নারীদের আকর্ষণ সাজ-সজ্জা ও গৃহস্থালি পণ্যে



মিলিতা বাড়ৈ মুন্নি, নিউজরুম এডিটর, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
বাণিজ্য মেলায় নারীদের ভিড়/ ছবি: বার্তা২৪.কম

বাণিজ্য মেলায় নারীদের ভিড়/ ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

শেষ মুহূর্তে জমে উঠেছে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা। তবে মেলায় নারী ক্রেতাদের সংখ্যা তুলনামূলকভাবে বেশি। বিশেষ করে বিভিন্ন গৃহস্থালি পণ্য, কসমেটিকস, পোশাক, ব্যাগসহ বিস্কুটের দোকানগুলোতে নারীদের উপচে পড়া ভিড় দেখা গেছে।

মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত মেলা প্রাঙ্গণ ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, মেলায় পছন্দের জিনিস কিনতে পরিবার-পরিজন নিয়ে এসেছেন অনেকেই। কেউ কেউ আবার বন্ধুদের সঙ্গে নিয়ে এসেছেন। তবে মেলায় আগত দর্শনার্থীদের মধ্যে প্রায় এক-তৃতীয়াংশই নারী। তারা বিভিন্ন প্যাভিলিয়ন ঘুরে ঘুরে পণ্য দেখছেন, দরদাম করছেন এবং সাধ্যের মধ্যে ক্রয় করছেন। তবে সবচেয়ে বেশি কিনচ্ছেন গৃহস্থালি এবং সাজ-সজ্জার জিনিস।

গৃহস্থালির পণ্য কিনছেন নারীরা/ ছবি: বার্তা২৪.কম

মেলায় কথা হয় সানজিদা শারমিন (৪০) নামে এক নারী ক্রেতার সঙ্গে। তিনি কেরানীগঞ্জ থেকে এসেছেন। তিনি বলেন, বাসা থেকে খুব বেশি বাইরে বের হওয়া হয় না। ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায় সব কিছু এক সঙ্গে পাওয়া যায়। তাই মেলায় পছন্দের কিছু জিনিস কেনাকাটা করতে এসেছি। মেসার্স আলফিন এন্টারপ্রাইজ থেকে একটি ব্লেন্ডার কিনেছি। দাম মোটামুটি। আরও কিছু গৃহস্থালি পণ্য কিনব।

উত্তরা ৭ নাম্বার সেক্টর থেকে মেলায় কেনাকাটা করতে এসেছেন মুক্তি আক্তার (৩২)। তিনি জানান, নন্দি এক্সপোর্ট ওঁম টেক্সটাইলের একটি বিছানার চাদর ও কুশন পছন্দ হয়েছে। কিন্তু দাম একটু বেশি।

মিরপুরের বাসিন্দা তানিয়া (২৫) বলেন, মেয়ের জন্য একটি খেলনা কিনেছি। দাম খুব বেশি না। মেলার পরিবেশ ভালো। মেলায় ঘুরে ভালো লাগছে। প্রতিবছরই আমি মেলায় আসি।

পোশাক কিনছেন নারীরা/ ছবি: বার্তা২৪.কম

মিরপুরের পীরেরবাগ এলাকার কলেজছাত্রী শারমিন (১৮) বলেন, মায়ের সঙ্গে মেলায় এসেছি। একটি লিপস্টিক কিনেছি। কিছু জুয়েলারি কেনার ইচ্ছা আছে। তাই ঘুরে ঘুরে দেখছি।

কিয়াম মেটাল ইন্ডাস্ট্রিজের বিল ইনচার্জ মো. আজাদ জানান, মেলা প্রথম দিকে জমে না উঠলেও শেষের দিকে বিক্রি বেড়েছে। তবে গত সপ্তাহের তুলনায় মঙ্গলবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত বিক্রি একটু কম। সন্ধ্যার পরে বিক্রি বাড়তে পারে।

১ জানুয়ারি শুরু হয় ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা। মেলার মেয়াদ আগামী ৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। তবে ৩১ জানুয়ারি ও ১ ফেব্রুয়ারি মেলা বন্ধ থাকবে।

   

পিকে হালদারের লুটপাটের শিকার এফএএস ফাইন্যান্স, লোকসান ২০৩ কোটি



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা ২৪.কম, ঢাকা 
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

আলোচিত প্রশান্ত কুমার (পিকে) হালদারের লুটপাটের শিকার এফএএস ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড এখনো ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি। চলতি হিসাব বছরের তিন প্রান্তিকে (জানুয়ারি-সেপ্টেম্বর, ২০২৩) আর্থিক প্রতিষ্ঠানটির লোকসান ২০০ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

