ডাকঘর সঞ্চয়ে সুদ বেশি দেওয়ার পরিকল্পনা
প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর সঞ্চয়ের ক্ষেত্রে লাভের হার যেন কোনভাবে কমে না যায় সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করেছে অর্থ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি।
রোববার (২৩ ফেব্রুয়ারি) সংসদ ভবনে অর্থমন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এ সুপারিশ করা হয়।
বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, কমিটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে ডাকঘর সঞ্চয়ে নির্দিষ্ট টাকা পর্যন্ত সুদ বেশি দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। তবে সেই নির্দিষ্ট টাকা কত তা উল্লেখ করা হয়নি। এজন্য মন্ত্রণালয়কে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে বলেছে সংসদীয় কমিটি।
জাতীয় সঞ্চয় অধিদফতরের মাধ্যমে প্রবর্তিত বর্তমানে ১১টি সঞ্চয় স্কিম রয়েছে; যার মধ্যে (ক) ডাকঘর সঞ্চয় ব্যাংক-সাধারণ হিসাব এবং ডাকঘর সঞ্চয় ব্যাংক মেয়াদী হিসাব অন্যতম ২টি স্কিম।
ডাকঘর সঞ্চয় ব্যাংকের সাধারণ হিসাব মুনাফা ৫ শতাংশ হারে। এতে সকল শ্রেণি পেশার মানুষ বিনিয়োগ করতে পারেন। নাবালকের পক্ষেও এ হিসাব খোলা যায়। একক নামে সর্বোচ্চ ৩০ লাখ টাকা অথবা যুগ্ম নামে সর্বোচ্চ ৬০ লাখ বিনিয়োগ করা যাবে।
ডাকঘর সঞ্চয় ব্যাংক-মেয়াদী হিসাব (৩ বছর মেয়াদী) মুনাফা মেয়াদান্তে ৬ শতাংশ। তবে এক বছর, ২ বছর অথবা ৩ বছর মেয়াদী হিসাব খোলা যায়। এক্ষেত্রে মুনাফার হার ১ বছরের জন্য ৫ শতাংশ, দুই বছরের জন্য সাড়ে ৫ শতাংশ এবং ৩ বছরের জন্য ৬ শতাংশ হারে।
ডাকঘর সঞ্চয় ব্যাংকে দুইভাবে টাকা রাখা যাবে। সাধারণ হিসাব ও মেয়াদী হিসাব। সাধারণ হিসাবে ১৯৯২ সাল থেকে ১৯৯৭ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সুদের হার ছিল ৮ শতাংশ। এরপর ২০০৪ সালের ১৬ জুলাই পর্যন্ত ছিল ৮ দশমিক ৫০ শতাংশ। ওই মাসের ১৭ জুলাই হতে সুদের হার কমিয়ে ৭ দশমিক ৫০ শতাংশ করা হয়। যা গত ১২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত কার্যকর ছিল। ১২ ফেব্রুয়ারির পর থেকে বর্তমান পর্যন্ত সুদের হার ৫ শতাংশ করা হয়েছে।
অন্যদিকে, ডাকঘর সঞ্চয় ব্যাংক মেয়াদী হিসাব গত ৫ বছরে সঞ্চয়ের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২০১৪-১৫ অর্থ বছরে ১১ হাজার ৯২১ কোটি ১৪ লাখ, ২০১৫-১৬ অর্থ বছরে ১৫ হাজার ৪২১ কোটি ৪২ লাখ, ২০১৬-১৭ অর্থ বছরে ২১ হাজার ৭০৬ কোটি ৩৫ লাখ, ২০১৭-১৮ অর্থ বছরে ২৮ হাজার ৪২৯ কোটি ৭৯ লাখ এবং ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে ৩৬ হাজার ৯৭২ কোটি ৫৬ লাখ টাকা।
ডাকঘর সঞ্চয় ব্যাংকে গত ৫ বছরে সঞ্চয়ের হিসেবে বলা হয়েছে-ডাকঘর সঞ্চয় ব্যাংক সাধারণ হিসাব ২০১৪-১৫ অর্থ বছরে ৯৭১ কোটি ৩৬ লাখ, ২০১৫-১৬ অর্থ বছরে তার বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়ায় ১ হাজার ২৭৩ কোটি ৯ লাখ, ২০১৬-১৭ অর্থ বছরে ১ হাজার ৬৯২ কোটি ৪৯ লাখ, ২০১৭-১৮ অর্থ বছরে ২ হাজার ৫২৭ কোটি ৭৯ লাখ এবং ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে ২ হাজার ৮৫৯ কোটি ৩ লাখ টাকা। প্রতি অর্থ বছরেও এই অর্থের পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে।
কমিটির সভাপতি আবুল হাসান মাহমুদ আলীর সভাপতিত্বে বৈঠকে কমিটি সদস্য অর্থ মন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, কাজী নাবিল আহমেদ, আহমেদ ফিরোজ কবির এবং রুমানা আলী বৈঠকে অংশ নেন। এছাড়া বৈঠকে ‘কাস্টমস বিল, ২০১৯’ নিয়ে আলোচনা হয়। বিলটি কিছু সংশোধনীসহ চূড়ান্ত করে কমিটি।