সন্ধ্যায় ৯০ শতাংশ বিদ্যুৎ সংযোগ সচল, স্বাভাবিক শুক্রবার
ঘূর্ণিঝড় আম্পানের তাণ্ডবে আরইবির দেড় কোটি এবং ওজোপাডিকোর(ওয়েস্ট জোন পাওয়া ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি) ১২ লাখ বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২১ মে) বিকেল পর্যন্ত আরইবির ৮০ লাখ এবং ওজোপাডিকোর ১০ লাখ গ্রাহকের বিদ্যুৎ সংযোগ সচল হয়েছে।
সন্ধ্যা নাগাদ ৯০ শতাংশ গ্রাহকের ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিতে সক্ষম হবে আরইবি। অন্যদিকে ওজোপাডিকো ৯৫ শতাংশ গ্রাহকের লাইন সচল করতে সক্ষম হবে বলে সংস্থা দু’টি জানিয়েছে।
বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে ওজোপাডিকোর প্রধান প্রকৌশলী আবু হাসান বার্তা২৪.কমকে জানিয়েছেন, আমাদের বিতরণ অঞ্চলের মধ্যে প্রায় ১২ লাখ বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিল। এ পর্যন্ত ১০ লাখ গ্রাহকের বিদ্যুৎ সংযোগ সচল করা সম্ভব হয়েছে। সন্ধ্যা নাগাদ অনেকটা স্বাভাবিক হয়ে যাবে। কুষ্টিয়া পাওয়ার গ্রিড কোম্পানির একটি ট্রান্সফরমার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেটি মেরামত না হওয়া পর্যন্ত কুষ্টিয়া শহরে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক করা সম্ভব হবে না।
তবে বিকল্প সোর্স পাংশা থেকে বিদ্যুৎ এনে কুষ্টিয়া শহরে কিছুটা সরবরাহ করা হবে। আরেকটি সোর্স রয়েছে ভেড়ামারায়, সেখান থেকেও কুষ্টিয়ায় বিদ্যুৎ সরবরাহের চেষ্টা চলছে। যদি ভোল্ট ভালো পাওয়া যায়, তাহলে কুষ্টিয়ায় বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক করা হবে। না হলে পিজিসিবির কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত কুষ্টিয়া শহরে স্বাভাবিক সরবরাহ ব্যাহত হতে পারে বলে জানিয়েছেন আবু হাসান।
পিজিসিবি সূত্র জানিয়েছে, তাদের টিম ঢাকা থেকে ট্রান্সফরমার নিয়ে রওয়ানা দিয়েছে। তারা আশা করছেন, রাতের মধ্যেই লাইনটি সচল হয়ে যাবে।
ওজোপাডিকো খুলনা, বরিশাল ও ফরিদপুর বিভাগের ২১ জেলা ও ২০ উপজেলা সদরে বিদ্যুৎ বিতরণ করে আসছে। ঝড়ে কোম্পানিটির প্রায় কোটি টাকার লোকসানের শঙ্কা করছেন এ কর্মকর্তা।
অন্যদিকে আরইবির এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, আম্পানের কারণে দুপুর নাগাদ ঠাকুরগাঁও এলাকায় ঝড়বৃষ্টিতে কিছু লাইনের ক্ষতি হয়েছে। সে সব এলাকায় ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণের কাজ চলছে। আমরা আশা করছি, সন্ধ্যার মধ্যে ৯০ শতাংশ গ্রাহকের বিদ্যুৎ সংযোগ সচল হবে। অবশিষ্ট ১০ শতাংশ শুক্রবার (২২ মে) দুপুরের আগেই সচল হয়ে যাবে।
আরইবির পরিচালক (অর্থ) আর্থিক মনিটরিং (উত্তরাঞ্চল ও দক্ষিণাঞ্চল) মো. হোসেন পাটোয়ারি বার্তা২৪.কমকে বলেন, আম্পানের কারণে ১৬-১৭শ’ মতো খুটি ভেঙ্গে গেছে, লাইন ছিঁড়ে গেছে ৩৫ হাজার পয়েন্টে, ট্রান্সফরমার বিকল হয়েছে ৮শ’, মিটার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রায় ২০ হাজারের মতো। সবচেয়ে চ্যালেঞ্জ হচ্ছে ছেঁড়া তার মেরামত করা। আমাদের দেড় কোটির মতো গ্রাহক ক্ষতিগ্রস্ত হন। এখনও (বিকেল ৫টা) ৭০ লাখের মতো গ্রাহক বিদ্যুতের বাইরে রয়েছেন। আমরা সন্ধ্যার মধ্যে ৯০ শতাংশ চালুর লক্ষ্যে কাজ করছি। অবশিষ্ট ১০ শতাংশের জন্য আরও কিছু সময় প্রয়োজন পড়বে। তবে আমরা আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি দ্রুত বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক করার জন্য।
এদিকে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের জনসংযোগ পরিদপ্তরের পরিচালক সাইফুল হাসান চৌধুরী বার্তা২৪.কমকে বলেছেন, আমাদের বিতরণ অঞ্চল ময়মনসিংহের টাঙ্গাইলে কিছু এলাকায় ও সন্দ্বীপে বিদ্যুৎ লাইন বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিল। বিকেল নাগাদ ৯০ ভাগ সচল হয়েছে। সন্ধ্যার মধ্যে শতভাগ এলাকায় বিতরণ স্বাভাবিক হয়ে যাবে।