সূত্র মতে, হিসাব বছরের তিন প্রান্তিকে এফএএস ফাইন্যান্সের শেয়ার প্রতি লোকসান হয়েছে ১৩ টাকা ৬৩ পয়সা। এ হিসেবে নয় মাসে কোম্পানিটির মোট লোকসানের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২০৩ কোটি ১৯ লাখ ২৪ হাজার টাকা। গত বছরের একই সময়ে প্রতিষ্ঠানটির শেয়ার প্রতি লোকসান ছিল ১৭ টাকা ৭৯ পয়সা। এফএএস ফাইন্যান্স জানিয়েছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের শর্ত অনুযায়ী প্রভিশন সংরক্ষণ করতে গিয়ে প্রতিষ্ঠানটির লোকসান বড় হয়েছে।

সমন্বিতভাবে এফএএস ফাইন্যান্সের সম্পদ মূল্য ঋণাত্মক (নেগেটিভ) রয়েছে। সেপ্টেম্বর শেষে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) ছিল ঋণাত্মক ৯৯ টাকা ৭৫ পয়সা।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের তথ্য বলছে, এফএএস ফাইন্যান্সের লোকসান শুরু হয় ২০১৯ সালে। ওই বছর কোম্পানিটি ১৫০ কোটি ৮৫ লাখ টাকা লোকসান দেয়। এরপর থেকে বাড়তে থাকে প্রতিষ্ঠানটির লোকসান। ২০২০ সালে কোম্পানিটির লোকসান বেড়ে দাঁড়ায় ২১৭ কোটি ৮০ লাখ টাকা। ২০২১ সালেও ব্যাংক বহির্ভূত এই আর্থিক প্রতিষ্ঠানটির লোকসান ছিল ২৯৭ কোটি ১৯ লাখ টাকা। আর ২০২২ সালে নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী এফএএস ফাইন্যান্সের লোকসান ছিল ৭১৩ কোটি ১৮ লাখ ৬১ হাজার টাকা।

এফএএস ফাইন্যান্স দেশের পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয় ২০০৮ সালে। তালিকাভুক্তির পর গত ১৪ বছরের মধ্যে শেয়ারহোল্ডারদের নগদ লভ্যাংশ দেয়নি। তবে তালিকাভুক্তির পর ২০১৩ ও ২০১৪ সাল ছাড়া ২০১৮ সাল পর্যন্ত বোনাস লভ্যাংশ দিয়েছিল। আর ২০১৯ সালে লোকসান শুরু হওয়ায় গত চার বছরে শেয়ারহোল্ডারদের কোনো লভ্যাংশ দেয়নি এফএএস ফাইন্যান্স।

তথ্য বলছে, গত ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত এফএএস ফাইন্যান্সের ১৩ দশমিক ২০ শতাংশ শেয়ার প্রতিষ্ঠানটির উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের হাতে ছিল। এই সময়ে সাধারণ শেয়ারহোল্ডারদের কাছে ছিল ৭৭ দশমিক ৭৮ শতাংশ শেয়ার। আর বাকি ৯ দশমিক ০২ শতাংশ শেয়ার প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা ধারণ করছে।

;

দ্বাদশ নির্বাচন: ঋণ খেলাপি প্রার্থীদের তথ্য চায় বাংলাদেশ ব্যাংক



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা ২৪.কম, ঢাকা 
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে এমন প্রার্থীদের ব্যাংক ঋণের হালনাগাদ তথ্য চেয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আইন অনুযায়ী, কোনো ঋণ খেলাপি গ্রাহকের পক্ষে নির্বাচনে অংশগ্রহণ সম্ভব নয়।

বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ এ সংক্রান্ত একটি সার্কুলার জারি করে। সার্কুলারটি দেশে কার্যরত সব ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠানো হয়েছে।

জানা গেছে, গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ ১৯৭২–এর ১২ অনুচ্ছেদের বিধান অনুযায়ী কোনো ঋণখেলাপি ব্যক্তি জাতীয় সংসদের সদস্য হওয়ার যোগ্য হন না। ফলে খেলাপি হলে কেউ প্রার্থী হতে পারেন না। আগে নিয়ম ছিল মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সাতদিন আগে খেলাপি ঋণ পুনঃ তফসিল করে নিয়মিত করতে হবে। ব্যাংকঋণ পরিশোধ সংক্রান্ত বিধান ২০১৮ সালের নির্বাচনের আগে সংশোধন করা হয়। আর বিলখেলাপি–সংক্রান্ত বিধান সংশোধন করা হয় চলতি বছরের জুলাইয়ে। নতুন আইনে মনোনয়নপত্র জমার এক দিন আগে খেলাপি ঋণ পরিশোধ করলেই নির্বাচনে অংশ নেওয়া যায়।

