করোনার প্রভাবে বাণিজ্য স্থবির: এফবিসিসিআই
করোনাভাইরাসের কারণে চীনের সঙ্গে আমাদের বাণিজ্যিক কার্যক্রমে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের প্রেসিডেন্ট শেখ ফজলে ফাহিম। তবে আশ্বাস দেওয়া হচ্ছে আগামী ২৪ ফেব্রুয়ারির পর থেকে দ্রুত শিপমেন্ট শুরু হবে।
শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) মতিঝিলের এফবিসিসিআইয়ের সম্মেলন কক্ষে ‘ভাইরাসের কারণে বাংলাদেশের শিল্প উৎপাদন, আমদানি-রফতানি বাণিজ্য, সরবরাহ ব্যবস্থায় ও সেবাখাতে সার্বিক প্রভাব সম্পর্কে বাণিজ্য সংগঠনগুলোর মতামত নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে প্রেসিডেন্ট এই উদ্বেগ ও সম্ভাবনার কথা জানান।
তিনি বলেন, দেশের প্রধান রফতানিপণ্য পোশাক খাতের ফেব্রিকস ও সিনথেটিক ইয়ার্নের প্রধান উৎস চীন। পোশাকখাতে বিশেষ করে ওভেনের কাঁচামালের যোগানের ক্ষেত্রে ৬০ শতাংশ এবং নিট খাতে ১৫-২০ শতাংশের উৎস চীন। এছাড়া অন্যান্য অনেক শিল্পখাতের প্রধান কাঁচামালের উৎস দেশটি। যেসব খাতের ঋণপত্র আগেই খোলা ছিল সেগুলোর জাহাজীকরণ ও ডকুমেন্টস পাওয়ায় জটিলতা সৃষ্টি হচ্ছে। এছাড়া নতুন করে ঋণপত্র খোলাও কমে যাচ্ছে।
অর্থনীতির ম্যানুফ্যাকচারিং ভ্যালু চেইন ৮০ শতাংশের মত প্রায় এক মাস স্থগিত ছিল এবং খুব সীমিত শিপমেন্ট হয়েছে উল্লেখ্য করে এফবিসিসিআইয়ের প্রেসিডেন্ট বলেন, আশ্বাস দেওয়া হচ্ছে আগামী ২৪ ফেব্রুয়ারির পর থেকে দ্রুত শিপমেন্ট শুরু হবে।
বাংলাদেশের রফতানি পণ্যের কাঁচামালসহ মধ্যবর্তী কাঁচামাল, মূলধনী যন্ত্রপাতি ও যন্ত্রাংশসহ তৈরি পণ্য যেমন ইলেকট্রনিক মটর, সিনথেটিক ইয়ার্ন ইত্যাদির সিংহভাগই চীন থেকে আমদানি হয়ে থাকে বলে তিনি জানান।
চীন-বাংলাদেশের আমদানি ও রফতানির পরিসংখ্যান তুলে ধরে শেখ ফজলে ফাহিম বলেন, বস্ত্র ও তৈরি পোশাকসহ সকল ম্যানুফ্যাকচারিং খাত- চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, প্লাস্টিক, ইলেকট্রিক্যাল-ইলেকট্রনিক্স, ফুটওয়্যার, কসমেটিকস অ্যান্ড টয়লেট্রিজ,মেডিকেল ইন্সট্রুমেন্ট, কম্পিউটার, ওয়াটার পাম্প, মটর ছাড়াও পরিবহন ও যোগাযোগসহ সকল খাতের স্বাভাবিক সরবরাহে বাধা সৃষ্টি হয়েছে।
গত জানুয়ারি মাসে ৬ দশমিক ৭২ লাখ টনপণ্য এসেছে। অথচ ২০১৯ সালে এ পণ্যের পরিমাণ ছিল ৮ দশমিক ৫১ লাখ টন। যেহেতু সাপ্লাই চেইনে প্রায় এক মাস ধরে সমস্যা হচ্ছে। আমাদের আশঙ্কা যে ব্যাংকিং খাতে পেমেন্ট ওভারডিউ হওয়ার সম্ভাবনা আছে। এ অবস্থায় আমদানি রফতানি কার্যক্রম যাতে কোনো প্রকার বাধাগ্রস্ত না হয় তার জন্য ঋণ সহায়তা ও ঋণপত্রের মূল্য পরিশোধের বিষয়ে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করা একান্ত প্রয়োজন।
করোনাভাইরাসের কারণে কোনো ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান যথাযথ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ব্যাংকে সরবরাহ করলে তাদের অ্যাকাউন্ট যাতে কোনোভাবে ক্লাসিফাইড না হয় এবং এডিশনাল চার্জ, ইন্টারেস্ট পেনালাইজড না হয় সেদিকে বিশেষ নজর দেওয়া প্রয়োজন। যে সকল ঋণপত্র খোলা আছে, শিপমেন্ট হচ্ছে না এবং শিপমেন্টের সময় লাগছে, তাদের ক্ষেত্রে অন্য কোনো সোর্স থেকে আমদানির সুযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের এইসব প্রতিষ্ঠানকে এলসি লিমিটেডের বাইরে স্বল্পমেয়াদি ঋণ সুবিধা দেওয়ার অনুরোধ জানাচ্ছি।