে, বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া ফ্রেন্ডশিপ পাইপলাইন।

দেশের উত্তরাঞ্চলের ১৬ জেলায় নিরবচ্ছিন্ন, দ্রুত ও সাশ্রয়ীভাবে জ্বালানি সরবরাহের জন্য ২০১৮ সালে ইন্ডিয়া-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ পাইপ লাইন নির্মাণ প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়। ৩ হাজার ৬শ ২৩ কোটি টাকা ব্যয়ে ১শ ৩১.৫০ কিলোমিটার পাইপ লাইন নির্মাণের সময়কাল ছিল ২০২৩ সালের জুন মাস পর্যন্ত। নির্ধারিত সময়ের আগেই পাইপলাইনটি চালু করা হয়েছে বলে জানা গেছে।

ভারতের নুমালীগড় থেকে বাংলাদেশের পার্বতীপুর ডিপো পর্যন্ত বিস্তৃত এই পাইপলাইনের কারণে উত্তরাঞ্চলের দৈনিক অতিরিক্ত ২৯ হাজার মেট্রিক টন জ্বালানি মজুত সক্ষমতা বৃদ্ধি হবে। সহজে বিদ্যুৎকেন্দ্রে জ্বালানি সরবরাহ করা, উত্তরাঞ্চলের ১৬টি জেলায় কম খরচে এবং দ্রুততম উপায়ে জ্বালানি তেল সরবরাহ করা সম্ভব হবে এই পাইপ লাইনের কারণে।

;