নেপালের জলবিদ্যুৎ আমদানি করবে বাংলাদেশ
ঢাকা: আঞ্চলিক সহযোগিতার আওতায় প্রতিবেশী দেশ নেপাল থেকে জলবিদ্যুৎ আমদানির লক্ষ্যে একটি সমঝোতা স্মারক সই করেছে বাংলাদেশ।
চুক্তির বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সহযোগিতার মাধ্যমে বিদ্যমান বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক সুদৃঢ় করে আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়ন ও অগ্রগতির জন্য বিদ্যুতের চাহিদা মেটাতে এই সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করা হয়েছে। এ সমঝোতার মূল লক্ষ্য বিনিয়োগ ও বিদ্যুৎ উন্নয়ন প্রকল্পের উন্নয়নসহ বিদ্যুৎ খাতে উভয়পক্ষ সহযোগিতা করবে।
শুক্রবার (১০ আগস্ট) নেপালের রজধানী কাঠমুন্ডুতে এ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। সমঝোতা স্মারকে বাংলাদেশের পক্ষে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ এবং নেপালের পক্ষে নেপালের জ্বালানি, পানি সম্পদ ও সেচ বিষয়ক মন্ত্রী বর্ষমন পণ অনন্ত স্বাক্ষর করেন।
চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, ২০৪০ সাল নাগাদ বাংলাদেশ ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটাতে ৯০০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি করবে। ভারত থেকে ইতোমধ্যে ৬৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি করা হচ্ছে এবং আরো ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানির প্রক্রিয়া প্রায় চূড়ান্ত। নেপালে জলবিদ্যুৎ উৎপাদনের প্রচুর সম্ভাবনা রয়েছে। এ সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে আঞ্চলিক সহযোগিতার আওতায় বাংলাদেশ নেপাল থেকে জলবিদ্যুৎ আমদানি করতে চায়। এতে উভয় দেশ উপকৃত হবে।
তিনি বলেন, এই চুক্তি বিদ্যুৎ খাতের জন্য একটি প্লাটফর্ম বা কাঠামো তৈরি করবে যা বিদ্যুৎ বিনিময়, বিদ্যুৎ বাণিজ্য, গ্রীড সংযোগ, জলবিদ্যুৎ উন্নয়ন ও নবায়নযোগ্য জ্বালানির প্রসারে সহযোগিতা বৃদ্ধি করবে।
এ চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে নেপাল থেকে বাংলাদেশে জলবিদ্যুৎ আমদানি, যৌথ বিনিয়োগে নেপালে জলবিদ্যুৎ প্রকল্প স্থাপন ও বাংলাদেশের বিদ্যুৎ আমদানি, নবায়নযোগ্য জ্বালানি বিশেষ করে সোলার হোম সিস্টেম প্রসারে নেপালকে বাংলাদেশের সহযোগিতা, নেপালের আপার কারনালি জলবিদ্যুৎ প্রকল্প হতে ৫০০ মেগাওয়াট জলবিদ্যুৎ আমদানি ইত্যাদি বিষয়ে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে।
এসময় নসরুল হামিদ বলেন, জলবিদ্যুৎ উৎপাদনে বাংলাদেশ নেপালে বিনিয়োগ করতে ইচ্ছুক। এ বিনিয়োগে উভয় দেশ উপকৃত হবে। আগামী ৬ থেকে ৮ সেপ্টেম্বর (২০১৮) অনুষ্ঠিতব্য বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সপ্তাহ-২০১৮ এ নেপালের জ্বালানি, পানি সম্পদ ও সেচ বিষয়ক মন্ত্রিসহ একটি প্রতিনিধিদলকে বাংলাদেশে সফরের আমন্ত্রণ জানান।
নেপালের জ্বালানি, পানি সম্পদ ও সেচ বিষয়ক মন্ত্রী বর্ষমন পণ অনন্ত বলেছেন, বিদ্যুৎ খাতের উন্নয়নে নেপাল বাংলাদেশকে মডেল হিসেবে নিয়েছে। বাংলাদেশের প্রযুক্তিগত অভিজ্ঞতা নেপালের প্রয়োজন। বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ জয়েন্ট ভেঞ্চার, সোলার হোম সিস্টেম, নেট মিটারিং, এলপিজি, এলএনজি ইত্যাদি ব্যাখা করে বলেন নেপালে বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা এলপিজি কাজ করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
এ সময় অন্যান্যের মাঝে নেপালের জ্বালানি, পানি সম্পদ ও সেচ বিষয়ক সচিব অনুপ কুমার উপাধ্যায়, নেপালের বিদ্যুৎ উন্নয়ন বিভাগের মহাপরিচালক নবিন রাজ সিং ও নেপাল বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক কুলমান ঘিসিং এবং বাংলাদেশের নেপালে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত মাশফী বিনতে শামস, বিদ্যুৎ বিভাগের যুগ্ম সচিব ফায়েজুল আমীন ও আইপিপি সেলের পরিচালক মাহবুবুল আলম উপস্থিত ছিলেন।