করোনা: ক্রেতাশূন্য বাজার, দাম কমেছে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের
করোনার প্রভাবে গত সপ্তাহে রাজধানীর বাজারগুলোতে দাম বেড়েছিল নিত্য প্রয়োজনীয় বেশিরভাগ পণ্যের। তবে সপ্তাহের ব্যবধানে অনেকটাই উল্টে গেছে বাজারের চিত্র।
সবজিসহ বেশিরভাগ পণ্যের দামই কমেছে। সবজির সরবরাহ রয়েছে পর্যাপ্ত। কিন্তু ক্রেতা পাওয়াই দুষ্কর। বিক্রেতারা অনেকটাই ক্রেতা সংকটে ভুগছেন। তেমন বিক্রি না থাকায় অলস সময় পার করছেন দোকনিরা।
গত সোমবার (২৩ মার্চ) সরকার বৃহস্পতিবার (২৬ মার্চ) থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত সরকারি-বেসরকারি সব প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করে। এরপর রাজধানী ছেড়ে যায় লাখো মানুষ। করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধে সবাইকে ঘরে থাকার আহ্বান জানিয়েছে সরকার। জনসমাগম বন্ধ এবং লোকজনের ঘরে থাকা নিশ্চিত করতে সারা দেশে তৎপর রয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। প্রয়োজন ছাড়া কেউ তেমন বাইরে বের হচ্ছে না। ফলে রাজধানী এখন অনেকটাই জনশূন্য।নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের পসরা সাজিয়ে অনেক বিক্রেতা বসে থাকলেও ক্রেতার দেখা মেলা ভার। ফলে দাম কমেছে অনেকটাই।
শুক্রবার (২৭ মার্চ) রাজধানীর টাউন হল বাজার ঘুরে দেখা যায়, পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫৫ টাকা কেজি। যা গত সপ্তাহে ছিল ৭৫ থেকে ৮০ টাকা। দাম কমে কেজি প্রতি রসুন বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকায়, আদা বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকায়। তাছাড়া বাজারে ক্রেতার উপস্থিতি অনেকটাই কম। সকাল গড়িয়ে দুপুর হলেও বিক্রেতাদের পণ্য তেমন কমছে না।
বেশিরভাগ সবজির দাম গত সপ্তাহের তুলনায় যথেষ্ট কমেছে। বর্তমানে বাজারে প্রতি কেজি আলু ২০ টাকা, মুলা ৩০ টাকা, বেগুন ৫০ টাকা, শিম ৪০ টাকা, কাঁচা পেঁপে ৩০ টাকা, টমেটো ৩০ টাকা, কাঁচা মরিচ ১০০ টাকা, গাজর ৪০টাকা, ঢেঁড়স ৬০ টাকা, করোলা ৬৫-৭০ টাকা, পটল ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর সজনে ডাঁটা বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকায়। যা গত সপ্তাহে ছিল ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা কেজি।
এদিকে বাজারে প্রতি পিস বড় সাইজের ফুলকপি ও বাঁধাকপি ৩০ টাকা করে, লাউ ৫০-৬০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৩০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে।
মো. আলী হায়দার নামে এক ক্রেতা বার্তা২৪.কমকে বলেন, আজকের বাজার পরিস্থিতি স্বাভাবিক মনে হলো। বেশিরভাগ পণ্যের দাম কিছুটা কমেছে এটা স্বস্তির খবর।
এদিকে গরু-খাসির মাংসের দাম আগের মতোই আছে। প্রতি কেজি গরুর মাংস ৫৮০ টাকা, খাসির মাংস ৯০০ টাকা এবং বকরির মাংস ৮০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। তবে তেমন ক্রেতা নেই।
তবে ব্রয়লার মুরগির দাম কমে প্রতি কেজি ১১৫-১২০ টাকা, কক মুরগি ১৫০ টাকা,পাকিস্তানি মুরগি ২৩০ টাকা ও দেশি মুরগি ৪৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। আর রাজ হাঁস বিক্রি হচ্ছে দেড় হাজার টাকা পিস।
মাছের বাজার ঘুরে দেখা যায়, বেশিরভাগ মাছের দোকান বন্ধ রয়েছে। যারা বাজারে মাছ নিয়ে এসেছেন, ক্রেতা সংকটে মাছ বিক্রি করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের। এমন অবস্থায় মাছের দাম কিছুটা কমেছে। প্রতি কেজি বড় সাইজের রুই মাছ ২৫০ টাকা, ছোট সাইজের রুই মাছ ১৮০ টাকা, টেংরা মাছ ৪৫০ টাকা, সরপুঁটি ১৮০, পাবদা মাছ ৪০০ টাকা ও শিং মাছ ৩৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে।
বাজারের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে টাউন হল বাজারের ব্যবসায়ী মো. মিজান বার্তা২৪.কমকে বলেন, বাজারে নিত্য প্রয়োজনীয় কোনো পণ্যের ঘাটতি নেই। বাজার খোলা আছে এবং সব ধরনের পণ্যের সরবরাহ আছে। কিন্তু ক্রেতা অনেক কম। করোনাভাইরাসের কারণে মানুষকে ঘরে থাকতে বলা হয়েছে। সে কারণে হয়তো প্রয়োজন ছাড়া মানুষ বাজারে আসছে না। এমন অবস্থায় আমাদের বেচাবিক্রির অবস্থাও খুব একটা ভালো না।