নানা ধরনের ছাড় দেওয়ার কারণে ঋণ খেলাপিদের নির্বাচনে অংশ নেওয়া সহজ হয়ে গেছে। এখন আর ভোটে দাঁড়াতে আগের মতো ১০ শতাংশ নগদ অর্থ জমা দিয়ে ঋণ পুনঃতফসিল করতে হচ্ছে না। এর চেয়ে অনেক কম অর্থ জমা দিলেই হয়। তাছাড়া আগের মতো ঋণ পুনঃতফসিলের প্রস্তাবও কেন্দ্রীয় ব্যাংকে পাঠানোর দরকার পড়ে না। ফলে ব্যাংকগুলো যে যার মতো করে খেলাপি ঋণ পুনঃতফসিল করে দিচ্ছে।

বর্তমান নির্বাচন কমিশন (ইসি) ঋণ খেলাপিদের আরও ছাড় দিতে চেয়েছিল। ঋণ খেলাপিদের জন্য নির্বাচনের পথ সহজ করতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ঋণ তথ্য ব্যুরো (সিআইবি) ছাড়পত্রের বাধ্যবাধকতা তুলে দিতে চেয়েছিল ইসি। তারা চেয়েছিল খেলাপি ঋণ আদায়ে কেবল মামলা থাকলেই নির্বাচনে অযোগ্য হবেন। এ জন্য সিআইবির ছাড়পত্র লাগবে না। তাই গত বছরের জুলাই মাসে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে ইসি বৈঠক করে। কিন্তু ব্যাংকগুলোর অসম্মতিতে নির্বাচন কমিশনের সেই চেষ্টা সফল হয়নি।

২০১৮ সালে ব্যাংকঋণ পরিশোধ সংক্রান্ত বিধান, আর এ বছর বিলখেলাপি–সংক্রান্ত বিধান সংশোধন করায় এমন সুযোগ তৈরি হয়েছে।

মহামারি করোনা ভাইরাসের কারণে দুই বছরের বেশি সময় ঋণ পরিশোধে ছাড় দিয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। তখন ঋণ শোধ বা কিস্তি না দিলেও কেউ খেলাপি হননি। এরপর গত বছরের জুলাইয়ে খেলাপি ঋণ পুনঃ তফসিলের নীতিমালা সংশোধন করে ছাড় দেওয়া হয়। যার ফলে এখন ব্যাংক নিজেই খেলাপি ঋণ নিয়মিত করতে পারছে। পাশাপাশি খেলাপি ঋণ নিয়মিত করতে এখন জমা দিতে হচ্ছে বকেয়ার আড়াই থেকে সর্বোচ্চ সাড়ে ৬ শতাংশ অর্থ। আগে যা ছিল ১০ থেকে ৩০ শতাংশ।

;

পাঁচ মাসে রিজার্ভ কমল ৬ বিলিয়ন ডলার



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা ২৪.কম, ঢাকা 
পাঁচ মাসে রিজার্ভ কমল ৬ বিলিয়ন ডলার

পাঁচ মাসে রিজার্ভ কমল ৬ বিলিয়ন ডলার

  • Font increase
  • Font Decrease

দীর্ঘদিন ধরেই দেশে চলছে ডলার সংকট। এ সংকট কাটাতে অব্যাহত ডলার বিক্রি, আকুসহ বিভিন্ন বিল পরিশোধে ক্রমেই কমছে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ। চলতি ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে (জুলাই-নভেম্বর) রিজার্ভ কমেছে ৬ বিলিয়ন ডলারের বেশি। এতে বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবে গ্রস রিজার্ভ নেমে এসেছে ২৫ বিলিয়নে। আর বিপিএম-৬ অনুযায়ী রিজার্ভ গণনা করলে তা আরও কমে ২০ বিলিয়নের নিচে নেমে যাবে।

বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হিসেবে চলতি অর্থবছরের শুরুতে দেশের বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ৩১ দশমিক ২০ বিলিয়ন ডলার। বৃহস্পতিবার (৩০ নভেম্বর) তা কমে দাঁড়িয়েছে ২৫ দশমিক শূন্য ২ বিলিয়ন ডলারে। অর্থাৎ পাঁচ মাসের ব্যবধানে রিজার্ভ কমেছে ৬ দশমিক ১৮ বিলিয়ন ডলার। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলে (আইএমএফ) শর্ত পরিপালন করে রিজার্ভ বিপিএম-৬ অনুযায়ী হিসাব করলে বর্তমানে গ্রস রিজার্ভ দাঁড়ায় ১৯ দশকি ৪০ বিলিয়ন ডলার। তবে ব্যবহারযোগ্য রিজার্ভ হবে ১৬ বিলিয়ন ডলারের চেয়েও কম।

খাতসংশ্লিষ্টরা বলছেন, ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে সৃষ্ট ডলার সংকট ঠেকাতে একের পর এক পদক্ষেপ নিচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। কিন্তু কোনোভাবেই সংকট সামাল দেওয়া যাচ্ছে না। টাকার অবমূল্যায়ন ঠেকানোর পাশাপাশি জরুরি প্রয়োজন মেটাতে প্রতিনিয়তই দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি করতে হচ্ছে। এজন্য কমে যাচ্ছে রিজার্ভ। তবে নির্বাচনের পর রাজনৈতিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে বিদেশি ঋণের প্রবাহ বাড়বে। এতে রিজার্ভের পতন থামবে বলেও মনে করছেন তারা।

তথ্য বলছে, বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর কাছে ডলার-সংকট থাকায় জ্বালানি ও নিত্যপণ্য আমদানি স্বাভাবিক রাখার লক্ষ্যে বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এতে রিজার্ভের ওপর চাপ বাড়ছে। ২০২২-২৩ অর্থবছরে রিজার্ভ থেকে ১৩ দশমিক ৫৮ বিলিয়ন বা ১ হাজার ৩৫৮ কোটি ডলার বিক্রি করেছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। আর চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের ৫ মাসে রিজার্ভ থেকে প্রায় ৬ বিলিয়ন ডলারের বেশি ডলার বিক্রি করা হয়েছে। এতে ৬ মাসে রিজার্ভ কমেছে ৬ বিলিয়নের বেশি। অর্থাৎ প্রতিমাসে গড়ে রিজার্ভ থেকে কমছে ১ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার।

গত অর্থবছরের শুরুর দিকে দেশে ডলারের সংকট দেখা দিলে আমদানিতে কড়াকড়ি শর্ত আরোপ করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ সময় নিত্যপণ্য বাদে বিলাসী পণ্য আমদানিতে শতভাগ মার্জিন দেওয়া হয়। এতে এলসি নিষ্পত্তি ও পরিশোধ কমে যায়। গত জুনে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার গণমাধ্যমকে জানান, ২০২৩-২৪ অর্থবছর থেকে কোনো ব্যাংকের কাছে সস্তায় কিংবা স্বাভাবিক দামেও ডলার বিক্রি করা হবে না। কিন্তু গতকাল পর্যন্ত স্বাভাবিক দামেই কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রায় ৬ বিলিয়ন ডলারের বেশি বিক্রি করেছে। যেই ডলারের দাম বাজার দরের চেয়ে অনেক কম ছিল।

তবে আশার দিক হচ্ছে, সেপ্টেম্বরে বড় বিপর্যয়ের পর অক্টোবরে দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহ ঘুরে দাঁড়িয়েছে। গত মাসে দেশে রেমিট্যান্স এসেছে ১৯৭ কোটি ৭৫ লাখ ডলার। গত বছরের অক্টোবরে ১৫২ কোটি ৫৫ লাখ ডলার রেমিট্যান্স দেশে এসেছিল। সে হিসাবে গত মাসে রেমিট্যান্সে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২৯ দশমিক ৬৩ শতাংশ। আর চলতি মাসের প্রথম ২৪ দিনে ১৪৯ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স এসেছে।

এর আগে চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে দেশে রেমিট্যান্স প্রবাহে বড় বিপর্যয় হয়েছিল। সেপ্টেম্বরে দেশে রেমিট্যান্স এসেছিল মাত্র ১৩৩ কোটি ডলার, যা ছিল ৪১ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন। ডলারের বিনিময় হার নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নমনীয় অবস্থানের কারণেই রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়েছে।

