ছয়মাসে বিদেশি বিনিয়োগ ২৩ হাজার কোটি টাকা

  • সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

নতুন অর্থবছরের প্রথম ছয়মাসে দেশের অর্থনীতিতে বিদেশি বিনিয়োগ এসেছে ২৭৪ কোটি ৫০ লাখ ডলার। যা টাকার অঙ্কে (ডলার প্রতি ৮৫ টাকা) ২৩ হাজার ৩৩২ কোটি ৫ হাজার টাকা।

তবে নিট বিনিয়োগ এসেছে মাত্র ১৩২ কোটি ৫০ লাখ ডলার। অর্থাৎ ১১ হাজার ২৬২ কোটি ৫ হাজার টাকা। অর্থনীতিতে বিদেশিদের আগমন ঘটলেও পুঁজিবাজার ছেড়েছে বিদেশিরা। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।

বিজ্ঞাপন

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে, ২০১৯-২০ অর্থবছরের জুলাই-ডিসেম্বর ছয়মাসে দেশে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) এসেছে ২৭৪ কোটি ৫০ লাখ ডলার। যা গত অর্থবছরের চেয়ে ৩ দশমিক ৯৪ শতাংশ বেশি। মোট এফডিআই থেকে একই সময়ে বিদেশিদের অর্থ প্রত্যাবাসন বাদ দিয়ে নিট এফডিআইর হিসাব করা হয়।

চলতি অর্থবছরের জুলাই-ডিসেম্বর সময়ে নিট এফডিআই এসেছে ১৩৫ কোটি ৯০ লাখ ডলার, যা গত অর্থবছরের একই সময়ে যা ছিল ১৩২ কোটি ৫০ লাখ ডলার। এ সময়ে নিট এফডিআই বেড়েছে ২ দশমিক ৫৭ শতাংশ।

বিজ্ঞাপন

ঐতিহ্যগতভাবে বাংলাদেশ বিনিয়োগের উত্তম জায়গা। এখানে শ্রমিকের মুজরি কম। প্রোডাক্টের উৎপাদন খরচও কম। তাই চীন, জাপানসহ বিশ্বের উন্নত দেশগুলোর বাংলাদেশে বিনিয়োগ করছে। এর ফলে এফডিআই ক্রমাগতভাবে বাড়ছে বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা। তবে অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি পুঁজিবাজার থেকে বিদেশিরা চলে যাচ্ছেন।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে, চলতি অর্থবছরের প্রথম ৬ মাসে দেশের পুঁজিবাজারে নিট বিদেশি বিনিয়োগ এসেছে মাত্র ৩ কোটি ৭০ লাখ ডলার, যা গত অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ৭ কোটি ২০ লাখ ডলার। অর্থাৎ আলোচিত সময়ে পুঁজিবাজারে নিট বিদেশি বিনিয়োগ কমেছে ৩ কোটি ৫০ লাখ ডলার বা ৪৮ দশমিক ৬১ শতাংশ।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিনিয়োগকারীদের আস্থাহীনতা ও প্রয়োজনের তুলনায় ভালোমানের কোম্পানি না থাকাসহ বিভিন্ন ইস্যুতে টানা একবছর দরপতন হয় পুঁজিবাজারে।

অন্যদিকে বাজারে ডলারের দাম ধারাবাহিক বাড়লেও অপরিবর্তীতই রয়েছে টাকার মান। ফলে বিদেশিরা শেয়ার বিক্রি করে এখন আগের দামে ডলার কিনতে পারছে না। ডলারের দাম আরও বাড়লে লোকসানের পরিমাণও বাড়বে। এমন শঙ্কায় বাজারে বিদেশি বিনিয়োগ কমছে।

পাশাপাশি চলতি বছরে চার দফা ডলারের দাম বাড়িয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। অর্থবছরের শুরুতে অর্থাৎ জুন ২০১৯, আন্তব্যাংক রেটে ডলারের দাম ছিল ৮৪ টাকা ৫০ পয়সা। ডিসেম্বরে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৮৪ টাকা ৯০ পয়সায়। বর্তমানে (২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি) তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮৪ টাকা ৯৫ পয়সায়। তার প্রভাবও পুঁজিবাজারে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে।

অর্থবছরের প্রথম ৬ মাসে দেশের পণ্য বাণিজ্যে ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৮২২ কোটি ২০ লাখ মার্কিন ডলার, বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ প্রায় ৭০ হাজার কোটি টাকা। আলোচিত সময়ে বহির্বিশ্বের সঙ্গে বাংলাদেশের চলতি হিসাব (-) ঋণাত্মক রয়েছে ১৩৪ কোটি ৭০ লাখ ডলার। বর্তমান বিনিময় হার অনুযায়ী এর পরিমাণ প্রায় ১১ হাজার ৪৫০ কোটি টাকা।