লোকসান কমাতে শেয়ার বিক্রির ধুম
লাভ নয়, লোকসান কামানোর আশায় শেয়ারের দাম একটু বাড়লেই ধুমছে বিক্রি করে দিচ্ছেন বিনিয়োগকারীরা। কারণ, এখনো পুঁজিবাজারের পরিস্থিতি ভালো হবে এমন ভরসা পাচ্ছেন না তারা।
সরকার পক্ষ থেকে বিশেষ উদ্যোগ নেওয়ার পর ঘুরে দাঁড়াতে পারছে না পুঁজিবাজার। বরং শেয়ার বিক্রির চাপে ফের দরপতন হচ্ছে বলে মনে করেন বাজার সংশ্লিষ্টরা।
তারা বলছেন, সরকারি ব্যাংকগুলো পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করছে। ব্যাংলাদেশ ব্যাংকও ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে বিনিয়োগকারীদের আতঙ্ক কাটছে না।
মতিঝিলের এম সিকিউরিটিজের বিনিয়োগকারী ছফির উদ্দিন ফকির বার্তা২৪.কমকে বলেন, ৫ মাস ধরে তিনটি আইটেম কিনেছি। কেনার পর থেকে দাম কমছেই। আর সমন্বয় করার জন্য দাম কমায় আরও কিনেছি। এভাবে কিনতে কিনতে আমি এখন ফকির! কিন্তু তারপরও শেয়ারের দাম কমছে। তবে কয়েকদিন সূচক বাড়ার পর এখন একটু বাড়লেই বিক্রি করে দিচ্ছি। আর কমলে আবারও কিনে লোকসানের হার কমাচ্ছি।
কেন বিক্রি করছেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মার্কেট ভালো হওয়ার কোনো লক্ষণ দেখছি না। তাই একটু বাড়লেই বিক্রি করে পুঁজি নিয়ে নিচ্ছি।
একই কথা বলেন মিডওয়ে সিকিউরিটিজের ট্রেডার মুকিত হোসেন। তিনি বলেন, গত দুই সপ্তাহ ধরে যেই শেয়ার একটু বাড়ে সেই কোম্পানির শেয়ার কেনার চেয়ে বিক্রির অর্ডার আসছে দ্বিগুণ। বিনিয়োগকারীরা যেন শেয়ার বিক্রি করে বাজার ছেড়ে যেতে পারলেই বাঁচেন।
বাজার পর্যালোচনা দেখা গেছে, চলতি সপ্তাহের প্রথম দিন রোববার ব্যাংক, বিমা এবং আর্থিক খাতের শেয়ারের দাম বাড়ে। এরপর দিন ওই তিন খাতের শেয়ার বিক্রির হিড়িক পড়ে যায়। এ কারণে সোমবার দরপতন হয়। এর পরদিন শেয়ার বিক্রির অর্ডার কমে। তবে তার পর দিন মঙ্গলবার ওষুধ ও বিমা খাতের বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম বাড়ায় বিনিয়োগকারীরা শেয়ার বিক্রি করতে শুরু করেন। তার প্রভাবে বুধবার আবারও দরপতন হয়েছে।
বুধবার (২৯ জানুয়ারি) দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক আগের দিনের চেয়ে ২৯ পয়েন্ট কমে ৪ হাজার ৪৮১ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। এদিন অন্য দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের চেয়ে ১৭ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৫২৬ পয়েন্ট এবং ডিএসইএস শরিয়াহ সূচক আগের দিনের চেয়ে ৫ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ২৮ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
এদিন লেনদেন হয়েছে ৪৩৯ কোটি ৬১ লাখ ৯২ হাজার টাকা। এর আগের দিন লেনদেন হয়েছিলো ৪৬৭ কোটি ৪৮ লাখ ২৭ হাজার টাকা। লেনদেন হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে দাম বেড়েছে ১১৪টির, কমেছে ১৮০টির আর অপরিবর্তিত রয়েছে ৬১টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
অন্যদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) প্রধান সূচক ৫১ পয়েন্ট কমে ১৩ হাজার ৬৬৩ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। এদিন সিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৩৮ কোটি ৪০ লাখ ৪২ হাজার টাকা। লেনদেন হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে দাম বেড়েছে ৯৮টির কমেছে ১১২টির আর অপরিবর্তিত রয়েছে ৩৩টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।