করোনায় বিনিয়োগকারীদের সাড়ে ১০ হাজার কোটি টাকার পুঁজি গায়েব!
বিদায়ী সপ্তাহে মঙ্গলবার (১৭ মার্চ) একদিন সরকারি ছুটি থাকায় দেশের পুঁজিবাজারে মোট চারদিন লেনেদেন হয়েছে। এর মধ্যে তিনদিন ধস নেমেছে। আর একদিন কৌশলে আধঘণ্টা লেনদেনের মাধ্যমে অস্বাভাবিক হারে সূচক বাড়ানো হয়েছে।
সব মিলে বিদায়ী সপ্তাহে (১৫-১৯মার্চ) দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক কমেছে ১৫৫ পয়েন্ট, সূচকের পাশাপাশি কমছে প্রায় সব শেয়ারের দাম ও লেনদেন।
বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, করোনার প্রভাবে পুঁজিবাজারে ধস হয়েছে। আর তাতে বিনিয়োগকারীদের নতুন পুঁজি অর্থাৎ মূলধন গায়েব হয়েছে ১০ হাজার ৬২৯ কোটি ৫ লাখ ৫৪ হাজার ১৮১ টাকা। অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) গায়েব হয়েছে ৩৫ হাজার ৮৫২কোটি টাকা।
ডিএসইর তথ্য মতে, ১৭ মার্চ মুজিববর্ষ উপলক্ষে পুঁজিবাজারের লেনদেন বন্ধ ছিলো। আর তাতে চার কার্যদিবস দেশের পুঁজিবাজারে লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে করোনার প্রভাবে প্রথম তিনদিন বাজারে ধস হয়েছে। এই তিনদিনে ডিএসইর প্রধান সূচক কমে ৫২৬ পয়েন্ট। কিন্তু সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে তিন ঘণ্টা লেনদেনের জায়গায় লেনদেন হয়েছে মাত্র আধঘণ্টা। এই আধঘণ্টায় সূচক বাড়ানো হয়েছে ৩৭১ পয়েন্ট। ফলে মোট চারদিনে সূচক কমেছে ১৫৫ পয়েন্ট।
ঠিক একই নিয়মে প্রথম তিনদিন অর্থাৎ রোব, সোম ও বুধবারের (১৫, ১৬, ১৮ মার্চ) ধসে বিনিয়োগকারীদের পুঁজি ৩৩ হাজার ৯৭৯ কোটি ৯৮ লাখ ৪২ হাজার কমে ২ লাখ ৮৭ হাজার ৩৮২ কোটি ৫৮ লাখ ৪১ হাজার টাকায় দাঁড়ায়। কিন্তু বৃহস্পতিবার (১৯ মার্চ) কৌশলে বিনিয়োগকারীদের পুঁজি ২৩ হাজার ৩৫০ কোটি ৯২ লাখ ৮৮ হাজার টাকা বাড়ানো হয়েছে। ফলে সপ্তাহ শেষে চারদিনের লেনদেন যোগ করে বিনিয়োগকারীদের ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১০ হাজার ৬২৯ কোটি টাকা। তবে প্রকৃতপক্ষে বিনিয়োগকারীদের ক্ষতির পরিমাণ ৩৫ হাজার কোটি টাকা।
সপ্তাহ শেষে ডিএসইর মোট লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ২৫৮ কোটি ৪৮ লাখ ৮৫ হাজার ৯১৮ টাকা। এর আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিলো ২ হাজার ৮৮ কোটি ৫৪ লাখ ৭৫ হাজার ৯৫৮ টাকা। অর্থাৎ গত সপ্তাহের চেয়ে ৮৩০ কোটি ৫ লা ৯০ হাজার ৪০ টাকা কম লেনদেন হয়েছে। যা শতাংশের হিসেবে ৩৯ দশমিক ৭৪ শতাংশ কম।
বিদায়ী সপ্তাহে লেনদেন হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে দাম বেড়েছে ৪৫টির, কমেছে ৩০৪টির আর অপরিবর্তিত রয়েছে ৯টি কোম্পানির শেয়ারের দাম। বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম কমায় তিন সূচকের প্রধান সূচক ১৫৫ পয়েন্ট কমে ৩ হাজার ৯৭৪ পয়েন্ট দাঁড়িয়েছে। অন্য দুই সূচকের মধ্যে ডিএস-৩০ সূচক কমেছে৫৫ পয়েনট আর ডিএসইএস শরীয়াহ সূছক কমেছে ৩৮ পয়েন্ট।
অপর বাজার সিএসইতে গত সপ্তাহে লেনদেন হয়েছে ৫৫ কোটি ২৪ লাখ ৮৪ হাজার ৫৭৬ টাকা। লেনদেন হওয়া কোম্পানিগুলো মধ্যে দাম বেড়েছে ৪৭টির কমেছে ২৩১টির আর অপরিবর্তিত রয়েছে ২০টি কোম্পানির শেয়ারের। প্রায় সব শেয়ারের দাম কমায় প্রধান সূচক কমেছে ১৬৮ পয়েন্ট। তাতে সিএসইর বিনিয়োগকারীদের পুঁজি উধাও হয়েছে ৩৫ হাজার ৮৫২ কোটি ৪ লাখ ৯ হাজার টাকা।