রংপুরে ভোট গ্রহণে কিন্ডারগার্টেনের শিক্ষক ও পলাতক আসামি

  • স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, রংপুর
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রংপুরের পীরগাছায় বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলার পলাতক আসামি, অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারী ও কিন্ডারগার্টেনের শিক্ষক দিয়ে ভোট গ্রহণের প্রস্তুতি চলছে।

শুধু তাই নয়, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক, মাধ্যমিক স্কুল, মাদরাসা ও কলেজের এমপিওভুক্ত শিক্ষককে ভোট গ্রহণের দায়িত্ব না দিয়ে নন এমপিওভুক্ত শিক্ষক কর্মচারীদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এমনকি প্রশিক্ষণ ছাড়াই ভোটগ্রহণকারী কর্মকর্তা নিয়োগের অভিযোগ উঠেছে। এসব ঘটনায় উপজেলাজুড়ে বঞ্চিত শিক্ষকদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে।

বিজ্ঞাপন

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পীরগাছা বালিকা দাখিল মাদসার অফিস সহকারী আবুল কালাম আজাদকে পোলিং অফিসার হিসেবে শিবদেব চর দ্বি-মুখী উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তিনি বিশেষ ক্ষমতা আইন মামলার পলাতক আসামি। পীরগাছা মহিলা ডিগ্রি কলেজের অবসরপ্রাপ্ত অফিস সহকারী নুরুল আমীনকে পোলিং অফিসার হিসেবে বড়দরগা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। রহমতচর দাখিল মাদসার সহকারী শিক্ষক মশিয়ার রহমানকে প্রশিক্ষণ ছাড়াই শিবদেব চর দ্বি-মুখী উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে পোলিং অফিসার হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছে।

কিন্ডারগার্টেন (নোবেল রেসিডেন্সিয়াল) শিক্ষক আতাউর রহমান ও আলামিন মিয়া। পূর্বাশা ফাউন্ডেশন মঞ্জুরুল ইসলাম, কামরুল হাসান, আব্দুল লতিফ, ওমর ফারুক ও বিজয় চন্দ্র বর্মন। নন এমপিওভুক্ত শিক্ষক প্রিজাইডিং অফিসার আল-আমিন সরকার, জগদিশ চন্দ্র রায়, নুরুজ্জামান মিয়া, নিজাম উদ্দিন খাজা, আতাউর রহমান, আলমগীরসহ অনেকেই নিয়োগ পেয়েছেন।

বিজ্ঞাপন

এছাড়া সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন নন এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠানের নুর আলম, ডনহার রঞ্জন রায়, জোবায়দুল ইসলাম, শেখ মো. রাশেদুল হক, হোমায়রা খাতুন, নির্মল কুমার সিংহ, মো. রোস্তুম আলী, আলামিন মিয়া, তাজুল ইসলাম, নিতিশ চন্দ্র বর্মন, রণজিৎ কুমার বর্মন, আশরাফুল ইসলাম, খোরশেদ আলম, ওমর ফারুক, রেজাউল করিম, আবু শাহাদত, আকরাম হোসেন, আতোয়ার হোসেন, আব্দুল করিম, মীর আমিরুল ইসলাম, সামীউল ইসলাম, আয়শা সিদ্দিকা, নুর আলম, শহিদুল ইসলাম, সুলতান মাহমুদ, আনোয়ার হোসেন, মফিজুল ইসলাম ও সাইফুল ইসলাম।

পোলিং অফিসার হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন নন এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠানের মঞ্জুরুল ইসলাম, আলমগীর মিয়া, নিরঞ্জন চন্দ্র সরকার, আতিকুর রহমান, নাছিমা আমিন (৪র্থ শ্রেণি), জাকির হেসেন, শামিন্ত কুমার, হাফেজুর রহমান, হাফিজার রহমান, রোকনুজ্জামান, এনামুল হক, আতিকুর রহমান, কামরুল হাসান, রাসেল মিয়া, আব্দুস সাত্তার, আব্দু রউফ, নুরবানু আক্তার, মাসুম মিয়া, আব্দুল লতিফ, রাশিদা বেগম, আ. ওয়াকিল, তাহমিনা আক্তার, ওমর ফারুক, হাসমত আলী, নুরুজ্জামান, জিয়ারুল ইসলাম, রুজি বেগম, শামসুজ্জামান, আমিনুল ইসলাম, আব্দুল মোত্তালিব, মাহবুবার রহমান, মিজানুর রহমান, ওমর ফারুক, মোহসেনা বেগম, ফরহাদ হোসেন, বিজয় চন্দ্র বর্মন, মরিয়ম খাতুন, ইসমাইল হোসেন, হারুন-অর-রশিদ, আরিফা খাতুন, রিপন কুমার, রায়হানা বেগম, আব্দুল হাকিম, আব্দুল কাইয়ুম ও আব্দুর রউফ মন্ডল।

এছাড়া অনেক জুনিয়র কর্মকর্তাকে প্রিসাইডিং কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ করায় সিনিয়র কর্মকর্তারা বিব্রতকর অবস্থায় পড়েছেন।

একাধিক শিক্ষক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, পীরগাছায় সরকারি ও এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠানের পর্যাপ্ত সংখ্যক শিক্ষক কর্মচারী থাকলেও নিয়মবহির্ভূতভাবে তাদের বাদ দিয়ে কিন্ডারগার্টেন ও নন এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠান থেকে ভোটগ্রহণকারী কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়েছে।

পীরগাছা উপজেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, রংপুর-৪ আসনে পীরগাছা উপজেলার ৯০টি ভোট কেন্দ্রে ৫৩৪টি বুথ প্রস্তুত রাখা রয়েছে। ভোট কেন্দ্রে ৯০ জন প্রিসাইডিং কর্মকর্তা, ৫৩৪ জন সহকারী প্রিসাইডিং ও এক হাজার ৬৮ জন পোলিং কর্মকর্তা দায়িত্ব পালন করবেন।

এ বিষয়ে পীরগাছা থানার ওসি সুশান্ত কুমার সরকার বলেন, বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলার কোনো আসামি ভোটগ্রহণ করবেন কিনা বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে খোঁজ নিয়ে দেখবো।

এ বিষয়ে জানতে সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাজমুল হক সুমন বলেন, এ ধরনের অভিযোগ থাকলে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
কিন্ডারগার্টেনের শিক্ষকদের ভোটগ্রহণকারী কর্মকর্তা হিসেবে নেওয়া হবে না বলে জানান রিটার্নিং কর্মকর্তা ও রংপুর জেলা প্রশাসক মোবাশ্বের হাসান।