তাবিথের ১৯ দফা ইশতেহারে যা আছে
জনগণের নাগরিক সেবা নিশ্চিত করার জন্য ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) নির্বাচনে বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থী তাবিথ আওয়াল দিয়েছেন ১৯ দফার ইশতেহার। জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে সমন্বিতভাবে সেসব প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করবেন তিনি।
সোমবার (২৭ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ১০টায় গুলশান-১ এর ইমানুয়েলস কনভেনশন সেন্টারে তাবিথ আউয়াল তার নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেন।
১৯ দফা ইশতেহারের বিস্তারিত তুলে ধরা হলো:
দূষণ:
নগরীর দূষণ রোধে রাসায়নিক কারখানা স্থানান্তর, যথাযথ সবুজায়ন, ভার্টিক্যাল গার্ডেন প্রকল্প চালু, শব্দ দূষণ রোধে আইনের প্রয়োগ, হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ, পরিবেশবান্ধব দালালের সার্টিফিকেট ও নগর কৃষি ব্যবস্থা চালু করা হবে।
মশক নিয়ন্ত্রণ:
বছরব্যাপী কার্যক্রম, লার্ভা ও মশা নিয়ন্ত্রণে উপযুক্ত কীটনাশক প্রয়োগ, মশা প্রতিরোধক গাছ লাগানো, মশার প্রবলতা নিয়মিত পরীক্ষা, সচেতনতা বৃদ্ধিতে সাপ্তাহিক কার্যক্রম ও জলাশয় পরিষ্কার করা হবে।
পরিচ্ছন্ন ঢাকা:
সর্বত্র সার্বক্ষণিক পরিছন্নতা, সেপারেশন ও সাটিং পদ্ধতি, ই-বর্জ্য ও মেডিকেল বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, ডোর টু ডোর ওয়েস্ট কালেকশন, কমপ্যাকটারসহ কাভার্ড ট্রাক, ২টা থেকে ভোর ৫টার মধ্যে আবর্জনা অপসারণ, রিসাইক্লিং সেন্টার স্থাপন এবং আধুনিক স্লাটার হাউস নির্মাণ করা হবে।
যানজট ব্যবস্থাপনা:
এর মধ্যে রয়েছে আন্ডারগ্রাউন্ড টানেল রোড নির্মাণ, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, ইউ লুপ, আন্ডারপাস নির্মাণ, রাস্তা যান চলাচলের উপযোগী করা, সড়কে যানবাহনের বর্তমান গতিবিধি, আন্ডারপাস ও ওভারপাস নির্মাণ, পূর্ব-পশ্চিমমুখী সড়ক নির্মাণ, ট্রাফিক বাতিগুলো সচল করা, কার্যকর গণপরিবহন ব্যবস্থা এবং ভাঙাচোরা সড়ক মেরামত।
গণপরিবহন:
এর মধ্যে রয়েছে রুটগুলোকে ঢেলে সাজানো, ইলেকট্রনিক ও হাইড্রোজেন চালিত বাস চালু, ক্যামেরা ও জিপিএস ট্র্যাকার স্থাপন, সমন্বিত পরিবহন ব্যবস্থা, যাত্রী ওঠানামার জন্য বাস বে নির্মাণ, রাত্রিকালীন নিরাপদ বাস সার্ভিস, বাস রুটগুলোর ফ্রাঞ্চাইজি মডেল।
সড়ক নিরাপত্তা:
ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণ, স্কাইওয়াকের প্রবর্তন, গাড়িচালকদের প্রশিক্ষণ, যথাযথ স্থানে আন্ডারপাস নির্মাণ এবং ফুটপাত নির্মাণ ও সংস্কার করা হবে।
অবকাঠামো:
পার্কিং ব্যবস্থার উন্নয়ন, প্রস্তাবিত রিংরোড তৈরি, কমল ইউটিলিটি পাইপস ও টানেল নির্মাণ এবং রাস্তা নির্দেশক ওভার-হেড ডিজিটাল বোর্ড।
