পাইকারি বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির গণশুনানি শুরু
বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড পাইকারি বিদ্যুতের দাম ইউনিট প্রতি বর্তমান দর ৪.৭৭ টাকা থেকে ১.১১ টাকা বাড়িয়ে ৫.৮৮ করার প্রস্তাব করেছে। অন্যদিকে কারিগরি মূল্যায়ন কমিটি ৯৩ পয়সার সুপারিশ দিয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) বিইআরসিতে (বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন) শুরু হয়েছে পাইকারি বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির ওপর গণশুনানি। বিইআরসির চেয়ারম্যান মনোয়ার ইসলাম এবং কমিশনের অপর চার সদস্য রহমান মুর্শেদ মিজানুর রহমান, মাহমুদউল হক ভুঁইয়া ও আব্দুল আজিজ খান শুনানি করছেন। এ শুনানিতে এসব সুপারিশ করা হয়।
দিনের প্রথম ধাপে রয়েছে পাইকারি দর বৃদ্ধির প্রস্তাবের ওপর শুনানি। বিকেলে হবে সঞ্চালন খরচের প্রস্তাবের ওপর গণশুনানি।
শুক্র ও শনি সাপ্তাহিক ছুটির পর রোববার (১ ডিসেম্বর) থেকে টানা তিন দিন চলবে গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির প্রস্তাবের ওপর গণশুনানি। এসব শুনানিতে অংশ নিয়ে যে কারো মতামত কিংবা আপত্তি দেওয়ার সুযোগ রয়েছে। এ ক্ষেত্রে সকালে হাজির হয়ে নাম লিপিবদ্ধ করা যায়।
বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি) প্রস্তাবে উল্লেখ করেছে, এলএনজি আমদানির কারণে গ্যাস দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যয় ৪১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এ খাতে মোট ব্যয় বাড়বে ২ হাজার কোটি টাকা। এছাড়া কয়লার ওপর ভ্যাট আরোপ করায় কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুতের ব্যয়ও বেড়ে যাবে। সব মিলিয়ে আসছে ২০২০ সালে বর্তমান দর অনুযায়ী পাইকারি বিদ্যুৎ বিক্রি করলে ৯ হাজার ৫৫২ কোটি টাকা লোকসান হবে। যে কারণে বিদ্যুতের পাইকারি দর ৫.৮৮ টাকা করা প্রয়োজন।
প্রস্তাবে উল্লেখ করা হয়েছে, পাইকারি বিদ্যুতের দর ২০১৭ সালের নভেম্বর ৮ পয়সা কমিয়ে ৪.৮৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়। তখন গড় ব্যয় ছিল ৫ টাকা ৪৪ পয়সার মতো। বিইআরসি ৬০ পয়সা হারে ভর্তুকি দেওয়ার আদেশ দিয়েছিল। নতুন প্রস্তাবে ভর্তুকির বিষয়ে কিছুই বলা হয়নি। সরকারি পুরো টাকা তুলে নেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। বিগত বছরগুলোতে এমন প্রস্তাবের পাশাপাশি বিকল্প সংস্থান হিসেবে ভর্তুতির প্রস্তাব রাখা হতো।
বিপিডিবি তার প্রস্তাবে আরও উল্লেখ করেছে, বিতরণ কোম্পানিগুলোর গড় রেট বিবেচনা করে দেখা গেছে, ডিপিডিসি ইউনিট প্রতি ৭.৬৭ টাকা, ডেসকো ৭.৮০ টাকা, বিপিডিবি ৬.৯৪ টাকা, ওজোপাডিকো ৬.৮৯ টাকা, পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড ৬.৩৪ টাকা ও নেসকো ৬.৬০ টাকা হারে দর আদায় করছে। এ বিষয়গুলো বিবেচনায় নেওয়া প্রয়োজন।
ডেসকো ৫.০৬ শতাংশ হারে দাম বৃদ্ধির প্রস্তাব করেছে। অন্যদিকে ডিপিডিসি প্রস্তাবে বলেছে, ২০১৯-২০ অর্থবছরে নিট রাজস্ব প্রয়োজন ১৪৮ কোটি টাকা। অপরেশন অ্যান্ড ব্যবস্থাপনা খরচ ৮০ পয়সা থেকে বাড়িয়ে এ টাকা সমন্বয় করা প্রয়োজন। নতুন করে সঞ্চালন ও পাইকারি দাম বাড়ানো হলে সমন্বয় করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
সবচেয়ে বড় বিতরণ সংস্থা পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড তাদের প্রস্তাবে বলেছে, বিগত অর্থ বছরে ব্রেক-ইভেন ছিল। চলতি অর্থ বছরেও ব্রেক-ইভেন থাকবে। নতুন করে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর প্রয়োজন নেই। তবে পাইকারি বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হলে দাম সমন্বয় প্রয়োজন পড়বে।