পোশাক কারখানা বন্ধে মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বিজিএমইএ'র বৈঠক রোববার
প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের কারণে দেশের তৈরি পোশাক কারখানাগুলো বন্ধের বিষয়ে ২২ মার্চ রোববার বৈঠক সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে বিজিএমইএ।
সচিবালয়ে রোববার (২২ মার্চ) বিকেলে শ্রম মন্ত্রণালয়ে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। শ্রমমন্ত্রীর সভাপতিত্বে বৈঠকে ট্রেড ইউনিয়নের নেতা এবং বিজিএমইএ'র নেতারা উপস্থিত থাকবেন বলে বার্তা২৪.কম-কে নিশ্চিত করেছেন বিজিএমইএর সভাপতি রুবানা হক।
তিনি বলেন, আজকে বৈঠক হয়েছে। কিন্তু সিদ্ধান্ত হয়নি। রোববার বিকেল ৪টায় মন্ত্রণালয় থেকে সভার জন্য ডাকা হয়েছে। ওই মিটিংয়ে সিদ্ধান্ত হবে গার্মেন্টস খোলা থাকবে কি না।
এদিকে করোনা সংক্রমণ থেকে পোশাক কারখানার শ্রমিকের জীবন এবং শিল্পখাত রক্ষায় অবিলম্বে সকল কারখানা সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা এবং সবেতন ছুটির প্রদানের জন্য সরকার এবং মালিকপক্ষকে আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ গার্মেন্টস শ্রমিক সংহতি।
শনিবার (২১ মার্চ) এক যৌথ বিবৃতিতে শ্রমিকদের জন্য চলতি মাসের পূর্ণ বেতন, যাতায়াত ভাতা, রেশনিংসহ অন্যান্য নিরাপত্তা ও সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণের জোর দাবি জানান বাংলাদেশ গার্মেন্টস শ্রমিক সংহতির সভাপ্রধান তাসলিমা আখতার, সাধারণ সম্পাদক জুলহাস নাইন বাবু এবং সাংগঠনিক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম শামা।
বিবৃতিতে তারা বলেন, ইতোমধ্যে সারা বিশ্বে করোনায় মৃতের সংখ্যা ১০ হাজার ছাড়িয়েছে। গতকালের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশে ২০ জন আক্রান্ত হয়েছেন, ১ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং একজন আইসিইউতে আছেন। বিশ্ববিদ্যালয়সহ সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়েছে, এসেছে হল খালির নির্দেশ, নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে রাজনৈতিক ও ধর্মীয় সভা সমাবেশ, বাতিল হয়েছে ক্রিকেট টুর্নামেন্টসহ লোক সমাগমের যে কোনো আয়োজন। মাদারীপুরসহ বিভিন্ন জেলায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় থমথমে অবস্থা।
রফতানি আয়ের শীর্ষে অবস্থান করা শ্রমঘন এই পোশাক খাতের ৪০ লাখ শ্রমিক হাজারে হাজারে মানুষ সমাগমে কাজ করে যেটি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হবার জন্য মারাত্মক পরিবেশ। অথচ এই বিশেষ পরিস্থিতিতে শ্রমিকের জীবনের নিরাপত্তায় সরকার ও মালিকের পক্ষ থেকে কারখানা বন্ধ ও কোন বিশেষ ঘোষণা এখনো না আসার সমালোচনা করেন তারা।
তারা আরও বলেন, বেশির ভাগ কারখানায় নিরাপদে হাত ধোয়া, মাস্ক এবং স্যানিটাইজার ব্যবহার করা, কোনো বস্তু যেখানে সেখানে স্পর্শ না করা কিংবা বেশি বেশি পানি বা ভিটামিন সি গ্রহণসহ হাইজিন রক্ষার যাবতীয় নিয়ম পালন করার সুযোগ নেই। শ্রমিকরা কর্মপরিবেশে বাধ্য হয়ে অপরিচ্ছন্ন হাতে মেশিন ও অন্যান্য দ্রব্য স্পর্শ করছেন এবং হাজার মানুষের মাঝে মৃত্যু আতঙ্ক নিয়ে কাজ করছেন।
বিদেশি বায়াররাও কারখানায় আসা যাওয়া করেন। সাম্প্রতিক করোনার পরিস্থিতিতে এই রোগ ছড়ালে তা এক নিদারুণ ভয়াবহ পরিণতি ডেকে আনবে। আসন্ন বিপদ থেকে সতর্ক হবার জন্য দেরি করার কোন সুযোগ-ই আর নেই বলে নেতৃবৃন্দ জানান। তারা আরও যুক্ত করেন, মহামারির আতঙ্কে বাজারেও সংকট দেখা যাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে কারখানা বন্ধ করে দ্রুত রেশনিং ব্যবস্থা চালুর দাবি জানান তারা।
নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য এবং সুস্বাস্থ্যের জন্য দ্রব্য মজুতদারি কিংবা বাসা ও পরিবহন ভাড়া বৃদ্ধির ফলে শ্রমিকরা যাতে বিপর্যয়ের না পড়ে তার জন্য পরিবহন-বাসা ভাড়া ও বাজার কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন নেতৃবৃন্দ।