চার মাসে রাজস্ব ঘাটতি ২০ হাজার কোটি টাকা
চলতি অর্থবছরের (২০১৮-১৯) প্রথম চার মাসে (জুলাই-অক্টোবর) সরকারের রাজস্ব আহরণ হয়েছে ৬৫ হাজার ৯৬ কোটি টাকা। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২০ হাজার কোটি টাকা কম। তবে তা গেল বছরের তুলনায় সাড়ে ৪ শতাংশ বেশি বলে জানিয়েছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া।
রোববার (৮ ডিসেম্বর) জাতীয় ভ্যাট দিবস ও ভ্যাট সপ্তাহ-২০১৯ উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা জানান।
এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, ‘গত বছর একই সময়ে রাজস্ব আহরণ হয়েছিল ৬২ হাজার কোটি টাকা। অক্টোবর মাস পর্যন্ত কাস্টমসের প্রবৃদ্ধি ৪ শতাংশ, ভ্যাটের ৮ দশমিক ৬৬ শতাংশ, আয়করের প্রবৃদ্ধি ১১ দশদিক ৪৬ শতাংশ। প্রত্যাশা ভ্যাট থেকে আদায় ১০ শতাংশের বেশি হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বর্তমানে বাংলাদেশে খাদ্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ। বর্তমানে পেঁয়াজের যে সংকট চলছে আগামী বছর থেকে চাষিরা পেঁয়াজ উৎপাদন করে ভাসিয়ে দিতে পারবে। আর কোনো সংকট তৈরি হবে না।’
মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া বলেন, ‘২০১৮-১৯ অর্থবছরে ২ লাখ ২০ হাজার ৩১৩ কোটি টাকা রাজস্ব আহরণ হয়েছে। তার মধ্যে ভ্যাট থেকে রাজস্ব এসেছে ৭৮ হাজার ৬৯৪ কোটি টাকা। যা মোট রাজস্বের ৩৯ ভাগ। ২০১৯-২০ অর্থবছরে রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা ৩ লাখ ২৫ হাজার ৬০০ কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এরমধ্যে ভ্যাট আহরণের লক্ষ্যমাত্রা ১ লাখ ১৭ হাজার ৬৭২ কোটি টাকা। যা মোট রাজস্বের ৩৬ ভাগ।’
বছর শেষে এই লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সক্ষম হবে বলে আশা ব্যক্ত করেছেন তিনি।
এক প্রশ্নের জবাবে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, ‘প্রতিবছরই আমরা ব্যবসায়ীদের প্রচুর পরিমাণে সহযোগিতা দিয়ে আসছি। বিশ্বের কোনো দেশে কাস্টমস থেকে আহরিত শুল্কের পরিমাণ এত বেশি নয়। বাংলাদেশে মোট রাজস্বের ২৮ শতাংশ আসে কাস্টমস থেকে। যাতে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা লাভবান হতে পারে। কিন্তু এর পরও যখন আমাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলা হয়, তখন আমাদের দুঃখ প্রকাশ করা ছাড়া কোনো উপায় থাকে না।’
ইলেকট্রনিক্স ফিস্ক্যাল ডিভাইস সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘এই অর্থবছরের মধ্যে ৫০ শতাংশ ইএফডি মেশিন সরবরাহ করা সম্ভব হবে। কারণ এই মেশিন আমদানি করতে অনেকগুলো আন্তর্জাতিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হয়। প্রাথমিক পর্যায়ে কিছুটা সময় লাগলেও ঘোষিত সকল পর্যায়ে পৌঁছানো সম্ভব।’
চেয়ারম্যান বলেন, ‘বর্তমানে ৪৬ লাখ টিআইএনধারী রয়েছে। তাদের মধ্যে রিটার্ন দাখিল করেছে ২২ লাখ। যারা এখনো রিটার্ন দাখিল করেননি তাদের করাঞ্চলের কর্মকর্তারা ফোন করবে। আগামী জানুয়ারি থেকে রিটার্ন দাখিল না করা প্রত্যেক টিআইএনধারীকে ফোন দেবে। তাদের রিটার্ন দাখিল করতে বলবে। আর যারা আয়কর দেওয়ার যোগ্য তাদের করসহ রিটার্ন দাখিলে বাধ্য করা হবে।’
‘ভ্যাট দিচ্ছে জনগণ, দেশের হচ্ছে উন্নয়ন’ এ স্লোগানে এবারও ১০ ডিসেম্বর জাতীয় ভ্যাট দিবস ও ১০-১৫ ডিসেম্বর জাতীয় ভ্যাট সপ্তাহ-২০১৯ উদযাপন করা হবে।