পুঁজিবাজারের লেনদেন আপাতত বন্ধ রাখার সুপারিশ সিপিডির
এমনিতেই পুঁজিবাজারের অবস্থা টালমাটাল। তার সঙ্গে নতুন করে যোগ হয়েছে কারোনাভাইরাস। তাতে পুঁজিবাজারে বড় ধরনের প্রভাব পড়েছে। এই অবস্থা থেকে উত্তোলনে সাময়িকভাবে কয়েকদিন লেনদেন বন্ধ রাখার যেতে পারে বলে জানিয়েছেন বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগ (সিপিডি)।
শনিবার (২১ মার্চ) সিপিডির কার্যালয়ে করোনায় স্বাস্থ্য ও অর্থনৈতিক ঝুঁকি এবং করণীয় শীর্ষক ভার্চুয়াল মিডিয়া ব্রিফিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে সিপিডির সিনিয়র গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মেয়াজ্জেম। সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন অনুষ্ঠানে সভাপত্বি করেন।
তিনি বলেন, পুঁজিবাজরের সমস্যা অনেক আগে থেকেই। তবে করোনাভাইরাসের কারণে অবস্থা আরও খারাপ পর্যায়ে পৌঁছেছে। এই অবস্থা থেকে উত্তোলনে সরকার দুটো উদ্যোগ নিয়েছে। তার মধ্যে একটি হচ্ছে ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের জন্য ২০০ কোটি টাকার ফান্ড গঠন। আর একটি হচ্ছে নতুন করে সর্বনিন্ম দামের ওপর সার্কিট ব্রেকার আরোপ করে বড় পতন ঠেকানো।
এই দুটি উদ্যোগের কারণে আপতত পুঁজিবাজার নিন্মপর্যায়ে এসে থেমে আছে। কিন্তু পুঁজিবাজারের জন্য যে মূল সমস্যাগুলো রয়েছে সেগুলো সমাধানে উদ্যোগ না নেয়া হলে পুঁজিবাজারের অবস্থা ভালো হবে না। বাজারকে ভালো করতে প্রাথমকি গণপ্রস্তাব (আইপিও) অনুমোদন দেয়ার ক্ষেত্রে সংস্কার করতে বিও অ্যাকাউন্টগুলো সংস্কার, ফিন্যানন্সিয়াল রিপোটিং ও প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সংস্কার এবং সেকেন্ডরি মার্টেকে লেনদেনে ক্ষেত্রে সংস্কার করতে হবে।
এছাড়াও পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রণ সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি), ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ, আইসিবি এবং এফআরসির কার্যক্রমের মান উন্নয়ন করতে হবে। যদি এই প্রতিষ্ঠানগুলোর মান উন্নয়ন না করা যায় তবে উদ্যোগ দিয়ে খুব বেশি উপকার পাওয়া যাবে না।
সম্প্রতি করোনার কারণে দেশের অর্থনীতির যে স্থবিরতা রয়েছে তাতে সরকারের আইনগত দিক বিবেচনা করে কিছু কালের জন্য এর কার্যক্রম স্থগিত রাখার বিষয়টি দেখতে পারে। তবে এসব দিয়ে পুঁজিবাজারে সামগ্রিক সুস্বাস্থ্য সম্ভব নয়। যদি না মূল সমস্যাগুলোর সমাধান না করা হয়।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে বিশেষ ফেলো অধ্যাপক মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, বর্তমান পরিস্থিতর ফলে সরকার চলতি অর্থবছরের ৮ দশমিক ২ শতাংশের যে প্রবৃদ্ধির লক্ষমাত্রা নিয়েছে তা না হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
পাশাপাশি আমদানি রফাতনি বন্ধ থাকায় বিজিএমইর শ্রমিকদের বেতন ও বোনাস দেয়া নিয়ে দুশ্চিন্তার রয়েছে কারখানাগুলোর মালিকেরা। তিনি বলেন, নিয়ম অনুসারে কোনো সমস্যার মধ্যে পড়লে কারখানা মালিকদের পাশাপাশি বায়ারাও শ্রমিকদের ক্ষতি পোষাতে অংশগ্রহণ করে। স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ে সরকারিভাবে বায়ারদের সঙ্গে আলোচনা করা দরকার। পাশাপাশি রফতানির জন্য সরকার ১ শতাংশ হারে যে প্রণোদনা দেয় এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় শ্রমিকদের দিয়ে প্রয়োজন মেটাতে পারে সরকার।