অপরদিকে, চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসের মধ্যে গত অক্টোবরেই সবচেয়ে কম এসেছে রপ্তানি আয়। গত অক্টোবরে গত বছরের একই মাসের চেয়ে রপ্তানি কমেছে ১৩ দশমিক ৬৪ শতাংশ। গত মাসে ৩৭৬ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে। গত বছরের একই মাসের চেয়ে যা ৬০ কোটি ডলার কম। গত বছরের অক্টোবরে ৪৩৬ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়। চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে বাণিজ্য ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ১৮২ কোটি ডলার।

;

৬৩.৭৮ শতাংশ অভিযোগেই বিদ্যুৎ বিভ্রাট নিয়ে



স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

বিদ্যুতের সংযোগ পেতে ঘুষ প্রদান, বিল দেওয়ার পরও পরবর্তী মাসের বিলে আবার তুলে দেওয়া, অতিরিক্ত বিল এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আচরণ নিয়ে অসন্তুষ্টির কথা উঠে এসেছে সমীক্ষা রিপোর্টে।

বৃহস্পতিবার (৩০ নভেম্বর) বিদ্যুৎ ভবনে গ্রাহক সন্তুষ্টি জরিপের রিপোর্টে এসব তথ্য উঠে আসে। ৬টি বিতরণ কোম্পানির ১৫ হাজার ২৪৫ গ্রাহকের উপর সার্ভে পরিচালনা করা হয়। এর মধ্যে আবাসিক ৯০.৯৩ শতাংশ, শিল্প দশমিক ৮৯ শতাংশ, বাণিজ্যিক ৮ শতাংশ এবং সেচ দশমিক ১৮ শতাংশ।

সার্ভেতে অংশ নেওয়া গ্রাহকদের মধ্যে ৫২.০১ শতাংশ প্রিপেইড মিটার ব্যবহারকারী। তাদের কাছ থেকে কিছু কমন প্রশ্নের উত্তর নেওয়া হয়। এতে গ্রাহকরা নানা রকম হয়রানির কথা জানিয়েছেন। পাওয়ার সেল এর তত্ত্বাবধানে তত্ত্বাবধানে মাধ্যমে এই সমীক্ষা পরিচালনা করা হয়।

বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ সাপেক্ষে বছরান্তে প্রত্যায়ন প্রদান করার নিয়ম রয়েছে। কিন্তু ৫১.৭৬ শতাংশ গ্রাহককে এই প্রত্যায়ন দেওয়া হয় নি। বিতরণ সংস্থা ভেদে তারতম্য রয়েছে, ওজোপাডিকোতে সবচেয়ে বেশি গাফিলতি পাওয়া গেছে। খুলনা ও বরিশাল অঞ্চলের বিতরণের দায়িত্বে থাকা কোম্পানিটির ৯৫.১ শতাংশ গ্রাহক প্রত্যায়ন না পাওয়ার তথ্য জানিয়েছে। অন্যদিকে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের গ্রাহকরা ৯৩ শতাংশ এই সেবা থেকে বঞ্চিত। এই সেবায় এগিয়ে রয়েছে ঢাকা ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানি। ঢাকার উত্তরাংশে বিতরণের দায়িত্বে থাকা কোম্পানিটির ১৯.৬ শতাংশ গ্রাহক না পাওয়ার কথা জানিয়েছেন সমীক্ষায়।

বিদ্যুৎ খাতের গ্রাহকদের সবচেয়ে বেশি অভিযোগের রেকর্ড করা হয়েছে বিদ্যুৎ বিভ্রাট নিয়ে। মোট প্রাপ্ত অভিযোগের মধ্যে ৬৩.৭৮ শতাংশই বিদ্যুৎ বিভ্রাট নিয়ে। এরপরেই ৩৪.৪২ শতাংশ অভিযোগ হচ্ছে লোডশেডিং সংক্রান্ত। এছাড়া রয়েছে ভোল্টেজ ওঠা-নামা ও অতিরিক্ত বিল সংক্রান্ত। এখানেও শীর্ষে রয়েছে ওজোপাডিকো ও পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডে। বিতরণ কোম্পানি দু’টিতে যথাক্রমে ৬৯.৫৭ শতাংশ এবং ৬৯.৩৪ শতাংশ অভিযোগ যাচ্ছে বিদ্যুৎ বিভ্রাট সংক্রান্ত।

