নিত্যপণ্যের বাজার মূল্য যেন পাগলা ঘোড়া!

  • নাজমুল হাসান সাগর, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

নিত্যপণ্যের বাজার মূল্য যেন পাগলা ঘোড়া ছুটছে তো ছুটছেই!

নিত্যপণ্যের বাজার মূল্য যেন পাগলা ঘোড়া ছুটছে তো ছুটছেই!

কয়েক সপ্তাহ ধরে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য ও কাঁচাবাজারে পণ্যের মূল্য ঊর্ধ্বগতি। পেঁয়াজ থেকে শুরু করে চাল, সবজি কিংবা মাংসসহ সব পণ্যের মূল্য যেন মরুভূমি পাড়ি দেওয়া পাগলা ঘোড়ার মতো ছুটে চলেছে অবিরাম। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নতুন সড়ক পরিবহন আইনের কারণে চলা ধর্মঘটে ‘বাজার দর’ কোথায় গিয়ে ঠেকাবে কেউ বলতে পারে না।

বুধবার (২০ নভেম্বর) সকালে বাজার করতে এসে রাজধানীর রায়েরবাজার কাঁচাবাজারে এক ক্রেতা ক্ষোভ নিয়ে বলছিলেন, কাঁচামরিচ ১২০ টাকা কেজি, ৪০ টাকা আঁটি লাউ শাক কিনে খেতে হচ্ছে। শসা ও গাজর এর মতো অপশনাল সবজিগুলো ক্রেতাদের নাগালের বাইরে। কি শুরু হয়েছে বাজারে! এতো দেখছি পাগলা ঘোড়া। ছুটছে তো ছুটছেই।

বিজ্ঞাপন

নানা পদক্ষেপ গ্রহণের পর বাজারে কিছুটা কমেছে পেঁয়াজের দাম। রাজধানীর কারওয়ান বাজারে পেঁয়াজের পাইকারি দর ১২০ টাকা কেজি কিন্তু খুচরা বাজারে দামের পার্থক্য সর্বোচ্চ ৫০ থেকে ৬০ টাকা। আবার  জিগাতলা ও রায়ের বাজার কাঁচাবাজারে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১৫০ এবং এলসি মিশরের পেঁয়াজ ১৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। মহল্লা বা গলির দোকানগুলোতে লবণ ভিন্ন ভিন্ন দামে বিক্রি হলেও বাজারের মুদি দোকানগুলোতে লবণ প্যাকেটের গায়ের মূল্যেই বিক্রি করা হচ্ছে। আটাশ চাল বিক্রি হচ্ছে ৩৮ থেকে ৪০ টাকা, নাজিরশাইল ৫৫-৬০ টাকা এবং মিনিকেট চাল বিক্রি হচ্ছে ৪৩ থেকে ৪৫ টাকা কেজি দরে।

লাগামহীন শীতকালীন সবজির দাম

রাজধানীর বেশ কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা যায়, আস্ত বড় একটি মিষ্টি কুমড়া বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা আর কাটা এক পিচ বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকা।

বিজ্ঞাপন

লাউ এক পিচ ৪৫ টাকা, ফুল কপি-৫০ টাকা,বাঁধাকপি ৩৫ টাকা ,লতি-৫০ টাকা কেজি, নতুন আলু ৮০ টাকা কেজি, মুলা ৫০ টাকা, গাজর ৬০, করল্লা ৮০, ঢেরষ ৬০, শিম ৬০, পটল ৬০,কাঁচা মরিচ ১৪০, পেপে ২০, শশা ৮০, বেগুন ৭০, ঝিঙ্গা ৭০, বরবটি ৮০, ধনিয়া পাতা ১২০, চিচিঙ্গা ৬০, পাতাসহ নতুন পেঁয়াজ ৮০ এবং টমেটো ১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

বিদেশি রসুন ১৫০ টাকা, দেশি ১৮০ এবং এক দানা ২৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে ও আলু বিক্রি হচ্ছে ২৫ টাকা কেজি দরে। সবজির বাজার নিত্য পরিবর্তন হচ্ছে এবং চরম মাত্রায় অস্থিতিশীল।

মাছের বাজার ঘুরে দেখা যায়, রুই মাছ বিক্রি হচ্ছে সাইজভেদে ২৮০ থেকে ৩০০ টাকা কেজি, কাতলা সাইজ ভেদে ২৮০-৩৫০ টাকা কেজি, শোল মাছ প্রতি পিচ সাইজভেদে ৩৫০ থেকে ৫০০ টাকা, শিং মাছ প্রতি কেজি ৪০০ টাকা, চিংড়ি সাইজভেদে প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪৫০ থেকে ৬৫০ টাকা কেজি, পুটি মাছ ১৫০-২০০ টাকা কেজি, টেংড়া প্রতি কেজি ৫৫০-৬০০ টাকা এবং ইলিশ মাছ বড় সাইজ বিক্রি হচ্ছে ৮০০ টাকা কেজি দরে। ক্রেতা ও বিক্রেতারা বলছেন মাছের বাজার কিছুটা স্থিতিশীল।

স্বস্তি কিছুটা মাছের বাজারে

বাজারগুলোতে কেজি প্রতি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৫৫০ টাকা, খাসির মাংস ৮০০ এবং বকরি ছাগলের মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ টাকা কেজি দরে।

মুরগী: ব্রয়লার বিক্রি হচ্ছে ১৩৫ টাকা কেজি, লেয়ার ২০০, দেশি ৪০০, পাকিস্তানি মুরগী বিক্রি হচ্ছে ২৭০ টাকা কেজি দরে।

বাজারে প্রতি হালি ডিম বিক্রি হচ্ছে ৩৮ টাকা দরে।

কাঁচামালের খুচরা ব্যবসায়ী ও আড়তদাররা বলছেন, আগামী সপ্তাহে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম আরো বাড়তে পারে। বিশেষ করে সবজি ও অন্যান্য কাঁচামালের দাম বাড়বে। আসন্ন পরিবহন শ্রমিকদের ধর্মঘট মাথায় রেখে তারা এমন আগাম মন্তব্য করছেন।