২০ এপ্রিলের মধ্যে শ্রমিকদের বেতন পরিশোধ করা হবে: বিজিএমইএ

  • সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

বিজিএমইএ কার্যালয়ে ড. রুবানা হক, ছবি: সংগৃহীত

বিজিএমইএ কার্যালয়ে ড. রুবানা হক, ছবি: সংগৃহীত

তৈরি পোশাক খাতের সব শ্রমিকদের মার্চের বকেয়া বেতন পরিশোধের জন্য চার দিন অর্থাৎ ২০ এপ্রিল পর্যন্ত সময় লাগবে বলে জানিয়েছে বিজিএমইএ।

বুধবার (১৫ এপ্রিল) পোশাক কারখানার মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রফতানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সভাপতি ড. রুবানা হক এক অডিও বার্তায় এ কথা জানিয়েছেন।

এর আগে তিনি শ্রমিক-কর্মচারীদের মার্চ মাসের বেতন ১৬ এপ্রিলের মধ্যে পরিশোধ করা হবে বলে আশ্বাস দিয়েছিলেন। বৃহস্পতিবার (১৬ এপ্রিল) সেই সময়ের শেষ দিন। কিন্তু এখনো অর্ধেক কারখানার মালিকরাই বেতন-ভাতা পরিশোধ করেননি।

বিজ্ঞাপন

ড. রুবানা বলেন, ২৪ লাখ ৭২ হাজার শ্রমিকের মধ্যে ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত ১৯ লাখ ১৯ হাজার ৬০০ জন অর্থাৎ ৭৮ শতাংশ শ্রমিক মার্চের বেতন পেয়েছেন। আগামী কালের (১৬ এপ্রিলের) মধ্যে ৮০ শতাংশ পোশাক শ্রমিক বেতন পাবেন। বাকি ২০ শতাংশ শ্রমিকের বকেয়া বেতন ২০ এপ্রিলের মধ্যে পরিশোধ করা হবে।

শ্রমিকরা যখন বেতনের জন্য মাঠে নামে, তখন তারা কার সদস্য, তা দেখার উপায় নেই। তাই আমাদের দায়বদ্ধতা থেকে সমস্ত ব্যাংকের কাছে বেতন দেওয়ার সুবিধার্থে প্রয়োজনীয় সহায়তা করার আবেদন করেছি। কেন্দ্রীয় ব্যাংক, বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে বলে দিয়েছি, যোগ করেন রুবানা হক।

বিজ্ঞাপন

বেশিরভাগ বড় কারখানা বেতন দিয়ে দিয়েছে। ছোট ও মাঝারি কারখানাগুলোর বেতন দিতে কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। তবে ছোট বড় এটা বড় বিষয় নয়। সবার জন্য বেতনের ব্যবস্থা করা হবে। একজন শ্রমিকও বেতন ছাড়া থাকবেন না বলে জানান বিজিএমইএ সভাপতি।

তিনি বলেন, গণপরিবহন বন্ধ। অনেক শ্রমিককে এখনো ক্যাশে বেতন দিতে হয়। যা আগামী মাস থেকে আর ক্যাশ দিতে হবে না। তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে কিছু সমস্যা হচ্ছে। সব ব্যাংকের শাখা খোলা না। এ কারণে কিছু সমস্যা হচ্ছে। এটি সমাধানে পাঁচ থেকে সাত দিন সময় লাগবে।

পোশাক মালিকদের বড় দু’টি সংগঠন বিজিএমইএ এবং বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিকেএমইএ) জানিয়েছিল ১৬ এপ্রিলের মধ্যে মার্চে বেতন পাবেন শ্রমিকরা।

বুধবার (১৫ এপ্রিল) বিজিএমইএ’র তথ্য মতে, ২২৭৪ কারখানার মধ্যে ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকায় কারখানা রয়েছে ৩৭২টি। এর মধ্যে মার্চের বেতন দিয়েছে ২০১টি, গাজীপুরে ৮১৮টি কারখানার মধ্যে বেতন দিয়েছে ৪৩২টি, সাভার-আশুলিয়ার ৪৯১টি কারখানার মধ্যে বেতন দিয়েছে ২৪৩টি, নারায়ণগঞ্জের ২৬৯টি পোশাক কারখানার মধ্যে বেতন দিয়েছে ১১৮টি, চট্টগ্রামের ৩২৪টি কারখানার মধ্যে ১৫৬টি এবং প্রত্যন্ত এলাকার ৪২টি কারখানার মধ্যে ৩৬টির মালিক মোট ১৯ লাখ ১৯ হাজার ৬০০ শ্রমিকের বেতন পরিশোধ করেছেন। তবে বুধবার পর্যন্ত ১০৮৮টি কারখানার শ্রমিকদের বেতন-ভাতা পরিশোধ করতে পারেননি মালিকরা।

মার্চ মাসের বেতন-ভাতার দাবিতে করোনার এ ভয়াবহ পরিস্থিতিতে প্রতিদিনই রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় বিক্ষোভ করছেন পোশাক শ্রমিকরা। বুধবার (১৫ এপ্রিল) সকাল থেকেই রাজধানীর বাড্ডা, মিরপুর, ভাষানটেক ও উত্তরার দক্ষিণখানে ১০টিরও বেশি প্রতিষ্ঠানের শ্রমিকরা রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন।

এর আগে ১৩ এপ্রিল এক বিবৃতিতে চলমান করোনা পরিস্থিতির মধ্যে শ্রমিকদের মার্চের বেতন ১৬ এপ্রিলের মধ্যে পরিশোধ না করলে সংশ্লিষ্ট মালিকদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান।

বিবৃতিতে সব শিল্প কলকারখানার শ্রমিকদের মার্চ মাসের বেতন ১৬ এপ্রিলের মধ্যেই পরিশোধের জন্য মালিকদের নির্দেশ দিয়ে তিনি বলেন, এ নির্দেশ না মানলে বা উক্ত তারিখের মধ্যে বেতন দিতে ব্যর্থ হলে সংশ্লিষ্ট মালিকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

প্রতিমন্ত্রী করোনা পরিস্থিতির ভয়াবহতার কথা মাথায় রেখে সরকারি নির্দেশনা মেনে শ্রমিকদের ঘরে থাকার আহ্বান জানান।