স্বাস্থ্য সেবা:
মাদকাসক্তি নিরাময় ও পুনর্বাসন কেন্দ্র স্থাপন, ফ্যামিলির কাউন্সেলিং সেবা, মোবাইল মেডিকেল ইউনিট, রিমোট এবং ভার্চুয়াল মেডিকেল সেবা।
নারী ও শিশু প্রতিবন্ধী বান্ধব ঢাকা:
নারীদের জন্য পৃথক বাস সার্ভিস, আধুনিক ডে কেয়ার সেন্টার, নারীদের মাতৃত্বকালীন ও পাঁচ বছর পর্যন্ত সব শিশুর বিনা খরচে চিকিৎসা, প্রতিবন্ধীবান্ধব আইন প্রয়োগ, বিশেষ নারী সেল গঠন, বিশেষ ওয়ান স্টপ বাস সার্ভিস চালু এবং রাত্রিকালীন আশ্রয় কেন্দ্র স্থাপন।
অগ্নি নিরাপত্তা ও দূষণ ব্যবস্থাপনা:
অত্যাধুনিক ও দক্ষ জরুরি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ইউনিট, নারী ও শিশুদের জন্য মানসিক পরিচর্যা কেন্দ্র স্থাপন।
নিরাপদ পানি:
পার্ক রেলস্টেশন ও বাস স্টপে ডিসপেন্সার স্থাপন, এলাকাভিত্তিক পানির বিশুদ্ধতা পরীক্ষা করা হবে এবং ওয়াসার সঙ্গে সমন্বয় করে পানি ও পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থাপনা।
নিরাপদ খাদ্য:
ভেজাল মুক্ত খাবারের ব্যবস্থা করতে কৃষক মার্কেট ও নাইট মার্কেট এবং প্রতিটি বাজারে ভেজাল খাবার পরীক্ষা কেন্দ্র স্থাপন।
পাবলিক টয়লেট:
নারী, পুরুষ ও প্রতিবন্ধীদের জন্য পৃথক ব্যবস্থা সম্বলিত পাবলিক টয়লেট নির্মাণ।
ক্ষুদ্র ব্যবসা:
চাঁদাবাজি বন্ধ ও দ্রুত ওয়ানস্টপ সেবার মাধ্যমে ট্রেড লাইসেন্স প্রদান এবং সুবিধাজনক স্থানে স্থায়ী মার্কেটের ব্যবস্থা।
ইন্টেলিজেন্ট সিটি:
ফ্রি অ্যান্ড সেফ ওয়াইফাই, ওভারহেড ডিজিটাল ডিসপ্লে বোর্ড, অ্যাপের মাধ্যমে নাগরিক সেবা, ডাটা এনালিটিকস ডিপার্টমেন্ট, কার্যক্রমগুলোতে কিউআর কোডের ব্যবস্থা, গুণমান পরিচালন ব্যবস্থা (কিউএমএস), সার্ভিস কোয়ালিটি ট্র্যাকিং সিসটেম এবং অনলাইনে ট্যাক্স আদায়ের ব্যবস্থা করা।
অপরাধ দমন:
ক্লোজ সার্কিট সিসি ক্যামেরা স্থাপন, ইমারজেন্সি পোর্টাল স্থাপন, ক্রাইম ম্যাপিং চালু এবং এলইডি লাইট স্থাপন।
পার্ক ও বিনোদন:
ওয়ার্ড ভিত্তিক বিনোদন কেন্দ্র, উন্মুক্ত স্থানে গড়ে তোলা, লাইব্রেরি ও জাদুঘর সমৃদ্ধকরণ, স্বাস্থ্যসম্মত ফুড কোর্ট, ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং শিশু বিনোদন কেন্দ্র আধুনিকায়ন।
আবাসন:
হোল্ডিং ট্যাক্স নির্ধারণ ও অনলাইন সার্ভিস চালু, স্বল্প ভাড়ায় আবাসন প্রকল্প, রেন্ট কন্ট্রোলার নিয়োগ, সার্ভিস হোস্টেল প্রকল্প এবং নারী শ্রমিকদের আবাসন ও যাতায়াত ব্যবস্থা।
নগর প্রশাসন:
নাগরিক সেবা ওয়ার্ড পর্যায়ের বিকেন্দ্রীকরণ, ঢাকা ট্রান্সপোর্ট কো-অর্ডিনেশন অথরিটিকে মেট্রোপলিটন ট্রান্সপোর্ট অথরিটিতে রূপান্তর, কর্মীদের পে রোল ও কর্মকর্তাদের ক্যারিয়ার সার্ভিসের আওতায় আনা হবে, নারীর অংশগ্রহণ বৃদ্ধি এবং নগর সরকার ধারণার বাস্তবায়ন।