প্রাপ্ত পরিষেবার মান নিয়েও সন্তুষ্ট হতে পারছেন না গ্রাহকরা। সেবার মান ভালো মতামত দিয়েছে ৩৯.৭ শতাংশ, আর ৪১.৪ শতাংশ উত্তর দিয়েছে মোটামুটি। আর ৬ শতাংশ উত্তর এসেছে খুব ভালো। অন্যদিকে কল সেন্টারে থাকা লোকজনের সাড়াদানের মানকে ভালো বলেছে মাত্র ৩৫.৬০ শতাংশ, আর ৩৮.৩১ শতাংশ উত্তর দিয়েছে মোটামুটি। অন্যদিকে দাখিলকৃত অভিযোগের প্রেক্ষিতে প্রদত্ত সমাধানের মানকে মোটামুটি বলেছেন ৪০ শতাংশ, আর ৩৯.২ শতাংশ বলেছে ভালো।

২০২২ সালের জুলাই থেকে এপ্রিল ২০২৩ পর্যন্ত ১০ মাসের সিস্টেম অ্যাভারেজ ফ্রিকোয়েন্সি ডিউরেশন ইনডেক্সে (সাইফি), সিস্টেম অ্যাভারেজ ইনট্রাপশন ডিউরেশন ইনডেক্স (সাইদি)। এতে বিদ্যুৎ না থাকার দুই ধরনের তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। একটি হচ্ছে পূর্বঘোষিত লোডশেডিং কিংবা রক্ষণাবেক্ষণ আরেকটি হচ্ছে ঘোষণা ছাড়া বিদ্যুৎ বিভ্রাট। সবচেয়ে বেশি বিদ্যুৎ বিভ্রাটের শিকার হয়েছে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের গ্রাহকরা।

১০ মাসে ঘোষণা অনুযায়ী বিদ্যুৎ বন্ধ ছিল প্রায় ৬৬ ঘণ্টা, একই সময়ে ঘোষণা ছাড়া লোডশেডিং হয়েছে সোয়া ১০ ঘণ্টা। ২১৮ দফায় লোডশেডিংয়ের তথ্য উঠে এসেছে চিত্রে। বিদ্যুৎ বিভ্রাটে আরইবির পরেই দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ওয়েস্ট জোন পাওয়া ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি ওজোপাডিকো। কোম্পানিটির প্রায় ৮০ ঘণ্টা শিডিউল লোডশেডিং এবং সাড়ে ৭ ঘণ্টা লোডশেডিং হয়েছে ঘোষণা ছাড়া। বিতরণ কোম্পানিটির ২৭৫ দফায় লোডশেডিং দিয়েছে।

এসব তথ্য বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ম্যানুয়ালি তৈরি করা। কোনো কোম্পানি ইচ্ছা করেই তথ্যে কারচুপি করলে খুব একটা করার কিছু নেই। তবে এ বিষয়ে কাজ করে যাচ্ছে বিদ্যুৎ বিভাগ। ভবিষ্যতে স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিকে সাইদি-সাইফি নির্ধারণের জন্য সিস্টেম আধুনিকায়ন করা হচ্ছে বলে জানা গেছে।

বিদ্যুৎ বিভাগের সিনিয়র সচিব মোঃ হাবিবুর রহমান সভাপতিত্ব করেন। তিনি বলেন, আপনারা যে সময়ে (মার্চ-মে) সার্ভে করেছেন তখন লোডশেডিং কম ছিল। জুলাই আগস্টে বেশি লোডশেডিং হয়েছে। মূলত জ্বালানি সংকটের কারণে লোডশেডিং হয়েছে তখন। আমার বাসায় ১৫ মিনিট বিদ্যুৎ না থাকলে অস্থির হয়ে যাই, বিদ্যুৎ থাকবে না কেন। গ্রাহক নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ চাইবে এটা ন্যায্য চাওয়া। আমরা ভবিষ্যতে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ দিতে পারবো।

তিনি বলেন, মিটার রিডারদের ভুলের কারণে বিল বেশি আসে,আমরা স্মার্ট প্রিপেইড মিটারের দিকে যাচ্ছি। ২০২৫ সালের মধ্যে শেষ হবে। তখন আর এই অভিযোগ থাকবে না। আমাদের প্রধান লক্ষ্য হওয়া উচিত আচরণগত সন্তুষ্টি। আচরণগত সমস্যা দূর করতে, যত আধুনিকায়ন হবে মিডলম্যান থাকবে না। ততো দ্রুত সেবার মান বেড়ে যাবে।

বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান মোঃ মাহবুবুর রহমান, পাওয়ার সেল’র মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসাইন বলেন, ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিকাশ দেওয়ান, ঢাকা ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাওসার আমীর আলীসহ সিনিয়র নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

;